আগের পর্ব
আমরা সবাই ক্লাস রুমে বসে আছি। স্কুল, কলেজ দুটোরই ছুটি হয়ে গেছে। আপাতত এই দুই জায়গায় কোনো ছাত্র-ছাত্রী নাই। আমরা আটজন বসে আছি ক্লাসরুমে। সুমনা দাঁড়িয়ে আছে লেক্টার্নের সামনে, কিছু বলার প্রস্তুতি নিচ্ছে সে। আমি সবার পিছনে বসে ছিলাম। আমার পাশে আমার ভাগ্নে রাতুল বসে আছে ব্যাজার মুখে। সে আসতে চাইছিল না কিন্তু সুমনার হুমকির কারনে আসতে বাধ্য হয়েছে।
সে আমার কানে ফিসফিস করে বলে উঠল, “মামা, যা ঝামেলা করবা কর তা আমারে ফাসানোর মতলব কিসের জন্য?”
তার এই প্রশ্নের জাবা আমার কাছে নাই, তাই আমি চুপ করে রইলাম।
“সুমনা আপু বাদে বাকী দুইজনকে দেখো, কত ভদ্র,” সে নুশরাতে দিকে তাকিয় বলল, “এই আপু অনেক ভদ্র, আর রুপা আপু তো আমার ফেভারিট। এদের সাথে সুমনা আপু…” কথা শেষ না করে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল।
“শোন, ওই দুইজন সুমনার চেয়ে ,মারাত্মক, সুমনা তোকে টাওয়েল টেনে ক্ষান্ত দিয়েছে। ওরা হলে তোকে একদম ন্যাংটো করে রাস্তায় ছেড়ে দিবে।”
আমার কথা শুনে রাতুল অবিশ্বাসের চোখে আমার দিকে তাকাল। তার চেহারা বলছে সেটা অসম্ভব কিন্তু সেতো বেশীদিন আসেনি তাই জানে না । আরো কয়েকদিন থাকুক হাতে নাতে প্রমান পেয়ে যাবে।
“ওই মামা-ভাগ্নে কখন থেকে গুজুর গুজুর করছে, কি কথা এত,” সুমনা আমাদের দিকে কড়া চোখে তাকিয়ে বলল, এখন সে তার হ্যারি পটার টাইপ চশমা পড়ে আছে, এই চশমা পড়লে তাকে অনেক সিরিয়াস দেখায়।
“এমনি, তা কি বলবে তাতো বলা শুরু করলে না,” আমি তার কথা এড়িয়ে গেলাম।
“হ্যা আমরা এখন যারা এখানে উপস্থিত আছি তারা সবাই ক্লাবের সসদ্য,” এই বলে সুমনা একটু থামল, তারপর, “আমাদের ক্লাবের নাম ‘সসার ক্লাব’।”
শেষ পর্যন্ত বিজ্ঞান মার্কা ক্লাব। এখন দেখা যাবে আমরা সবাই বাড়ির ছাদে ছাদের ঘুরে ভিনগ্রহবাসী খুজব। কিন্তু আমার ধারনা ভুল ছিল।
“এর মানে কি?” রাতুল জিজ্ঞেশ করে উঠল।
“ভাল প্রশ্ন, এর মানে হচ্ছে ‘স্টুডেন্ট সাপোর্টিং রাইটস’।”
এটার পুরো মানে শুনে আমার চোখ কপালে উঠল, আমি নিশ্চিত আর বাকী সবার চোখ কপালে উঠেছে। আমি রাতুলের দিকে তাকালাম, সে অবাক কিন্তু তার চেহারা দেখে মনে হচ্ছে সে কিছু একটা চিন্তা করছে।
এবার সজল হাত তুলে জিজ্ঞেশ করল, “এটা কি ধরনের ক্লাব হবে?”
সুমনা অবাক হল, সে বলে উঠল, “নামের মধ্যেই সব বলা আছে।”
“নামটা মনে হয় ‘সুসারা’ হবে,” রতুল বলে উঠল।
“আমি যেভাবে বলেছি সেভাবে কোনো সমস্যা আছে?” সুমনা তীক্ষ্ণ চোখে রাতুলের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেশ করল।
“না,” একটা ঢোক গিলে বলল, “কোনো সমস্যা নাই, ‘এভরি থিং ইজ অলরাইট’।”
“মানে আমাদের কাজ হবে ছাত্র-ছাত্রীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলোন করা!” আমি এবার বলে উঠলাম।
দেখে মনে হচ্ছে আমরা কলেজ ছাত্র থেকে এখন বিপ্লবী ছাত্র হয়ে যাব, রাস্তায় রাস্তায় মিটিং মিছিল হবে। পুলিশের লাঠির বাড়ি পড়বে!
“না, আমরা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করব,” সুমনা বলে উঠল, “আর কোনো প্রশ্ন?”
অধিকার নিয়ে আন্দোলোন করা হোক আর কাউকে সাহায্য করা হোক, ব্যাপারটা অনেক জটিল। এতটাই জটিল যে সেটা এক কথায় বলা সম্ভব না। অনেকে ব্যাক্তিগত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। আমাদের বয়সের ক্ষেত্রে সেটা অনেক কঠিন আর কোন পক্ষ ঠিক সেটা ভাল করে বোঝা যায় না। আর অধিকাংশ সমস্যা হবে পরিবার গত সমস্যা, যেটাতে নাক গলানো মানে বোকামি।
এত কথা আমি সুমনাকে কিভাবে বোঝাবো সেটাই বুঝতে পারছি না। আমার আশেপাশের সবাই সেটা বুঝছে কিনা সেটা সন্দেহ আছে। তারা হয়তো মনে করছে এই ছোট-খাট সমস্যা সমাধান করতে করতে আমরা হয়তোবা বড়সড় কোনো একটা সমস্যা পাবে যেটা অনেকটা গোয়েন্দাগিরির মত হয়ে যায়। যাক কিছু বলব না, দুইদিন পর এর ঠেলা যখন বুঝতে পারবে তখন এমনিতেই সব বন্ধ করে দিবে,মন মনে আমি এটা বলতে লাগলাম।
সজল এবার বলে উঠল, “কিন্তু এই ধরনের ক্লাব খোলা অনেক ঝামেলার ব্যাপার, কেউ না কেউ আমাদের বিপদের মধ্যে ফালাবে, আর কলেজে তো এই ধরনের ক্লাব খোলা যাবে না।”
“এটা আন্ডারগ্রাউন্ড ক্লাব হবে, আমরা কলেজে ফলাও করে ছড়িয়ে বেড়াব ন,” এবার রুপা উঠে দাড়াল,তারমানে রুপাও এর মাঝে আছে। সে আরো বলতে লাগল, “আর এটাতে বিনিময় প্রথা হবে, আমাদের কাছে একবার সাহায্য নিলে বিনিময়ে আমাদরকে সাহায্য করতে হবে।”
“অনেকেই কিন্তু সন্দেহ করবে এই শর্ত নিয়ে,” রাতুল বলে উঠল।
সবাই তার তার দিকে তাকাল, সবার মুখে একই প্রশ্ন ‘কেন’।
“কারন আমরা সন্দেহ বাতিক, অহেতুক সন্দেহ করা আমাদের স্বভাব। আমি নিজেও একই সন্দেহ করতাম, আমার সুযোগের ফায়দা লুটতে পারে…”
রাতুল মনে হয় আরো কিছু বলতে চেয়েছিল, রুপা তাকে থামিয়ে দিয়ে বলল,“সেটা আমরা আগেই ধারনা করে রেখেছি। বলে রাখা ভাল যে ‘ভালো কিছুর সাথে সাথে খারাপ কিছু আসেই’।”
মোক্ষম যুক্তি, এর উপর কোনো কথা বলা যায় না। রাতুল চুপ মেরে গেল। তারপর পরেও সবার মাঝে কেমন যেন একধরনের অস্বস্তি বিরাজ করছে। সেটা একটু ভালভাবেই খেয়াল করলে বোঝা যায়।
“আমার কোনো সমস্যা নাই,” সজল বলে উঠল।
“আমিও আছি,” হৃদি এতক্ষন পর বলে উঠল।
“আপু ছেলে মানুষের ইজ্জত নিয়ে টানাটানি করলেও আজকে অনেক ভাল একটা জিনিষ বের করেছেন।”
রাতুলের এই কথা শুনে সুমনা তেমন একটা খুশি হল না। সুমনা এবার আমার দিকে তাকাল, তার চোখের মধ্যে প্রশ্ন, তোমার মতামত কি?
আমি যা বলব তাতে ওরা পাত্তা দিবে না, হয়তো এইভাবে নয়তো ওইভাবে আমাকে ওদের দলে যোগ দিতে হবে। রাতুল এখন ওদের দলে তাই যেভাবে হোক। আমি একটা হাই তুলতে তুলতে বললাম, “আমার আর কি করার, সবাই যখন রাজী তখন কি করবে কাজী!”
আমার এই কথা শোনার পর সুমনার মুখে হাসি ফুটে উঠল।
*
রুমাল দিয়ে নিজের মুছতে মুছতে জালাল আহমদে নিজের স্ত্রী মিনারা বেগমের কথা ভাবতে লাগলেন।
“আস্ত এক গাধা মহিলা,” ফিসফিস করে বললেন তিনি, তারপর বিরক্তি নিয়ে উপরের ফ্যানের দিকে তাকালেন। ফ্যান তার সর্বশক্তি নিয়ে ঘুরলেও উনাকে ঠান্ডা করতে পারছে না।
জালাল আহমেদ দ্বিতীয় বারের মত নিজের স্ত্রীকে ডাকলেন। তাড়াহুড়ো করে জালাল সাহেবের স্ত্রী মিনারা বেগম, আসলেন হাতে চায়ের কাপ। বিরক্তির সাথে নিজের মিনারা বেগমের দিকে তাকালেন, বড় ঘরের মেয়ে না হলে কবেই উনি এই মহিলাকে লাথি দিয়ে বের করে দিতেন। মাঝে মধ্যে ধমক-টমক দিলেও গায়ে তোলার সাহস এখনো উনি পান নাই। কারন আছে, মিনারা বেগমের ভাই দুইটা খুবই মারাত্মক লোক। আর সেভাবেও তার কিছু করার লাগে না, হালকা ধমক-টমক দিলেই উনার স্ত্রী ঠিক হয়ে যায়।
“তোমার মেয়েরে বলবা, শুক্রবার যেন রেডী থাকে, পাত্র পক্ষ দেখতে আসবে তাকে।”
জালাল আহমেদের কথা শুনে মিনারা বেগম আস্তে আস্তে কি যেন বললেন, সেটা জালাল আহমেদের কানে গেল না। কানে গেলেও মনে হইয় না উনি সেটা আমলে নিতেন। তার মতে, মেয়েদের কর্ম হল রান্না-বান্না করা আর বাচ্চা সামাল দেয়া। স্বামীদের হুকুম পালন করা তাদের জন্য ফরয।
জালাল আহমেদের ইচ্ছা ছিল একটা ছেলে হবে, কিন্তু তার আশার গুড়ে বালি হলে একটা মেয়ে জন্মালো, এরপর মিনারা বেগমের পেটে আর বাচ্চা এল না। পীর-কবিরাজ এবং সর্বশেষে ডাক্তার দেখানোর পর জানা গেল তিনি আর আম হতে পরবেন না। এটা শোনার পর জালাল পিত্তি জ্বলে গিয়েছিল, ইচ্ছে হয়েছিল লাথি মেরে ঘর থেকে তাড়িয়ে দিতে কিন্তু সমস্যা ওই যে একটাই। মিনারা বেগম বড় ঘরে মেয়ে আর তার মারাত্মক দুই বড় ভাই।
তার মেয়ের বয়স এখন পনেরতে পা দিয়েছে। এখনই তিনি তার মেয়ে বিয়ের জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন, ছেলে ডাক্তার। যদিও বয়স একটু বেশী। কিন্তু তাতে কি ছেলে ডাক্তার তো, মেয়ে তার টাকা বিছানায় ঘুমাবে!
এই ভাবতে ভাবতে তিনি তার চা শেষ করলেন। মিনারা বেগমের দিকে তাকিয়ে কড়া চোখে বললেন, “মেয়েকে বলে রাখবে শুক্রবার যেন তৈরী থাকে পাত্র পক্ষ তাকে দেখতে আসবে।”
“জ্বী আচ্ছা।”
এই বলার পর মিনারা বেগগ আরো কিছু বলতে চেয়েছিলেন, জালাল আহমেদ সেটাকে প্রথমে পাত্তা দিবেন না মনে করলেন, কিন্তু পরে মনে হল শুনেন কি বলে, যদি কোনো বাজার-টাজার করতে বলে।
“কি কোনো সদাই-পাতি আনা লাগবে নাকি?” জিজ্ঞেশ করে উঠলেন।
“না।”
এটা শনার পর তিনি আর আগ্রহবোধ করলেন না। টেবিলে উপর রাখা ব্যাগ নিয়ে জালাল আহমেদ ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন।
*
“মামা তুমি কি মনে করে ওদের সাথে যোগ দিলে ?”
রাতুলের এই প্রশ্নের জবাব দেয়া অনেক কষ্টের মনে হ্ল আমার। আমি কিছু না বলে হাটতে লাগলাম। আজকে একটু সকাল সকাল বের হয়ে গেছি। কালকে অনেক রাত করে ফিরে আসায় আজকে সে ছুটি নিয়েছে। সে এখন গভীর ঘুমে ব্যাস্ত।
“কি মামা কোনো জবা দিলে না।”
“কখন কোন সময় কার সাথে বন্ধুত্ব হয়ে যায় সেটা সহজে বলা যায় না।”
রাতুলের মনে হয় আমার এই কথা হজম করতে কষ্ট হচ্ছিল। তবে সে কিছু বলল না। আমরা দুজন হাটতে লাগলা। একটু সামনেই একটা টং দোকান পড়ল। এই সময় কোনো টং দোকান খোলা থাকে না, মানে দেখি নাই আর কি। চায়ের কেটলি থেকে ধুমায়িত বাষ্প দেখে চায়ের পিপাসা পেয়ে গেল।
“চল চা খাই,” আমি এই বলে রাতুলের কলার টেনে টং দোকানে গেলাম।
“আচ্ছা মামা তোমার কি মনে হয়, এই ক্লাব টিকবে ?”
রাতুলের এই প্রশ্নেরও জবাব দেয়া আরো কষ্টের মনে হল আমার কাছে। আমি চায়ের কাপে চুমুক দিতে দিতে বললাম, “কি জানি, সব তো আর আগে থেকে বলে দেয়া যায় না।”
“খালি প্যাচ মেরে কথা, একটু পরিষ্কার ভাবে বললেই তো হয়।”
“তোর কি মনে হয় টিকবে?”
“জানি না, তাই তোমাকে জিজ্ঞেশ করেছিলাম,” চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে রাতুল বলল, “আর হৃদিও দেখলাম উত্তেজিত হয়ে আছে এই ব্যাপার নিয়ে। সে বলেছে সে নাকি তার বড় বোনের সাথে কথা বলবে।”
“হুম।”
চায়ের দাম দিয়ে আমরা আবার হাটতে লাগলাম, এবার আমি জিজ্ঞেশ করলাম, “তুই কি কারনে যোগ দিলি?”
“প্রথমত, তুমি আছ তাই। তুমি যেদিকে যাও সেখানে একটা না একটা কাহিনী হবেই। দ্বিতীয়ত ক্লাবটা আমার কাছে মজার লেগেছে, নির্ঘাত বড় কিছু হবে একদিন না একদিন।”
রাতুলের জবাব শুনে কিছু বললাম না, কলেজের দিকে হাটতে লাগল।
“ও, মামা ভাল কথা, হৃদি তোমার শখ, প্রিয় খাবার সহ আরো অনেক কিছু জানতে চেয়েছে।”
“তুই কি বলে দিয়েছিস?”
“তুমি কি তোমার ভাগ্নেকে এতইটাই বেঈমান মনে কর !”
বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে, মনে মনে বললাম।
“আরে আমি জানি, তুমি ওই মাশফিয়া নামে মেয়েটাকে পছন্দ কর,” আমার দিকে দিকে তাকিয়ে একতা ফিচেল মার্কা হাসি দিয়ে বলল, “আমি উনার পক্ষে।”
“আমার মতে ওই দুইজনে কথা ভুলে যা, কলেজেরটা আপদ, স্কুলেরটা…”
“বিপদ।”
রাতুল আমার কথা শেষ হবার আগে বলে উঠল। হৃদি মেয়েটাকে যখন সে বিপদ হিসেবে বলেছে তখন নির্ঘাত মেয়টা রাতুলকে কিছু করেছে না হলে সে কোনোমতেই মেয়েদের বিপক্ষে যেতে না। বর্তমান কালের প্রেক্ষিতে বলছি আমি।
“ভাল বলেছিস,” এই বলে আমি তার ঘাড় চেপে ধরলাম, “চল তাড়াতাড়ি চল।”
*
মাশফিয়া গাড়ির জানালার দিকে তাকিয়ে আছে। আজকে সে একটু সকালেই বের হয়েছে, তাই রাস্তা-ঘাট এখনো ফাকা। এই সুযোগে তার গাড়ি চালক ভালই গতি গাড়িটা চালাচ্ছে। মাশফিয়ে সেটা খেয়াল করলেও, সে আমলে নিল না। তার মাথায় এখন অন্য চিন্তা খেলছে। তার চোখ যদি ভুল না বলে তাহলে সে শুক্রবার রানা আর সুমনাকে একসাথে দেখেছে নিউমার্কেটে। সেটা দেখার পর তার বুক কেমন যেন ছ্যাক করে উঠেছিল। তারা দুজন কবে থেকে এত ঘনিষ্ঠ হল? নাকি আগে থেকেই ছিল?
সে নিজের বৃদ্ধা আঙ্গুলের নখ কামড়াতে লাগল। খুব দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলে সে এই কাজটা করে। বলতে গেলে এটা তার মুদ্রাদোষ হয়ে গিয়েছে।
সত্যি কথা রানাকে তার খুব ভাল লেগে গিয়েছিল। সে অন্য কোনো ছেলের বেলায় সে সেটা তেমন অনুভব করেনি। সে বড়লোক ঘরের মেয়ে, বাবা বড় ব্যবসায়ী। অনেক ছেলে আছে তার সাথে সম্পর্ক রাখতে চেয়েছিল কিন্তু সে সেগুলো আমলে নেয়নি। রানাকে দেখার পর মনে হয়েছিল এই সেই তার রাজকুমার যার জন্য আমি এতদিন অপেক্ষা করছিল।
হায় হায়! আমি কি চিন্তা করছি এইসব, মনে মনে বলে উঠল মাশফিয়া।
সে মনে মনে রানার চেহারা কল্পনা করার চেষ্টা করতে লাগল, রানার চেহারা তার চোখের সামনে আসল কিন্তু এর সাথে সাথে সুমনার চেহারাও ভেসে উঠল।
মাশফিয়ার চেহারা এবার শক্ত হয়ে গেল, যেভাবেই হোক তাকে বের করতে হবে রানা আর সুমনা মাঝে কোনো সম্পর্ক আছে কিনা। যেভাবেই হোক।
*
কলেজ গেটের সামনে আমরা এসে পড়লাম। দেখলাম সজল দাঁড়িয়ে আছে। সে আমার দিকে তাকিয়ে বলল, “তোকে দুর থেকে দেখেছিলাম তাই তোর জন্য দাঁড়িয়ে আছে।”
“আচ্ছা তাহলে একসাথে যাই,” আমি বলে উঠলাম।
এই বলে আমরা তিনজন একসাথে কলেজে ঢুকলাম। আজকে টিফিন পিরিয়ডের পর আমরা ঝামেলার মধ্যে পড়ব সেটা যদি আগে থেকে জানতে পারতাম আমি, তাহলে আমি জীবনেও আজকে কলেজে ঢুকতাম না।