:: রেডি প্লেয়ার ওয়ান
'রেডি প্লেয়ার ওয়ান' স্টিভেন স্পিলবার্গের একটি সাইফাই একশান-এডভেঞ্চার ফিল্ম। স্পিলবার্গের মুভির সাথে যাদের একটু আকটু পরিচয় আছে, তাদের জন্যে স্পিলবার্গের নামটাই যথেষ্ট, মুভিটা কেমন হবে তা আন্দাজ করার ক্ষেত্রে।
সিমেটির প্রধান কিছু চরিত্রে অভিনয় করেছেন - টাই শেরিডন, অলিভিয়া কুক, বেন মেনডেলসন, সাইমন পেগ, লিনা ওয়েথ, মার্ক রাইল্যান্স। ডিরেক্টর স্টিভেন স্পিলবার্গ। বাজেট প্রায় ১৭৫ মিলিয়ন ডলার। বক্স অফিস হিট ৫৮৩ মিলিয়ন ডলার। আইএমডিবি রেটিং ৭.৫
:: প্লট
'রেডি প্লেয়ার ওয়ান' মুভির প্লটটা একদম আলাদা।
২০৪৫ সালের পৃথিবী। যেখানে সব মানুষ ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ওয়ার্ল্ড 'ওয়েসিস'-এ সময় কাটায়, গেমস খেলে, নিজের ইচ্ছামতো নিজের ক্যারেক্টার তৈরি করে। বস্তুত, এভাবে প্রত্যেকে বাস্তব জীবন থেকে পালিয়ে বেড়ায়। বাস্তব জীবনে যে অপূর্ণতা তা পূরন করে ভার্চুয়ালি। ওয়েড নামের বালকটিও এদেরই একজন। সে একটা পরিত্যাক্ত গাড়ির ভেতর নিজের প্লে-স্টেশন বানিয়ে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি 'ওয়েসিস'-এ হারিয়ে যায় যখন তখন।
ওয়েসিসের নির্মাতা গ্রেগোরিয়াস গেমস-এর জেমস হ্যালিডে তার মৃত্যুর আগে বলে যান যে, 'ওয়েসিস' এর মধ্যে তিনটি হিডেন-কী তিনি রেখেছেন, সেগুলো যে খুঁজে পাবে সেই হবে ওয়েসিস-এর উত্তোরাধিকারী এবং হাফ-ট্রিলিয়ন ডলারের মালিক। ব্যাস! সবাই নেমে পড়ে সেই 'কী'/চাবি-গুলোর খোঁজে। আইওআই নামের একটি গেমস কোম্পানি সর্বক্ষণ নজর রাখে ওয়েসিস-এর উপর, যাতে তাদের সিক্সার বাহিনী ছাড়া আর কেউ চাবিগুলো খুঁজে না পায়। এদিকে একসময় ওয়েড খুঁজে পায় প্রথম 'কী'/চাবি। এতে করে আইওআই পেছনে লাগে ওয়েডের। ভার্চুয়াল রিয়েলিটি আর শুধু ভার্চুয়াল থাকে না, নেমে আসে নিষ্ঠুর রিয়েলিটিতে। ওয়েডকে মেরে ফেলার জন্য তার বাড়ি বোমা মেরে উড়িয়ে দেয়া হয়। এখন কি হবে? ওয়েড কি আইওআই-এর ড্রোনগুলোর চোখ ফাঁকি দিয়ে বেঁচে থাকতে পারবে? সে কি পারবে কঠিন বাঁধা উপেক্ষা করে চাবিগুলো খুঁজে নিতে?
তো এরপর দুর্দান্ত সব এডভেঞ্চার আর একশনে ভর করে এগিয়ে যায় সিনেমার কাহিনী। ওয়েড তার কয়েকজন বন্ধুকে সঙ্গে করে ভার্চুয়াল রিয়েলিটি ও একচুয়াল রিয়েলিটি দুই জায়গাতেই লড়াই চালিয়ে যায় সমানে। চোখ জুড়ানো গ্রাফিক্স আর ধুন্ধুমার একশানে ভরা মুভিটা আপনাকে এক মিনিটের জন্যেও উঠতে দেবে না স্ক্রিন থেকে।
:: উপন্যাস ও স্ক্রিন-প্লে
'রেডি প্লেয়ার ওয়ান' আর্নেস্ট ক্লাইনের লেখা একই নামের উপন্যাস থেকে বানানো হয়েছে। উল্লেখ্য যে এটি আর্নেস্ট ক্লাইনের প্রথম উপন্যাস, যা প্রকাশিত হয় ২০১১ সালে। গল্পের নতুনত্বের কারণেই নজর কাড়ে স্পিলবার্গের। তারপর স্পিলবার্গ ক্লাইনের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাকেই স্ক্রিন-প্লে লেখার দায়িত্ব দেন। এ গল্পে ভবিষ্যৎ পৃথিবীর সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে ৮০র দশকের নস্টালজিয়া - গেমস, পপ মিউজিক, ইত্যাদি।
এ সিনেমাটি স্পিলবার্গের একটি দীর্ঘ প্রজেক্ট ছিলো। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, সিনেমাটি বানাতে তার প্রায় তিন বছর সময় লেগেছে এবং এর ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড তৈরিতে কাজ করেছে প্রায় ৮০০ থেকে ৯০০ কর্মী।
:: কিভাবে দেখা যাবে?
আমি মুভিটা দেখেছি নেটফ্লিক্সে। তবে নেটফ্লিক্স একাউন্ট না থাকলে যেকোনো টোরেন্ট সাইট থেকেও মুভিটা নামিয়ে দেখে নিতে পারেন।
মুভিতে যে ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড এবং রিয়েল ওয়ার্ল্ড-এর এক দুর্দান্ত মিথস্ক্রিয়া দেখানো হয়েছে তা অনবদ্য। ব্যকগ্রাউন্ড স্কোর, ভিএফএক্স, গ্রাফিক্স তো একদম টপ লেভেলের। মুভিটা আমি পরপর দুইবার দেখেছি।
এ মুভিতে যেমনটা ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছে, আগামী পৃথিবী আসলে তেমনই হতে যাচ্ছে। যেখানে মানুষের নিজেদের মধ্যে ইন্টারেকশান আরো কমে আসবে। ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতে ডুবে থেকে মানুষ খুঁজবে এডভেঞ্চার-ফ্রেন্ডশিপ-রোম্যান্স। তবুও সবকিছু ছাপিয়ে সিনেমার শেষ উক্তিটিই হয়তো সত্য। তা হলো - 'রিয়েলিটি ইজ দ্য অনলি থিং দ্যাটস রিয়েল'
হ্যাপি ওয়াচিং!
* পোস্টে ব্যবহৃত ছবিটি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত
সর্বশেষ এডিট : ১১ ই জুলাই, ২০২০ দুপুর ১:৪১