পেঁয়াজ এমন একটা খাদ্য, যেটার অভাবে মানুষ মরে না, পুষ্টিহীনতায়ও ভোগে না, পেঁয়াজু আলচারের সৃষ্টি করে; তা'হলে, পেঁয়াজ নিয়ে সরকার ও মানুষ এতো চিন্তিত কেন? জাতি প্রয়োজনীয় পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপাদন করেনি, সুতারং পেঁয়াজ না খেয়ে থাক, সোজা ব্যাপার!
ভারতীয় রপ্তানী বন্ধের ঘোষণা আসার আগেরদিন পেঁয়াজের দাম ছিলো ৮০ টাকা। ভারতীয় ঘোষণা আসার পরদিন, সরকার ঘোষণা করতে পারতো, "কেহই ৮০ টাকার বেশী দামে পেঁয়াজ বিক্রয় করতে পারবে না: আমদানী কর, রপ্তানী কর, উৎপাদন কর, যা ইচ্ছা তাই কর, কিন্তু পেঁয়াজ ৮০ টাকার থেকে এক পয়সা বেশী বিক্রয়ের চেষ্টা করলে পাছার উপর ২০ বেত।"
বাংগালীরা পেঁয়াজ নিয়ে যেই ধরণের চীৎকার শুরু করেছে, তাতে মনে হচ্ছে, পেঁয়াজের অভাবে ঢাকার রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ মরে পড়ে আছে। পেঁয়াজ কি সেক্স মেক্স বাড়ায় নাকি, না'হলে, পেঁয়াজের জন্য এই লংকাকান্ড কেন?
বাংলাদেশের কৃষি জমির পরিমাণ কমছে প্রতিদিন, এবং প্রতিদিন কিছু কৃষকের ছেলে বিদেশে চলে যাচ্ছে সস্তা শ্রমিক হিসেবে; ওরা ওমান ও অনেক আরব দেশে পেঁয়াজের চাষও করছে। আবার, কৃষকের জমি ভাইবোনের মাঝে বিভক্ত হয়ে, ছোট ছোট খন্ডে ভিবক্ত হয়ে, চাষের অনুপযুক্ত হয়ে যাচ্ছে! আমি নিজে, ১৯৬২ সাল থেকে ১৯৭২ সাল অবধি পেঁয়াজ, রসুন চাষ করেছি; আমার সেসব জমি এখন পতিত জমি, চাষ হয় না।
আমাদের কৃষিমন্ত্রী ড: আবদুর রাজ্জাক সাহেব কি দেশের পেঁয়াজ উৎপাদনের খবর রাখার মতো দক্ষ; উনি কি জানেন, জাতির কি পরিমাণ পেঁয়াজ দরকার, কি পরিমাণ জমিতে পেঁয়াজের চাষ হয়, কত চাষী পেঁয়াজ করবেন এই বছর? চাষীরা কি উনার কেনা গোলাম যে, উনার দরকার অনুসারে পেঁয়াজ করে দেবেন?
তবে, কৃষিমন্ত্রী ঢাকায় বসে কম্প্যুটারে ডাটা মাটা দিয়ে আনুমানিক একটা ধারণা পেতে পারেন, দেশে কি পরিমাণ পেঁয়াজ হতে পারে, কি পরিমাণ আমদানী করতে হতে পারে, কোন দেশ থেকে আনা যায়, কাদের মারফত আনলে দাম ঠিক থাকবে, ইত্যাদি ইত্যাদি; ইহার জন্য জ্ঞাানের দরকার হয়; সেটা উনার আছে কিনা, প্রাইম মিনিষ্টার শেখ হাসিনা বলতে পারবেন।
পেঁয়াজ বিপ্লব করে যদি বিএনপি-জামাত বর্তমান সরকার উল্টায়ে দিত পারতো, তাও খারাপ হতো না; রুশ বিপ্লবের পর, ইহা ইতিহাসে স্হান করে নিতো; এত আজব বিপ্লব আজো বিশ্বে হয়নি কোনদিন। তাও, সম্ভব নয়, উহাদের একমাত্র সমস্যা হলো বেগম জিয়ার মুক্তি, উনারা ঈদের জন্য অপেক্ষা করছেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৯ রাত ১:২৭