আমার বেশ ক'বছরের পুরনো মোবাইল ফোনটার কথা কখনো দিন লিপিতে লিপিবদ্ধ হয়নি। কত সুসংবাদ, দুঃসংবাদের সাক্ষী এই ফোন। কখনো ফোনে খবর শুনে আনন্দে লাফিয়েছি, কখনো কেঁদেছি। কখনো কারো ঝাড়ি শুনে ইচ্ছে করেছে ভেঙে ফেলি, পরে ভেবেছি অন্যের উপর রাগ করে নিজের ফোন ভেঙে কি লাভ, গেলেতো আমারই যাবে, কার কী তাতে। নিজেকে বুঝিয়েছি, 'চর্যা রেগে যাচ্ছ তো হেরে যাচ্ছ!'
আমার টিভি রিমোটের কথাটাও কখনো লেখা হয়নি, যেটা বেশীর ভাগ সময়ে আমার দখলে থাকে। অনেকটা জোড় যার মুল্লুক তার টাইপ। আমার পছন্দের অনুষ্ঠানই দেখতে হবে আমার বাসায় যে থাকবে। দেখতে ইচ্ছে না করলে ঘুমিয়ে যেতে পার সে।
আমার বাসার সামনের বাসায় একটা ছোট পিচ্চি বাচ্চা আছে আমার মেয়ের বয়সি, ওর কথাও কখনো লেখা হয়নি, নিয়ম অনুযায়ি বাচ্চাটার আমাকে খালামনি ডাকার কথা, কিন্তু সেই প্রথমদিন থেকেই ও আমাকে ম্যাডাম বলেই সম্বোধন করে। ওকে অনেক বুঝিয়েও লাভ হয়নি। দিনে যতবার ওর সাথে দেখা হবে ততবার বাচ্চাটা সালাম দেবে, 'ম্যাডাম আসসালামু আলাইকুম, কোথায় যাচ্ছেন?' এখন ওর প্রশ্ন শোনা এবং তার উত্তর দিতে দিতে আমি এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে কোনদিন ওকে না দেখলে গিয়ে খোঁজ নেই কোথায় গেল বাচ্চাটা।
আমার আর অনুর খুব পছন্দের একটা জায়গা আছে। একটা বিশাল দিঘী আর চারপাশে অনেক বড় বড় আম গাছ। আমাদের মন খারাপের সময়গুলোতে দিঘীর পাড়ে বসে থাকি। কি করে যেন মন খারাপ কিছু মুহুর্তের মধ্যে উধাও হয়ে যায়।
আমার মাঝে মাঝে পান খেতে খুব ভাল লাগে। তাও জর্দা দিয়ে। একজন পান ওয়ালা বৃদ্ধ চাচা আছেন যার দোকানে গিয়ে দাঁড়ালেই তিনি বুঝতে পারেন আমার এখন দুটো পান লাগবে। তাকে বলতে হয়না আমার পানে কি কি দিতে হবে। তিনি সুন্দর যত্ন করে দুটো পান সাজিয়ে কাগজে মুড়িয়ে দেন।
দিনলিপিতে আরো কত কিছুই যে লেখা হয়নি। হয়ত সব কথা লেখাও যায়না। তবুও যতটুকু ধরে রাখা যায় সেটাও কম নয়।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




