আমি আমার জন্মবৃত্তান্ত খুলেছি এই ভোরের হাওয়ায়। সেই বেতনা নদীর উপর যে কাঠের সাকোটি ছিল, সেখানে এখন কনক্রিটের ব্রীজ। যখন আমি বেতনাকে তুলে আনি উত্তর সাগরের স্বচ্ছ্ব শৈতপ্রবাহে- দুটি তুলনামূলক জলহাওয়া আমার শরীরে খেলে যায়। মানুষের অজান্তেই এভাবে নষ্টালজিয়া গ্রাস করে ফুরসতের সময়!
আমি চোখ বুজে উদয়াচলের দিকে নিবন্ধিত হই- আমি নির্জনতার সমীকরনের পরিশেষে অবাধ্য এক কলরোলে ভাগফল তুলে নেই; সাহস আর ব্যাক্তিক বিষ্ময় আমাকে নিবিষ্ট হতে বলে ভাগ্যফলের মেরুবিন্যাসে। যখন সবুজ ঘাসে অস্পষ্ট শিশির দেখি, আমার শিউলী ফুলের কথা মনে পড়ে। অথচ আমি ভুলে গিয়েছি তার সৌরভ! একটানা নীল দরিয়ার পর ফিকে নীল আকাশ। আমার হৃদয় মথিত করে কাশফুলের শুভ্রতা আচ্ছন্ন করে ফেলে দৃষ্টি! তাহলে আমি কি শুধু সময় পেরিয়ে আঘ্রাণ করছি বাল্যস্মৃতির নেপথালিন!
মানুষ অন্তত: বৈচিত্র নিয়ে জন্মায়। যেহেতু মানুষ হওয়া ছাড়া আর কোন অভিজ্ঞান স্মরণে নেই তাই মানুষের অভিব্যক্তি নিয়ে যাচাই করি সময়ক্রম। এই যে ফিরে ফিরে আসা শৈশব; অযোচিত এবং অবহেলিত যৌবন- এবং সদ্য মধ্যবয়সের মেদ, এসবই কি মানুষ্য বিবর্তনের সমৃদ্ধ কালান্তর নয়! একটা সময় পাথর দেখিনি তাই পাথরের পথে আমি নিয়ত চলেছি এখন; একটা সময় সমুদ্র দেখিনি বলেই কি সমুদ্রের গর্জনে ঘুম ভাঙে আমার! সময় কি আসলেই অযুত কোটি বছর আগের সেই কলমের সারবস্তু হয়ে সংক্ষেপিত করছে প্রতিটি মানুষের নিয়তি!
আমার জন্মবৃত্তান্তের সাথে এ যেন এক দূ:খিত হওয়া নির্জন ভাবনা, তার কোন ব্যতয় নেই। যদিও বিষাদ আর হেরে যাওয়া নিয়ে আমরা পিছনে তাকাই, কিন্তু এই অমানষিক ভবিতব্যের গিরিপথের কোন পিছন নেই। এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে দেয়াল উঠে পালাবার পথে, শুধু সামনের অন্ধকার- যার জ্ঞান নিয়ে অযুত কোটি বছরের সেই কলম শুধু মুচকে হেসেছিল!
স্মৃতি রোমান্থন তাই ফ্যান্টাসি। চমকপ্রদ রুপকথায় সময়ক্ষেপণ। সত্যি ছিল হয়ত, একদা। কিন্তু বাস্তব নয় আর, এখন!
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই নভেম্বর, ২০১৯ দুপুর ২:৪৮