আমার চাহিদাগুলো এখন আর আমার কাছে থাকেনা,
যেমন থাকতো আগে,
কৈশোরে-যৌবনে।
আমার একটা জামা ছিল,
জামার বুকপকেটে রেখে দিতাম হাজারখানেক চাহিদা, ইচ্ছা, ব্যাকুলতা।
সারাদিন দৌড়-ঝাপ, চঞ্চলতা আর ভবঘুরে হয়ে
এপাড়া-ওপাড়া হয়ে বাড়ি ফিরতাম
তবুও খুব সন্তর্পণে বুকপকেটে খুব নিবিড় ভাবে
রেখে দিতাম ইচ্ছা নামক অধরা অনুভূতিকে
যেন মনের বেখেয়ালে সে হারিয়ে না যায়।
বড় হতে হতে বুকপকেটে থাকা বেহায়া চাহিদাগুলোর আর জায়গা হয়নি,
তাই তারা হাত-পা বাড়িয়ে অক্টোপাসের মত
কিলবিল করে বেড়িয়ে পড়েছে,
ছড়িয়ে পড়েছে আমার সমস্ত দেহজুড়ে
মাদকের মতো, মাদকাসক্তের মতো।
চাহিদাগুলো তাদের নিজের ইচ্ছামতো
পুরাতন শখগুলো পূরণ করতে ব্যাস্ত,
যার অধিকাংশই তারা পায়না
বা মিলাতে পারেনা যোগ-বিয়োগের সূত্রে।
তখন তারা বিদ্রোহ করে, আর্তনাদ করে
আবার কখনো ক্লান্ত হয়ে হাল ছেড়ে দেয়,
আমি তখন হাফ ছেড়ে বাঁচি।
আমার অপারগতায় ওরা চাতুরী করে আশ্রয় নেয়
এদিকে-ওদিকে
সুযোগ সন্ধানী হয়ে নিজেদের প্রাপ্তির ঘাঁটি গড়ে ভিন্ন ডেরায়
আঁতুর ঘরের সদ্যোজাত সন্তানের মতো
ওরা খুব যত্ন পায়
আমি সেই ভালোবাসা দেখে লোভাতুর হই
আমার অবশিষ্ট চাহিদাগুলো লালন করার ভার
অর্পিত করি কোন সেই দেবালয়ে!
দিনদিন যতো বড় হয়ে ওঠে ওরা
আর ততোটাই দূরে চলে যায় আমার থেকে।
না ঠিক দূরে না,
ওরা থাকে গহীন অন্ধকার অরণ্যের ইচ্ছা সম্রাজ্ঞীর নিয়ন্ত্রণে।
আমার চাহিদাগুলো এখন আর আমার কাছে থাকেনা,
ওরা এখন বড় হয়েছে।
বুকপকেটে ওদের আর জায়গা হয় না!