somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

অতনু কুমার সেন
ভালো মানুষ হিসাবে নিজেকে দাবি করি না কখনোই, চেষ্টা করছি ভালো মানুষ হতে। জানিনা কবে ভালো হতে পারব! আর আমি এমনিতে বেশ ঠাণ্ডা, কিন্তু রেগে গেলে ভয়াবহ! একটু introvert টাইপের। স্বপ্ন দেখতে ভালবাসি, তার যদিও অধিকাংশই ভেঙ্গে যায়! আশার পিঠে আশা বেঁধে তবুও নির্লজ্

এই স্মৃতি গুলোর মধ্যেই তোমাকে খুঁজেফিরি ঠাকুরমা - অনেক বড় হবি দাদুভাই

১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুমিও নাই, আর "রাঙ্গা ভাই" বলে কেউ ডাকে ও না। জানি না, তুমি কোন অজানায় রয়েছ , কিন্তু আমার স্মৃতি গুলোর মধ্যে তুমি এখনও জীবিত !! হটাৎ করে তোমার মতো কোনো বয়স্ক কাউকে দেখলেই, কেমনজানি লাগে। তাদের মধ্যে তোমায় খুঁজে ফিরি, তাদের সাথে কথা বলি এবং আমার খুব ভালো লাগে। মনেহয় ওই বুড়ো মানুষ গুলার মধ্যে তোমার ছোয়া আছে!!

শুধু তোমার টানে, ৫-৭ বছরের একটা ছেলে মিরুখালী থেকে মঠবাড়িয়া তে হেটে হেটে এসেছিলো। দৌড়াতে দৌড়াতে, হাটতে হাটতে, ঐ ছেলেটার পায়ে ঠোস কা পরে যেত, কিন্তু ওই ছেলেটা কোনো ক্লান্তি বোধ করতো না। তার মাথায় একটা জিনিস ই থাকতো, দিনের মধ্যে পৌঁছাতে হবে, সন্ধ্যা হবার পরে হয়তো রাস্তা ঘাট চেনা যাবে না । আর মনের মধ্যে সব সময় একটা ছবি ভাসতো, কখন যে অনেক বড়ো বিশাল একটা চাম্বল গাছ তার চোখে পরবে। কারণ ঐ বিশাল চাম্বল গাছ আলা বাড়িটাতেই তার ঠাকুর মা আর দাদু থাকে। ওইটাই তাদের নিজেদের বাড়ি। যখন দাদুর কোলে মাথা রেখে রামায়ণ এর গল্প শুনতাম আর ঠাকুরমা তুমি আমার পা দুয়ে মুছে, পায়ে মলম দিয়ে দিতা তখন অনেক বেথা লাগতো। আর তুমি বলতা তোমার মামা বাড়ি একটা খবর দেয়া লাগবো তারা অনেক চিন্তা করতাছে তোমারে নিয়া। তুমি তো মনে হয় কাউরে কিছু না বইলা আইছো, পরের বার বৌমা রে কমু তোমারে লগে না নিতে। সাথে দাদু বলতো, আমার মাথায় ই আসে না যে, - কিভাবে এই টুকু মানুষ ১০ -১২ মাইল পথ হাইটা আইছে। সাথে দাদু আমার মাথায় হাত বুলাইতো আর কইতো "বাঁইচ্যা থাক পাগলা অনেক বছর, অনেক বড় হবি দাদুভাই" !! (দাদু আমায় আদর করে পাগলা ডাকতো , যদিও "অতনু কুমার সেন" নাম টা আমার দাদুভাই এর ই দেয়া)।

আমার ছোট ছোট প্রয়োজন গুলো কে আমার ঠাকুরমা খুব প্রায়োরিটি দিতো, সুন্দর একটা সিপ্ দিয়ে মাছ ধরার ইচ্ছা আমার অনেক দিনের ই ছিল। কিন্তু মনের মতো একটা টুনি বাঁশ খুঁজে পাছিল্লাম না। অবশেষে নিরু জেঠুর কাছ থেকে অনেক অনুরোধ করে, তার বেড়া বাধাঁর প্রয়োজনীয় টুনি বাঁশ থেকে, আমি দুই টুকরা নিয়ে আসি। আমার গৃহ শিক্ষক এবং ঠাকুরমার সহযোগিতায়, জোড়া/তালি/ঘষা/মাজা করে, অনেক সুন্দর একটা বড়শি এর সিপ্ তৈরি করি। এবং মাছ ধরতে যাই শিকদার বাড়ি। আমার স্পষ্ট মনে আছে, আমি অনেক বড়ো বড়ো কই মাছ পাইতেছিলাম (দুই কুড়ি তো হবেই ) আমার মাছ ধরার হাড়ি প্রায় ভরে গেছিল। কিন্তু আমার পাশের মিঠু দাদা এন্ড জসিম ভাইয়া তেমন মাছ পাচ্ছিল না। জসিম ভাই এবং মিঠু দাদা বুদ্ধি করে আমার সিপ্ নিয়ে মাছ ধরতে চাইলো। আমি দিতে অস্বীকার করায় আমার সিপ্ টা ভেঙ্গে ফেলে। আমি কাঁদতে কাঁদতে ঠাকুরমার কাছে গিয়ে নালিশ করি। ঠাকুরমা বলে এখন তো সন্ধ্যা হইসে ভাই, কালকে আমি মিঠুগো বাড়ি যাইয়া অর মা এর কাছে নিলিস দিমু। রাতে মাছ গণনা করার পরে, ঠাকুরমা আমার মাকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলতেছিলো, কি কৈছিলা বৌ - অতবড় পাতিল নেবার দরকার নাই , এখন কি হইলো " তুমি তো রাঙ্গা ভাইরে কোনো দাম এ দেও না, এই দেখো দুই কুড়ি এর বেশি বড় বড় কোই মাছ ধরছে!! লগে একটা হউল মাছ ও আছে। পাজি মিঠু যদি হিংসার ঠেলায় আমার রাঙা ভাই এর সিপ্ টা না ভাঙ্গতো তাইলে আরো বেশি মাছ পাইতো। পরের দিন সকাল বেলাতে বৃষ্টির মধ্যে ছাতি মাথায় দিয়ে মিঠু দাদা দেড় বাড়িতে গেছিলাম। এবং মিঠু দাদার নিজের সিপ্ টি আমায় দিয়ে দেয়। অনেক দিন আগের কথা কিন্তু আমার সবকিছুই মনে আছে। এইগুলো এখন শুধুই মধুর স্মৃতি, এবং এই স্মৃতি গুলোর মধ্যেই তোমাকে খুঁজেফিরি ঠাকুরমা। এখন কার ঠাকুর মারা হয়তো বৃষ্টির মধ্যে তাদের নাতি এর জন্য এই সামান্য কারনে কোনো জায়গায় যাবে না।


গতকাল আমার ঠাকুর "মা" এর ষষ্ঠতম মৃত্যুবার্ষিকী ছিল।





সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০১৯ রাত ১:৫৬
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আপনি কি পথখাবার খান? তাহলে এই লেখাটি আপনার জন্য

লিখেছেন মিশু মিলন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১০:৩৪

আগে যখন মাঝে মাঝে বিকেল-সন্ধ্যায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতাম, তখন খাবার নিয়ে আমার জন্য ওরা বেশ বিড়ম্বনায় পড়ত। আমি পথখাবার খাই না। ফলে সোরওয়ার্দী উদ্যানে আড্ডা দিতে দিতে ক্ষিধে পেলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×