
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আর তাঁর সমতুল্য কেউ নেই।
সূরাঃ ৫৫ রাহমান, ২৬ নং ও ২৭ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। তাতে সব বিলিন হয়
২৭। আর বাকী থাকে তোমার প্রতিপালকের সত্তা, যিনি মহিমাময়, মহানুভব।
* তাতে সব বিলিন হয়, কিন্তু প্রতিপালকের সত্ত্বা বাকী থাকে। সবার এক অবস্থা, কিন্তু প্রতিপালকের অন্য অবস্থা। সেজন্য তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। তাতে সব বিলিন হয়ে প্রতিপালকের সত্ত্বা বাকী থাকে কেন?
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ২ নং আয়াতের অনুবাদ-
২। আল্লাহ অমুখাপেক্ষী।
* আল্লাহ অমুখাপেক্ষী। কোন কিছুর জন্য আল্লাহর অন্য কারো দারস্থ্য হতে হয় না এবং আল্লাহর সত্ত্বায় কোন কিছুর ঘাটতি নেই। তারমানে আল্লাহর সত্ত্বায় সবকিছু অসীম মাত্রায় বিদ্যমাণ। সুতরাং আল্লাহ অসীম বা অফুরন্ত। অসীমের সীমা নেই। সেজন্য অসীমকে সীমা দিয়ে একাধীক করা যায় না। সেজন্য আল্লাহ একাই অসীম বা অফুরন্ত। আল্লাহ ছাড়া অন্য আর কেউ অসীম নয়। সুতরাং আল্লাহ ছাড়া অন্য কেউ অফুরন্ত নয়। সেজন্য আল্লাহ ছাড়া অন্য সবাই ফুরিয়ে গিয়ে বিলিন হয়। অফুরন্ত বিধায় আল্লাহ না ফুরিয়ে বাকী থাকেন। আল্লাহ অফুরন্ত বা অসীম কেমন করে হলেন?
সূরাঃ ১১২ ইখলাস, ১ নং আয়াতের অনুবাদ-
১। বল, তিনি আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়।
* আল্লাহ এক হওয়াতে তাঁর পূর্বে ছিল শূন্য। কারণ শূন্যের অবস্থান একের পূর্বে। শূন্যের অবস্থান একের পরে করলে সেটা এক না থেকে দশ হয়ে যায়। কিন্তু শূন্যের অবস্থান একের পূর্বে রাখলে উহা শূন্য থাকে।সুতরাং শূন্যের অবস্থান নিশ্চিতভাবে একের পূর্বে। সুতরাং আল্লাহ এক হওয়ায় তাঁর পূর্বে নিশ্চিতভাবে শূন্য ছিল।
শূন্যতে সীমা দেওয়ার মত কিছু নেই। সেজন্য শূন্য অসীম। বস্তু নিকটস্থ্য স্থানের দিকে ধাবিত হয়। কিন্তু শূন্যতে কোন স্থান নেই। সেজন্য শূন্যে বস্তু সবদিকে ধাবিত হতে গিয়ে এর অণু-পরমাণু থেকে ভেঙ্গে গিয়ে এর ইলেক্ট্রন, পোট্রন ও নিউট্রন নামক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু শক্তি সরাসরি শক্তিতেই পরিণত হয়েছে। সকল বস্তর ইলেক্ট্রন, পোট্রন ও নিউট্রন নামক শক্তি এবং সকল শক্তি মিলে অসীম বা অফুরন্ত সর্বশক্তিমান হলেন।
বড় বস্তু সৃষ্টির জন্য সর্বশক্তিমান এর একদিকে চক্রাকার কক্ষপথ তৈরী করলেন। ফলে এগুলো আর বিলিন হচ্ছে না। আর ছোট বস্তু বড় বস্তুতে স্থান লাভ করে টিকে থাকছে। তবে এগুলো বিবিধ কারণে রূপান্তরিত হচ্ছে। রূপ গঠনে সর্বশক্তিমান এর লিমিট বা সীমা দিচ্ছেন। তারপর প্রয়োজনীয় শক্তি তাড়িত করে লিমিট বা সীমায় প্রয়োজনীয় উপাদান যোগ করে কুন বা হও আদেশ দিচ্ছেন। তাতে সেই বস্তু হচ্ছে।
প্রাণী সৃষ্টির জন্য সর্বশক্তিমান প্রাণগুলোকে প্রথমে সৃষ্টি করলেন। তারপর তাদেরকে তাঁর যিকির করার আদেশ দিলেন। সবার যিকিরের বিবরণ তিনি একটি কিতাবে লিখলেন। উক্ত বিবরণ যোগ করে যারা সবচেয়ে উত্তম ফল এবং যারা সবচেয়ে অধম ফল লাভ করলো তাদেরকে আদম (আ.)-হাওয়া (আ.) ও তাদের সন্তান বানানো হলো। তারচেয়ে যারা কম উত্তম ও কম অধম ফল লাভ করলো তাদেরকে জিন বানানো হলো। অন্যদেরকে আঠার হাজার মাখলুকাতে বিভক্ত করে দেওয়া হলো।
যিকিরের বিবরণ যাদের বেশী মাত্রায় মন্দ তাদের জন্য স্থায়ী জাহান্নাম বরাদ্দ করা হলো। তাদের থেকে যাদের যিকিরের বিবরণ উত্তম হলো তাদের জন্য যিকিরের সাথে ইবাদত যোগ করা হলো। সবার ইবাদতের বিবরণ লিখিত হচ্ছে আমল নামায়। তাতে যাদের নেকের পাল্লা ভারী হবে তারা সরাসরি জান্নাতে যাবে। আর যাদের নেকের পাল্লা হালকা হবে তাদেরকে সাময়িক জাহান্নামে যেতে হবে। জাহান্নামে শাস্তি ভোগেরপর তারা জান্নাতে গিয়ে সেখানে স্থায়ী হবে।
যারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী হবে তাদের কিছু ভালো কাজের ফলে তারা জাহান্নামে কম শাস্তি পাবে। যারা চিরস্থায়ী জান্নাতী হবে তাদের কিছু মন্দ কাজের ফলে তারা অন্যদের থেকে কিছুটা কম সুবিধার মধ্যে থাকবে। তারমানে আল্লাহ কারো প্রতি কোন ক্ষেত্রে কোন অবিচার করেননি এবং তিনি কারো প্রতি কোন ক্ষেত্রে কোন অবিচার করবেন না।
সূরাঃ ৯৫ তীন, ৮ নং আয়াতের অনুবাদ-
৮। আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট বিচারক নন?
* আল্লাহ বিচারকদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট বিচারক; কারণ তিনি কারো প্রতি কোন অবিচার করেননি এবং তিনি কারো প্রতি কোন অবিচার করবেন না। সবার সব হিসাব তিনি হাসরের মাঠে বুঝিয়ে দিবেন। তখন কেউ তার আযাবের জন্য আল্লাহকে দায়ী করবে না। নিজের দায় স্বীকার করে সবাই নিজ নিজ কর্মফল ভোগ করবে। ইত্যাকার সকল কারণে আল্লাহর সমতুল্য কেউ নেই।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে মার্চ, ২০২৩ সকাল ১০:৩০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




