somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

স্মৃতিচারণঃ আমি একটি এপোলজি নোট লিখতে চাই

০২ রা জুলাই, ২০২১ রাত ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


স্মৃতি মানুষকে হাসায়, এবং কখনো আবেগ তাড়িত করে। সুখ এবং দুখের স্মৃতিগুলো মনের ভিতর হানা দেয় বার বার, নস্টালজিক করে তোলে। আমি মাঝে মাঝে পুরনো স্মৃতিতে ডুব দেই, স্মৃতিগুলো আমার চিন্তাগুলোকে এলোমেলো করে দেয়, তারপরও আমি পুরনো স্মৃতি হাতরাই। স্মৃতি নিয়ে এলেনা লেরন বলেছেন “আমি জিনিসের পরিবর্তে স্মৃতি সংগ্রহকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি”। পুজা ভেংকাটাচালাম বলেছেন “সুন্দর স্মৃতিগুলো হলো জীবনের দেয়া সেরা উপহার “, অস্কার ওয়াইল্ড বলেছেন “ভালো সময় আসতেও পারে আবার যেতেও, তবে স্মৃতি চিরদিনই রবে”, কথাটি সত্যি চমৎকার। স্মৃতি নিয়ে সিসারি পাভেস বলেছেন “আমরা দিনগুলো মনে রাখি না,রাখি দিনগুলোর স্মৃতি”। যাইহোক স্মৃতি নিয়ে অনেক কপচালাম, এবার মূল প্রসঙ্গে আসা যাক। এই লেখায় আমার জীবনের কিছু স্মৃতি তুলে ধরব।

আমি তখন ইউনিভার্সিটিতে তৃতীয় বর্ষে পরি। একদিন সিটি কলেজের সামনে দিয়ে যাচ্ছিলাম হেটে, আমি আকস্মিকভাবে হাটা বন্ধ করে দিয়ে তাকিয়ে আছি মেয়েটির দিকে। মেয়েটি কলেজে পরে, কয়েকজন বান্ধবীসহ বাসে উঠার চেষ্টা করছে। আমার চোখ পুরনো দিনের মত স্থির হল তার উপর। প্রায় চার-পাচ বছর পর দেখা, এর মাঝে আর দেখা হয়নি আমাদের। তবে চিনতে বেগ পেতে হল না আমার, আমি ঘোলাটে হওয়া স্মৃতির পাতায় শান দিলাম, আসতে আসতে ঝকঝকে হয়ে উঠতে লাগল সবকিছু। মেয়েটির নাম রুপা (ছদ্ম নাম), রুপাকে শেষ দেখেছিলাম প্রায় পাঁচ বছর আগে, কলেজের প্রথম বর্ষে আমরা একই শিক্ষকের কাছে ইংরেজি কোচিং করতাম । তারপর ভাল বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল আমাদের মাঝে, তবে রুপাকে আরও অনেক আগে থেকেই আমি চিনতাম, সেটা বলছি একটু পরে।

রুপা বাসে উঠতে যাচ্ছিল তার বান্ধবীদের সাথে, হঠাৎ তার দৃষ্টি পরল আমার চোখে। আমি থতমত খেয়ে দৃষ্টি ঘুরাবার বৃথা চেষ্টা করলাম, রুপা আমাকে অবাক করে দিয়ে বাস থেকে নেমে পরল সাথে তার বান্ধবীরাও। আমাকে অনেক দিন পর দেখে একের পর এক প্রশ্ন করেই যাছে, এখানে কি করি, কেন এলাম, এখন কি করি, ইত্যাদি। আমি জিজ্ঞেস করলাম তুমি কোথাও যাচ্ছিলে মন হয়, দেরি হয়ে যাচ্ছে নাতো? ও বলল আমারা বান্ধবীরা মিলে চিড়িয়াখানায় যাব। আমাকে অবাক করে দিয়ে বলল তুমিও চল আমাদের সাথে। আমি অস্বস্তি নিয়ে না বললাম, তারপর দুজনের নাম্বার বিনিময় করে চলে গেলাম যে যার পথে।

তারপর থেকে রাত ১২টার প্রায় দুজনে কথা বলি। রাত ১২ টার পর কথা বলার শানে নযুল হল রাতে কলরেট তখন খুবই কম, সাধারণত আমরা ইউনিভার্সিটির বন্ধুরাও যে কোন প্রয়োজনে যেমন রিপোর্ট, ক্লাস, এসাইনমেন্ট ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করতাম রাত বারোটার পরই। যাইহোক রুপার সাথে আসতে আসতে আমার বন্ধুত্ব আরো গাঢ় হল। রুপাকে আমি কিভাবে চিনতাম সেটা বলে নেই এখন। আমরা আসলে একই স্কুলে প্রাইমারি ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়েছি, ক্লাস থ্রির পর ওরা অন্য জায়গায় চলে যায়। তারপর আর তার সাথে কোন দিন দেখা হয়নি। অনেক বছর পর যখন এক সাথে কোচিং-এ পড়ি তখন ওকে আমি দেখি।

ইউনিভার্সিটিতে তৃতীয় বর্ষে পড়া অবস্থায় আমি কোরিয়া থেকে সরকারী স্কলারশিপ পাই আন্ডার গ্রাজুয়েট করার জন্য। আমার যাবার সময় ঘনিয়ে এলে কেন জানি আর যেতে মন চাইল না, আমার বাসায় জানালাম তবে তাদের সাথে পেরে উঠলাম না। কোরিয়াতে সরকারী স্কলারশিপ, মাসে প্রায় ষাট হাজার টাকা দিবে তার উপর পড়াশুনাও ফাও, বাসা থেকে এই লোভনীয় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করাটা অন্যায় ভাবলেন তার উপর মালপানি কামাইতে আমারও ভাল লাগে! তখনো রুপার সাথে আমার ভাল বন্ধুত্ব এবং নিয়মিত কথা হয় ফোনে। আমি বরাবরই চাপা স্বভাবের, পেটে বোমা মারলে পেট ফাটবে তবুও কথা বের হবে না এই টাইপের আরকি। যাবার আগের দিন পর্যন্ত রুপার সাথে ফোনে কথা বললাম কিন্তু পরের দিন যে আমি চলে যাচ্ছি সেটা আর বললাম না, এমনকি ও জানেইনা আমি যে সরইকারী স্কলারশিপ পেয়েছি। আমাদের সাথে প্রেম ছিল না তবে ভাল বন্ধুত্ব ছিল। এর পর আর এখন পর্যন্ত রুপার সাথে আমার দেখা হয় নাই, তবে দেখা হলে আমি তাকে বলতাম “রুপা আমি অত্যন্ত দুঃখিত, আমি চলে যাচ্ছিলাম এই কথাটা তোমাকে বলে যাওয়া আমার উচিৎ ছিল আমার”।

কোরিয়াতে চলে এলাম পড়াশুনার জন্য। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ যেমন রাশিয়া, কাজাকস্থান, ভিয়েতনাম, মঙ্গোলিয়া সহ প্রায় বত্রিশটি দেশ থেকে সেবার কোরিয়ান সরকারী স্কলারশিপ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা এসেছিল। আমাদের সবাইকে রাখা হয়েছিল সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর ডরমিটরিতে। সেখানে কয়েক দিনে রেখে কোরিয়ার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাগ করে আমাদের পাঠিয়ে দিয়েছিল। আমাকেসহ প্রায় এগারজনকে পাঠিয়েছিল কোরিয়ার গোয়াংজুর চননাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে, সেখান থেকেই আমি কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ ব্যাচেলর এবং মাস্টার্স সম্পূর্ণ করি।

যাই হোক আমার তখন সদ্য কৈশোর পেরিয়া তারুণ্যে পদোন্নতি ঘটেছে। আমাদের প্রোগ্রামের নিয়ম অনুসারে প্রথম বছর কোরিয়ান শিখতে হবে এবং তার পরের বছর থেকে একাডেমিক লেখাপড়া শুরু। আমাদের শর্ত জুরে দেওয়া হইয়েছিল কোরিয়ান ভাষার লেভেল ফোর পাশ না করতে পারলে ব্যাক টু দ্যা প্যাভিলিয়ন! আমরা যারা কোরিয়ান সরকারী স্কলারশিপ নিয়ে বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে এসেছি, আমাদের সকলকে একত্রে সরকারে পক্ষ থেকে বিভিন্ন টুরে নিয়ে যেত এবং সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা আমার মিলিত হবার সুযোগ পেতাম। কোরিয়ান ভাষা শিখছি, মোটামুটি উহ-আহ বলতে শিখেছি, আমাদের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারী স্কলারশিপ প্রাপ্ত ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে সেরকম এক টুরের আয়োজন করল সরকারের পক্ষ থেকে।

আমাদের কোরিয়ার রাজধানী সিউলে ঘুরতে নিয়ে গেল। মেয়েটার সাথে সেই টুরেই দেখা, কোরিয়ান নয়, অন্যদেশের মেয়েটি, কোন দেশের সেটা নাইবা বললাম। মেয়েটা দেখতে সুশ্রী, চোখদুটি টানাটানা, চটপটে অনেক, একেবারে আদর্শ সুন্দরী বলতে যা বুঝায় আরকি! আমি প্রথম দেখাতেই ইশকে দিওয়ানা হয়ে গেলাম। আমি আলাপ জুড়ানোর চেষ্টা করলাম, যদিও বিশেষ সুবিধা করতে পেলাম না, চান্স দেয়নি তবে আমি হার মানার পাত্র না! যাইহোক জানতে পারলাম মেয়েটি আমি যেই ইউনিভার্সিটিতে পড়ি তার পাশের ইউনিভার্সিটিতেই ভাষা শিখে। আমি মেয়েটির বেশ কিছু ছবি তুললাম মোবাইলে এবং বললাম ইমেইলে পাঠিয়ে দেব তাকে! আমাদের কোরিয়ার বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জায়গা, প্রাসাদ, পাহার-পর্বত এবং মার্কেট ঘুরিয়েছিল। টুর শেষে যে যার ইউনিভার্সিটিতে চলে এলাম।

বিদেশী মেয়ে, নাম অত্যন্ত কঠিন উচ্চারণ করতে, দাত ভেঙ্গে যাবার যোগাড় আরকি, আমার উচ্চারণের সুবিধার্থে মেয়েটি আমাকে তার নাম শর্ট করে দিয়েছিল, আমাকে বলেছিল আমাকে হাকি হবে ডাকবে! আমি মনে মনে বলে খাইছে আমারে হাকি পাকি এটা আবার কোন ধরণের নাম! যাইহোক, কয়েকদিন পর আমি হাকিকে তার ছবিগুলো পাঠিয়ে দেই জিমেইলে। তারপর তার সাথে চ্যাটিং করি, প্রথম চ্যাটিং এই তার প্রেমে যে আমি দিওয়ানা সেটা জানিয়ে দেই। হাকি বেশ মর্মাহত হল, প্রথম চ্যাটিং-এই তাকে আমি প্রেম নিবেদন করতে পারি সেটা তার ধারনাতেই ছিল না! আমার সাথে সে আর কথা বলবে না বলে জানাল, আমি তাকে বাংলা সিনেমার ডায়লগ দিয়ে বললাম প্রেম করবে না ভাল কথা কিন্তু আমরাতো বন্ধু হতে পারি। আসলে আমার উদ্দেশ্য ছিল বন্ধু হয়ে ঢুকব প্রেমিক হয়ে বেরুবো! তারপর থেকে আমাদের চ্যাটিং চলতে থাকল। আমরা কোরিয়ান ভাষাতেই চ্যাটিং করতাম, ততদিনে কোরিয়ানও ভাল রপ্ত করে ফেলেছিলাম।

মাস খানেক কথা বলে মেয়েটিকে পটিয়ে ফেললাম। হাকিও আমার প্রেমে দীওয়ানা মাস্তানা হয়ে গেল! আমাদের প্রেম প্রীতি চলতে থাকল চুটিয়ে। হাকির কোরিয়ান ভাষা শিখা শেষ হয়ে গেলে সে সিউলের কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্ডার গ্রাজুয়েটে ভর্তি হল আর আমি থেকে গেলাম আমার ইউনিভার্সিটিতেই। তারপর আমি অনেক সময় চার ঘন্টা বাসে করে তার সাথে দেখা করতে যেতাম। কথায় আছে কথায় আছে চোখের আড়াল মানেই মনেরও আড়াল, কথাটা প্রমাণ করে দিয়ে আমাদের প্রেম প্রীতিও ভেঙ্গে গেল, দুজনার সম্মতিতেই হাসিমুখে বিদায়! এই প্রেম ভেঙ্গে পরাতে আমি মুষড়ে পরলাম না এবং কোন দুঃখও পেলাম না! আমার মনে হল আমি মনে হয় মেয়েটিকে মন থেকে ভালবাসিনি,সেই বয়সে সবাই প্রেম করছে তাই আমাকেও করতে হবে এই ভেবেই প্রেম করা। তাছাড়া বিদেশী কোন মেয়েকে বিয়ে করব এরকম কোন ইচ্ছেও আমার ছিল না, সেই হিসেবে এটাকে টাইম পাস প্রেম বলা চলে। হাকির সাথে দেখা হলে আমি বলতাম “আমি দুঃখিত হাকি, তোমার প্রতি আমার ভালবাসাটা আসলে সত্যি ছিল না!”

আরও কয়েক বছর বেক করা যাক, তখন আমি টগবগে কিশোর, ইন্টারমিডিয়েট পড়ি পুরান ঢাকার সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে। আমরা বিজ্ঞান বিভাগে প্রায় আড়াইশ জনের মত ভর্তি হয়েছিলাম। এর মাঝে হাতেগোনা ছয় সাতজন মেয়ে বাকী সবাই ছেলে। মেয়েটি বোরখা আলী, নাম মিনা (ছদ্ম নাম), দেখতে মোটামুটি মানের সুন্দরী, কথা বার্তায় চলন সই! আমি লক্ষ্য করলাম মেয়েটি আমার সাথে গায়ে পরে কথা বলতে আসে। আমাদের স্কুলেরই এক মেয়ে সেই কলেজে আমাদের বিভাগে পরত। সেই মেয়েটি আমাকে একদিন বলল মিনা তোমার প্রেমে মশগুল, সাবধানে থাকো যে কোন সময় প্রপোজ করতে পারে। আমি শুনে হতবম্ভ হয়ে পরলাম, বাংলা সিনেমার মত আকাশে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে, জিন্দেগিতে কোন মেয়ে আমার প্রেমে পরতে পারে সেটা আমার ধারনাতেই ছিল না!

একদিন কলেজ শেষে আমরা কয়েকজন বন্ধুরা মিলে ক্রিকেট খেলতে ধুপ-খোলার মাঠে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ মিনা আমার সামনে এসে রিকশা থামাল, তারপর আমার হাতে একটি চিরকুট ধরিয়ে দিল। জিন্দিগিতে কোন মেয়ে আমাকে এরকম একটি চিঠি দিল, আমি পুলকিত, আনন্দিত, শিহরিত এবং প্রচণ্ড রকমের রোমাঞ্চিত অনুভব করলাম। চিঠিতে কি লেখা ছিল সেটা আজও আমার মনে আছে, “All the love of the world for you, if you feel”। চিঠিটি আমি বাসায় রেখে দিলাম, আমার উদ্দেশ্য হল প্রেমপ্রীতি করি আর না করি কিন্তু চিঠিটা যত্ন করে রেখে দেই। যাইহোক পোড়া কপাল, চিঠিটি আমার মা দেখে ফেলেছিল। আমার খালাদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করেছিল যদিও আমাকে কিছু বলেনি তবে ইশারা ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছিলেন প্রেম প্রীতিতে যেন না জরাই। মধ্যবিত্ত পরিবারের সব বাবা মায়ের মত আমার মায়েরও স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে যেন আমি ডাক্তার হই। ডাক্তাররা মালপানি কামায় বেশী এটা একটা কারণ হতে হবে।

আমি যখন কলেজে পড়ি তখন বাসা থেকে আমাকে প্রতিদিন বিশ টাকা হাত খরচ দেওয়া হত। আমাদের বাড়ি কেরানীগঞ্জে, বাসা থেকে পুরান ঢাকার কলেজে আসতাম টলারে করে, যাওয়া আসায় ছয় টাকা খরচ হতে টলারে, টলার থেকে নেমে হেটে কলেজে যেতাম, আর বাকি টাকা দিয়ে সকালের নাস্তা সারতাম। প্রেম পিরিতি করার জন্য মানি ব্যাগের যেই শক্তি থাকা দরকার সেটা আমার ছিল না। তাই মিনার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেবার মত সাহস আমার ছিল না! মিনা ছত্র রাজনীতি করত, সরকারি কলেজে এক বার ক্লাসের ছাত্রলীগ বা ছাত্র দলের কোন একটা ছোটখাটো পদে দাঁড়িয়েছিল ক্লাস, আমাদের ক্লাসের অনেকের ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিল তাই কলেজের কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে তার মোটামুটি পরিচয় ছিল। সেই বয়সে একজন তরুণীর প্রেমের প্রস্তাব সাড়া না দেবার কোন কারণ ছিল না আমার, তবে প্রেম প্রীতি করতে মালপানি দরকার সেটা আমার ছিল না আগেই বলেছি অন্যদিকে আবার একটি মেয়ে সব সময় আমার পিছনে ঘুরবে সেই লোভটাও সামলাতে পারছিলাম না। আমি দোটনায় পরে গেলাম। সব বিবেচনায় আমি সিধান্ত নিলাম মেয়েটাকে আমি ঝুলিয়ে রাখব, অর্থাৎ ধরি মাছ না ছুঁই পানি, ভালবাসি এটা বলিও না আবার ভালবাসি না এটাও বলি না।

মিনা ছায়ার মত কলেজের প্রায় দুই বছর আমার সাথে লেগে ছিল কিন্তু আমি তাকে বিভিন্ন কথা বলে ঘুরিয়েছিলাম। আমি-ক্লাসে যেই বেঞ্চে বসতাম ও সেখানেই এসে বসত। আমার সাথে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে যেতে চাইত তবে কোনবারই সফল হয়নি আমি কোন না কোন ভাবে পাশ কাটিয়ে গেছি। একদিন ক্লাসে বসে আছি সে এসে বলল এদিকে আস, আমি গেলাম সে এক জোরা কাক দেখিয়ে বলল “দেখ কাক দুটি সুন্দর না?” আমি মনে মনে বললাম কাউয়া আবার সুন্দর হইল কবে! মেয়েটির খুব সম্ভবত মা ছিল না, পরে শুনেছিলাম, এতে তার প্রতি আমার সামান্য সমবেদনা ছিল। আমার প্রায়ই মনে হয় আজ যদি এত বছর পরে মিনাকে দেখতাম তাহলে বলতাম “আমি দুঃখিত মিনা, তোমাকে শুধু শুধু দু বছর ঝুলিয়ে রাখা আমার উচিৎ হয়নি, সতের আঠারো বয়সে আমার চিন্তার জগতটা অনেক ছোট ছিল, তোমাকে সম্মানজনকভাবে না করে দেয়াটা আমার উচিৎ ছিল।, তাছাড়া ক্লাস নির্বাচনের দিন আমি তোমাকে ভোট দেইনি তবে হয়ত ভেবেছিলে আমি তোমাকে ভোট দিয়েছিলাম।“

আমার স্মৃতিচারণমূলক পোষ্টসমূহঃ
কাজী সাহেব সমাচার
আমার প্রথম মোছ বিসর্জনের গল্প
আমার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, অতঃপর...
গুরু সেই নার্সারী থেকে শুরু
একটি অদ্ভুদ গাছের গল্প
চুরি বিদ্যা
খেয়ে যায় মোছওয়ালা নাম পরে দাড়িওয়ালার
বন্ধু এবং বন্ধুত্ব
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা জুলাই, ২০২১ রাত ৯:২৮
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঘুষের ধর্ম নাই

লিখেছেন প্রামানিক, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৫


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

মুসলমানে শুকর খায় না
হিন্দু খায় না গাই
সবাই মিলেই সুদ, ঘুষ খায়
সেথায় বিভেদ নাই।

হিন্দু বলে জয় শ্র্রীরাম
মুসলিম আল্লাহ রসুল
হারাম খেয়েই ধর্ম করে
অন্যের ধরে ভুল।

পানি বললে জাত থাকে না
ঘুষ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×