অনেক বছর পর চিঠি লিখলাম। চিঠিটা লিখে নিজেই অভিভুত। না এখনো চিঠি লেখা ভুলে যাইনি। মনের সুন্দর আবেগি দিক গুলো এখনো জীবন্ত আছে।
আমার চিঠিগুলোতে কখনো আবেগের বাড়াবাড়ি থাকতনা। কারো জন্য কলিজা ফেটে গেলেও ঠিক যতটা ফিল করি ততটা চিঠিতে দেখাতে পারতাম না। সে জন্য অনেকের অনেক রাগ দেখতে হয়েছে। কিন্তু কিছু করার ছিলনা। সবথেকে ছোট চিঠি লিখতাম বাপজান কে। বাপজান বলতেন আমি নাকি চিঠি না চিরকুট লিখি। আমার চিরকুটের জবাবে বাপজান বিশাল বড় বড় চিঠি লিখতেন। বাপজানের চিঠির একটা কমন উক্তি ছিল 'কষ্ট প্রশিক্ষন, সহজ যুদ্ধ'!
আর মা যেন ইতিহাস লিখত আমাকে। কত শত কথা যে চিঠিতে আঁকত মা। ভিষণ অবাক লাগত মা এর চিঠি গুলো পড়তে।
আমরা পরিচিতরা মিলে ঠিক করেছি সুযোগ পেলেই আমরা একে অন্য কে চিঠি লিখব। না কী-বোর্ড চেপে নয় একদম কাগজে কলমে চিঠি লিখব। হঠাত্ করেই চিঠি লিখার সুযোগ মিলে গেল আমার। একটা জরুরী কাগজ আমার বাড়িওয়ালার কাছে রেখে আসতে হবে যেটা মৌমি নিয়ে নেবে উনার কাছ থেকে।
কাগজটা রেখে আসার সময় মৌমিকে একটা চিঠিও লিখে আসলাম। চিঠিটা যেমন ছিল:
প্রিয় মৌমি,
শুভেচ্ছা জানবি, আমার বার্ষীকবেতন বৃদ্ধির আবেদনপত্রটা রেখে গেলাম। আমি তারিখ বসাইনি, তুই একটু তারিখটা বসিয়ে দিস। আর আমার আবেদনপত্রে কোন ভুল থাকলে তুই ঠিক করে দিস। তারাদি কে অবশ্যই এটা জমা দিয়ে দিবি।
অনুর কাছ থেকে তুই যে পঞ্চাশ টাকা আর জাকি আমার কাছ থেকে যে আটাশ টাকা পেত তা রেখে গেলাম। পিকনিকের ডেট হলে জানাবি। ভাল থাকিস।
চর্যা।
চিঠি পেয়ে মৌমি বেজায় খুশী। ফোনে ওর গলা শুনে আর উচ্ছাসে সেটা বোঝা যাচ্ছিল।
আমরা চাইলেই আমাদের জীবনকে সুন্দর করে তুলতে পারি। ছোট ছোট খুশীকে একত্রিত করলেই বেঁচে থাকাটা খুব সুন্দর হয়ে উঠতে পারে।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




