যখনকার কথা বলিব, তখন দশম শ্রেণীতে পড়িতাম। বায়োলজি ক্লাস হইতেছিল। পড়াইতেছিলেন চট্টগ্রামের বিখ্যাত শিক্ষক অমলেন্দু চক্রবর্তী। যিনি আবার শ্রেণীকক্ষে কোনরূপ অমনোযোগীতা বরদাস্ত করিতেন না। স্যার অভিস্রবন-ব্যাপন পড়াইতেছিল। পড়াতো যথারীতি কখনোই পুরোপুরি বুঝিতাম না।হাল্কা-পাতলা যা বুঝিয়াছিলাম তাহা হইলো ব্যাপন মানে এমন একটি প্রক্রিয়া, যাহাতে তরল বা বায়ু জাতীয় পদার্থ ছড়াইয়া পড়ে।
আমি বন্ধুদের মাঝে বসিয়াছিলাম, ট্যাবলেট চেয়ারে। আশেপাশে প্রিয় বন্ধুরা।
ব্যাটিং থামাইয়া বিরক্ত আমি। কটু গন্ধে নাক চাপিয়া, তাহাকে বলিয়া ফেলিলাম, “কিরে শাহীর ব্যাপন করিতেছ কেন?”X
শুনিয়া আশেপাশের অল্প কয়জন বন্ধু মুচকি হাসিল।
সেই হাসি দেখিয়া তৎক্ষনাৎ তাহার যা প্রতিক্রিয়া হইলো তাহাতে আমার আর ভুল শোধরাইবার উপায় ছিল না। শাহীর দাঁড়াইয়া স্যারকে বলিল, “স্যার জিসান বলিতেছে, আমি নাকি ব্যাপন করিতেছি।”
পুরো ক্লাসে তখন হাসির রোল পড়িয়া গিয়াছে। স্যার তখন অর্ডার প্রতিষ্ঠার জন্যে হুঙ্কার ছাড়িলেন।কিসের কি? ছাত্রীরা আরো বেশি হাসিতেছে। কাকে ছাড়িয়া স্যার কাকে বকিবেন? পাইলেন আমাকে!
সোজা কাছে আসিয়া কলার ধরিয়া মাটি থেকে কয়েক ইঞ্চি উপরে তুলিয়া মাথা দিয়া আঘাত করিলেন(স্যারেরও জিদানের মতো টাক আছে)।
তৎক্ষনাৎ চোখে শর্ষেফুল দেখিয়া ফেলেছি। তাহার উপর স্যার বলিলেন, “দাঁড়াইয়া থাকো, চেয়ারের উপরে।”
শেষকথাঃ
সেইদিন রাগে দুঃখে এই ক্লাসে আর আসিবোনা প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম। দীর্ঘ এক মাস সেই স্যারের যেদিন ক্লাস থাকে সেইদিন অনুপস্থিত থাকিতাম স্কুলে। বাসায় বকা খাইয়া একদিন ঐ দিনে উপস্থিত হইলাম। বন্ধুদের ঘাড়ের পিছে অনেক লুকাইয়া থাকার পরেও স্যার দেখিয়া ফেলিল। কাছে আসিয়া মাথায় হাত রাখিয়া বলিল, “কি হে জিসান, ব্যাপনের পরেতো আর তোমাকে দেখায় যায় না? ক্লাসে আসিও, ব্যাপন পড়ানো শেষ।”
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০১০ সন্ধ্যা ৭:৫৬

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



