Forgive but not Forget. মাদিবার বিখ্যাত বাণী।
২৩ থেকে ২৫ হাজার মানুষকে খুন-গুম করার পরও পরাজিত বর্ণবাদী সরকারের খুনি অফিসারদের ক্ষমা করে দিয়ে ছিলো নেলসন ম্যান্ডেলার দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেস (ANC)। ১৯৪৮ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত চলেছিল এই দুর্বিষহ বর্ণবাদী শাসন। ২৭ বছর জেল খেটে আসা নেলসন ম্যান্ডেলা ওদের ক্ষমা করতে পারলেও আমরা ১৭ বছরের খুন-গুমের জন্যে হাসিনা সরকারকে ক্ষমা করতে পারছি না কেন! এর উত্তর এতটুকু পড়ে যা মাথায় আসছে পুরাটা পড়লেও তাই আসবে।
.
দক্ষিণ আফ্রিকার ভয়ঙ্কর বর্ণবাদী সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানোর পর ANC ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিটি (TRC) গঠন করেন। এর উদ্দেশ্য পরাজিতদের বিচার করা ছিলো না। এই কমিশনের কাজ ছিলো সত্য অনুসন্ধান করা। বিচার ছাড়া রিকনসিলিয়েশন হবে না। আর বিচারের জন্যে সত্য অনুসন্ধান লাগবেই। খুন এবং গুমের সাথে জড়িত বর্ণবাদী সরকারের লোকজন, পুলিশ আর আর্মির অফিসার যারা সরাসরি হত্যা যজ্ঞে জড়িত তাদেরকে সাধারণ ক্ষমা করা হয়েছে The Promotion of National Unity and Reconciliation Act, 1995 এর অধীনে। এই ক্ষমা ছিলো সত্য বলার আর প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার বিনিময়ে।
.
তো আমরা কেন ক্ষমা করতে পারছি না! কারণ এখানে তো কেউ ক্ষমাই চাচ্ছে না। দু’হাতে খুন-খারাপি করে লুটের মালসামাল নিয়ে পরাজীত শক্তি বৈদেশিক বিলাসে ঢুকে গেছে। চুরির টাকায় লোক ভাড়া করে রাজনৈতিক গণ্ডগোল পাকাচ্ছে, অনলাইনে বট কমেন্ট করাচ্ছে, সাংবাদিক ও লবিস্ট কিনছে। আর সর্বক্ষণ আরো খুনের হুমকি দিচ্ছে! কী বিন্দাস জমিদারী জীবন।
.
অপরাধবোধ আসে বিচার থেকে। বিচার বা সামাজিক শাস্তির প্রক্রিয়া ছাড়া “guilt response” সক্রিয় হয় না। যখন সমাজ অপরাধীর জন্য জবাবদিহিতা তৈরি করতে ব্যর্থ হয়, তখন মস্তিষ্কে “moral disengagement” ঘটে — অর্থাৎ মানুষ নিজের অপরাধকে যুক্তি দিয়ে বৈধ করতে শেখে, এবং অপরাধের পুনরাবৃত্তি বাড়ে। বিচার আচরণ না থাকলে ১৪শ না, ১৪ কোটি খুন করলেও কোনো অনুশোচনা আসবে না। বরং পাখি শিকারের মতো অহংবোধ বাড়বে। স্বাভাবিক। যখন কেউ বুঝে যায় যে তার অপরাধের বিচার হবে না, তখন সে self-righteous dominance এ ভোগে। এক বছরে অন্তত দশটা বিচারও যদি শেষ করে রায় কার্যকর করা যেত, অডিও-ভিডিও বার্তাগুলো ভিন্ন রকম আসতো।
.
না হলে কোনো বিচার, না উদ্ধার হলে কোনো চুরির মাল।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


