somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

চোরাবালি-
পোষাক তৈরীর কারখানায় মাসিক বেতনে কামলা দেয় মাস শেষে মাইনের আশায়, যে মাইনে দিয়ে চলবে নিজের পরিবার ও সমাজের জন্য কিছু একটা করার প্রচেষ্টা মাত্র। নিতান্তই সাদামাঠা গ্রাম থেকে আসা স্বল্প শিক্ষিত মানুষ।

আসুন ভালো কিছু চিন্তা করি # ২

২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তবুও ভাবতে চাই ভালো কিছু নিয়ে-

ঘটনা # ১
২০১৬ সেপ্টেম্বর কিংম্বার নভেম্বরের প্রথম দিক। একটা বিশেষ প্রয়োজনে ঈশ্বরদি পেপার মিল এলাকায় যাই। কাজ সারতে সন্ধ্যা প্রায়। ব্যস্ততায় ৪/৫দিন সেভ না করার ফলে মুখে খোচাখোচা দাড়ির চুলকানিতে অস্থির। ভাবলাম নরসুন্দর দিয়ে কাজটা সেরেই ফেলি। একেবারেই মফস্বাল এরিয়া, খুজে পেলাম সম্ভবত কদম বা এজাতীয় একটা গাছের নিচে একটা টিনের বেড়ার সেলাুন। বসতে যাব এমন সময় কয়েক জন এল তার মধ্যে একজন একটু নেতা টাইপের মনে হল, কোন কথা না বলে অনেকটা আমাকে সরিয়ে সিটে বসেই হুকুম করল এই সেইভ কর। নরসুন্দর করুন সুরু বলল- মিয়া ভাই এককাপ চা খান, উনার কাজটা সেরে নেই। বুঝলাম সে অসহায় এবং যে বসেছে সে নেতা টাইপের। আমি পাশের দোকানে বসে চা খেলাম, ফোনে বাড়ীর সঙ্গে কথা বললাম প্রায় ১৫/২০মিনিট পর এসে দেখি উনার শেষ, অন্যজন বসছে। নরসুন্দরের করুন মুখ। মাথা তত সময়ে আমার কিছুটা গরম। শুধু বললাম, এমনটা কি ঠিক। কষ্টের হাসি দিয়ে বলল মিয়া ভাই একটু।

ঘটনা # ২
সেদিন কাজ শেষ না হওয়ার পরের দিন আবার যেতে হল। ঈশ্বরদি রেলগেট থেকে অটোতে যেতে হয়। জন প্রতি ভাড়া ১০টাকা কিন্তু ব্যাটারি চালিত অটোতে মোট ৮জন অথবা ৭জন উঠতে হবে। রিজার্ভ গেলে মোটামুটি ৫০টাকায় যাওয়া যায়। স্বাস্থ্যগত দিক থেকে ভালো হওয়ায় ৩জন কোন ভাবেই বসা সম্ভব না আমার পক্ষে তাই অটো রিজার্ভ করতে হয়। কিন্তু সিরিয়ালের অটোগুলি ৮০টাকা কমে যাবে না। এমনকি সেখান থেকে কাওকে তার কমে যেতেও দিবে না। গ্রাম্য পথে দুরুত্ব বেশ তাই প্যাডেল রিক্সা সম্ভব না কিন্তু তারা ব্যাটারি চালিত রিক্সাও চলতে দেয় না। এক মহারাজত্ব চলে সেখানে। আস্তে করে একজনকে বললাম রিজার্ভ যাবি নাকি, সে ইশায়র ৫০দেখালে আমি উঠে বসলেম। ওটো যেই না ঘুরিয়েছে রাস্তার পথে অমনি সামনে হাজির দলবল, যেতে পারবে না, আমাকে বলে তাদের গাড়ীতে যেতে হবে না হলে নেমে যান। একটু কৌশলি উত্তর দিলাম, তালতলা মোড়ে যাব। ওটোও আমার কথা শুনে বলল তালতলা আনসার ক্যাম্পে যাবে। সে যাত্রায় যাত্রা করতে পারলাম। আমি আদতে সেখানে আনসার ক্যাম্প আছি কিনা তাই জানি না।

ঘটনা ৩#
এবারে ফেরার পালা। চিত্রা এক্সপ্রেসে প্রচন্ড ভিড় কোন সিট নাই এমনকি কাউন্টার থেকে টিকেট নেয়ারও কোন উপায় নাই এত লম্বা লাইন। ছাত্র জীবনের কৌশল কাজে লাগালাম, সোজা কেবিন কোচে উঠে পড়লাম, টিটি সামনে পড়তেই বললাম, ভাইজান কাউন্টারের অবস্থা তো দেখছেন, টিকেট নিতে পারি নাই, আর লোকাল কোচে চলে যেতে চেষ্ট করব, যদি একটা স্ট্যান্ডিং টিকেট দিয়ে দেন। তিনি অতিশয় ভদ্র মানুষ তাই রেলের বিধি অনুসারে মিনিমাম জরিমানা সহ টিকেট দিলেন। আর বললেন এ কোচে আর কেও উঠবে না। আপনি দরজার পাশে দাড়ান, সামনে এত ভিড় যেতে পারবেন না। তবুও অনুরোধ করলাম যদি কেও নেমে যায় কিন্তু ঢাকা পর্যন্ত টিকেট এমন হলে আমারে দিয়েন। বলল ঠিক আছে। বড়াল ব্রীজ পার হওয়ার পর এলেন তাদের বড়বাবু। শুরু হল জেড়া, কোথা থেকে উঠলাম, কোথায় যাব ইত্যাদি, শেষমেষ ১২৫০টাকা জরিমানা সহ ভাড়া দাবি করল। আমি জানি এ ধরনের পরিস্থিতিতে পড়তে হয়, তারা খুলনা থেকে জরিমানা সহ ভাড়া দাবি করবে শেষে যার কাছে যতদুর নিতে পারে এ জন্য আগে থেকেই জরিমানাসহ টিকেট নিয়ে রেখেছি। পকেট থেকে টিকেট বের করতেই অগ্নি মূর্তি। এত কম টাকায় কে দিল টিকেট আপনাকে, এখানে কেন দাঁড়িয়ে, এখানে দাঁড়াতে পারবেন না, ইত্যাদি। মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছিল যখন তখন সহ্য করতে না পেরে বললাম আপনার আচরণ বিধি ও জরিমানার বিধি সহ এখানে আমি দাঁড়াতে পারব না কত নম্বর ধারায় আছে আমাকে দেখান। না দেখালে আমি যাব না। আপনার বিধিতে যদি বলা থাকে তা হলে আমি এখানে আমি দাঁড়াবো না।

আমার পাশেই বক্সের উপর বসে আছেন বয়ষ্ক ভদ্র লোক, তত সময়ে তিনি মুখ খুললেন। তিনি তাদের বললেন আপনি তো আপনার আচরণ বিধির কোন কিছুই মানছেন না এবং যেহেতু উনি টিকেট নিয়েছেন আপনার সমস্যা কোথায়। এবার তিনি থামলেন। গড়গড় করতে করতে তার কন্ট্রোলে ফোন দিলেন সম্ভবত তিনি কন্ট্রোল থেকে তার পক্ষে কোন যুক্তি পেলেন তাই যে টিকেট দিছে তাকে ডাকলেন এবং শুরু করলেন ঝাড়ি। কোন বিধিতে টিকেট দিলেন, এখানে কেন, কোচে উঠতে দিল কে। বড়বাবু বিদেয় হলে কিছু সময় পরে যে টিকেট দিছেন তিনি এসে বললেন ভাই উনি আমার কন্ট্রোলে ফোন দিয়ে আমার নামে অভিযোগও দিছে। আপনার নাম্বার দেন প্রয়োজন পরলে আপনারে ফোন করতে পারে। আমি আমার কার্ড বের করে দিলাম।

ততক্ষনে পাশের ভদ্র লোক আবার বলতে শুরু করলেন, আমি রেল পূর্বাঞ্চলের হেড অফ ট্রাফিক কন্ট্রোলার ছিলাম, এখন রিটায়ার্ড, আপনার মত আমিও কোন সিট পাইনি, আমার পরিচয় দিয়ে ও স্ট্যান্ডিং টিকেট দেখিয়ে গার্ড সাহেবকে অনুরোধ করলাম, আপনার এখানে তো অনেক জায়গা, যদি একটু কনসিডার করতেন। তিনি এত দুব্যবহার করলেন যে, আমি আমার চাকুরী জীবনেও করি নাই কারো সাথে। যারা নিজেদের সাবেক স্টাফদের সাথেই ভালো আচরণ করতে পারে না, তারা সাধারনের সাথে কি আচরণ করবেন।

তারপরও চেষ্টা করি ভালো কিছু চিন্তা করার
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৯ সকাল ১১:৫৯
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৪৫


ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×