আজকের ইফতারিতে কি কি খেয়েছিলাম বলি।
আধা গ্লাস পানি দিয়ে দোয়া পড়ে রোজা ভাঙলাম।
ইফতার শুরু করেছিলাম- চালের গুড়ার ফির্নি দিয়ে। হালকা গরম। ফির্নিতে দুধ, চিনি, মশলা আর অন্যান্য উপাদান পরিমাণমতো।
মাঝে আধা গ্লাস পানি।
এরপর খেলাম নুডলস আর ছোলা/মটর মিক্সচার- পুরো এক প্লেট; এটাতে পুষ্টিকর মশলা, মরিচ, সবজি মেশানো।
এই ঝাল আইটেমটা খাওয়ার মাঝখানে ও শেষে খেলাম মোট দেড় গ্লাস কমলা/লেবুর জুস; ইন্সট্যান্ট জুস পাউডার দিয়ে বানানো।
মোট দুই গ্লাসের চেয়ে একটু বেশি পরিমাণ তরল। একটা মিষ্টি আইটেম; পরিমাণে হালকা। একটা ঝাল আইটেম; পরিমাণে ভারী। কোন ভাজাভুজা নাই।
বাধ্যতামূলক রঙিন ফল হিসেবে তরমুজ ও আনারস ছিলো। কিন্তু সাথে সাথে খাইনি। ঘন্টাখানেক পরে একবার তরমুজ; তারও এক ঘন্টা পরে আনারস খেলাম। সেহেরির আগ পর্যন্ত তৃষ্ণা ও প্রয়োজনমত পানি।
দুনিয়ার যেকোন ডাক্তার, পুষ্টিবিদ, বিজ্ঞানী বা ইসলামিক স্কলারকে এই খাবার মেন্যু ও পদ্ধতি জিজ্ঞেস করে রায় নিয়ে নিতে পারেন।
কিন্তু আক্ষরিক অর্থে দুই বা চার আইটেম দিয়ে কারো বাসায় দাওয়াতে, কিংবা রেস্টুরেন্টে, কিংবা টিফিন বক্সে পাঠানো ইফতার দেখলে- আমাদের মধ্যে কয়জন হাসিতামাশা বা রাগ বা আশ্চর্য না হয়ে পারবেন??
খোদ মহানবী (স)-ও একটা খেজুর দিয়ে ইফতার শুরু করতেন; একটা বিশুদ্ধ খেজুরের পুষ্টিমান সম্পর্কে কয়জনই বা জানে? অথচ আমরা যেকোন খাবার রাক্ষসের মত বিশাল পরিমাণে যেমন খাই, তেমনি খাবারের আইটেমের সংখ্যাও অনেকগুলো না হলে আমাদের তৃপ্তি হয় না!
রাজা-বাদশাহ, উচ্চবিত্ত ব্যবসায়ী-চাকরিজীবি, বা টিভি-সিনেমার কাল্পনিক সব জীবনযাপন দেখে দেখে আমাদের সবারই বিলাসবহুল, অদরকারী, ভোগবাদী, ক্ষতিকর, অনৈতিক, অপচয়বহুল জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি, অভ্যস্ত হতে চাইছি।
ঘরের বাজার করা, বাজার সামলানো, রান্না করা, খাবারের পরের ধোয়ামুছা, এসবের জন্য সহমর্মিতার কথা বাদই দিলাম। নিজেদের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ভারসাম্যের কথাও আমরা ভাবি না। সুষম খাদ্য ও পুষ্টির পরিবর্তে মুখের স্বাদ ও চোখের সাধকে আমরা প্রাধান্য দিই।
রমজানের মূল যে শিক্ষাগুলো, তার মধ্যে সংযম অন্যতম প্রধান। অথচ আমরা আমাদের জীবনের সবক্ষেত্রে কতটুকু সংযম পালন করতে পারছি?
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১:১০