somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহুরে ফোকলোর

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

২০০৩ বা চার সালের কাহিনী । আজিজ সুপার মার্কেটের দোতালা বা তিনতলার রেস্টুরেন্টে বসে দুই বন্ধু মিলে খাচ্ছিলাম হঠাৎ পেছনের টেবিল থেকে কথাটা কানে এল - দেখ আমার পেটে তো ওর বাচ্চা এখন কি করবো ? খাওয়া শেষে বিল দেবার সময় আড় চোখে তাকিয়ে কিছুটা তাদের খোমা আবিস্কারের চেষ্টা করলাম কিন্তু সেটা বৃথা গেল । শুধু বুঝলাম দুজন তরুনী কথা বলছে । কিন্তু তাদের সেই কথপোকথনের অংশ আজও মনে আছে ।

আর একবার কুমিল্লা কান্দির পাড়ে এক দোকানের সামনে দাড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিলাম হঠাৎ পাশের ভদ্রলোক একজন কে বলছে ওই হরিরপুত বোঝস না ক্যা ? হরিরপুতের মানে কি হতে পারে সেটা বেশ কিছুখন চিন্তা করলাম বের করতে পারলাম না । কিন্তু সেই হরিরপুত গালিটা আজও মাথা থেকে যায়নি ।

উনিশশো নিরানব্বই সালে রংপুরের গংগাচড়ার উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নে তিস্তার পানি বাধ ভেংগে রংপুর শহর কে প্লাবিত করবার অবস্থা । বন্ধুর সাথে দেখতে গেলাম বন্যা পরিস্থিতি । কোলকোন্দর চায়ের দোকানে চায়ের দোকানে চায়ের কথা বলে বসে আছি । এমন সময় এক ভদ্রলোক এসে বল্ল এ চা দেতো ফস করিয়া ?

চা দোকানদার বল্ল স্যার পানি এলাও জাল না হয় সময় লাগে যে? কাচা পানি দিলাম মাত্র ।
ভদ্রলোক - চুদির ভাই সালা ব্যবসা করতে বসছো না মজাক করতে বসছ ? চায়ের পানি জাল না হয় মারাইচো ? বলে চলে গেল । পরে দোকানদার জানাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের ইন্জিনিয়ার । ইন্জিনিয়ার সাহেব চলে যাবার পর বেশ কিছুখন ভাবলাম চুদির ভাই বেশ বড় মাপের গালি । এবং সালা ব্যবহার বিশেষে গালি । দুটো গালিকে এক সাথে ব্যবহার করে একটা গালি কেউ করতে পারে
সেই বিষয়টা সেই যে, মাথায় ঢুকল আজও বের হলনা ।

২০০৫ এর কথা টিআইবির ফিল্ড রিসার্চের কাজে রাতের বেলা ককসোবাজার যাচ্ছিলাম কিছু ইনফরমেশন নেবার জন্য । রাতের অন্ধকারে গাড়ী ছুটছে । মাঝে মাঝে সিট থেকে মাথাটা বাড়িয়ে হেড লাইটের আলোতে রাস্তা দেখছিলাম । হঠাৎ সামনের সিটের ভদ্রলোক বললেন ওই শুয়রভাইচর এক্কা আইয়ো না ? কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সুপারভাইজার লাইট জ্বালিয়ে ওনার কাছে চলে এল । সুপারভাইজার যে শুয়রভাইচর সেই যে শব্দটা মাথায় ঢুকল আর বের হলনা ।

এরপর ককসোবাজারের ইনানী পেরিয়ে রিজুখালের দিকে যেতে হল । ভাষা বোঝার সুবিধার্থে একজন কে নিলাম । যার বাড়ীতে যাব তার সাত আট বছরের ছোটভাইয়ের সাথে দেখা হল । আমার সাথে দোভাষী বলতেছে ওনার ছোটভাই ওই যে, আমি হাতের ইশারায় ডাক দিলাম । কাছে এলে বললাম তোমার বড় ভাই কোথায় ? দেখি হা করে মুখের দিকে তাকিয়ে আছে ? পরে দোভাষী বল্ল চোদানির পোয়া বদ্দা হটত ?
ছেলেটা উওর দিল - দজ্জার পাড়ত । কত সময় পেরিয়ে গেল । কত কথা হারাল কিন্তু আজও মনে আছে দজ্জার পাড়ত ।

২০০৮ বা ২০০৯ সালে ইউকে ভিসা সেন্টারে কাজ করি বার রকম মানুষের গল্প । পাসপোর্টের জন্য বিকেলে মোটামুটি দুইশ তিনশ মানুষ অপেখ্খমান । বিভিন্ন বাহারী নামের মানুষ । উস্তার আলী, নুনু মিয়া, দুদু মিয়া, আলতু মিয়া, খয়রাত আলী, উস্তার আলী, ময়েজ মিয়া, বয়েজ মিয়া, ফয়েজ মিয়া । এমন বাহারী নামের ভিড়ে আমার কলিগ পাসপোর্টের ইনভয়েস নিয়ে ডাকছে মিস্টার বদরু চ্চোদা চৌধুরী । অপেখ্খমান সকল মানুষ মুখে হাত দিয়ে হাসে । কলিগ ডাকছেই মিস্টার ...চৌধুরী । আমি একদিন একজন কে ডাকছি মিস্টার ফাকরুল ইসলাম । ভদ্রলোক দৌড়ে এসে বলে উচ্চারন টা ফখরুল । আসলে তাইতো । আগের মতই মানুষ হাসছে ।

আর এমন পাসপোর্ট ডেলিভারীর সময় অপারেশন রুমে গেলাম । ফোনের রিং শুনে ফোন ধরলাম ।
অন্য প্রান্ত থেকে বলছে । আমি মাননীয় স্পিকার আবদুল হামিদ বলছি । আমি বল্লাম স্যার বলুন । ওনি আবার বললেন আমি মাননীয় স্পিকার আবদুল হামিদ বলছি ।
আমি জ্বী বুঝতে পেরেছি স্যার বলুন কি ভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি ?
ওনি বলছেন আমাকে মাননীয় স্পিকার স্যার বলতে হবে ?
বল্লাম সরি স্যার বুঝিনি । আমি আবার বল্লাম মাননীয় স্পিকার স্যার বলুন ।
তখন হামিদ সাহেব আমাকে বললেন আমার লোক কে পাসপোর্ট টা দিয়ে দেন ওনি বোধ হয় অথারাইজেশন নিয়া যায় নাই । অথারাইজেশন নাই বলে আপনারা পার্সপোট দিচ্ছেন না ।
বল্লাম দিয়ে দিচ্ছি মাননীয় স্পিকার স্যার
অপর প্রান্ত থেকে ওনি বললেন ধন্যবাদ এবং বলে ফোন কেটে দিলেন । বহুখন হাসলাম । একা একা । পরে অফিসের সবাই সহ ।

অতীত শেষ এবার বর্তমানের গল্প গতমাসে গেলাম অটোয়া পাসপোর্ট সংক্রান্ত কাজে । ভালভাবে কাজ শেষ হবার পর হোম মিনিষ্টার বললেন তিনি রেড লবস্টারে খাবেন এবং খাওয়াবেন । তার বান্ধুবী একদা তাকে খাইয়ে ছিল । গেলাম রেড লবস্টারে । যাবার পর হোম মিনিষ্টার বললেন তিনি ওয়াসরুমে যাবেন । আমি আর মেয়ে দুজন মিলে মেনু দেখছি । ঢুকতেই খেয়াল করেছি দুজন হিজাব পড়া তরুনী ও যুবক ছেলে আমাদেরকে যেখানে বসতে দিল তার পিছনের টেবিলে । মনে হচ্ছিল বাংগালী । কিন্তু কথা বলার সাহস হয়নি । হঠাৎ পিছনের টেবিল থেকে নারী কন্ঠে ফিস ফিস করে আওয়াজ এই এই খাইসলত ভাই এসিবিতে পোষ্ট দিছে । আমি এসিবিতে ঢুকবো তার আগেই মেয়ে ফোন নিয়ে নিছে ই্উটিউব দেখা শুরু ।

মাথায় থেকে খাইসলত ভাই যাচ্ছিল না । নিকোলা টেসলা পার হবার পর হঠাৎ মনে হল খাইসলত ভাই তো তিনি হতে পারেন । বহুখন একা একা হাসলাম । নুতন করে আবার মাথায় ঢুকল খাইসলত ভাই ।




সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ১২:০৬
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×