( ইসলামের চতুর্থ খলিফা আলী রাদিআল্লাহু তাআ'লা আনহুর সময়কার একটি ঘটনার অনুবাদ)
আলি ইবনে আবি রাফি বললেনঃ
আমি মুসলিমদের কোষাগারের দায়িত্বে ছিলাম এবং একই সাথে খলিফা আলী ইবনে আবি তালিবের লিখক ছিলাম। কোষাগারে তখন একটি মুক্তার হার ছিলো। তাই খলিফার মেয়ে আমার নিকট একটি বার্তা পাঠালেন এবং আমাকে বললেন,
" আমার নিকট খবর পৌঁছেছে যে, মুসলিমদের কোষাগারে একটি মুক্তার হার আছে, এবং সেটা আপনার নিকট আছে। আমি খুব করে সেটা আপনার নিকট হতে ধার করতে চাচ্ছি যাতে ঈদুল আযহার দিন পরতে পারি। "
আমি তাকে বললামঃ হে আমিরুল মুমিনিনের কন্যা ! তিন দিন পর অবশ্যই ফেরত দেওয়ার শর্তে ধার দেয়া যাবে।
সে বললঃ " ঠিক আছে, তিন দিন পর ফেরতের শর্তেই ধার করা হবে। " তাই আমি তাকে সেটা হস্তান্তর করলাম। এরপর আমিরুল মুমিনিন তাকে সেই হার পরতে দেখে চিনে ফেললেন এবং জিজ্ঞেস করলেনঃ " এই হার তোমার কাছে কোথা থেকে আসলো?"
সে উত্তর দিলঃ আমি এটা আলি ইবনে আবি রাফির কাছ থেকে ধার করেছি যেন ঈদের দিন পরতে পারি, এরপর ফেরত দিয়ে দিবো।
অতঃপর আমিরুল মুমিনিন আমাকে ডেকে পাঠালেন এবং বললেনঃ " ইবনে আবি রাফি ! তুমি কি মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছো? "
আমি বললামঃ "মুসলমানদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করা হতে আল্লাহ আমাকে রক্ষা করুন !"
তিনি বললেনঃ "কিভাবে তুমি আমার অনুমতি ছাড়া মুসলমানদের কোষাগারে রাখা হারটি আমিরুল মুমিননের মেয়েকে দিলে? "
আমি বললামঃ "আমিরুল মুমিনিন ! সে তো আপনারই মেয়ে। সে ঈদের দিন পরার জন্য আমার কাছ থেকে হারটি চেয়েছিল। তাই আমি তাকে যথাস্থানে নিরাপদে ফেরত দেওয়ার শর্তে সেই হারটি দেই। "
খলিফা বললেনঃ "আজই তুমি সেটা ফেরত নিবে এবং ভবিষ্যতে যেন এরূপ কাজের পুনরাবৃত্তি না ঘটে।" এরপর বলে উঠলেনঃ
"আমার মেয়ে ধ্বংস হোক ! যদি সে হারটি যথাযথভাবে ফেরত দেওয়ার শর্তে ধার না নিয়ে এমনিই নিতো তবে আমি তার হাত কেটে দিতাম। মেয়েটি উনার কথাটি শুনে বললেনঃ
" হে আমিরুল মুমিনিন ! আমি আপনার মেয়ে, আপনারই অংশ । আমার কি এটা পরার অধিকার নেই? "
তিনি তাকে বললেনঃ " আবু তালিবের মেয়ে ! ন্যায় (হক) থেকে নিজেকে বিচ্যুত করো না। মুহাজির ও আনসারদের সকল নারীরাই কী এই ঈদে এমন হার পরিধান করবে ! "
এরপর আমি ( আলি ইবনে আবি রাফি) তার কাছ থেকে হারটি নিয়ে নিলাম এবং কোষাগারে যথাস্থানে তা রেখে দিলাম।
( আসুন ঐতিহাসিক ঘটনাটি থেকে শিক্ষা গ্রহণ করি এবং ইসলামের স্বার্থে, মুসলিমদের স্বার্থে, মানবতার স্বার্থে ভোগবাদী চেতনা ত্যাগ করে স্ব স্ব দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালনে ব্রত হই।)
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে জুন, ২০২৩ রাত ১২:০১