somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েদের কথা; লজ্জা পুরুষের ভূষণ-২

২০ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১:২৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেইন গেইটে এসে থামলাম। শেরখানকে দেখলাম তখনো আগের জায়গায় ঝিম মেরে বসে আছে। আমি অনেকগুলো ছাদের ওপরে, দৃশ্যমান জানালার ধারগুলোতে এবং সম্ভাব্য কয়েকটি কোনা-কাঞ্চিতে দু-বার চোখ বুলালাম, কোন পাখি-প্রজাপতি কিংবা পশুও দেখতে পেলাম না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সবুজ চত্বরটি যেন বিরাণ মরুভূমি।

মেইন গেইটের কাছ থেকে একটি পায়ে-চলা সরু কাঁচা রাসতা চলে গেছে উপজেলা সদরের দিকে। সেই সরু পথ ধরে আমি আমার গন্তব্যের দিকে হাঁটতে থাকলাম।
চারদিকে পাঁচিল ঘেরা উপজেলা সদর। পূর্বের অর্ধাংশে একটি বড় পুকুর - মাছ চাষ হয় না, তবে আপামর জন সাধারণের জন্য একটি আদর্শ গোসল-পুকুর বটে। পুকুরের উত্তর এবং পূর্বদিকে তিন চারটে আবাসিক বিল্ডিং, পশ্চিম তীর ঘেঁষে নির্বাহী অফিসারের অফিস ভবন, কোর্ট ভবন, অডিটরিয়াম এবং আরো কয়েকটি ছোট ছোট অফিসগৃহ। একেবারে পশ্চিমে মেইন রোড এবং তার অপর পারেই বেগম আয়েশা পাইলট গাল্র্‌স হাইসকুল।
আমি আমার গন্তব্যের কাছাকাছি চলে এলাম।
পাঁচিল ঘেরা কমপ্লেক্সের ভিতরে ঢোকার জন্য মাত্র দুটি গেইটই আছে - একটি পশ্চিমে, যেটি মেইন গেইট, আরেকটি দক্ষিণ দিকে, আমি যে পথে স্বাসহ্য কমপ্লেক্স থেকে হেঁটে এলাম।

গেইট পেরিয়ে ভিতরে ঢুকতেই আমার দু-নয়ন ভরে গেল - পুকুরের পূর্ব পারে - যেখানে গোটা তিনেক আম আর কাঁঠাল গাছের ছায়া পড়ে আছে, যেখানে সন্ধ্যার একটু পরেই হয়তো ঘন কালো নিকষ অন্ধকারে নিজের শরীরটাকেও দেখা যাবে না, যদিও সূর্য ডোবার এই অব্যবহিত পূর্ব মুহূর্তে সবই স্পষ্টত দৃশ্যমান হচ্ছে - সেখানে প্রায় আধ ডজন লাল-নীল-রঙ্গিন কপোতী জটলা করে কল-কাকলী করছিল, আর তাদের ঠিক মাঝখানে 'উন্নত শিরে' হাত নেড়ে নেড়ে বত্ক্ত্বতা ঝেড়ে যাচ্ছিল আমাদেরই উন্মাদ আবৃত্তিকার - জনাব আবদুল করিম। মুহূর্তেই ওর প্রতি ঈর্ষায় আমার মন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলো, মনে হলো করিম একটা জঘন্য নারী বিশারদ। সারা 'বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে খুঁজে'ও আমি একটি মাত্র প্রজাপতির সন্ধান পেলাম না, আর ঐ শালার আবদুল করিম নারী বিশারদ কিনা হাফ ডজন মেয়ের সমাহার ঘটিয়ে তাদের মধ্যমণি হয়ে দণ্ডায়মান? ওকে আমি আজ খেয়ে ফেলবো না? ওকে যদি আমি খুন করতে পারতাম!

আমি মনকে বললাম, মন, তুমি উত্তেজিত হ'য়ো না, শান্ত হও, শান্ত হও।
আমার মন সত্যিই শান্ত হলো। কিন্তু আমি আবদুল করিমের দিকে অগ্রসর হতে পারলাম না - পুকুরের দক্ষিণ পারে দাঁড়িয়ে আমি উত্তর দিকে মুখ করে থাকলাম, আর আড়চোখে করিমের বাচ্চা করিমের হাবভাবের প্রতি তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ করতে থাকলাম। মাত্র বিশ কি পঁচিশ গজ দূরে ওরা জটলা করছে। একটু খেয়াল করে শুনলেই ওদের বক্তব্য বিষয় স্পষ্ট বোঝা যাবে। কিন্তু এরকম খচ্চর+আমির (= ইতরামির) কাজ আমি করবো না। অবশ্য ওদের সামনে গিয়েও উপস্থিত হওয়া যায়। আমি তো আর মেয়েগুলোকে দেখতে যাচ্ছি না, ওদের সাথে কথা বলতেও যাচ্ছি না - শুধু গিয়ে করিমকে বলবো, আয়, তোকে ডাকতে এসেছি।
ওদের এত জটলার ভিড়ে ওরা কি আমার হঠাৎ উপস্থিতি টের পাবে? আমি চেঁচিয়ে করিমকে ডাকবো, অথচ ওরা কেউ আমার গলার আওয়াজ শুনতে পাবে না, এতগুলো মেয়ের সামনে আমার জন্য এর চেয়ে বেশী বিব্রতকর আর অপমানজনক ঘটনা কি হতে পারে?

এমনও তো হতে পারে - আমার ডাক শুনেই হঠাৎ সবার কথা বন্ধ হয়ে গেল, মেয়েগুলো কৌতুকপূর্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়েই মুখে উড়না চাপিয়ে ঘ্যাঁৎ ঘুঁৎ করে হেসে উঠলো, আর ঐ শালার করিমের বাচ্চা করিম চোখ রাঙ্গিয়ে কটমট করে আমার দিকে তাকালো - ওর এমন সুন্দর রোমান্টিক সন্ধ্যাটা ভেস্তে গেল বলে। মেয়েদের কাছে তো সব যুবক একক ভাবেই মধ্যমণি হতে চায়, আমার উপস্থিতিতে তো ওর সেই ঔজ্জ্বল্য আর নাও থাকতে পারে, তাই না?

মাগরিবের আযান পড়লো। নামাজ পড়তে যাওয়া উচিৎ। আমি গেলাম না। আল্লাহর কাছে মাফ চেয়ে নিব।
মেয়েগুলো মাথায় উড়না টেনে দিল। কিছুক্ষণের জন্য নীরব হলো ওরা। জটলা বোধ হয় ভেঙ্গে গেল। ঘরে ফেরার আয়োজন।
কিন্তু আযান শেষ হতেই ওরা পুনরায় জড়ো হলো। এখন করিম শুধু একাই কথা বলে যাচ্ছে। পাখিদের কিচির মিচিরও যেন সহসা থেমে গেছে।
আবদুল করিমের গলার স্বর শুনে হঠাৎ আমার কান খাড়া হয়ে গেল - সে একটা কবিতা আবৃত্তি করছে, যে কবিতাটির জনক স্বয়ং আমি। আমার সন্দেহ ঘনীভূত হতে থাকলো - লোচ্চাটা এটাকে ওর স্বরচিত কবিতা বলে চালিয়ে দিচ্ছে না তো? আগেরটা শেষ হতেই আরেকটা। আমি ঠিক বুঝতে পারলাম মেয়েগুলো মন্ত্র-মুগ্ধের মত আবদুল করিম নারী বিশারদের কবিতা আবৃত্তি শুনে যাচ্ছে। এ অন্যায় কিছুতেই মেনে নেয়া যায় না। বাটপার, জোচ্চোর, লোচ্চা! তোর পদ্‌স্খলন অবশ্যম্ভাবী। হাটে হাঁড়ি ভেঙ্গে দিলাম বলে। পরের ধনে পোদ্দারী!

আমি করিমের মনের কথাগুলো পড়তে থাকলাম। ওর মনের প্রতিটি শব্দ আমি অন্তরে অন্তরে অনুভব করতে থাকলাম।
দুটি নর-নারী যখন পরস্পরের মুখোমূখী হয় তখন তারা একে অপরের সম্পর্কে কি ভাবতে শুরু করে? নর চায় নারী, নারী চায় নরের মন। এটাই যৌবনের বৈশিষ্ট্য। অতএব আমি নিশ্চিত, একটা পৌরুষদীপ্ত নর যখন কোন এক যৌবনবতী নারীর মুখোমুখী হয়, নর ভাবে আমি তোমার মনের ভিতরে ঢুকে যাচ্ছি, তোমার রহস্য ঘেরা অদৃশ্য মনের ভুবনে আমি গলগলিয়ে ঢুকে যাচ্ছি। নারীর দেহাবরণ সে কিচ্ছু দেখতে পায় না, অন্তর্চোখে নারীর মনের প্রতিটি ভাঁজ সরিয়ে সরিয়ে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে সে দেখতে থাকে, আর ভালোবাসার অন্বেষণে সেই ভাঁজে ভাঁজে সে তলিয়ে যায়, হারিয়ে যায়।

আর নারী? আমি নারী নই, ওদের মনের কথা আমি জানি না, বুঝি না। তবে এটুকু বুঝি, ওরাও পুরুষের মতই রক্তমাংসে গড়া মানুষ, পাথর নয়। ওদেরও শরীর আছে, মন আছে। আর শরীরের প্রতি পরতে পরতে যৌবন লুকিয়ে আছে। যৌবন কখনো সুপ্ত থাকতে পারে না। অতএব অনুমানটা কি দাঁড়ায়? একজন যৌবনবতী নারী যখন একটা পুরুষের মুখোমুখী হয়, সে পুরুষকে বলতে থাকে, তুমি আমার মনের গভীরে চলে এসো। এখনো আসছো না কেন? তুমি চলে যাও আমার মনের গহীন অন্ধকার গহ্বরে। ঢুকে যাও, দেখো, কি রহস্য লুকিয়ে আছে তোমার জন্য সেখানে।
আমি নর-নারীর মনের কথা কি তাহলে জানি না? অবশ্যই জানি।

ঐ শালার করিমের বাচ্চা করিম এখন মনে মনে হারিয়ে যাচ্ছে, পাঁচ-ছয়টা যুবতীর মনের ভিতরে কুসুম বাগানে কেবলই সে হারিয়ে যাচ্ছে। সবার মন জয় করার কতই না প্রাণান্তকর চেষ্টা। কি আমার কবি রে! খুব তো কবিগিরি ফলানো হচ্ছে, তাই না?
পুরো পুরুষ জাতটার প্রতি ঘৃণায় আমার মন ছেয়ে গেল, নারী দেখলে আর এদের হুঁশ থাকে না। গলগলিয়ে মনের ভিতরে ঢুকে যায়। নারী যত সুন্দর হয়, পুরুষের মন তত দ্রুত নারীর মনের ভিতরে ঢুকে যায়।

আমি মনে মনে নিজেকে গালি দিলাম, আমিও তো শালার একটা পুরুষই। বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় কত সাধু পুরুষ, একান্ত গোবেচারা, বোকা-সোকা, হাবা-গোবা, ভাজা মাছটাও উল্টোতে জানি না।
এই আমি, এই ভেজা বিড়ালটা কি মনে মনে কারো গতির কাছ কখনো হার মেনেছি? আমার কাছে তো মনে হয় মানুষের মনের খবর জানার ব্যবসহা থাকলে মানুষ আমার মনের গতি দেখে বিসময়ে হতবাক হয়ে যেত। মানুষ দেখতে পেত, সর্বকালের সর্ব রেকর্ড ভেঙ্গে দ্রুততম গমনকারীর নতুন রেকর্ডটা যে আমারই দখলে!
সেই যে নাসরীন আপা, যেদিন সহসা পেছন থেকে আমার নাম ধরে ডেকে উঠেছিলেন, তার কণ্ঠস্বর শুনেই কি আমি দ্রুততম গতিতে তার মনের ভিতরে ঢুকে গিয়ে খুঁজে দেখিনি তার মন তখন কি বলছিল? তাঁদের সঙ্গে সঙ্গে যখন হাঁটছিলাম, আমি তখন মাথা নিচু করেই হাঁটছিলাম বটে, কিন্তু বাস্তবিকই আমি তাঁদের সবার মনের ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলাম। মনের ভিতরে ঢুকে গেলে তো সবই পাওয়া গেল, বাইরে গলাগলি ধরে হাঁটি, আর লজ্জায় গড়াগড়ি যাই, কোনটারই তখন অর্থ থাকে না। আমার মাঝে মাঝে মনে হয় যাদের বাইরের দিকটা এমন লাজুক গোবেচারার মত, তারাই ভিতরে ভিতরে বড় সেয়ানা। তারা ভিতরে ভিতরে ভাবে বেশি। ভিতরে ভিতরে বেশি ব্যসত থাকে বলে তারা বাহ্যিকভাবে অত্যন্ত নিষ্ক্রিয়। আর যারা বাহ্যিকভাবে বেশি সক্রিয় তারা আসলে মনের ভিতরে ঢোকার কৌশল জানে না, কিংবা ভিতরে ঢোকার ফুরসত পায় না, কিংবা ভিতরে ঢোকার আনন্দটা তারা উপভোগই করতে জানে না।

কিন্তু নাসরীন আপা যখন 'তোর মায়ের পেটের ভাই' বলে পারুল আপাকে খোটা দিয়েছিলেন, আমি মনে মনেই নিজের কাছে এত বড় লজ্জা পেয়েছিলাম যে এখনো তার প্রায়শ্চিত্তের জন্য পথ খুঁজে ফিরি। আমার পারুল আপা, মনে হয়েছিল, আমার প্রাণপ্রিয় আদরের বড় বোন, শ্রদ্ধেয়া বড় আপা, আমার মাথায়-পিঠে হাত রেখে যদি একটু খানি স্নেহের স্পর্শ বুলিয়ে দিতেন, আমি ধন্য হয়ে যেতাম। সেদিনই আমি মনে মনে কসম খেয়েছিলাম, হে প্রভূ, আমি যেন আর কখনো কারো মনের ভিতরে অশোভন উদ্দেশ্য নিয়ে না ঢুকি, আর কোন নারীর মনের ভিতরের অন্ধকারে যেন হারিয়ে না যাই। আমি যেন ফিরে যেতে পারি আমার সেই সাত-আট-দশ-বারো বছরের ~েকশোরে, যখন কারো একটু দরদমাখা আদর পাবার জন্য মনটা কেবলই আনচান করতো, হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, যে কেউ - যখন আমি জানতাম না, কিংবা বুঝতাম না - কিভাবে মানুষ একে অপরের মনের ভিতরে ঢুকে যায়, কেন যায়।

বয়স আমার সাত কি আট বছর হবে। যখন তখন মায়ের চুল ছিঁড়ি, বুকে-পিঠে কামড় বসিয়ে দিই, মা তেড়ে আসেন, বাবার কাছে লুকোই, ছোট ভাইবোনদের শরীর খামচে দিই, কিল-ঘুষিতে ওদের নাক ফাটাই। পাখি মারতে গুলি-গুলতি নিয়ে বনে-জঙ্গলে ছুটোছুটি করি, গুলতি চালাতে পারি না, কখনো দিগম্বর, কখনো বা সামান্য নেংটি কিংবা গামছা থাকে পরনে, আনাজ কোটার বটি দিয়ে খেজুরের ডাল কেটে খেলনা হাতি বা ঘোড়া বানাই।

আমাদের বাড়ির দক্ষিণ ধারে যে নিচু জায়গাটা ছিল, সেখানে ছিল একটি ছোট ডুমুর গাছ। সকাল-দুপুর-বিকেল সারাক্ষণটা আমরা বাচ্চারা ডুমুর গাছে চড়ে নাচানাচি, দাপাদাপি করতাম। গাছের ডালপালা ভাঙ্গতাম, আবার গাছ থেকে লাফ দিয়ে পা ভাঙ্গতাম। এমনই হৈচৈ-এ মেতে থাকতাম সারা বেলা।

একদিন দুপুরে। ডুমুর গাছের এক শক্ত ডালে দাঁড়িয়ে কেবলই উপর-নিচ দোল খাচ্ছি। একবার মনের মধ্যে কি জেদ চাপলো, লাফিয়ে ঝাঁকি দিয়ে এ-ডালটাকে আজ ভেঙ্গে ফেলবো। গায়ের সমস্ত শক্তি দিয়ে, ডালের যতখানি মাথায় গিয়ে দাঁড়ানো সমভব ততখানি দূরে গিয়ে আমি ডালটাকে ঝাঁকি দিচ্ছি। আমার ঝাঁকির তালে তালে নিচে দাঁড়ানো বাচ্চারাও আমার সাথে সাথে জোরে বলে যাচ্ছে হেইও --- হেইও ---। ডাল ভাঙ্গার উৎসব যেন - এমনই উল্লাসে সবাই ফেটে পড়ছিল। হঠাৎ মটমট শব্দে ডাল ভেঙ্গে গেল - গাছের নিচে বাচ্চারা ডাল ভাঙ্গার উল্লাসে সমস্বরে হুররে করে উঠলো। কিন্তু আমি ভারসাম্য হারিয়ে চিৎপটাঙ হয়ে ঝপঝপ করে মাটিতে পড়ে গেলাম - আর ডালটি পড়লো আমার ঠিক পিঠের ওপর। সবাই অনর্গল চেঁচিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু মাটির সাথে বুকে চাপ খেয়ে আমার গেছে দম বন্ধ হয়ে, আমি আপ্রাণ চেষ্টা করছি, কিন্তু দাঁড়াতে পারছি না, বাচ্চাগুলো ডালের ওপরে উঠে লাফাচ্ছে, আমি ডালের নিচে চাপা পড়ে মরতে যাচ্ছি। আমি চিৎকার দিতে পারছি না, আমার দম ফেটে গেল, দম ফেটে গেল, মা --- মা ----।

জীবন-মৃত্যুর সেই সন্ধিক্ষণে দেখতে পেলাম কে এক অপরূপা তন্বী তরুণী ভিড় ঠেলে সবগুলো বাচ্চাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে ডালের নিচ থেকে আমাকে টেনে তুলে নিল - শংকিত চোখ-মুখ তার, আমার বুক ডলে দিচ্ছে, আমার শ্বাস ফিরিয়ে আনার প্রাণপণ চেষ্টা করছে সে। অবশেষে শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয় - আমি মা-মা বলে জোরে কাঁদতে থাকি - তরুণীর চোখে পানি। আমাকে বুকে জড়িয়ে পিঠে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে সে বলে, একদম পাগল পুলা - একদম পাগল পুলা - ভাঙ্গা ডাইলে চইড়া কেউ লাফায়? মইর‌্যা তো গেছিলিরে বাজান - তোরে আমি আর কোনদিন দুই নজরে দেখতাম না - বাজানরে --। তারপর পাগলের মত আমার গালে মুখে গলায় চুমু খেতে থাকে। আমি চোখ খুলে প্রথম ভালো করে তাকে লক্ষ্য করে দেখি, এ যেন আকাশের পরী। আমি মনে মনে বললাম, আমার মায়ের চেয়েও রূপবতী এ কোন্‌ তরুণী? আমি তাকে আগে দেখিনি, অথচ কতই না আদরে সোহাগে মুহূর্তে আমার অন্তর ভরিয়ে দিল? আমাকে সাপটে কোলে করে নিয়ে মায়ের কাছে এসে কেঁদে দিল সে, তোর পুলা আইজ মরতে গেছিলরে বুজি। গাছ থনে ডাইল ভাইঙ্গা পড়ছিল। এই দেখ্‌ কি অইছে ওর বুকে-পিঠে?

আমার মায়ের বুঝি অন্তরাত্মা শুকিয়ে গেল। দিশেহারা মা আমাকে ত্বরিৎ কোলে টেনে নেন। বলেন, কছ কি তুই? এই বিপত্তি কেমনে অইলরে কর্পুরা? আমার হাত-পা-বুক ডলতে ডলতে মা কেঁদে ফেলেন।

আমার কর্পুরা খালা, আমার মা - দেখতে যেন বেহেস্তের হুরপরীদের মত। পথ চলতে চলতে যখনই কোন নারীকে দেখেছি, তরুণীকে দেখেছি, মনের ভিতরে অজান্তে একটা তুলনা জেগে উঠতো, এরা কি আমার মায়ের চেয়েও অধিক রূপবতী? আমার কর্পুরা খালার চেয়েও? আমার মা-খালার চেয়েও অধিক রূপবতী কেউ হতে পারে এ আমার বিশ্বাসই হতো না। যদিও বা দৈবাৎ কোন নারীকে দেখে মনে হতো যে এরা আমার মা-খালার চেয়েও অধিক রূপবতী, হিংসায় আমার অন্তরটা জ্বলে যেত।
কি যে সুন্দর ছিলেন আমার মা আর আমার খালা, তা কোন উপমাতেই বোঝানো সম্ভব নয়। মার গলা ধরে তাঁর কোলে ঝুলে পড়ে যখন এক ধ্যানে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম, মা তাঁর রাঙা ঠোঁটে হাসির রং মাখিয়ে আমার গালে টুসি মেরে জিঞ্চাসা করতেন, চাইয়া চাইয়া এত কি দেখছ্‌ রে বাজান? আমি আরো শক্ত করে মার গলায় গলা মিশিয়ে বলতাম, মা, তুই কত্তো সুন্দর! তুই এত সুন্দর অইলি কেমনে রে মা? আমার মা আমার দু-গালে আবারো টুসি দিয়ে চুমু খেয়ে বলতেন, আল্লার দান রে বাজান। তুই কি এইসব বুজবি?

আমার কর্পুরা খালা যখন আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসতো, তখন আমি খুব, মায়ের কাছে যেমন, তার চেয়েও বেশি ডানপিটে হয়ে যেতাম। তখন আমি একদিনও নিজ হাতে ভাত খেতাম না। খালার কোলে শুয়ে শুয়ে আমি তার কান টানতাম, চুল টানতাম, নাকে খামচি দিতাম, খালা আমার মুখে ভাত তুলে দিত। মাঝে মধ্যে আবার ফোঃ করে মুখের একদলা ভাত খালার মুখে ছিটিয়ে দিতাম। খালা কৃত্রিম বিরক্ত হয়ে উঠে যেতে উদ্যত হলেই বিষম জোরে পিঠে কামড় বসিয়ে দিতাম। খালা কেঁদে-কুটে অস্থির হতো মাঝে মাঝে। মাকে বলতো, তোর পুলাডা কি যে বদমাইশ অইছে। খালার কথায় আমার কেবলই হাসি পেত, খিলখিল করে কেবলই হাসতাম। খালা ঘর থেকে বেরুলেই ঝাঁপ দিয়ে তার কোলে উঠতাম। খালা পারতো না, তারপরও আমাকে কোলে করে কত ঘুরতো!

এভাবে বহুদিন আমার পৃথিবী ছিল আমার মা আর খালার পৃথিবী। সেই পৃথিবীতে অন্য কোন আপন নারী ছিল না।
আমার মনে পড়ে না ঠিক কবে বা কখন নারীরা আমার মনের পৃথিবীতে ভাগ হয়ে গেল, এক ভাগে মায়ের দল, অন্যভাগে না-মায়ের দল। এ না-মায়েদের সম্বন্ধে আমার ধারণাটি কখনো স্বচ্ছ ছিল না। নারীদের ভিতরে কি আছে? এদের দিয়ে কি হয়? জন্ম থেকেই আমার মাকে, আমার খালাকে, চাচীকে, সকল নারীকে দেখেছি রান্না-বান্না, ঘর-কন্না, ছেলে-সন্তানদের লালন-পালন করতে। এছাড়াও কি আরো কোন গভীর কাজ করেছেন তাঁরা?

ফজলুর কাছে যেদিন আমি প্রথম এ ঞ্চানটি লাভ করি, সেদিন কি যে লজ্জা পেয়েছিলাম তা বোঝাতে পারবো না। ছেলে ও মেয়েদের শরীরের বিশেষ অঙ্গের প্রতি অশোভন ইঙ্গিত করে ফজলু বলেছিল, বিয়ার পর কি অয় জানছ্‌? জামাইডা আর বউডা অনেক খারাপ খারাপ কাজ করে। কিন্তুক অনেক মজা অয়।

ফজলুর কথা শুনে আমি মজার কথা ভাবিনি। আমি উল্টো অবিশ্বাসের স্বরে বলেছিলাম, যাঃ, কক্ষণো না, এইডা অইলো খুব শরমের কাজ। জামাই বউরা আবার এত শরমের কাম কেমনে করবো?
আমাকে আস্ত একটা গাধা বলে ফজলু গালি দিয়ে বলেছিল, ঠিক আছে মদন, তোমার যেহেতু এত শরম লাগবো, বিয়া কইরা বউ শিকায় ঝুলাইয়া রাইখো।
আমি খুবই ধাঁধায় পড়ে গিয়েছিলাম। তবে মনে মনে স্বীকার করে নিতে বাধ্য হয়েছিলাম হয়তো ফজলুর কথাই ঠিক। কিন্তু এতে অনেক অনেক মজা হয় কি করে? এই যে সবাইকে নিয়ে চড়ুইভাতি খেলি, ঘুড়ি উড়াই, পানিতে দল বেঁধে ডুব-সাঁতার খেলি, গাছে গাছে ডালে ডালে গেছো-মেছো খেলি, কত আনন্দ, কত মজা, জামাই-বউরা কি এর চেয়েও বেশি মজা করে?

মা-বাবার গন্ডিতে আমি এক দুরন্ত কিশোর। এ গন্ডির বাইরে অতিশয় নিরীহ, ভীরু, চুপচাপ। কিন্তু সেদিন বাড়িতে ফেরার পর থেকে হঠাৎ করেই যেন আমার সকল দুরন্তপনা কোথাও উধাও হয়ে গেল। এত শরমের কাজও পৃথিবীতে ঘটে থাকে, এ জিনিসটা ভেবেই আমি কেবল আশ্চর্য হচ্ছিলাম। যখন এ জিনিসটা জানলাম, পৃথিবীতে যত লজ্জা আছে তখন সব যেন আমার চোখে এসে ভরে গেল।
ছেলে-মেয়েদের মধ্যে এ ধরণের একটা শরম-ঘটিত ব্যাপার আছে বলেই যে সেদিন সিরাজ স্যার বেত্রাঘাতে আমার পিঠের চামড়া তুলে নিয়েছিলেন, এটা বুঝতে আমার বাকি থাকলো না।

আমাদের প্রাইমারী সকুলটি ছিল পূর্ব-পশ্চিমে লম্বা একটা চৌচালা টিনের ঘর। অনুমোদিত তিনজন শিক্ষকের মধ্যে একজন অন্যত্র বদলী হয়ে গেছেন। প্রধান শিক্ষক শরাফুদ্দিন স্যারের সেদিন জ্বর ছিল। ভিতরে পার্টিশন বিহীন তিনটি ক্লাস, তৃতীয় থেকে পঞ্চম, একত্রে পড়াচ্ছিলেন সিরাজুল ইসলাম স্যার। তিন ক্লাসে সব মিলিয়ে বিশ-পঁচিশ জন ছাত্র-ছাত্রী ছিলাম। ডাইয়ারকুম গ্রামের সকুলটি হলেও পাশের গ্রাম ডাইয়াগজারিয়া, ঘাড়মোড়া, মুন্সীকান্দা, সুতারপাড়া, মধ্যেরটেক, গাজীরটেক থেকেও ছেলেমেয়েরা এ সকুলে আসতো। কিন্তু বিদ্যার প্রতি মানুষের আগ্রহ এবং সচেতনতা তখনো জন্মায়নি বলে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা ছিল খুব কম।
আমি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি। বসেছি মাঝের জায়গায়। পূর্ব দিকে পঞ্চম শ্রেণী এবং পশ্চিমে তৃতীয়। আমার বামে জসিম, ডানে নুরু, এই ত্রিরত্ন মিলে চতুর্থ শ্রেণী। নুরুর ডানে ফজলু, তার ডানে আরো তিন চারটে ছেলে, তারও ডানে রাহেলা, শারজুদা, মহিলা এবং আরো কয়েকটা মেয়ে।
ক্লাস শুরু হয়নি তখনো। কিন্তু আমরা সবাই এক সারিতে তিন ক্লাসের ছেলে মেয়েরা চুপচাপ বসে আছি। হঠাৎ নুরু আমার হাতে ছোট করে ভাঁজ করা এক ঢু~করো কাগজ গুঁজে দেয়। তাতে লেখা :

নাদু কয় শারজুরে
তোরে বিয়া করুম রে।

এটা নতুন কিছু না। প্রতিদিনই যে যেভাবে পারে যার তার নামে আজে বাজে কথা লিখে এ-রকম কাগজ চালাচালি করে থাকে। ভালো নামটাকে ছোট করে এমন একটা অদ্ভূত নাম দেয়া হয় যে, যার নামে এটা করা হয় সে ক্ষেপে ভূত হয়ে যায়। নুরুকে নাড়ু, ফজলুকে ফজা বা ফাজিল, জসিমকে জইস্যা - যেমন আমার নাম নাহিদকে করেছে নাদু।
আমি কি কম পারি?

সেদিন বাড়ি এসে লিখে লিখে একটি বড় পৃষ্ঠা ভরে ফেললাম। ফজলু আর কি ছন্দ দিয়ে ছড়া লিখেছে, আমি মনে মনে ভাবলাম, আমার ছড়ার ভেলকি দেখে সবাই মুগ্ধ না হয়ে পারবে না। ফজলুকে আমি ছড়া লেখা শেখাবো বটে। সে শুধু আমাকে আর শারজুকে নিয়ে লিখেছে তো, আমি করলাম কি, তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণী - সবাইকে মিলিয়ে একটা অসাধারণ ছড়া কিংবা কবিতা যাই বলুন, লিখে ফেললাম। সেই অপূর্ব ছড়াটি তো আর এখন হুবহু মনে নেই, তবে কিছুটা এরকম ছিল :

ফইজ্যা কয় শারজুরে
তোরে বিয়া করি রে।
নুরু কয় আয়নারে
তোরে বিয়া করুম নারে।
পান্নু কয় হাসিনা
তোরে ছাড়া বাঁচি না।
জসিম কয় ময়না
আর যে পরাণ সয় না।
রাহেলারে দেইক্যা
তোফা দিল কাইন্দ্যা।
হারুন অনেক সুন্দর
বউ পাইল বান্দর।
আলাউদ্দীন মুন্সী
বিয়ার কথা শুনছি।

এমন একটা সুদীর্ঘ কবিতা লিখে কাগজটি চার ভাঁজ করে বইয়ের ভিতরে ঢুকিয়ে রেখে দিলাম। আমি উতলা হয়ে উঠলাম, কতক্ষণে স্কুলে গিয়ে কবিতাটি সবাইকে দেখাবো। আমার অন্তরের অস্থিরতা চেপে রাখতে সেদিন অনেক কষ্ট হয়েছিল।
ক্লাসে এসে সবাই বসার পর এই সুদীর্ঘ শ্রেষ্ঠ ছড়া-কবিতাটি ভাঁজ করে নুরুকে দিলাম। নুরু ভাঁজ খুলে পড়লো। কবিতাটি পড়ে নুরু খুব মজা পেয়ে আমার অশেষ তারিফ করতে লাগলো - জীবনে এত ভালো কবিতা সে আর কোনদিন পড়েনি (চতুর্থ শ্রেণীর বিঞ্চ নুরুমিয়া এতই কবিতা ভক্ত এবং সে ঐ বয়সেই না জানি কত কত কবিতা পড়ে ফেলেছিল)। নুরু পড়া শেষ করে ওটা যথারীতি ফজলুর কাছে হস্তান্তর করলো। ফজলু হাতে নিয়ে কাগজটা সামনে মেলে ধরে পড়তে শুরু করলো।

ততক্ষণে এই আশ্চর্য কবিতাটির খ্যাতি আমার ডান ও বাম প্রান্তের সর্বশেষ ছাত্র-ছাত্রীটি পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। অনেকেই ফজলুর দিকে চেপে বসে গুন গুন করে পড়তে শুরু করে দিল।
শরাফুদ্দিন স্যারের জ্বর কমেনি, গতকালের মত সেদিনও সিরাজ স্যার একা ক্লাস করাবেন।
টেবিলের ওপর সিরাজ স্যারের বেত মারার শব্দ পেয়ে আমরা যার যার জায়গায় গিয়ে সোজা হয়ে বসলাম। ফজলু তখনো ওটা উঁচু করে মেলে ধরে আছে। দেখি, সিরাজ স্যার তাঁর চেয়ারে বসেই এক দৃষ্টিতে ফজলুর হাতের কাগজটার দিকে তাকিয়ে আছেন। তারপর বললেন, তোর হাতে ওটা কি রে? ফজলু হাসি হাসি মুখ করে বললো, স্যার কবিতা। আমার মুখে কীর্তিমানের হাসি, স্যার এখনই জিঞ্চাসা করবেন, এত সুন্দর কবিতাটা কে লিখেছে রে? সবাই বলবে নাহিদ লিখেছে, নাহিদ। স্যার তখন আমাকে কতই না বাহবা দিবেন!
স্যার সন্দিগ্ধ চোখে তাকালেন। বললেন, আন্‌ তো দেখি।
ফজলু গিয়ে ওটা স্যারের হাতে দিল।

স্যার খুব মনোযোগ দিয়ে পড়ছেন আর মিটিমিটি হাসছেন। পড়া শেষ করে জিঞ্চাসা করলেন, কে লিখেছে? ফজলু একবার আমার দিকে তাকিয়ে নিয়ে বললো, নাহিদ লিখেছে স্যার।
আমার মুখে তখন কতই না গর্বের হাসি ফুটে উঠেছে।
স্যার কৌতুকপূর্ণ চোখে আমার দিকে তাকিয়ে হাসলেন। তারপর বললেন, এদিকে আয়।
আমি উত্তেজনায় ছুটে বের হলাম, স্যারের কাছে যেতে যেতে ভাবি, স্যার এখন নিজেই এটা পড়ে সবাইকে শোনাবেন। দেখ্‌ ব্যাটা ফজলু, আমি কত ভালো কবিতা লিখি।
স্যারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়েছি আর কি, তখনি আমার চুলগাছি ধরে পিঠের ওপর একের পর এক বেত ঝাড়তে থাকলেন। বল্‌ বান্দর, এই বয়সে এই শিখলি কই থেকে, বল্‌ -- বল্‌ -- বল্‌ ---
বেতের চোটে আমি কেঁেদ দিলাম হাঁউ মাঁউ করে। আজকের দিন হলে শিশু-ছাত্র পিটানোর দায়ে শিক্ষকের চাকুরিচ্যূতি সহ জেল হতে পারতো।
এমন সুকর্মের প্রতিফল এই? আমি কিছুতেই মিলাতে পারছিলাম না যে, বিয়ের কথা নিয়ে কবিতা লিখলে তাতে কার কি ক্ষতি হয়। কবিতা কি সবাই লিখতে পারে? সবাই তো কবি নয়। চতুর্থ শ্রেণীতে থাকা অবসহায় আমার মত আর কজনই বা এমন একটা সারা ক্লাসে সাড়া জাগানো কবিতা লিখতে পেরেছিল? আমার অপরাধটা আমি ধরতে পারিনি। বুঝতে পারিনি।

সিরাজ স্যার আমার মাকে এ ব্যাপারে নালিশ করলে মা বলেছিলেন, স্যার, ছেলে আমার, ছাত্র আপনার। হাড় আমার, মাংস আপনার। আপনে শাসন করবেন। শিক্ষকদের প্রতি সেকালের মা-বাবাদের এরকমই অনুরোধ-নির্দেশ ছিল।
ফজলু, নুরু, জসিম ছিল আমার সারা বেলার সঙ্গী। আমি ফজলুকে জিঞ্চাসা করলাম, কবিতা লিখলে কি হয় রে?
ফজলু গম্ভীরভাবে বললো, তুই তো লিখছিস একদম ঐ কবিতা (খাস বাংলায়)। এইজন্য স্যার তোরে মারছে।
আমি বললাম, এইডা (খাস বাংলা) কি?
ও হেসে দিয়ে বললো, হালার পুত এইডাও জানো না? এইডাই তো জামাই বউরা করে।
কেমনে করে রে?
তারপর ফজলু ঐ রকম মজা করার কথাটা বলেছিল।

অন্তরবাসিনী, উপন্যাস, প্রকাশকাল একুশে বইমেলা ২০০৪

পর্ব-১
পর্ব-২
পর্ব-৩
পর্ব-৪
পর্ব-৫
পর্ব-৬
পর্ব-৭
পর্ব-৮
পর্ব-৯
পর্ব-১০
পর্ব-১১
পর্ব-১২
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:০৪
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বারবাজারে মাটির নিচ থেকে উঠে আসা মসজিদ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম মান্না, ২৭ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:৪০

ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজার ইউনিয়নে মাটির নিচ থেকে মসজিদ পাওয়া গেছে। এরকম গল্প অনেকের কাছেই শুনেছিলাম। তারপর মনে হলো একদিন যেয়ে দেখি কি ঘটনা। চলে গেলাম বারবাজার। জানলাম আসল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৎ মানুষ দেশে নেই,ব্লগে আছে তো?

লিখেছেন শূন্য সারমর্ম, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:৪৮








আশেপাশে সৎ মানুষ কেমন দেখা যায়? উনারা তো নাকি একা থাকে, সময় সুযোগে সৃষ্টিকর্তা নিজের কাছে তুলে নেয় যা আমাদের ডেফিনিশনে তাড়াতাড়ি চলে যাওয়া বলে। আপনি জীবনে যতগুলো বসন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

পরিবর্তন অপরিহার্য গত দেড়যুগের যন্ত্রণা জাতির ঘাড়ে,ব্যবসায়ীরা কোথায় কোথায় অসহায় জানেন কি?

লিখেছেন আরেফিন৩৩৬, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৩:৫৭


রমজানে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীকে বেপরোয়া হতে দেখা যায়। সবাই গালমন্দ ব্যবসায়ীকেই করেন। আপনি জানেন কি তাতে কোন ব্যবসায়ীই আপনার মুখের দিকেও তাকায় না? বরং মনে মনে একটা চরম গালিই দেয়! আপনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯

মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা বলতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×