আমি আর আমার ছোট ভাই পিঠাপিঠী । বয়সের পার্থক্য দেড় বছরের। তাই দুজনের সখ্য ছিল দারুন। সারাদিন আমার অন্ধ ভক্ত আমার সাথে থাক্তো, আর আমার সব কথা শুন্তো। একদিন আমরা বাসায় বারান্দায় ক্রিকেট খেলছি। সব বড় ভাইয়ের মত আমিও তাকে হারাতেই থাকতাম, তবু সে খুশি মনে খেলেই যেতো আমার সাথে। বল্টা প্রায়ই নীচে পরে যেতো। তখন যে পারতো বাইরে, সে গিয়ে নিয়ে আস্তো। আমাদের বাসার ঠিক নিচেই পাশের বাসার বাড়ীওয়ালার একতলা গ্যারেজ, বল্টা নিচে পড়লে, সেটা গিয়ে পড়তো ওই এক্তলার ছাদেই। তখন দেয়াল বেয়ে অই এক্তলার ছাদে উঠে আমাদের সেই বল উদ্ধার করতে হতো। একদিন বল্টা বিচে পড়েছে, ব্যাটিং করছে আমার ছোটভাই। সেই ফেলেছে। সে গেলো আনতে। দেয়াল বেয়ে যেই ওই এক্তলার ছাদে উঠেছে, তখনি পাশের বাসার বাড়ীওয়ালা ভদ্রলোক গাড়ী বের করতে গ্যারেজের সামনে। আমার ছোটভাইকে দেখে জিজ্ঞেস করলো, এই বাবু তুমি কে? "আমি আমার আব্বুর ছেলে", ছোটভাইয়ের উত্তর। এই বলেই নেমে পড়লো

*তখন নতুন স্কুলে ভর্তি হয়েছে আমার ছোটভাই। স্কুলে যায়, এ, বি, সি, ডি শেখা শেষ। এরপর শব্দ শিখছে। বাসায় আব্বুর একদিন অসুখ করেছিলো, আম্মুকে বললো হিসটাসিন(histasin) দিতে। ছোটভাই শুনেছিল সে কথা। আরেকদিন আপুর ওসুখ করলো, আম্মুর কাছে আপু গিয়ে জিজ্ঞেস করলো কি ওষুধ খাবে। ছোটভাই বললো, হারটাসিন(hertasin) খেয়ে নাও, ভাল হয়ে যাবে।

*তখন মাত্র গ্রাম থেকে শহরে এসেছিলাম, আমাদের দেশের বাড়ীতে আঞ্চলিক ভাষায় লবঙ্কে বলা হতো নুন। শহরে এসে আম্মু সব আঞ্চলিক শব্দের ব্যাবহার বাতিল করলো। বাসায় এক মৌলভি স্যার আমাদের আরবি শেখাতেন। তার কাছে পাঠ নিচ্ছিলো ছোট ভাই। হুউর বলেন আলিফ, ভাই বলে আলিফ। হুজুর বলেন বা, ভাই বলে বা। এভাবেই চলছিলো। শেষের দিকে এসে হুজুর বলেন নুন, আমার ভাই আর বলে না কিছু। অনেক চিন্তা করে বল্লো লবন। হুজুর বলেন, আরে লবন না, বলো নুন। ভাই বলে লবন। আমার ভাইকে সেদিন আর নুন বলাতে পারেননি হুজুর স্যার।