এক সময় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বিভিন্ন পাঠচক্রে অংশগ্রহন করতাম। এই সব চক্রের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বসাহিত্যের সাথে সবার পরিচয়ের মাধ্যমে অংশগ্রহনকারীদের চিন্তা ও মননের উন্নয়ন ঘটানো। এরই ধারাবাহিকতায় এক পাঠচক্রের শেষে শ্রদ্ধেয় আব্দুল্লা আবু সাঈদ স্যার সবাইকে আলাদাভাবে ডেকে প্রশ্ন করলেন ভবিষ্যতে কে, কি হতে চায়? অনেকে অনেক উত্তর দিয়েছিল, কিন্তু ব্যাতিক্রম ছিল মাসুম বিল্লাহর উত্তর। সে বলেছিল রাজনীতিবিদ হতে চায়। স্যার তাকে জিজ্ঞাসা করেছিল: "কেন তোমার বা তোমার বাবার কি অনেক টাকা?" মাসুম বিল্লাহ ব্যাপারটা বুঝতে না পেরে আমাদের এসে বলল। আমরা তাকে প্রশ্ন করেছিলাম কেন সে রাজনীতিবিদ হতে চায়? সে উত্তর দিয়েছিল; " আনেক আনেক টাকা কামানোর জন্যে"। আমার তখন তাকে বুঝিয়ে ছিলাম রাজনীতি টাকা কামানোর জন্যে নয়, জনগণের সেবা করার জন্যে। মাসুম বিল্লাহ ছিল সৎ এবং সরল চিন্তার মানুষ, তাই আমাদের কথা মেনে নিয়েছিল এবং মনস্থির করেছিল উকিল হবে। আমরা তাকে সমর্থন করেছিলাম এবং বলেছিলাম তাও ভাল, অন্ততঃ রাজনীতিবিদদের মত দেশের তো ক্ষতি করবে না।
আজ আবার মাসুম বিল্লাহর কথা মনে পড়ছে। আজ যদি মাসুম বলত সে রাজনীতিবিদ হবে, তাহলে আমি তাকে প্রশ্ন করতাম; "তুমি কি বেহায়া, বেলাজ, লেজকাটা, স্মৃতিভ্রষ্ট, স্বার্থপর, একগুয়ে, নীতিহীন, লোভী, জঘন্য মিথ্যুক আর চরম চাটুকার হওয়ার যোগ্যতা রাখো? আজ হয়তো সাঈদ স্যারও ভাবছেন রাজনীতিবিদ হওয়ার জন্যে পয়সাওয়ালা হওয়ার দরকার নাই, উল্লেখিত গুনাগুন সম্পন্ন হলেই চলবে। তা না হলে শত কোটি টাকার মালিকের ত্রানের টিন আত্নসাৎ করার কি দরকার? পনের বছর ধরে একে অপরের কুৎসা গেয়ে, একে অপরের সাথে মারামারি কাটাকাটি করে, দেশের চরম ক্ষতি করে এখন বলছেন সম্মিলিত ভাবে আন্দোলনের কথা- তাও দেশের স্বার্থে নয়, নিজেদের স্বার্থেন জন্যে। আমি তাদের প্রশ্ন করতে চাই কেন তারা দেশের উন্নয়ন সংশ্লিষ্ঠ কর্মকান্ডে একসাথে কাজ করতে পারেন না, কেন তারা দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে একমত হতে পারেন না, কেন একে অপরের উন্নয়ন কর্মকান্ডে বাধা দেন?- উত্তর হয়তো আসবে একটাই- তারা সকলেই উপরোল্লেখিত গুনের অধিকারী।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



