somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নদীও নারীর মত কথা কয় --হোসনে আরা মণি

২৫ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:১৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



এ ঘটনা তখনকার যখন মারিয়া আমাকে তার জীবনে জড়িয়ে রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছে এবং মরিয়ম আমাকে তার জীবন থেকে ঝেড়ে ফেলতে প্রাণান্ত হচ্ছে। মা মেরীর নামীয় দুটো মেয়েÑ কিন্তু মিল শুধু ঐ নামটুকুতেইÑ স্বভাবে-ব্যবহারে, চিন্তা-চেতনায় দুজন দুমেরুর বাসিন্দা। আমার অবশ্য তাতে কিছু যায় আসেনা বরং তাদের আচরণগত পার্থক্যের বৈপরীত্য আমি উপভোগই করি। পৃথিবীশুদ্ধ সব রমণীর মন যদি এক ছাঁচে গড়া মূর্তি হত তো জগতের এত রূপ-রস-বৈচিত্র্য সবের অস্তিত্বই যে লোপ পেত।
বাগেরহাট যাচ্ছিলাম একটা অফিসিয়াল কাজে। সাতক্ষীরা-বাগেরহাটের দূরত্ব বেশি নয়। প্রাইভেট গাড়িতে গেলে ঘন্টা দুই আড়াই এর বেশি লাগার কথা নয়। কিন্তু এই বারোয়ারী বাসেÑ নাহ্, জীবনে একটা জবরদস্ত চাকরি বাগাতে না পারার দরুণ আজ আমার এই হালÑ দুই ঘন্টার পথ পেরুতে হয় পাঁচঘন্টায়। সে পাঁচঘন্টায় আবার যাত্রার ক্লান্তির সাথে উপরি হিসেবে জোটে মানুষের গায়ের গন্ধ, ঘামের গন্ধ (কখনো বা তলপেটের ‘বিশুদ্ধ বায়ু’ নিঃসরণের গন্ধ), বমির গন্ধ ইত্যাদি। সিট পেলেতো ভালই, না পেলে বাসের ছাদের রড ধরে ঝুলে থেকে কিংবা সংকীর্ণ জীর্ণ আসনের কোন অংশ আঁকড়ে ধরে আসনে আসীন ভাগ্যবানের (ভাগ্যবতীদের থেকে ১০০ গজ দূরে থাকাই ভাল। নইলে ভীড় বাসে আপনি সহজেই ঈভটিজিং এর মামলায় পড়ে যেতে পারেন) বিরক্তিভাজন হয়েও টিকে থেকে জানটা হাতে নিয়ে কোনমতে পেরুতে হয় এই দুঃসহ কয়েক ঘণ্টা। একটানা যেতে পারলে তাও না হয় দাঁতে দাঁত চেপে সব যন্ত্রণা সওয়া যায় কিন্তু এটুকু পথ যে আবার ভেঙ্গে ভেঙ্গে যেতে হয়। সাতক্ষীরা-বাগেরহাট সরাসরি পরিবহন না থাকায় খুলনা পৌঁছে বাস পাল্টাতে হয়। ‘সিটিং সার্ভিস’, ‘এক্সপ্রেস’, ‘গেটলক’ ইত্যাদি নানা বিশেষণধারী বাস থকলেও সবাই বহরে-আকারে-স্বভাবে-কোলিন্যে প্রায় একই শ্রেণীভুক্ত।
তো সেদিনও ওরকম এক পরিবহনে চেপে বাগেরহাট যাচ্ছি। ভাগ্যক্রমে পাশে বসলেন এক ভরভরন্ত যুবতী। আমি আগেই আসন দখল করে আছি। আমার প্রতিবেশী অফিসের ম্যানেজার আকিজ সমাদ্দারের ঐদিন বাগেরহাট যাওয়ার কথা। উনি আমতলা থেকে উঠবেন। কিন্তু একজন পনিটেহল বাঁধা সুন্দরী যখন ‘এক্সখিউজ মি’ বলে পাশে বসবার আকুতি জানায় তখন তাকে না করে রাখার মত ’নাপুরুষ” তো আমি নই।
সুন্দরী আমার পাশে বসে ভ্যানিটি ব্যাগের পেট থেকে প্রথমে একটা ছোট আয়না ও চিরুনী বের করে একটুখানি কেশচর্চা করে নিল। তারপর মাথায় বেঁধে নিল একটা ছোট স্কার্ফ। বোঝা গেল পর্দার উদ্দেশ্যে নয়, চলমান গাড়িতে এলোমেলো বাতাস ও ধুলোবালির প্রকোপ থেকে কেশ রক্ষার তাগিদে এই মস্তকাবরনীর ব্যবহার। তাহোক। এই মস্তকাবরনী যে তার পনিটেইলের উগ্রতা ঢেকে চেহারায় একটা মার্জিত ¯িœগ্ধতা দান করল এতেই আমি খুশি। শিশু আর সিনেমার হাফপ্যান্ট পরা নায়িকা ছাড়া কোন নারীর চুলে পনিটেইল আমার চোখে সুদৃশ্য কিছু নয়। কাজেই সুন্দরী যখন মাথায় স্কার্ফ বেঁধে এতক্ষণ মাথায় তুলে রাখা সানগ্লাসটা চোখে নামিয়ে চেহারায় একটা স্টাইলিস্ট অভিব্যক্তি ফুটিয়ে আমার পাশে গুছিয়ে বসল তখন আমি মনে মনে আকিজ সমাদ্দারকে একটা ধন্যবাদ দিলাম। সমাদ্দার আমাকে দুটো আসন জুড়ে বসে থাকতে বলেছিল বলেই কিনা আমি একটা আসন দান করার গৌরবে গৌরবান্বিত হতে পারলাম!
সমাদ্দার গাড়িতে উঠে আমার পাশে এই শোভাময়ীকে আবিষ্কার করে খানিকক্ষণ চোখ গোলগোল করে চেয়ে থেকে সিটের আশায় ইতিউতি তাকাতে শুরু করল। আমি একটু অপরাধীর ভঙ্গিতে বললাম, ‘আকিজ ভাই, গাড়িতে আজ সিট ক্রাইসিস। দুটো আসন পাইনি। আপনি না হয় এটাতেই.....’বলতে বলতে উঠে দাঁড়াবার ব্যর্থ চেষ্টা করলাম। এই কৃপন প্রকৃতির গাড়িতে সামনে-পেছনে দুটো আসনের মধ্যবর্তী গ্যাপ আধাফুটের বেশি নয়। এখানে আমার মত দশাসই শরীরের মানুষ জানালার পাশের সিট থেকে ফট করে উঠে দাঁড়ায় কী করে? তাছাড়া পাশে এমন জীবন্ত সৌন্দর্যÑ যদি এতটুকু টোকা লাগে কি টাল খায় তো অসাবধানতার দোহাই পেড়েও পার পাওয়া নাও যেতে পারে। একটা কাষ্ঠ হাসি হেসে সমাদ্দার বলল, ‘না, না, ঠিক আছে। বসেন আপনি, বসেন। আমি দেখি অন্য কোথাও কিছু.....’ । তারপর কী যেন বিড়বিড় করতে করতে, চলন্ত গাড়ির দুলুনি-ঝাকুনি সামলাতে সামলাতে টলমল পায়ে ফের দরজার দিকে গেল। ওখানে কন্ডাকটরের সাথে তার কী জানি কথা হল। কিছু পরে দেখি উনি ইঞ্জিন কাভারে নারীর দঙ্গলের মাঝে চিড়ে-চ্যাপ্টা হয়ে থেকে কোনমতে পাছাখানা কাভারের এককোনে ঠেকিয়ে আছেন। আমার আর সেদিকে বেশি তাকাতে ভরসা হলনা।
সমাদ্দার গোল্লায় যাক। ফিরে আসি সুন্দরীর কথায়। হ্যা, সাধারণের তুলনায় ফ্যাশনদুরস্ত বটে। কপালে বেশ বড় কাল টিপ, চিবুকে ছোট্ট কাল তিলÑ আসল নাকি মেকি, কে জানে! দূর! তা হবে কেন? সিনেমার হিরোইন ছাড়া কেউ মেকি তিল লাগায় নাকি? তাছাড়া ওসবতো ষাটের দশকের ফ্যাশনÑ মুখে তিল থাকাটাকে এখন কোন নারী সৌন্দর্যের নিয়ামক বলে ভাবেইনা। হ্যা, নাকটা বেশ টিকালো। ঠোঁট?Ñহ্যা, স্ফুরিতই মনে হচ্ছে। পাশাপাশি বসে অতটা দেখা যায়না। মুখোমুখি বসতে পারলে ভাল বোঝা যেত। তবে ঠোঁট খুব মোটা বা পাতলা নয়, মাঝারি শেপেরÑ অনেকটা বুঝি কমলার কোয়ার মত? হ্যা, এরকম ঠোঁটই আমার পছন্দ। অধোষ্ঠের মাঝে কি একটা টোল আছে? এরকম থাকলে আমার দেখতে-চাখতে দারুণ লাগে।Ñ আছে কি? না, পাশ থেকে বোঝা যাচ্ছেনা। মুখটা আবার একটু ও পাশে ফিরিয়ে আছে কিনা। গলা-ঘাড়ের গঠনটা স্কার্ফে ঢেকে আছে, চোখদুটিওতো সানগ্লাসে ঢাকা, তবে সেই ‘এক্সখিউজ মি’ বলার সময়টাতে একবার চোখাচোখি হয়েছিল। উঃ! যা মারাত্মক চোখ! কেমন ঢুলুঢুলু মদির চাহনি! আমার কাছে চোখের শেপের চেয়ে চাহনিটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়। চোখের নানারকম বাঙময়তা দেখে ব্যক্তির চরিত্র সম্পর্কেও কিছু অনুমান করা যায়। যেমনÑ
ঘুমঘুম মদির আঁখি=কামনাময় আগ্নেয়গিরি।
দুষ্টুদুষ্টু- হাসিহাসি= চঞ্চল চিত্রাণী।
স্বপ্নমাখা উদাস দৃষ্টি= ভাবুক-লাজুক মিতভাষী।
রক্তিম রাগীদৃষ্টি= গোঁয়ার প্রকৃতির লক্ষণ।
মাছের মত নিষ্পলক চোখ= কুটিল চরিত্রের লক্ষণ, এদেরকে সহজে পড়া যায়না।
ধূর্ত-কুটিল দৃষ্টি= এদেরকে আমি স্বভাবতঃই এড়িয়ে চলি। তাই এদের সম্পর্কে কোন ধারণা করতে অপারগ।
তো ব্যাপারটা এই দাঁড়াল যে আজকে আমার যাত্রা শুভÑ অন্ততঃ দুঃসহ একঘেঁয়েমি থেকে মুক্ত থাকার সম্ভাবনাময়।
গাড়ি চলছে। শহর ছাড়িয়ে গ্রামে পড়েছি। দুধারে ফসলি মাঠ, মাছের ঘের আর ঘেরের পরে নুয়ে থাকা সবজি ক্ষেত। এক জমিতে তিন-চার-পাঁচ প্রকার উৎপাদন ঘটিয়ে জনসংখ্যা কবলিত দেশের যোগান বাড়াবার প্রশংসনীয় প্রচেষ্টা। সুন্দরীর সাথে ভাব জমাবার প্রচেষ্টায় ভেতরটা কেবল আকুলি-বিকুলি করছে কিন্তু কিভাবে কী করি তা ভেবে উঠতে না পেরে মুখে কুলুপ এঁটে বসে আছি। এরকম ঘটনা নিয়ে কোথায় যেন একটা গল্প পড়েছিলাম। আমেরিকান, না ল্যাটিন আমেরিকান কোন নোবেলজয়ী লেখকের গল্পের অনুবাদ। প্লেনে এক সুন্দরী সহযাত্রিনী পেয়ে আমার মত এক অখ্যাত আবুলের, নাকি স্বয়ং লেখকের অভিজ্ঞতার গল্প। সুন্দরী সারাপথ সহযাত্রীর মন ও মনোযোগের পুরোটা দখল করে রেখে নিজের মত করে নিশ্চিন্তে গতানুগতিকভাবে সময়টা পার করে অনায়াসে গন্তব্যে পৌঁছে গেল। সে জানলওনা যে এতটা সময় ধরে তারই পাশে অবহেলায় পতিত হৃদয়টা তীর্থের কাকের মতই উদগ্রীব হয়ে তার এতটুকু মনোযোগের অপেক্ষায় ছিল। গল্পখানা নাকি ভুবনবিখ্যাত। এহ্! নোবেলজয়ী লোকের সবকিছুইতো ভুবনজয়ী হয়; যেমনÑ সেলিব্রেটিদের নাকঝাড়া, কান চুলকানোও একটা খবর।
এমন সময় সুন্দরীর মধ্যে বমির লক্ষণ দেখা গেল। আমি বসেছি জানলার ধারে। এই মুড়ির টিন টাইপ বাসে আসন বদলানোওতো কম ঝক্কির ব্যাপার নয়। কিন্তু সুন্দরীকে এখন জানালার পাশে বসাতে পারলে অপ্রীতিকর ব্যাপারটা উনি গাড়ির বাইরে সারতে পারেনÑ কী যে করি! আসন বদলে তাকে জানালার পাশে দিতে যাব এমন সময় তিনি আমার গায়ের উপরই হুড়মুড় করে চেপে এসে জানালাপথে মুখ বাড়িয়ে হড়হড় করে.....।
নরম-তন্বী দেহের চাপ অনুভব করলাম কিন্তু অনুভূতিতে অন্য কোন রসায়নের বিস্তারণ ততটা ঘটলনা। কিভাবে ঘটে? বাতাসের ঝাপটায় যে বস্তু এসে আমার বুক-পেট এমনকি মুখেরও কিছু অংশ ভরিয়ে দিল তা কখনো কাক্সিক্ষত কিছু নয়। সুন্দরীদের পেট দেখতে যেমনই হোক, পেটের খাবারে কিছু বিশেষত্ব থাকেনা। সেই একই টকটক ঝাঁজালো দুর্গন্ধ।
মনটা দমে গেল। এর চেয়ে যে সমাদ্দারই ঢের ভাল ছিল! কিন্তু সুন্দরীর মুখের দিকে চোখ পড়াতে মায়া হল। সংক্রামক গা গুলানীভাব ঝেড়ে ফেলে মানবিক কর্তব্যে নিয়োজিত হলাম। ব্যাগ থেকে পানির বোতল বের করে ওনাকে মুখ ধুতে সহযোগিতা করলাম। এর মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের দয়া যাঞ্চা করে দুজনে আসন পরিবর্তন করে নিলামÑ অর্থাৎ ওনাকে জানালার পাশটা ছেড়ে দিয়ে আমি ওনার সাবেক আসনে বসে এক দেড়েল বুড়োর বগলের গন্ধ শুকতে থাকলাম।
আমার পোষাকের বিভিন্ন অংশে বমির ছিট লেগে আছে। টিস্যুপেপার দিয়ে মুছলে খাদ্যকনা উঠে যায় কিন্তু অর্ধপাচ্য খাদ্যরসের দুর্গন্ধ দূর হয়না। এরই মধ্যে বাসের অন্যান্যদের মধ্যেও এ প্রবণতা সংক্রমিত হয়েছে। ‘ওয়াক ওয়াক’, ‘এই পলিথিন’, ‘এই কন্ডাকটর’ জাতীয় আওয়াজে গাড়ির মধ্যে নরক গুলজার দশা। এরই মধ্যে গাড়িতে চড়ে খুলনাগামী একজোড়া হাঁসের প্যাক প্যাক, মুরগীর বাচ্চার কোঁ কোঁ কাতরানী আর তাদের বিষ্ঠার দুর্গন্ধ বাসটাকে চলন্ত হাবিয়ায় পরিণত করেছে।
ভাদ্রের মেঘলা গুমোটে তালপাকানো গরমের দুপুর। হঠাৎ হুড়মুড়িয়ে বৃষ্টিও এসে গেল। এখন জানালা-দরজা বন্ধ করে বদ্ধ গুমোটে, দুর্গন্ধে ওষ্ঠাগতপ্রাণ হয়ে টিকে থাকা। দেখি সুন্দরী একবারে নেতিয়ে পড়েছেন। জানালার শার্সিতে মাথা রেখে চোখ বুজে পড়ে আছেন। এরই মধ্যে আমরা চুকনগরে এসে গেলাম। এখানে যাত্রাবিরতি দশ মিনিট। এ সময়টাকে কাজে লাগালাম। গাড়ির দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীরা এ সময়টা গাড়ির বাইরেই কাটায়। ভেতরের ভীড়টা তাই নেই। সুন্দরীকে নিয়ে অনায়াসেই নেমে এলাম। একটা টিউবওয়েল খুঁজে নিয়ে নিজেদের পরিচ্ছন্নতারও ব্যবস্থা করলাম। ঝটপট ব্যাগ খুলে পরে নিলাম একটা পরিষ্কার টিশার্ট। তিনদিনের ট্যুরে বেরিয়েছিÑ এসব ব্যবস্থা সাথেই ছিল।
সুন্দরী লজ্জায় আধমরা চেহারা নিয়ে আমার কাছে বারবার ক্ষমা চাইতে লাগল। বাসে এভাবে বমি করার ঘটনা তার জীবনে নাকি এই প্রথম। কী একটা বিশ্রি দুর্গন্ধ তার নাকে ঢুকে নাকি তাকে .......। আমি ‘না, না, এ কিছু নয়, এমন হতেই পারে’ বলে তার লজ্জার বোঝা কমাতে চাইলাম। এ সময় অপাঙ্গে কয়েকবার তার গোটা মানচিত্রে চোখ বুলিয়ে নিলাম। জ্যামিতিক পরিমাপের হিসেবে তাকে বড়ই অসমতল অথচ সুসম মনে হতে লাগল। এতক্ষণের বিবমিষা ভুলে আমার মধ্যে হঠাৎ একঝলক পাগলা হাওয়ার দাপাদাপি অনুভব করলাম।
ফের গাড়িতে ওঠার অল্প কিছু পরেই দেখি সুন্দরীর মদির ঢুলুঢুলু চোখে ঘুমের ঢলানি। কিছুক্ষণ আগে বৃষ্টি হওয়ায় গরম একটু কমেছে। জানালাপথে আরামদায়ক ঠা-া বাতাস এসে হুহু করে ঢুকছে। গাড়ি এখন একটানা ছুটছেÑ খুলনা না পৌঁছে আর থামবেনা। এমন নিরুপদ্রব পরিস্থিতিতে এতক্ষণের ক্লান্তি জুড়াতে ঘুম না এসে কি পারে? কিন্তু একি! উনি যে ঘুমের ঘোরে বারবার আমার কাঁধের পরে মাথা হেলিয়ে দিচ্ছেন! আমার এখন কী করা উচিৎ? এত সংকীর্ণ ব্যবস্থাপনার আসনে দূরত্ব বজায় রেখে বসা সম্ভব নয়। আর আমি কাঁধ সরিয়ে নিলে যে ওনার মাথাটা ঢলে বুকে এসে পড়ছে! এতক্ষণে নিজেকে সত্যিই ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে বাকি পথটা ভালই যাবে।
গাড়ি খুলনার সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে ঢোকার আগে জিরো পয়েন্টে মিনিটখানেক দাঁড়িয়ে যাত্রী নামিয়ে দিল। বাগেরহাটগামী যাত্রীদের অনেকে এখানেই নেমে গেল। এখান থেকে কোন রানিং গাড়ি ধরতে পারলে সিট না পেলেও তাড়াতাড়ি বাগেরহাট পৌঁছানো যায়। আমারো সময় বাঁচানোর তাড়া আছে কিন্তু এখন নামি কী করে?Ñ সুন্দরী যে বুকের সাথে সেঁটে আছে!
সোনাডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডের টার্মিনালে গাড়ি ঢুকল। বাস এখন পুরোটাই খালি। যাত্রীরা গাড়ি টার্মিনালে ঢোকার আগেই রোডের পরে গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমে গিয়েছে। এখন ফাঁকা বাসে আমার বুকে ঘুমন্ত পরী। অস্বীকার করবনা যে দারুণ লাগছিল। ওরকম অনুভূতি বারেবারে ফিরে পেতে ইচ্ছে করে এবং জীবনে কখনোই তা পুরনো হয়না। ইচ্ছে করছিল তাকে সারাজীবন এভাবে বুক পেতে ধরে রাখি। জাগাতে ভয় হয়Ñ পাছে ডানাকাটা পরী হঠাৎ ডানা গজিয়ে তুলে ফুড়–ৎ করে উড়ে পালায়! কিন্তু আমার যে আবার রয়েছে কর্তব্যকর্মের তাড়া!
সুন্দরীর মাথার চুলে আঙ্গুল ডুবিয়ে আলতো করে নাড়া দিলাম। চুকনগরে হাত মুখ ধোয়ার সময় উনি সেই যে স্কার্ফ খুলেছিলেন, পরে আর পরেননি। ওনার কানের ঝোলা দুল আর ঘাড়-গলার অনিন্দ্য সুন্দর গঠনে চোখ রেখেই তো এতটা সময় কাটিয়ে দিয়েছি। কিন্তু এখন আমাকে সব মায়া ত্যাগ করে, লোভের বুদবুদে ছিপি আঁটার চেষ্টা করে ওনাকে জাগাতেই হল। কিন্তু জেগে উঠতেই সুন্দরীর রূপ বদলে গেল। ফাঁকা গাড়িতে নিজেকে আমার বুকের পরে আবিষ্কার করে আচমকা লাফ দিয়ে উঠে চোখ ছানাবড়া করে অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে আমার দিকে চেয়ে বললেন, আ-আ-ম-রা এখন কোথায়? গাড়িতে কেউ নেই কেন?
Ñ গাড়িতে আপনি আর কাকে চাইছেন ?
Ñ মানে? যাত্রী-কন্ডাকটর-হেলপার এরা সব কোথায়?
Ñ যাত্রীরা গিয়েছে যে যার গন্তব্যে। তাদের ঠিকানা আমার জানা নেই। আর কন্ডাকটর-হেলপার এরা যে কোথায় গেল ----।
Ñ আশ্চার্য ! আর আপনি বসে আছেন ?
Ñ কী করব? আপনি যে আমার বুকে ঘুমিয়ে ছিলেন।
Ñ মানে? আ- আ- মি..........
Ñ অবাক হচ্ছেন কেন? আপনি ঘুম ভেঙ্গে নিজেকে কোথায় আবিষ্কার করলেন ?
Ñ আপনি কী বলুনতো? আমাকে এভাবে ঘুমুতে.... মানে জাগিয়ে দিলেন না কেন?
Ñ এই তো জাগালাম।
Ñ এত পরে? গাড়ি থেকে সবাই নেমে যাওয়ার পর?
Ñ ম্যাডাম, আমি যে আপনাকে সারাপথ নির্বিঘেœ ঘুমাতে দিয়ে গন্তব্যে এসে জাগিয়ে তুলেছিÑ এই কি যথেষ্ট নয়? এর চেয়ে ভাল আমি কী করতে পারতাম?
Ñতা বটে। ষোলকলা পূর্ণ হত যদি আমার ঘুমটা না ভাঙ্গিয়ে একবারে আপনার ঘরে নিয়েই তুলতেন।
বেফাঁস কথাটা বলে ফেলেই উনি বিব্রত হয়ে পড়লেন। লজ্জা পেয়ে সরি বলে হেসে বললেন, কি? গাড়িতেই থাকবেন নাকি আজ? নামবেননা? নিজে না নামলে পথ ছাড়ুন, আমাকে অন্ততঃ নামতে দিন।
দুজন নেমে দাঁড়ালাম। একে অপরের মুখোমুখি কয়েক পলক তাকালাম। আমার চাহনিতে কী ছিল জানিনা, হঠাৎ দেখি সুন্দরী হন হন করে হাঁটতে শুরু করেছে। আশ্চার্য ! কোথায় যাবে, কোথায় থাকে, কী করে, নাম-ধাম কিছুই যে জানা হল না। ‘এই যে......’ , আমি পিছু নিলাম। সুন্দরী দাঁড়িয়ে গেলেন। তারপর বাংলাদেশী গোখরার ভঙ্গিতে রূপ, গর্ব, অহঙ্কার ও ঔদ্ধত্যের ফনা তুলে সম্ভাব্য অনিরাপত্তাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলে বসলেন, আর এক পাও নয়। এভাবেই আপনারা শুরু করেন। কিন্তু আমি পুনরাবৃত্তি চাইনা। জানি আপনিও বাগেরহাট যাবেন। কিন্তু এই গাড়িতে নয়। আমি এই ট্রিপে যাচ্ছি, আপনি পরেরটাতে যাবেন। আপনার সাথে আমি আর এক গাড়িতে চড়বনা। যদি আপনার তাড়া থাকে আপনি এটাতেই যান, আমি পরে যাব।
ব্যক্তিত্বের তীব্রতার ঝলকের দিকে সম্মোহিতের মত চেয়ে থেকে আমি বললাম, বেশতো, আপনিই আগে যান। আমি না হয় পরেই আসছি। কিন্তু আসছিতো।
বাগেরহাটগামী গাড়ি যখন রূপসাব্রিজ অতিক্রম করছিল তখন ভরাযৌবনা রূপসার উথলে ওঠা আগ্রাসী যৌবনরাশির দিকে চেয়ে মনে মনে বললাম, তুমি কি জান নদী, আমাদের নারীদের কেন তোমাদের সাথে তুলনা করা হয়? তুমি বয়ে যাও, দুকূল ভাসাও, যৌবনজ্বালার সবটুকু নিয়ে সাগরে মিলাও। তোমার এ উদ্দেশ্য, তোমার এ গতি চিরন্তন। আমাদের নারীরাও ঠিক তোমারই মতÑ আপন স্বভাবে নিজের চারপাশে ঢেউ তুলে অন্যমনে চলে যায়, না জানি কোন সাগরে সে মিলতে চায়। আমরা যারা তাদের বুকে বিসর্জিত হতে ইচ্ছুক, তাদের প্রতি ওনাদের উদাসীনতা ঠিক তোমারই মতÑ হাজার-লক্ষ আত্মদানের ইতিহাস অক্লেশে মুছে নিয়ে তুমি যেমন তোমার লক্ষ্যে অবিচল।
রূপসার বুক ছুঁয়ে বয়ে আসা একঝলক ঠা-া বাতাস কানের পাশ দিয়ে সবেগে ঢুকে গাড়ির ভেতরটাতে শীতল পরশ বুলিয়ে দিল। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হল যে এই বাতাসের ঝাপটার সাথে কোন লাস্যময়ীর হাস্যধারা কাচভাঙ্গা শব্দের মত আমার কানে আছড়ে পড়ল। সে যেন বলতে চায়ঃ তোমাদের পুরুষকবিমন আর কতকাল এসব উপমা দেবে বলতো? নারীকে নিয়ে তোমাদের উপমা তুলনার কারণে কত তুচ্ছ জিনিস যে বিখ্যাত, কালোত্তীর্ণ হয়ে গেল! এই রূপসার বুকের ঐ চরটার দিকে তাকাও, কিছু আগে তোমার বুকের পরে এলিয়ে থাকা সেই সুন্দরীর বক্ষস্থলের সাথে কিছু মিল খুঁজে পাচ্ছতো? আরে বেকুব! এটা বুঝছনা যে রূপসার বুকের ঐ চরটা রূপসার ব্যথা জমে গড়ে উঠেছেÑ নিজের মাঝে অনাকাক্সিক্ষত কিছুর অস্তিত্বের ব্যথা; যেমন ঝিনুকের প্রদাহের ফল মুক্তো। আর নারীর বুক গড়ে ওঠে কত আনন্দময় স্বপ্ন-বাস্তবকে সামনে রেখেÑ ভবিষ্যত প্রজন্মের খাদ্যভা-ার হিসেবে। নদীর স্বাভাবিক গতিপথে এতটুকু বাঁধার প্রাচীর পড়লে কী ঘটে দেখছ, আর তোমরা যে নারীর সাবলীল গতিময়তাকে যুগযুগ ধরে কত জিঞ্জির, কত বাঁধার প্রাচীর দিয়ে সঙ্কুচিত করে নারীজীবনের অর্থটাকে পর্যন্ত বিকৃত করে রেখেছ, তাতে নারীত্বের কতখানি ক্ষতি ঘটে গেছে তা ভেবেছ? ‘পুরুষার্থে নারী, ঠিক যেমন নদী পরার্থে’Ñ তোমাদের এই পুরুষালী দর্শনকে হয়ত আজকের নারীও মূল্য দিত যদি সে না জানত যে পুরুষার্থে নারীকে অবশেষে তোমরা এক বিশেষ নামে বিশেষায়িত কর, যা তোমাদের প্রয়োজনে গড়ে উঠেও ভদ্রসমাজে উচ্চারণঅযোগ্য। কুলনারী তাই নদী হতে পারেনা। চাইলেই তার এক আঁজলা জল মুখে নেয়া যায়না। তোমরা যদি ভ- না হতে তাহলে নারী হয়ত সত্যিই নদী হত; যেমনÑ আদিম পৃথিবীতে নারী ছিল নদীর মতই সতত সঞ্চারি, লীলাচঞ্চল, প্রাণময়।
কখন যেন নদী ছাড়িয়ে, দুপাশের ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে গাড়ি ছুটছে বাগেরহাটের বিখ্যাত গ্রামীনবন সমৃদ্ধ সরু পথে। সন্ধ্যার আলো-আঁধারিতে একটা শেয়ালকে রাস্তা পেরুতে দেখে উপমাটা মনে এল। ইস্! এই একবিংশ শতাব্দীর পৃথিবীতেও কেন যে এদেশের নারীরা মুরগী পেলে রেখে শিয়ালের ভয়ে তটস্থ দিন কাটায়! এর জন্য কে দায়ী?Ñ শেয়ালের স্বভাব নাকি ক্ষ্যাপাটে প্রকৃতির অদ্ভুত বিধান? কিন্তু শিয়ালের মুরগীলিপ্সা যে প্রকৃতিরই দান! শিয়ালকে এজন্য দায়ী করে কী লাভ? কিন্তু একদিকে প্রকৃতির বিধান, অন্যদিকে মানুষের আইনÑ বড় অদ্ভুত এই সহাবস্থান! এ দুয়ের সাথে ব্যালান্স করে চলতে গিয়েই আধুনিক আমরা স্বপ্নে ঘি খাই, জেগে স্বপ্ন দেখি। ভেতরকার বর্বরতাকে দমিত করে আমরা হতে চেষ্টা করি খাঁটি আধুনিক। আর আইনের নিগড়ে ফেলে শিয়ালের শিয়ালত্ব মোচিত হলেই হয়ত সে হয়ে ওঠে আমারই মত রোমান্টিক!
বহু মোড়-বাঁকসমৃদ্ধ অপ্রশস্ত রাস্তার এক কালভার্টের রেলিঙ ভেঙ্গে খাদে উল্টে পড়েছে এক গাড়ি। বাগেরহাটের গ্রামে সন্ধ্যাগুলো ঝপ করে নামে। ঘনবনের কারণে গোধূলি এখানে তার মায়াবী আলোর খেলা তত দেখাতে পারেনা। আমাদের গাড়ির হেডলাইটের আলোয় ঐ গাড়িটা ঝাপসা দেখা যায়। হঠাৎ আমার বুকের ভেতর দমবন্ধ করা এক চাপ অনুভব করলামÑ এটা কি সেই আগের গাড়ি?
গাড়ির পতন ও মানুষের কাৎরানির আওয়াজে ইতিমধ্যে গ্রামবাসী জমতে শুরু করেছে। আমি জানি যে খুব শিগগিরই এদের কেউ কেউ উদ্ধারকারী ও কেউ লুণ্ঠনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। আমি ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে অনুরোধ করলে সে মুখ ঘুরিয়ে এমনভাবে আমার দিকে একঝলক তাকাল যাতে মনে হয় সে একটা বদ্ধ পাগলকে সতর্কচোখে জরিপ করছে। ড্রাইভার ও ‘সচেতন’ যাত্রীদের অনিচ্ছার চাপে গাড়ির গতি এমন বেড়ে গেল যে আমি আরেকটি দুর্ঘটনার আশঙ্কা করতে লাগলাম। আমার ক্রমাগত চিৎকারময় আদেশ-অনুরোধ, এমনকি গালাগালের ঠেলায় তারা আমাকে দুর্ঘটনাস্থল হতে প্রায় আধামাইল দূরে এক পাকুড় গাছের তলায় টুপ করে নামিয়ে দিয়েই হাওয়ার বেগে আরেকটি বাঁক পেরিয়ে অদৃশ্য হয়ে গেল। আমি উল্টোপথে ছুটতে ছুটতে মনে মনে ভাবলাম, জীবনের সব দৌড় কি শুধু সম্মুখমুখী হয়? জীবনের বাঁক বদলাতে তাকে যে কখনো ফেলে আসা পথেও ছুটতে হয়।

২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

মেহেদীর পরিবার সংক্রান্ত আপডেট

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯


মার্চ মাস থেকেই বিষয়টি নিয়ে ভাবছিলাম। ক'দিন আগেও খুলনায় যাওয়ার ইচ্ছের কথা জানিয়েও আমার বিগত লিখায় কিছু তথ্য চেয়েছিলাম। অনেক ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও মেহেদীর পরিবারকে দেখতে আমার খুলনা যাওয়া হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

×