আর দশটা দিনের সাথে আজকের দিনটারও কোন পার্থক্য ছিলনা, নতুন ক্যালেন্ডার দেখে মনে হচ্ছে একটু পরিবর্তন এসেছে। আজ প্রায় দু মাস পর সকাল সাড়ে সাতটায় স্কুলে গিয়েছি! ছাত্রিদের কাছ থেকে পাওয়া উইশ, বান্দর কলিগদের দেওয়া রজনীগন্ধার স্ঢীক পেয়ে মনে হচ্ছে আজকের দিনটা একটু আলাদা। বই বিতরন, নতুন খাতায় নতুন ছাত্রীদের নাম
তোলা, গালগপ্প, একে অন্যের পিছনে লাগা, এসব করেই সকাল গড়িয়েছে দুপুরে। বাকী সময়টা ছিলাম বিভূতিভূষণের সাথে। একটা করে পৃষ্ঠা উল্টে চলেছি, মুগ্ধতা আর ঘোরে আচ্ছন্ন হয়ে আছি। অপু, দূর্গা, ইন্দির ঠাকুরন, সর্বজয়া, হরিহরের জীবনযাত্রা কয়েকটা দিন ব্যাস্ত রাখবে। পথের পাঁচালি প্রথম পড়েছিলাম ক্লাস ফোরে। আজ এত বছর পর বইটা আবার হাতে পেয়ে পুরো নস্টালজিক হয়ে গেছি। আস্ত শৈশবটা এক ঝটকায় সামনে হাজির। প্রথম যখন পথের পাঁচালি পড়ি তখন কেন যেন নিজেকে দূর্গার আসনে বসাতে খুব ভাল লাগত। দূর্গার দুরন্তপনার কোন তুলনা চলেনা। আমার এখনো মনে আছে দূর্গার মৃত্যুতে আমি প্রচন্ড কেঁদেছিলাম। মা অনেক বুঝিয়ে আমার কান্না থামিয়েছিলেন। দ্বিতীয়বার পড়বার সময় যদি দূর্গার মৃত্যু আবার চোখের জল আনে তাহলে বুঝে নেব আমার ভিতরের শিশুটা এখনো মরে যায়নি। জানিনা কি হবে। তবে আমি প্রচন্ডভাবে চাইছি কাঁদতে।
"দিন রাত্রি পার হয়ে, জন্ম মরণ পার হয়ে, মাস, বর্ষ, মন্বন্তর, মহাযুগ পার হয়ে চ'লে যায়. . . তোমাদের মর্মর জীবন-স্বপ্ন
শেওলা-ছাতার দলে ভ'রে আসে, পথ আমার তখনো ফুরোয় না. . .চলে. . .চলে. . .চলে. . .এগিয়েই চলে. . .(পথের পাঁচালী)

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




