এ কেমন যন্ত্রনা ....আপনারাই বলুন..!!!
আমাদের আশেপাশে ৪/৫ টা বিড়াল আছে। আর ৫ টা বিড়ালের মত প্রথমদিকে ওগুলো শুধু চৌর্যবৃত্তির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।সেজন্য আম্মু সবসময় খাবার জিনিস সাবধানে রাখতেন রান্নাঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে আথবা সোজা চালান করে দিতেন ফ্রীজে, এখন পর্যন্ত তাই করে আসছেন। কিন্তু এসব করে কোন কাজ হল না। আমরা খুব অদ্ধভূত ব্যাপার দেখতে লাগলাম- বিড়ালবাবাজীরা অজানা কারণে আমাদের খাটের নিচে এবং স্টোররুমের দিকে আনাগোনা করে। অনেক ভেবে আব্বু বের করলেন কারণটা। আমাদের বাসায় তখন ছো্ট্ট ইঁদুরের উপদ্রব ছিল, আর ছো্ট্ট ইঁদুরের লাল্টু লাল্টু ছানাদের দিয়ে ভোজকর্ম সারতেই তাদের যাতায়াত। আব্বু আর দেরি না করে ইঁদুর মারার ওষুধ দিয়ে ৫/৭ দিনের মধ্যেই বাসা থেকে সব ইঁদুর উৎখাত করলেন।
আমরা ভাবলাম খাবার-দাবার নেই, ইঁদুর ও নেই এবার বুঝি বিড়ালের ঝামেলা শেষ হল। কিন্তু বিড়ালবাবাজীরা শুরু করলো নতুন কিরিকান্ড।
এই প্রচন্ড গরমে আমরা আমাদের জানালা আর বারান্দার দরজাগুলো খুলে রাখি রাতের বেলা, তাছাড়া আমাদের এলাকাটাও বেশ নিরাপদ বলে কোন সমস্যা হয় না। হঠাৎ আবিষ্কার করলাম সকাল বেলা প্রায়ই বিড়ালদের দেখা যায় আপুর রুম থেকে বের হচ্ছে...। ব্যাপার কি!! আপু বিবাহিত, ও আমাদের বাসায় বেড়াতে এলেই কেবল ওর রুমটা ব্যবহার হয়। আর এই সুযোগে বিড়ালবাবাজী আরাম করে রাতের ঘুমটি ঘুমিয়ে নেয় আপুর বিছানায়। এখন রাতে আপুর রুমের দরজা-জানালা বন্ধ রাখছি। তো বিড়ালের আসা-যাওয়া কদিন বন্ধ কিন্তু যন্ত্রনা বন্ধ সেটা ভাববেন না যেন। সকালে ওঠেই দেখা যায় সিঁড়ির এখানে সেখানে টয়লেট করে রেখেছে তারা। আম্মু-আব্বুর মেজাজ খারাপ, বুয়ার কথা আর নাই বা বললাম.....বুয়াই তো ওসব পরিষ্কার করে আমাদের কৃতার্থ করেন।
আমি যখন রাতের বেলা পিসির টেবিলে বসে থাকি অথবা মশারির মধ্যে ঢুকে পড়াশুনা করি তখন আমার বারান্দার দরজা দিয়ে বিড়ালবাবাজী বাসায় প্রবেশের চেষ্টা করে এবং প্রবেশ পথে আমাকে দেখে থেমে যায়.....কিন্তু দৌড়ে পালায় না...বরং এমনভাবে তাকিয়ে থাকে যেন অনুমতি দিলে গৃহে প্রবেশ করিয়া আমাকে বাধিত করবেন। আম্মু এবং ভাবীকে দেখলেও একই কাজ করে...পরে না চোখের পলক স্টাইলে তাকিয়ে থাকে.....সে তাকানোতে না আছে ভয় না আছে লজ্জা। এমন বেয়াদব বেলেহাজ বিড়াল আমি জীবনে দেখি নি।
এই ফাজিল বিড়ালগুলোর সবকিছুই সহ্য করছিলাম আমরা মুখবুঁজে, শুধু এটাই ভাবতাম- থাক অবলা প্রাণী...!
কিন্তু এই অবলা জীবের সাম্প্রতিক কর্মকান্ডে আমরা আর চুপ থাকতে পারছি না....
গত পরশুদিন সকালে উঠে আম্মু আবিষ্কার করলেন বিড়ালবাবাজী ঘুমিয়ে আছে ড্রয়িংরুমের সোফায়.......শুধু তাই নয়....অন্য একটি সোফায় সে ছেট এবং বড় উভয় প্রকার টয়লেটই বিপুল পরিমাণে করেছে। ড্রয়িংরুম সৌরভে পরিপূর্ণ..!
তাল পরদিন আব্বু আম্মু বাসায় ছিলেন না। আমি আর ভাবী খুব সতর্কতার সাথে সব দরজা-জানালা লাগিয়ে দিয়েছি। কিন্তু সকাল বেলা উঠে দেখি বিড়াল দাঁড়িয়ে আছে ডায়নিং টেবিলে। আমি তো অবাক...ঢুকলো কোন দিক দিয়ে??
আমি এমন ধরনের বিড়াল কখনও দেখি নি। আমাদের ও একটা পোষা বিড়াল (টমি) ছিল। টমি কখনও বাসায় টয়লেট করত না, বাইরে বালুর গর্ত খুঁড়ে টয়লেট করে আবার গর্তটা ঢেকে দিত। আথচ টমি আমাদের বাসায় থাকত আদরে। এই বিড়ালগুলো কে তো আমরা পুষি না অথচ আমাদের ভয় ও পায় না। আগে দেখতাম কোন বিড়াল ১০ হাত দূর থেকে মানুষ দেখলে দৌড়ে পালাতো কিন্তু এগুলো.!!!
আমার ছোট ভাই এবিষয়ে একটা মন্তব্য করেছে- "বিড়ালগুলা ইদিনিং রাস্তার কুকুর হয়ে যাচ্ছে।" (রাস্তার কুকুরগুলো পথচারীদের পাশ দিয়ে নির্ভীকচিত্তে ঘুরে বেড়ায়)
জানি না এই মছিবত থেকে কীভাবে মুক্তি পাব..??
সর্বশেষ এডিট : ১৭ ই জুন, ২০০৯ রাত ৯:৫৮

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



