
পৃথিবীটা একটা অদ্ভুত জায়গা। এখানে শুধু মানুষ আর অন্য অন্য জীবজন্তু ছারাও আরও এমন কিছু বাস করে যা হয়ত আমরা কল্পনা ও করতে পারি না। পৃথিবীতে এখনও এমন কিছু অদ্ভুত ঘটনা আছে যা আজও মানুষের কাছে রহস্য। এমনই কিছু রহস্য জনক ঘটনা তুলে ধরব এই লেখায়। সত্য ঘটনা অবলম্বনে বেশ কয়েকটা পর্ব দিব সিরিজ হিসেবে ।
এক. মেরি চেলেস্ট জাহাজ রহস্য

মেরি চেলেস্ট আমেরিকার তৈরি বিশ্ব বিখ্যাত জাহাজ। ১৮৭২ সালে মেরি চেলিসটা অ্যাটলান্টিক মহা সাগর ভ্রমণ এর উদ্দেশ্যে নাবিক আর ১০জন জাহাজের স্ক্রু নিয়ে রওনা হয়। ভ্রমণ এর এক পর্যায় জাহাজটা সাগরে আরেকটা জাহাজের নজরে পরে। সেই জাহাজের নাবিকের নাম ডেই গ্রাটিয়া। ডেই গ্রাটিয়া দূর থেকে মেরি চেলেস্ট কে দেখতে পান। তার কাছে মেরি চেলেস্ট জাহাজ টাকে অদ্ভুত মনে হয়। তিনি কাছে গিয়ে ডাকাডাকি করেন ভিতরে কেউ আছে কিনা কিন্তু কোন সারা শব্দ শুনতে পান না।
তার কাছে ব্যাপারটা অদ্ভুত লাগে। এত বড় জাহাজ সাগরে অথচ ভিতর থেকে কেউ কোন উত্তর দিচ্ছে না কেন! তিনি বুঝতে পারলেন জাহাজে অদ্ভুত কিছু ঘটছে। তিনি মেরি চেলিস্টার ভিতর প্রবেশ করলেন ব্যাপারটা বুঝার জন্য। তিনি অদ্ভুতভাবে লক্ষ্য করলেন খাবার গুলো টেবিলে ঠিকঠাক ভাবে সাজানো, অন্য অন্য জিনিষ পত্রও ঠিক ঠিক জায়গায়ই আছে এমনকি জাহাজের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন পর্যন্ত নেই। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে জাহাজের নাবিক আর অন্যরা কোথায় গেল?
নাবিক ডেই গ্রাটিয়া, চারদিকে ভালোভাবে লক্ষ্য করলেন কোন ব্যাপারটার কোন ক্লু পান কিনা। তিনি মেরি চেলেস্টা জাহাজের ডায়রি খুঁজে পেলেন। সাধারণত জাহাজের ডায়রিতে দৈনন্দিন কার্যকম লিখে রাখা হয়।মেরি চেলেস্টা জাহাজের ডায়রিটা ১০ দিন আগের। পাশে টেবিলের খাবার গুলো দেখে মনে হচ্ছে কয়েকদিন আগের মাত্র। এরমানে কিছুদিন আগেও কেউ ছিল জাহাজে লোক ছিল। তাহলে প্রশ্ন হল ডায়রিতে দৈনন্দিন কার্যকর্মের কিছুই লিখে রাখেনি কেন?
মেরি চেলেস্টা জাহাজের এই রহস্যের ব্যাপারে অনেকেই অনেক ধরনের ব্যাখ্যা দিয়েছে। কিছু মানুষ বলে বড় বড় অক্টোপাস জাহাজে এসে সবাইকে খেয়েফেলে ছিল আবার কেউ বলে খারাপ আবহাওয়ার কারনে সবাই ঝড়ে উড়ে গেছে। কিছু মানুষ মনে করে মেরি চেলেস্টা ছিল অভিশপ্ত জাহাজ। কেউ এই রহস্যের সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। মেরি চেলেস্টা পৃথিবীর মানুষের কাছে আজও এক রহস্য।
দুই. মোনাস প্রজাপ্রতি ভ্রমণ রহস্য

মোনাস প্রজাপতি নর্থ আমেরিকার পূর্ব অংশ বিচরণ করে। মোনাস প্রজাপতি কীটপতঙ্গদের মধ্যে সবচেয়ে দু:সাহসীক ভ্রমণ করে। প্রতি বছর এই ছোট প্রজাপতি ৩০০০হাজার মাই ভ্রমণ করে এর শীতের বাড়ি সেন্টাল মেক্সিকোতে। অদ্ভুত ব্যাপার হল এটা কিভাবে এতো ভ্রমণ করে? আর এর উদ্দেশ্যই বা কি? বিজ্ঞানীরা এখনও এর কোন উত্তর খুঁজে পায়নি।
মেক্সিকোর লোকজন অবাক হয়ে ভাবত এই প্রজাপতি শিতের দিনে কোথা থেকে আর কেনই বা আসে। ১৯৩৭ সালে বিজ্ঞানীরা প্রজাপতিদের গায়ে ট্যাগ লাগিয়ে দেয় এবং পরবর্তী ২০ বছর একে পর্যবেক্ষণ করে এর গতিপথ এবং ভ্রমণ কোথা থেকে এবং কিভাবে করেন তা বের করেন। কিন্তু মোনাস প্রজাপতির ভ্রমণের কারণ আজও মানুষের কাছে রহস্য।
পৃথিবিতে এখনও মোনাস প্রজাপতি সম্বন্ধে গবেষণা হচ্ছে। ১৯৯৭ সালে আরও ৭৫০০০ প্রজাপতির গায়ে ট্যাগ লাগানো হয়েছে গবেষণার জন্য।
পরবর্তী পর্ব :
ইষ্টার দ্বিপের মূর্তি এবং রোনকের অস্থায়ী বাসিন্ধা রহস্য
/ পূর্ব প্রকাশিত /
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


