সারাদিন খুব আনন্দে কেটেছে।
আজ স্কুলে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠান ছিল। তাই একটা উত্সব উত্সব গন্ধ ছিল চারপাশে। দিনটাও ছিল সোনাগুড়ো রোদে ঝলমলে।
বাচ্চাদের পাশাপাশি টিচারদের জন্যেও ছিল কিছু চমত্কার ইভেন্ট। যেগুলোতে খেলা কম আনন্দের ঢেউ ছিল প্রবল।
প্রথমেই মাঠে নামলেন আমদের দুই শিফটের দুই এ্যাসিসটেন্ট হেডস্যার। সেনস্যারের আর রহমানের স্যারের মধ্যে চলবে মাটির হাঁড়ি ভাঙার লড়াই। দিবা-শিফটের সেন স্যারের চোখ বেঁধে দিলেন প্রভাতি-শিফটের টিচাররা। চোখ বাঁধার পর স্যারকে বেশ করে ঘুরিয়ে বলা হোল এগিয়ে গিয়ে হাঁড়ি ভাঙতে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস সেন স্যার দেখতে পাচ্ছিলেন। উনি ঠিক ঠিক হাড়ির কাছে পৌঁছে গেলেন এবং একবাড়িতে হাঁড়ি ভেঙে ফেল্লেন। এবার প্রভাতির রহমান স্যারের চোখ বাঁধে দিলেন দিবার টিচাররা। আমরা প্রভাতির টিচাররা খুব করে রহমান স্যারকে শিখিয়ে দিতে লাগলাম কি করে চোখ বাঁধা অবস্হায়ও চুরি করে দেখা যাবে। আমাদের সকল কুট বুদ্ধিতে জল ঢেলে রহমান স্যার হাঁড়ি থেকে কমপক্ষে তিন হাত দূরে লাঠি দিয়ে বাড়ি দিলেন, ফলাফল হাঁড়ি ভাঙা দূরের কথা হাঁড়ি যেন অট্রহাসি হাসতে লাগলো। সাথে দিবার টিচাররাও চিল্লাতে লাগলো। যেহেতু আমাদের স্কুলটা দুটো শিফটের তাই প্রভাতি আর দিবায় বেশ একটা রেশারেশী চলে। রহমান স্যার হাঁড়ি ভাঙতে পারেনি তাতে কি তাওতো স্যার দুজনের মধ্যে সেকেন্ড হয়েছেন। আমরা প্রভাতির টিচাররা এতেই বেজায় খুশী।
এরপর এলো মেয়ে টিচারদের মিউজিকের তালে তালে বল চেন্জ খেলা। আমার খেলাধুলার অতীত ইতিহাস দুর্দান্ত রকমের খারাপ। মালার ইতিহাসও আমার মতই। ছোটবেলায় আমি যখন দৌড় প্রতিযোগীতায় অংশ নিতাম তখন আমি মাঝ মাঠে থাকতেই দেখতাম প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় হওয়া শেষ। এরকম একটা ইতিহাসকে সঙ্গী করে অনেকটা হেরে যাওয়ার মানুষীকতা নিয়ে বসলাম খেলতে। ইতিহাস অনুযায়ি আমার আউট হয়ে যাওয়ার কথা প্রথম দিকেই, কিন্তু আমি আমাকেই অবাক করে দিয়ে খেলায় টিকে রইলাম অনেকক্ষণ। ৪র্থ হলাম। যদিও ৪র্থ স্হান অধিকারীকে কোনই পুরস্কার দেয়া হবেনা তাতে কি আমি নিজেই মুগ্ধ নিজের performance এ!
হেরেছি কিন্তু যুদ্ধ করেই হেরেছি অনেকটা বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের মত।
ঈশশশ, একটুর জন্য তৃতীয় হতে পারলাম না। জীবনে প্রত্যেক মানুষকেই কোন না কোন খেলাতে হারতেই হয় অন্য প্রতিযোগীর কাছে।সব খেলা শুধু যোগ্যতা দিয়ে জেতা যায়না। যোগ্যতা চেষ্টা এসবের বাইরেও একটা ফ্যাক্টর থাকে, হয়তবা একাধিকও। সব খেলাতেই জিতব বলে যে মানুষ পণ করে আসে, সেই বোকা-জেদীর কপালে থাকে অনেক দুঃখ, জানি আমি। তবুও হারতে কারই বা না দুঃখ হয়! ফলাফল জানাই ছিল তাও একটু একটু খারাপ লাগছিল। যে হেরে যায় তার পক্ষে হারটা স্বীকার না করেও উপায় থাকেনা।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:১০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




