somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওরা যারা আমাদের "উম্মাদ" বলছে তাদেরকেই বলছি...

০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ওপাড়ের দাদাদের বড্ড অভিমান। তারা পোষ্টের পর পোষ্ট পয়দা করছে আর আমাদের ধুয়ে দিচ্ছে। যে যেভাবে পারছে জ্ঞানও দিচ্ছে। ব্যাপারটা সত্যি পুলকিত বোধ করার মত। এর মধ্যে রাহুল পান্ডা নামের কলকাতার এক দাদাবাবুর একটা লেখা বেশ ঝড় তুলেছে দেখছি। তিনি আমাদের আবেগকে বিরক্তিকর বলেছেন, বলেছেন আমরা উম্মাদের মত আচরন করছি এমন কি, কেন আমরা আমাদের প্রো পিক জাতীয় পতাকার রং-এ চেঞ্জ করেছি তা নিয়েও দাদাবাবুর উড়াধুরা চুলকানী দেখলাম। তিনি বলছেন আমরা খাচ্ছি না, ঘুমোচ্ছি না, তাল ঠুকছি ম্যাচ শুরুর জন্য... তিনি বিরক্ত আমাদের উপর। কতটা বিরক্ত প্রজন্ম তুমি দেখো,

"আমার প্রশ্ন কেন? মানে এত উন্মাদনা কীসের? আজ জিতুন বা হারুন, একইভাবে আপনারা ভারতের কনজুমার থেকে যাবেন। আপনাদের ব্যবসা, বৈদেশিক নীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একইভাবে দিল্লির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে, যা এদ্দিন হয়ে আসছে। মায় টিভিতেও আপনারা তাই দেখবেন যা স্টার জলসা আর জি বাংলা দেখাবে। জিতলে আপনাদের সাপ্রেসড ইগো স্যাটিসফায়েড হতে পারে, বাড়তি কিচ্ছু ছেঁড়া যাবে না। তবু আপনারা পাগল হয়ে যাচ্ছেন।''

প্রিয় রাহুল পান্ডা আপনাকেই বলছি,
অস্বীকার করবো না আমরা বাংলাদেশীরা কেবল ভারত আর পাকিস্থানের সাথে খেলা হলেই আপনার ভাষায় "উম্মাদ হয়ে" যাই। এর কারন কি সেটা আপনিও জানেন কিন্তু বুদ্ধিজীবির মুখোশ পড়ে আছেন বলে সত্যি বলতে পারেন না। প্রতিদিন সীমান্তে পাখীর মত মানুষ খুন করছেন আপনারা । প্রতিদিন কাঁটাতার ধরে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত গড়িয়ে পড়ে জমিনে। আপনারা কতটা সভ্য দেখুন, বানর হত্যার দায়ে আপনার দেশের চলচিত্র অভিনেতা বিচারের মুখোমুখি হয় অথচ যখন প্রতিদিন বিএসএফের নির্বিচার গুলিতে আমার দেশের খেটে খাওয়া মানুষগুলে মরে যায় তখন আপনারা খিচ মেরে বসে বসে ঝিমান।

ক্রিকেট ভদ্র লোকের খেলাই ছিলো আপনারাই নোংরা করেছেন। টাকার গরমে তিন মোড়লের এক মোড়ল হয়েছেন। যে উইকেট আপনাদের ভালো লাগে চাইলে ওটাই আপনাদের। ম্যাচের টাইমটাও আপনারা ইচ্ছেমত সাজাতে পারেন- এইসব আপনাদের কর্পোরেট কাঙ্গালীপনার ইতিহাস। হ্যাঁ আমরা ভারতের কনজুমার, তা দাদা লাভ ছাড়া মাল ছাড়েন?? ট্রানজিট নিয়ে নাটক কম করেন নাই। এইখানেও স্বার্থ আপনার। পানি নিয়েও আপনারা রাজনীতি করেন। তিস্তা নিয়ে তাল-বাহানা করে যাচ্ছেন। ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে যা করেছেন তা নজির বিহীন। হ্যাঁ আমাদের অনেক কিছু ইন্ডিয়া দারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সেখানেও আপনাদের 'ভালো মানুষী' টেকনিক হিসেবে কাজ করে। আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করছি, ১০ বছর আমাদের দেশে সুস্থ রাজনীতির চর্চা হোক দেখবেন আপনারদের দাদাগিরি লাটে উঠে যাবে। লিখে রাখুন, একদিন না একদিন তা হবেই। তখন কার কি ছেঁড়া যাবে সেটা সমগ্র বিশ্ব দেখবে।

আপনাদের টিভি চ্যানেলের অবাধ বিচরন আমার দেশে কিন্তু আমার কোন চ্যানেল আপনি দেখান না। আমার দেশের শিল্পীরা আপনার দেশের ভিসা পেতে ঘাম ছুটিয়ে ফেলে অথচ আপনি চাইলেই পেয়ে যান। আপনারা স্যালুলয়েডে আমাদের ইতিহাস বিকৃত করতে দ্বিধাবোধ করেন না। কি রকম সভ্য মানুষ আপনারা এইসব হচ্ছে তার নিদর্শন দাদা।

হ্যাঁ আমরা সাধারন মানুষরা না হয় একটু বাড়াবাড়িই করলাম কিন্তু বিশ্বকাপের সময় আপনাদের প্রসেন জিত আর রুপম ইসলাম কি করেছেন সেটা আমাদের মনে আছে। আপনাদের ট্রল পেজগুলো আমাদের নিয়ে যে নোংরামি করে তাকে কি বলবেন? সময় করে ক্রিক-ইনফোর পেজগুলোয় চোখ বুলিয়ে আসবেন আর ভালো করে ভারতীয়দের কমেন্টগুলো পড়বেন... তারপর লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে বয়ান দিতে চাইলে দেবেন।

আসলে, সত্যিটা জানি বলেই আমাদের বুকের ভেতরটা ভীষণ জ্বলে। খেলাটা তখন আর কেবল খেলা থাকে না, ওটা তখন তীরের তীক্ষ্ণ ফলার মত আমাদের সমস্ত আবেগের যায়গায়, প্রতিদিন পদদলিত হবার যায়গায়, প্রবঞ্চনার যায়গায়, ঝাঁঝরা বুক দেখবার যায়গায় গিয়ে লাগে, আমরা তখন খুব খুব করে জিততে চাই। খেলাটা হয়ে ওঠে প্রতিবাদের ভাষা। আপনি তা বুঝবেন না। এতোটা দরদ কিংবা মানবিকতা আমাদের প্রতি আপনাদের নেই।

আমরা পৃথিবীর কোন অপশক্তির কাছেই হারি না, মাথা নত করি না... আমরা কেবল হেরে যাই আমাদের নিজেদের অস্থিতিশীল, অসংলগ্ন, আর মন খারাপ করা রাজনীতির কাছে। এই দুঃখ নিয়ে আমরা কার কাছে যাবো? কোথায় যাবো? কোন পথে যাবো? হেঁটে হেঁটে আর কতদূর যাওয়া যায়!

[email protected]
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই মার্চ, ২০১৬ রাত ১:৩৬
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×