
ছবি - youtube.com
চলচ্চিত্র অভিনেতা আরিফিন শুভ - শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনিভিত্তিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করে এক টাকা পারিশ্রমিক নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন এবং এই তৈল মর্দনে খুশী হয়ে শেখ হাসিনা উপুর করে ঢেলে দিয়ে তাকে রাজউকের পূর্বাচল নিউটাউন প্রকল্পে একটি ১০ কাঠার প্লট উপঢৌকন হিসাবে দিয়ে দেন।
অন্যদিকে বক্তিগত রাগ-বিরাগের সাথে সাথে ক্রোধে অন্ধ হয়ে হিংসার বশবর্তী হয়ে এবং অহংকারের বশে মুরগি চুরির মত অপরাধে কিংবা শুধু তাহার রাজনৈতিক সমালোচনা করার জন্য অথবা বক্তিগত হিংসা চরিতার্থ করার জন্য গুম-খুন-হত্যা-ফাসি সহ এমন অনেক অপরাধ করেছেন,যা আইনত অপরাধ। তবে সেখানে আইন ভেসে গিয়েছে তাহার "ষড়-রিপু'র" জোয়ারে। আমরা যদি হাসিনা সরকারের ক্ষমতা ও তাহার প্রশাসনিক কাঠামো পর্যালোচনা করি তাহলে সর্বক্ষেত্রে "ষড়-রিপু'র'' জয়-জয়কারের সাথে সাথে দেখি দুর্নীতিবাজদের রাজত্ব ও কর্তৃত্ব।রাষ্ট্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় দুর্নীতিবাজদের পুরস্কৃত করার এক অলিখিত রীতি চালু হয়েছিল শেখ সালতানাতে তথা হাসিনা রাজ্যে।
"ষড়-রিপু"(কাম-ক্রোধ-লোভ-মোহ-অহংকার (মদ) ও হিংসা) তে আকন্ঠ নিমজ্জিত শেখ হাসিনা ও তাহার সরকারের প্রশাসন, কিচেন ক্যাবিনেট ছিল দেশের সেরা দুর্নীতিবাজদের সমন্বয়ে গড়া।শেখ হাসিনার সরকার গত দেড় দশকে দেশে একচ্ছত্র আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে আইন-শিক্ষা-বিচার-প্রশাসন সহ সকল শ্রেণী পেশার কর্মকর্তাদের নানা অনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দিয়ে তাদের ব্যবহার করেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে সাংবিধানিক-রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানগুলো আমলাদের পাশাপাশি চলে যায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। এজন্য পুরস্কার বা টোপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে অর্থ, ক্ষমতা, প্লট ও প্রাইজ পোস্টিং। এসবের মাধ্যমে বাংলাদেশে কায়েম হয়েছে এক ধরনের ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা, যা পুরোপুরি কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছিল শেখ হাসিনার ক্ষমতার বলয়ে।
শেখ সাদী বলেছিলেন,''এমন একদিন আসবে যেদিন মূর্খরা উদ্ভট আদেশ জারি করবে। নির্বোধরা তাদের নির্বুদ্ধিতার জন্য গর্ব অনুভব করবে আর পন্ডিতেরা তাদের পান্ডিত্যের জন্য অনুশোচনা বোধ করবেন এবং দুর্নীতিপরায়ণরা তাদের দুর্নীতির জন্য উল্লাসে নৃত্য করবে''। বাংলাদেশে সেই সময় এসেছিল শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে। যার বিরুদ্ধে সংঘটিত হয়েছিল ২০২৪ সালে ছাত্র-জনতার বিপ্লব।
গত ৩৬ শে জুলাই তথা ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার বিপ্লব তথা গণঅভ্যুত্থানের মুখে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। অপমানজনকভাবে দেশ থেকে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। এটি যেন অমোঘ-অনিবার্য পরিণতি ছিল হাসিনার জন্য।শেখ হাসিনার কঠোরভাবে বিরোধীমত দমন ও স্বৈরশাসনের ফলে দেশ-বিদেশের সবাই জানত যে কোন সময় সরকারের বারোটা বাজবে এবং সাথে সাথে আওয়ামীলীগেরও সর্বনাশ হবে। শেখ হাসিনা,আওয়ামীলীগ ও তাহার প্রশাসন পরিণত হয়েছিল গণশত্রুতে। এদের প্রতি সাধারণ মানুষের ক্ষোভ-ঘৃণা আক্রোশে রূপ নিয়েছিল এবং গণমানুষের নিকট আওয়ামীলীগ এক গালি হিসাবে প্রতিভাত হচছিল। আওয়ামী লীগের নেতারাও নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনায় মহাবিপর্যয়ের শঙ্কায় উদ্বিগ্ন থাকতেন। দল-প্রশাসন-সরকারের কিছু দুর্বৃত্ত, লুটেরা, চাটুকারের জন্য যে আওয়ামী লীগ সর্বনাশের পথে এটা কারোরই অজানা ছিল না। ১৯৭১ সালে বাংলদেশের মুক্তিযুদ্ধ ছিল ২২ পরিবারের লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে। ২০২৪ সালের বাংলাদেশের দ্বিতীয় স্বাধীনতা সংগ্রাম ছিল আওয়ামীলীগে ও তাহার সুবিধাভোগী কিছু মানুষের লুণ্ঠনের বিরুদ্ধে। গত ১৬ বছর দেশটা সাধারন জনগণের ছিল না। এটা হয়ে গিয়েছিল শেখ সালতানাত তথা হাসিনার পারিবারিক সম্পদ এবং দেশটা দখল করেছিল কিছু আওয়ামী লীগের লুটেরা দৈত্য তথা চাটার দল। এই লুটেরা দৈত্যদের কথা সবাই জানত কিন্তু কেউ মুখ খুলতে সাহস পেত না। দেশে চলছিল অলিখিত লুটতন্ত্র,যেন হরিলুটের মহোৎসব।সিভিল প্রশাসন-পুলিশ-বিচার বিভাগ কোথায় ছিল না দুর্নীতিবাজদের দাপট? দুর্নীতিবাজদের হাতেই যেন সমর্পিত হয়েছিল বাংলাদেশ '' উপুর করে দে মা চেটেপুটে খাই''- এই নীতিতে চলছিল শেখ হাসিনার অপশাসনে শৃংখলিত বাংলাদেশ।
শেখ হাসিনার উপুর করে ঢেলে দেওয়ার ফলে বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে দেশে জন্ম নিয়েছে হাজারো কামেল-পীর-আওলিয়া (তাহার মরহুম বাবার ভাষায় চাটার দল) যারা দেশটাকে চেটেপুটে খেয়ে ফোকলা বানিয়েছে মনের মাধুরী মিশিয়ে আর নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছে আমেরিকা-দুবাই-কানাডা কিংবা মালয়েশিয়া-সিংগাপুরে। আর সেই সব চেটে-পুটে খাওয়াদের মাঝে গুটিকয়েক হলো-
১।ওবায়েদুল কাদের ওরফে কাউয়া কাদের (আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী) - ওবায়দুল কাদের রেকর্ড তিনবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন কীভাবে? দুর্নীতিতে পারদর্শী হওয়ার কারণে। ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই কাদের মির্জা একবার বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে সরব হলেন। ওবায়দুল কাদের এবং তার স্ত্রীর দুর্নীতির ফিরিস্তি দিতে থাকলেন ফেসবুকে। বিপদ দেখে কাদের ছোট ভাইকে বাড়িতে ডেকেছিলেন। কত টাকায় শেষ পর্যন্ত ছোট ভাইয়ের মুখ বন্ধ করেছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক তা অবশ্য জানা যায়নি।
২। আসাদুজ্জামান খান কামাল (সাবেক তিনবারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী )- পুলিশে নিয়োগের দুর্নীতির সাথে সাথে দুর্নীতির শিরোমনি।
৩। আনিসুল হক (সাবেক আইনমন্ত্রী) - আইনের মারপ্যাচে ও ক্ষমতার অপব্যবহারে আদালত-বিচার বিভাগে নিয়োগের মাধ্যমে। সাথে সাথে দুর্নীতি এবং অবৈধ প্রেম প্রণয়ের জন্য বিখ্যাত।
৪। দীপু মনি (ভেরাইটিজ মন্ত্রী/ তিন মেয়াদে ভিন্ন তিনটি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী) - ক্ষমতার অপব্যবহার করে দীপু মনি নিজে ও তার স্বজনরা জড়িয়ে পড়েন দুর্নীতিতে। নদী কমিশনের চেয়ারম্যান ডা. দীপু মনির বিরুদ্ধে ছিল নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ । দীপু মনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে তার ভাই টিটুর মাধ্যমে নিয়োগ বাণিজ্যের এক বিশাল রাজত্ব কায়েম করেন। সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি ও কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের বিষয়টি। শিক্ষা প্রশাসনে প্রতিটি বদলিতে তার ভাইয়ের হাতে ছিল পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। সর্বনিম্ন দুই লাখ থেকে সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকায় বেচাবিক্রি হতো শিক্ষা প্রশাসনের নানা পদ।অন্যদিকে ‘২ কোটি দাও ভিসি হও’- এমন একটি কথা চালু ছিল শিক্ষা আপা দীপু মনির সাম্রাজ্যে (শিক্ষা মন্ত্রণালয় ) লিংক - https://www.ittefaq.com.bd/697191/
৫।সালমান এফ রহমান ( শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা) - আওয়ামী দূর্নীতির শিরোমণি ছিলেন সালমান । আওয়ামী লীগে তিনি ছিলেন সবচেয়ে ক্ষমতাবান এবং বাংলাদেশে বেনামি ঋণের জনকও ছিলেন সালমান এফ রহমান।আওয়ামী শাসনামলে সালমান হয়ে উঠেছিলেন সরকারের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি। অনেকেই তাকে ‘উপ-প্রধানমন্ত্রী’ বলতেন। কে মন্ত্রী হবে, কে সচিব হিসেবে কোন মন্ত্রণালয় পাবে তা সিদ্ধান্ত নিতেন সালমান।নতুন প্রকল্প মানেই নিজের সাথে সাথে হাসিনা পরিবারের বড় অঙ্কের কমিশন । ক্ষমতার আনুকূল্য গ্রহণকারী ও স্বজনতোষী এবং দেশ-ব্যবসা-বাণিজ্য/লুটপাটকারী।এ যেন ‘জাওয়ান’ সিনেমার ব্যবসায়ী ‘কালির’ বাংলাদেশ সংস্করণ। যেখানে সরকার পুতুল মাত্র। রাষ্ট্র চালায় ‘কালি’। বাংলাদেশ যেন চালাতেন সালমান। ব্যবসা-বাণিজ্য ব্যাংক-বিমা, প্রশাসন-মন্ত্রী সবকিছু প্রকাশ্যে নিয়ন্ত্রণ করতেন এই ঋণ খেলাপি মাফিয়া। সরকারের কাজ ছিল শুধু লুটেপুটে খাওয়ার ব্যবস্থা করা। লিংক - https://www.ittefaq.com.bd/696995/
৬। ড. হাছান মাহমুদ (সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী) - তাহার দুর্নীতির ফিরিস্তি দিয়েছিলেন স্বয়ং তাহার রাজনৈতিক মাতা শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় তিনি বলেছিলেন, ‘তুমি কী ছিলে এখন কী হয়েছ তাকি জানি না। কত টাকার মালিক হয়েছ তুমি? কত টাকা দুর্নীতি করেছ সব জানি''। তাহার মায়ের কাছে দুর্নীতিবাজের স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকেই তাহার ক্যারিয়ারের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়। ড. হাছান ২০১৮ সালে তথ্যমন্ত্রী হলেন, ২০২৪ সালে হন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। আওয়ামী লীগের এক নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। এ যেন অর্ধেক রাজ্য আর রাজকন্যা পাওয়ার মতো। দুর্নীতিবাজ হওয়ার রাষ্ট্রীয় পুরস্কার।
৭। শাহরিয়ার আলম (সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী)- চেয়েছিলেন বিএনপির রাজনীতি করতে। সেখানে জায়গা না পেয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিলেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হয়ে যেন পেলেন আলাদিনের চেরাগ। কথায় কথায় সজীব ওয়াজেদ জয় আর ববির নাম ভাঙাতেন। একইভাবে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তাঁর পরিবারের নাম ভাঙিয়ে কোটি টাকা লুটপাট করেছেন।
৮। জাহিদ মালেক (সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ) - আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও তাঁর পরিবারের নাম ভাঙিয়ে স্বাস্থ্য খাতে হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছেন জাহিদ মালেক। জাহিদ মালেকের বাবা ছিলেন স্বৈরাচার এরশাদের দোসর। ২০১৪ সালে তাকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রতিমন্ত্রী করা হয়। ২০১৮ সালে তিনি হন পূর্ণমন্ত্রী। পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় পরিণত হয় দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে। সব ফাইল তিনি বাড়িতে নিয়ে যেতেন। তার ছেলে রাহাত মালিক কেনাকাটার টেন্ডারে সিদ্ধান্ত দিতেন। সাবেক মন্ত্রীর বারিধারার বাসা ছিল স্বাস্থ্যের ঠিকাদারদের সান্ধকালীন ঠিকানা। তার অবাধ লুণ্ঠনে কেউ বাধা দিলে তাকে তাৎক্ষণিক বদলি করে দেওয়া হতো। বৈঠকে তিনি ফোনে দেখাতেন, গত রাতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কতক্ষণ কথা হয়েছে। জাহিদ মালেক যেমন শেখ হাসিনার নাম বিক্রি করে লুণ্ঠন করতেন, তেমনি সাবেক স্থানীয় সরকার মন্ত্রী শেখ রেহানার নাম ভাঙাতেন কথায় কথায়। যে কোনো টেন্ডার বিল আটকে দিতেন। সরাসরি বলতেন, ‘টাকা দিয়ে মন্ত্রী হয়েছি ভাই।’
৯। তাজুল ইসলাম (স্থানীয় সরকার মন্ত্রী)- কোটা পদ্ধতির সুবিধাভোগী এবং টাকা ছাড়া ফাইল না নড়ানো মন্ত্রী।
১০।লোটাস কামাল (সাবেক অর্থমন্ত্রী ও ডিমেনশিয়ার রোগী)- কোনো কাজ না করেই পাঁচ বছর অর্থমন্ত্রী হিসেবে থেকে গেলেন। এই সময় দেশের অর্থনীতির বারোটা বাজলেও লোটাস কামাল ও তার স্ত্রী কন্যার সম্পদের স্ফীতি ঘটেছে বিপুলভাবে।
১১। জেনারেল (অব.) আজিজ আহমেদ ( প্রাক্তন সেনাপ্রধান) - নিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য দুর্নীতি।শেখ হাসিনার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার কাজে সেনাবাহিনীর একটি অংশকে আজিজ বাহিনীতে পরিণত করা হয়েছিল।
১২। আহমেদ কায়কাউস (প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ) - প্রশাসন।
১৩। বেনজীর আহমেদ (পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক ) - ক্রসফায়ার ও দলীয় স্বার্থে পুলিশকে ব্যবহার। তাকে বলা হতো বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘সবচেয়ে প্রভাবশালী আইজিপি’। র্যাবের ডিজি থাকাকালে ক্রসফায়ারে বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী হত্যার বহু রেকর্ড আছে তার। দূনীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক।
১৪। আছাদুজ্জামান মিয়া ( সাবেক কমিশনার - ডিএমপি) - ডিএমপিতে ‘ঘুষ’ এবং বদলি বাণিজ্যে গড়েছেন সম্পদের পাহাড় ।
১৫। কবির বিন আনোয়ার (মন্ত্রিপরিষদ সচিব) - প্রশাসন।
১৬।এইচটি ইমাম (শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা )- রাখঢাক ছাড়াই প্রশাসনের ব্যাপক দলীয়করণ।আওয়ামী লীগের শাসনে দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থাকে দলীয়করণ ও রাজনৈতিকভাবে ব্যবহারের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন মরহুম হোসেন তৌফিক ইমাম ।
১৭। ফজলে কবির (বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর) - ব্যাংক ও আর্থিক ।
১৮। শামিমা নূর পাপিয়া (যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক) - রাজনীতি।
১৯। ইসমাঈল হোসেন সম্রাট (যুবলীগের সাবেক নেতা) - ক্যাসিনো ।
২০। খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া (যুবলীগের সাবেক নেতা) - রাজনীতি।
২১। এবিএম খায়রুল হক (সাবেক প্রধান বিচারপতি) - তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল এবং ‘অবৈধ ও অসাংবিধানিক’ ঘোষনা এবং দেশে সঠিক-নিরপেক্ষ নিবাচনের পথ রুদ্ধ করা।
২২। তারিক আহমেদ সিদ্দিক (মেজর জেনারেল অব.) - সামরিক বাহিনীতে রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটান ও ব্যাপক দলীয়করণ করেন । পাশাপশি গুম-আয়না ঘর বিশেষজ্ঞ। ২০১৯ সালে আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে উঠে আসে তারিক আহমেদ সিদ্দিকের গুমকর্মের কথা।
২৩। কাজী রকিব উদ্দিন আহমদ (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার) - সুষ্ঠু নির্বাচনী সংস্কৃতি ধ্বংসের কারিগর ও তা ধ্বংস ।
২৪। কেএম নুরুল হুদার (সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার) - বিতর্কিত জাতীয় সংসদ থেকে স্থানীয় সরকার পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনের আয়োজন।
২৫। কাজী হাবিবুল আউয়াল (বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার) - ১ শতাংশ ভোটেও নির্বাচনী বৈধতার ঘোষণা এবং ২৮ শতাংশ ভোট হঠাৎ করে ৪১ শতাংশ ঘোষণা করা ।
২৬। মো. আবুল কালাম আজাদ (প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ) - বিদ্যুৎ খাতের অব্যবস্থাপনা ও আর্থিক চাপ তৈরির সাথে সাথে বাণিজ্যিক ঋণে নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সঙ্গে চুক্তিতে রাষ্ট্রীয় স্বার্থের পরিবর্তে উদ্যোক্তাদের মুনাফাকে অগ্রাধিকার দেয়া।
২৭। মো. শহীদুল হক (পররাষ্ট্র সচিব) - ভারতের সঙ্গে নতজানু পররাষ্ট্রনীতি বাস্তবায়নে বড় ভূমিকা।
২৮। মাসুদ বিন মোমেন (পররাষ্ট্র সচিব) - প্রশ্নবিদ্ধ আওয়ামী সরকারের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের ব্যাপক প্রয়াসের সাথে সাথে আনুগত্যের সঙ্গে সরকারের পররাষ্ট্র এজেন্ডা বাস্তবায়ন।
২৯। তোফাজ্জল হোসেন মিয়া (প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ) - বিরোধী দমন-পীড়ন ও হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী ও নীতিনির্ধারনকারী।
৩০। জিয়াউল আহসান (মেজর জেনারেল - অব্যাহতিপ্রাপ্ত - এনটিএমসি) - ফোনে আড়িপাতা,গুম।
৩১। এ কে এম শহীদুল হক ( সাবেক আইজিপি ) - বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুম। ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত আইজিপি শহীদুল হক দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের এক ধুমতাল তৈরি করেন।
৩২। মনিরুল ইসলাম ( সাবেক এসবি প্রধান) - বিরুদ্ধ মত দমন ও মানবাধিকার লংঘন।
৩৩।হারুন-অর-রশিদ সাবেক ডিবি প্রধান ও পরিচালক ভাতের হোটেল) - বিরুদ্ধ মত দমন ও মানবাধিকার লংঘনের সাথে সাথে ভাতের হোটেলের জমজমাট ব্যবসায় কোটিপতি।
৩৩।আব্দুর রউফ তালুকদার (সাবেক গভর্নর ও অর্থ সচিব) - আর্থিক খাতে বর্তমান বিশৃঙ্খলা ও ব্যাংক লুটপাটে সহায়তাকারী এবং এস আলমের ‘ক্রীতদাস’।
৩৪।মহিউদ্দীন খান আলমগীর (সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) - শেয়ারবাজার কারসাজি ও ফারমার্স ব্যাংক লুটেপুটে হাজার কোটি টাকার মালিক।
৩৫। ফারুক খান -( সাবেক মন্ত্রী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়) - বিমান ডুবলেও তাহার টাকার পাহাড় বেড়েছে সময়ের সাথে পাললা দিয়ে।
৩৬।এস আলম - (ব্যবসায়ী) - ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও লাখো কোটি টাকা।
৩৭। চৌধুরী নাফিজ সরাফাত (হাসুর ভাইপো,আ হ ম মুস্তফা কামালের ভাতিজা ও আইজিপি বেনজীর আহমেদের ‘কাজিন) - রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যাঁর উত্থান - পদ্মা ব্যাংক ও শেয়ার বাজার খাদক।
৩৮। রন হক-রিক হক (ব্যবসায়ী - শিকদার গ্রুপ) - ন্যাশনাল ব্যাংক খাদক।
৩৯।হাজি সেলিম (সাবেক সংসদ সদস্য ) - বেশুমার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন।
৪০।শাহ কামাল-(সাবেক সিনিয়র সচিব) - বাসায় যাহার টাকার গুদাম।
৪১।এনু-রুপন ( বহিষ্কৃত আওয়ামী লীগ নেতা ও ক্যাসিনো কারবারি ) - পুরান ঢাকার দুই ভাই এনামুল হক ভূঁইয়া ও রুপন ভূঁইয়ার দুই বাসা থেকে নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছিল প্রায় ৩২ কোটি টাকা। একই সঙ্গে, পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকার এফডিআরের কাগজ এবং এক কেজি স্বর্ণের সাথে ১২৮টি ফ্ল্যাট, ছয়টি গাড়ি ও কয়েক বিঘা জমির খোঁজ মিলেছিল।
৪২। নসরুল হামিদ বিপু ( সাবেক বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি মন্ত্রী ) - বিপুর ভয়াবহ অনিয়ম-দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে বিদ্যুৎ খাত যত খারাপ হয়েছে ততই ফুলে-ফেপে উঠেছে বিপুর সম্পদ।লিংক- Click This Link
৪৩। মো. জাহাঙ্গীর আলম (শেখ হাসিনার পিয়ন) - শেখ হাসিনার ঘোষনা অনুযায়ী তাহার বাসার পিয়ন ৪০০ কোটি টাকার মালিক
তাছাড়া -
৪৪। শাজাহান খান- (সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী) ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি করে সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তাঁকে ২০১৪ সালে তলব করেছিল দুদক।
৪৫। অসীম কুমার ( উকিল দম্পতি )- নেত্রকোনা-৩ আসনের সাবেক এমপি অসীম কুমার উকিল ও তাঁর স্ত্রী যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি অপু উকিলের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগে বলা হয়, অবৈধ সম্পদের অর্থে নির্মিত ঢাকার উত্তরার ১০ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোডের ১৫ নম্বর বাড়ির ১৪টি ফ্ল্যাট ভাড়া দিয়েছেন তাঁরা। ঢাকার ধানমণ্ডি ১১ নম্বর রোডের ৪০ নম্বর বাড়ির তিনটি ফ্ল্যাট তাঁদের। নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া পৌরসভার সাউদপাড়ায় বিলাসবহুল বাড়ি করেছেন। এ ছাড়া নেত্রকোনা পৌরসভার কাটলী মৌজায় মূল্যবান জমি ও ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনে বাড়ি এবং দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডায় তাঁদের দুই ছেলের বাড়ি রয়েছে।
৪৫। মোস্তাফিজুর রহমান (সাবেক মন্ত্রী) -সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের হলফনামা ও বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, তাঁর স্ত্রীর নামে ২০ একর জমি, দিনাজপুর শহরে একটি বাড়ি, নিজ এলাকায় বহুতল ভবন, খামারবাড়ি, স্ত্রী-কন্যা-ভাইয়ের জন্য আলাদা গাড়ি এবং শিবনগর ইউনিয়নের ফকিরপাড়ায় প্রায় ২৪ একর জমির ওপর খামারবাড়ি রয়েছে।
৪৬। জান্নাত আরা হেনরী ( সাবেক এমপি) - হেনরীর বিরুদ্ধে শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগে বলা হয়, শুধু ২০২০-২১ অর্থবছরেই তিনি প্রায় ৩২ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন। নিজ জেলা সিরাজগঞ্জের বাইরেও তাঁর অঢেল সম্পদ রয়েছে। সিরাজগঞ্জে বানিয়েছেন রাজকীয় ‘হেনরী ভুবন’।
৪৭। আশরাফুল আলম (সাবেক উপপ্রেসসচিব) - আশরাফুল আলম খোকন বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। তাঁর নামে-বেনামে অঢেল সম্পদ রয়েছে। এরই মধ্যে তাঁর নামে চারটি প্রাইভেট গাড়ির তথ্য রয়েছে। গাড়িগুলো হচ্ছে ল্যান্ড ক্রুজার (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৭-৪১৭৭), টয়োটা রাশ (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১৮-২৫৭২), মিতসুবিশি পাজেরো (ঢাকা মেট্রো-ঘ-১১-০০৭৭) ও কার স্যালুন (ঢাকা মেট্রো-গ-৩৫-৭৬২৭)। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খোকন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপপ্রেসসচিব পদ থেকে অব্যাহতি নেন।
৪৮। শ ম রেজাউল করিম ( সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ও ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা ) - ১৯৬২ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারী শ ম রেজাউল করিম জন্ম গ্রহণ করেন । সে হিসাবে মুক্তিযুদ্ধের শুরুর সময় তাহার বয়স ৯ বছর ১ মাস। সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৭১ সালে যাদের বয়স অনুন্য ১২ বছর ৬ মাস ছিল, তারাই মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে বিবেচিত হবে।সেই নিয়ম ভংগ করে জামুকা‘বিশেষ বিবেচনায়’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমকে বীর মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি দিয়েছে। শ ম রেজাউল করিম প্রথমবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় দফায় তিনি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী ছিলেন। এই দুটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনকালে তিনি ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। তার নামে-বেনামে বরিশালের নাজিরপুর, পিরোজপুর ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় অনেক স্থাবর সম্পদ রয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে- রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় বহুতল বাড়ি, তোপখানায় মেহেরবা প্লাজায় অ্যাপার্টমেন্ট, পূর্বাচলে একাধিক প্লট। মন্ত্রী হওয়ার পর প্লট নেওয়ার ক্ষেত্রেও তার বিরুদ্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক। তার বাবার নামে সরকারি প্লট বরাদ্দ নিয়ে পরে নিজের নামে লিখে নিয়েছেন। তার মুক্তিযোদ্ধা সনদ জাল এবং একাধিক ফ্ল্যাট ও বাড্ডায় বাড়ি থাকার পরও রাজউকের প্লট নেওয়ার তথ্যও পাওয়া গেছে। এ ছাড়া রেজাউল করিম তার বন্ধু সুখরঞ্জনের নামে রাজউকের ১০ কাঠার একটি প্লট নিয়ে ভাইয়ের নামে আমমোক্তারনামা দলিল করে ভোগ দখল করছেন মন্ত্রী। প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থাকাকালে তিনি প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয় এবং প্রশিক্ষণের নামে ২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন। তার স্ত্রী-সন্তান ও আত্মীয়স্বজনের নামেও দেশে-বিদেশে বিপুল সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে।
লিংক- https://www.prothomalo.com/bangladesh/
৪৯। বেগম মন্নুজান সুফিয়ান ( সাবেক শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী) - কামলা তথা শ্রম দিয়ে শ্রমিকের ভাগ্যের পরিবর্তন না হলেও শ্রমমন্ত্রী হয়ে মন্নুজান সুফিয়ান ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। খুলনার বিভিন্ন এলাকায় নামে-বেনামে তার বিপুল সম্পদ রয়েছে। নিয়োগ-বদলি ও পদোন্নতি বাণিজ্য করে তার ছোট ভাই সাহাবুদ্দিন, সাহাবুদ্দিনের মেয়ে শামীমা সুলতানা ও বোনের ছেলে ইয়াসির আরাফাত কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। লিংক - Click This Link
৫০। আবদুস সোবহান গোলাপ (আওয়ামী লীগের সাবেক প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক)- গোলাপ নিউইয়র্কে মোট ৯টি প্রপার্টি বা সম্পত্তির (ফ্ল্যাট বা বাড়ি) মালিক। ওইসব সম্পত্তির মূল্য ৪০ লাখ ডলারের বেশি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৩ কোটি টাকা। তাছাড়াও তাহার বিরুদ্ধে রয়েছে অর্থ পাচারের অভিযোগ। লিংক - Click This Link
এসব চেটে-পুটে খাওয়া তথা চাটার দলকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে দরবেশ বাবার ( সালমান এফ রহমানের ) মত একই জবাব মিলবে। তা হলো যা কিছু হয়েছে- করেছি সবই শেখ হাসিনা তথা মায়ের চাওয়া ও দোয়া অনুসারে। কারন- মায়ের চাওয়া পূরণ না করলে এবং তাহার দয়া-দোয়া না থাকলে উপুর করে ঢেলে দেয়া ত দূর বাশ ঢলুনি দিয়ে জীবন তামা তামা করে দিত। আর শেখ হাসিনার ক্ষমতায় ও শাসনে তাহার কোন চাওয়া অপূর্ণ রাখার কিংবা তাহার মতের বিরোধীতা করার সাহস আমার কেন,কারোরই ছিলনা। ইত্যাদি - ইত্যাদি।
আমি এখানে শুধু কয়েকজনের নাম উল্লেখ করেছি। হাসিনা আমলের সব কামেল-দরবেশদের নাম লিখতে গেলে সংখ্যায় যেমন কয়েক লাখ হবে, তেমনি দরকার হাজার হাজার পাতার লেখা। যা কোন ভাবেই সামুতে সম্ভব নয়। তবে আশা করি তত্ত্বাবধায়ক সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিবেন নির্মোহভাবে এবং জাতি জানবে এই মহামানব ও তাদের আমলনামা সম্পর্কে। সাথে সাথে তারা পাবে যথযথ প্রতিদান এবং তাদের প্রতিদান দেখে দেশ থেকে বন্ধ হবে ভবিষ্যতে এ জাতীয় কামেল দরবেশ তৈরীর পথ।
মাথায় যখন পচন ধরে তখন সারা শরীরেই সেই ঘা ছড়িয়ে পড়ে। মন্ত্রী-এমপিরা যখন দুর্নীতির উৎসবে ডুবে যায় প্রশাসন-শিক্ষক-ঈমাম-স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথা আপামর জনসাধারনও দূরে থাকবেন কেন? আর তাইতো জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকারমের খতিবের বিরুদ্ধেও উঠে উঠে কোটি কোটি টাকার দূর্নীতির অভিযোগ এবং সরকার প্রধান পলায়নের সাথে সাথে সেও যায় পালিয়ে। এদিকে, আওয়ামী রাজনীতিতে দূর্নীতি করে গত ১৬ বছরে একজন স্থানীয় পর্যায়ের নেতাও কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন এবং অবৈধ অর্থ-ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে আওয়ামীলীগের সকল পর্যায়ের নেতাই দানবিক হয়ে উঠেছিলেন। যারা দেশকে লুটের সামগ্রী ও জনগনকে কীট-পতংগের থেকেও অধম মনে করতেন। এসব করতে করতে কখন যে শেখ হাসিনা ও তার দল ফেরাউনের কাতারে সামিল হয়েছে এবং দেশ ও জনগনের মন থেকে উঠে গেছে তা ভেবে দেখতেও চায়নি ঔদ্ধত্যেপূর্ণ আচরন ও দাম্ভিকতার কারনে।

ছবি - en.barta24.com
যুগে যুগে দাম্ভিকতা ও ঔদ্ধত্যের যে অনিবার্য পরিণতি,''জনরোষে তাদের অপমানজনক বিদায়'' ,সেই ইতিহাসের পূনরাবৃত্তিই হয়েছে শেখ হাসিনার সাথে। কেবল ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে পালিয়ে দেশ ছেড়ে বেঁচেছেন তিনি।দল হিসাবে আওয়ামীলীগ, দলটির লাখো নেতাকর্মী এবং তাহার এতদিনের অবৈধ ক্ষমতার সহযোগীদের কাউকেই সাথে নিয়ে যাননি কিংবা নেয়ার দরকারও মনে করেননি। তাই বাদবাকিদের ‘হিজ হিজ হুজ হুজ’ অবস্থা। মানে যে যেভাবে যে পথে পারে পালাবে। অনেকে সফল হয়েছে,আবার অনেকে পালাতে গিয়ে ধরা পড়েছে কিংবা মারাও গিয়েছে। সালমান এফ রহমান-আনিসুল হকরা লুঙ্গি পরে বেশভূষা বদলে স্থলপথ-জলপথ মিলিয়ে পালাতে গিয়ে নৌকায় ধরা খেয়েছেন। বেশ কৌতুক বিনোদনের খোরাক দিয়েছেন তারা। নৌকার লোক নৌকাতেই ধরা। তার ওপর বুজুর্গ ছুরতের দরবেশ নামে পরিচিত সালমান রহমান দাড়িগোঁফ কামিয়ে ভিন্ন এক অবয়ব ধরেছিলেন। দড়ি দিয়ে দু’হাত কষে বেঁধে তাদের আইনের কাছে সোপর্দ করেছে নৌ-পুলিশ। কী একটা দৃশ্যপট এই পরাক্রমশালীদের।
শেখ হাসিনার পতনের পর মূল যে প্রশ্ন একজন সাধারন মানুষের মনে আসে, তা হলো -
১। কোটা নিয়ে শুরু হওয়া নিরীহ শিক্ষার্থীদের আন্দোলন কেন পৈশাচিক কায়দায় দমনের চেষ্টা করেছিল পতিত সরকার?
- কারণ, সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিল। জনগণের ক্ষোভ-দুঃখ-বেদনাগুলো সরকারের কাছে পৌঁছানোর সব দরজা ছিল বন্ধ।
২। আওয়ামী সরকার কেন জনবিচ্ছিন্ন হলো?
- কারণ গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত সরকার দেশ শাসন করেছিল কোনো বৈধ ম্যান্ডেট ছাড়া, জনগনের বৈধ ভোট ছাড়া। নানা কূটকৌশলে তারা ‘ক্ষমতা’-কে চিরস্থায়ী করতে চেয়েছিল।
৩। ক্ষমতায় চিরস্থায়ী/আজীবন থাকার এই সর্বগ্রাসী মানসিকতাকে কেন আচ্ছন্ন হয়েছিল সাবেক সরকার?
- কারণ ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতি। দুর্নীতির জন্যই সরকার ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিল। দুর্নীতি ঢাকার জন্যই সরকার মত প্রকাশের স্বাধীনতা হরণ করেছিল। অবাধে লুণ্ঠনের জন্যই সরকার একটি সিন্ডিকেট তৈরি করেছিল। দুর্নীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার জন্যই সরকার সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছিল। দুর্নীতিই আসলে সরকারকে স্বৈরাচার করেছিল, করে হিতাহিত জ্ঞানশূন্য। দুর্নীতির কারণেই তারা রীতিমতো দানবে পরিণত হয়েছিল।
বিগত ১৬ বছরের আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন সরকারব্যবস্থা স্বৈরতান্ত্রিক বা কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মূলত দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার। ব্যাপক আকার পেয়ে দুর্নীতি, বাড়তে বাড়তে গোটা রাষ্ট্র ব্যবস্থাকেই কেই গ্রাস করেছে। আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো হয়ে পড়েছে দুর্নীতির সুরক্ষাদাতা। একপর্যায়ে সরকারসংশ্লিষ্টরাও বুঝে যান, কোনো কারণে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হলে তার মূল্য তাদের জন্য হবে মারাত্মক। আর তাইতো জুলাইয়ের হত্যাকান্ড।
শেখ হাসিনার জুলাই হত্যাকান্ড এবং ১৬ বছরের দুর্নীতি অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। একটি আরেকটির সঙ্গে সম্পর্কিত। এখন অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান কাজ হওয়া উচিত রাষ্ট্রের ভিতর থাকা এই দুর্বৃত্ত চক্র এবং দুর্নীতিবাজদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা। যথাযথভাবে এদের যদি চিহ্নিত না করা যায় এবং নির্মোহভাবে এদের বিচার না হয় তাহলে এই গণবিপ্লব ব্যর্থ হতে বাধ্য। অতীতে সব সরকারই দুর্নীতিকে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছে। কখনোই দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত হয়নি। বিরোধী দলকে চাপে ফেলার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনকে ব্যবহার করেছে হাতিয়ার হিসাবে। ছাত্র-জনতার বিপ্লবের ফসল ঘরে তুলতে হলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধের বিকল্প নেই। সেই যুদ্ধ করতে হবে নিরপেক্ষতা-সততার সঙ্গে।ছাত্র-গণ বিপ্লবের ফসল সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হলে সমাজ-দেশ দুর্নীতির শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। সেই বিবেচনায় সময়ের এবং দেশের প্রয়োজনে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি শ্বেতপত্র তৈরি ও প্রকাশ মোটেই কঠিন কাজ নয় এবং প্রশাসনিক-রাজনৈতিক লুটেরা দৈত্যদের আইনের আওতায় বন্দি করতে হবে। না হলে এই দুর্বৃত্তরা প্রতি বিপ্লব ঘটাবে। দুর্নীতির নিরপেক্ষ এবং দ্রুত বিচার না হলে দেশে আবার জন্ম নেবে নতুন দুর্নীতির আরেক রাক্ষস।
তথ্যসূত্র ও সহযোগীতায়
১। সৈয়দ বোরহান কবীর - ওলটপালট করে দে মা লুটেপুটে খাই -
লিংক - Click This Link
২। রিন্টু আনোয়ার, সাংবাদিক ও কলামিস্ট - মাফিয়ারাজের শ্বেতপত্র দ্রুত দরকার -
লিংক - Click This Link
৩। দুর্নীতি ও বৈষম্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে - https://mzamin.com/news.php?news=123830
৪। বাংলাদেশের অস্থিরতা গ্লোবাল সাউথের জন্য উদ্বেগজনক ঝড়োবাতাসের সংকেত - https://mzamin.com/news.php?news=123826
৫। চেঙ্গিস খানদের সঙ্গে যুক্ত হলো হাসিনার নাম - https://mzamin.com/news.php?news=123628
৬। ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ , ২৯ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের বেশির ভাগই ফলপ্রসূ হয়নি - Click This Link
৭। চলে গেছেন শেখ হাসিনা, রেখে গেছেন ১৮ লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ - https://www.ittefaq.com.bd/697244/
৮। অর্থ-ক্ষমতা-প্লট-প্রাইজ পোস্টিংয়ের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল কর্তৃত্ববাদী শাসন - Click This Link
৯।আওয়ামী লীগের শাসন: ২০০৯-২০২৪ দানবিক রাষ্ট্রের কারিকর - Click This Link
১০। এস আলম গ্রুপ যেভাবে ইসলামী ব্যাংক দখল করেছিল - Click This Link
১১।চৌধুরী নাফিজ সরাফাত: রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় যাঁর উত্থান - Click This Link
১২।সম্পদের পাহাড় গড়েছেন আছাদুজ্জামান মিয়া, তদন্তে দুদক-https://www.ittefaq.com.bd/697651/
১৩। নতুন প্রকল্প মানেই হাসিনা পরিবারের বড় অঙ্কের কমিশন: রিমান্ডে সালমান এফ রহমান - https://www.ittefaq.com.bd/698125/
===================================
পূর্ববতী পোস্ট -
- হিজি
- হিজি
- হিজি
- হিজি
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৫ বিকাল ৪:৪০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




