somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মেয়েদের কথা; লজ্জা পুরুষের ভূষণ-১

১৮ ই নভেম্বর, ২০০৮ বিকাল ৫:৪৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কবিতা লেখার বদ্‌-অভ্যাসটি আমার অতি পুরনো। মনে পড়ে নবম শ্রেণীতে থাকাকালীন সময়ের একটা ছোট ঘটনা। দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষা চলছে। পরদিন রসায়ন বিজ্ঞানের তত্ত্বীয় পরীক্ষা। কিন্তু আমি সারারাত জেগে শরৎচন্দ্রের 'চরিত্রহীন' উপন্যাসের শেষার্ধ, প্রায় ১৫০ পৃষ্ঠার ওপরে, এক নাগাড়ে পড়ে শেষ করলাম। প্রথমার্ধ অবশ্য তার আগের রাতেই পড়া শেষ হয়েছিল এবং ঐদিন গণিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ায় পূর্ব-প্রস্তুতির তেমন প্রয়োজনও পড়েনি। কিন্তু 'চরিত্রহীন'-এর রসাস্বাদন করতে করতে রসায়ন বিজ্ঞানের পাঠ সম্পূর্ণ করার ধৈর্য্য এবং সময় কোনটাই হলো না। ভোর সাড়ে পাঁচটায় গল্প পড়া শেষ করে ঘুমিয়ে পড়লাম। কিন্তু যতটুকু ঘুমোলাম তার সবটুকুই ছিল দুঃস্বপ্নে ভরপুর - সাবিত্রীর ঝণাৎ শব্দ করে আঁচলের কোণায় চাবির ছড়া দোলানো, নির্জন কক্ষে সাবিত্রীর দিকে সতীশের হাত বাড়িয়ে দেয়া এবং 'ছিঃ, আসচি' বলে দ্রুত ঘর থেকে সাবিত্রীর বেরিয়ে যাওয়া, ঠাকুরপো সতীশকে নিয়ে রাতের অন্ধকারে করুণাময়ীর পলায়ন, শেষ দৃশ্যে পাগলিনী করুণাময়ীর নদী-তীরে বিবস্ত্র বিচরণ, সরোজিনীর বিরহ-কাতরতা - ঘুমের ঘোরে কেবল এই দৃশ্যগুলোই ঘুরে ফিরে ভাসতে লাগলো।
পরীক্ষার হলে লাল চোখ ডলতে দেখে জনোক শিক্ষক আঁতকে উঠে জিজ্ঞাসা করলেন, তোর কি চোখ উঠেছে রে?
আমি বললাম, স্যার, রাতে ঘুমোতে পারিনি। সারারাত মায়ের মাথায় পানি ঢালতে হয়েছে। মা'র খুব জ্বর তো!
মায়ের জ্বরের কথা শুনে স্যার আফসোস করলেন। তবে মাতৃসেবায় একজন ছাত্রের এতখানি নিবেদিত প্রাণ হওয়া দেখতে পেয়ে তিনি খুবই সন্তুষ্ট হয়েছিলেন।

রসায়নের প্রশ্নপত্র হাতে পেলাম। ৭৫ নম্বরের ওপর তত্ত্বীয় পরীক্ষা। আটটি প্রশ্নের মধ্য থেকে পাঁচটির উত্তর করতে হবে। সবই কমন প্রশ্ন, কিন্তু সবগুলোর উত্তরই ভুলে গেছি। ঠিক মত লিখলে কোন মতে পাশ করতে পারবো। কিন্তু নেহায়েত পাশ নম্বরে যে আমার চরম অসম্মান আর অপমান হবে! আমি না ক্লাসের ফার্স্ট বয়! আমার দ্বারা কি কেবল পাশ নম্বরে চলে?

আমি চালাকি করলাম। রসায়ন বিঞ্চানের কোন প্রশ্নের উত্তরই দিলাম না। এর বদলে কবিতা লেখার অনুশীলন শুরু করে দিলাম। সে কি নিগূঢ় অনুশীলন! কলম আর থামে না। অবশ্য তিন ঘন্টার পরীক্ষা আমি দেড় ঘন্টায়ই শেষ করে ফেললাম। খাতা জমা দিয়ে কোনরূপ পেছনে তাকালাম না, সোজা বাড়ি এসে বিছানায় এলিয়ে পড়ে ঘুম।
পরদিন স্কুলে গিয়েই কবি হিসাবে আমার বিশেষ খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ার কথা শুনলাম।
খাতা জমা দিয়ে বের হবার সংগে সংগে উৎপল চন্দ্র সাহা, ভাবুক, পণ্ডিত এবং ইংরেজির বিশেষ উন্মাদ স্যার আমার খাতাটি হাতে নিয়ে খুললেন। এত অল্প সময়ে আমি কিভাবে পরীক্ষা শেষ করলাম তা দেখার বোধ হয় তীব্র সাধ জেগেছিল তাঁর মনে। খাতা খুলেই তিনি বিস্মিত, হতবাক। ছেলেটা এ কি লিখেছে খাতা ভরে? মনে মনেই বোধ হয় কয়েকটি কবিতা পড়ে ফেললেন। তারপর পুরো ক্লাসের সমুদয় ছাত্র-ছাত্রীর কলম জোর করে থামিয়ে পর পর দুটি কবিতা আবৃত্তি করে শোনালেন। আবৃত্তি শেষে নাকি আমার প্রশংসায় ফেটে পড়েছিলেন, দেখছিস, এত্তটুকুন ছেলে, অথচ কবিতার কি ধার! তোরা দেখিস, এ ছেলে একদিন এ দেশের আরেকটা নজরুল হবে।

রসায়ন বিঞ্চানের খাতা দেখানোর দিন শফিক স্যার আমার পিঠে আধ ইঞ্চি ব্যাসের একটি বেত ফাটালেন। আমার চুল টেনে ধরে একের পর এক বেত্রাঘাত করতে থাকলেন। ব্যথায় আমার প্রাণবায়ু বের হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা, কিন্তু আমি প্রতিঞ্চায় অটল - কিছুতেই কাঁদবো না। ক্লাসের পঞ্চাশ জন ছাত্রের সামনে গরুর মত হাম্বা রবে গলা ফাটিয়ে কাঁদা সম্ভব, কিন্তু ঠিক আমার থেকে এক ফুট দূরে অবস্থিত দু-সারি বেঞ্চিতে বসা আটটি যুবতী মেয়ে, ওদের সামনে আমি কিছুতেই কাঁদতে পারবো না, এমন কি আমার খাঁচা থেকে প্রাণপাখি বের হয়ে গেলেও না। মেয়েগুলো কি রকম দুষ্টু দুষ্টু চোখে তাকাচ্ছিল, দাঁতে ওড়না কাটছিল, চাপা হাসি হাসছিল, আমি অন্তর্চোখে তা দেখতে পাচ্ছিলাম। কাঁদলে অপমানটা আরো গাঢ়তর হয়! দাঁত কামড়ে থেকে আমি শফিক স্যারের বেত্রাঘাত সহ্য করেছিলাম।

শফিক স্যারেরও বোধ হয় জেদ চাপলো আমাকে তিনি কাঁদাবেনই। কিন্তু আমি যে কি বিটকেলে স্যার সেদিন বুঝতে পেরেছিলেন মর্মে মর্মে। আমাকে কাঁদাবার শত চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে আমাকে ছেড়ে দিলেন, তারপর অত্যন্ত অনাসক্তভাবে চেয়ারে গিয়ে বিরক্ত মুখে বসে থাকলেন। সারা ক্লাসে পিন-পতন নীরবতা। আমি মাথা সোজা করে মুখটাকে হাসি হাসি করার চেষ্টা করলাম, কিন্তু মুখে হাসি ফুটলো না। চোখ বেয়ে গড়গড়িয়ে পানি ঝরে পড়লো। রাগে থরথর কাঁপতে কাঁপতে শফিক স্যার সবার উদ্দেশ্যে বলতে লাগলেন, তোরা জানিস, পরীক্ষার খাতায় এই বাঁদরটা কি লিখেছে? জানিস তোরা?

বলাই বাহুল্য, আমার সুকীর্তির কথা পরীক্ষার দিনই ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু আশ্চর্য, শফিক স্যারের প্রতিক্রিয়া হলো এত পরে? উনি কি এর আগে এ জিনিসটার কথা জানতে পারেননি?

স্যারের প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে সবাই মুখে তালা দিয়ে বসে থাকলো।
স্যার বললেন, রসায়নের খাতায় তিনি সাহিত্যের রস ঢেলেছেন। তিনি একজন কবি, একজন বিখ্যাত বিদ্রোহী কবি! সারা খাতা ভরে তিনি কবিতা লিখেছেন। আপনি কবি হতে চান, না? খুব গর্বের কথা! জানিস, বাংলাদেশে কবির সংখ্যা কত? যারা লেখাপড়া করে না তারাই কবি হয়। কবি হয় সারা জীবন অনাহারে থাকার আশায়। তুই কি জানিস কবিদের ভাগ্যে ভাতও জোটে না, বউও জোটে না?

বেত্রাঘাতের সেই ঘটনা, বিশেষ করে মেয়েদের সামনে অপমানিত হওয়ার ঘটনা আমার জীবনে কলংকিত হয়ে থাকলো। কিন্তু আমি দমে গেলাম না। আমি কবিতা লিখেই চললাম। শফিক স্যারের বেত্রাঘাত এবং মেয়েদের ও-রকম ঠাট্টা ভরা মুচকি হাসি ও চাহনি আমার জন্য বিষম জেদ ও অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজ করতে থাকলো।

এর পরের ঘটনা।
স্কুল থেকে একবার একটা স্মরণিকা বের করা হলো। সেই স্মরণিকায় আমার একটা কবিতা ছাপা হলো। সেদিন রসায়ন ক্লাসে প্রচুর 'সাহিত্যায়ন' হলো। পৃথিবীর অষ্টমাশ্চর্য ঘটনা হলো, স্বয়ং শফিক স্যার আমার কবিতাটির ভূয়সী প্রশংসা করে বললেন, সত্যি তোর মধ্যে প্রতিভা আছে। আমার মনে হচ্ছে তুই একটা 'স্বভাব কবি'।
স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফিরছি। জাহিদ, বায়েজীদ, মাসুদ, বাবুল, রতন, খায়ের, জসীম, শাহ্‌জাহান আর আইয়ুব পাগলাদের হৈ-হট্টগোলে ভরা বড় দলটার পেছনের দিকে শান্ত গোবেচারার মত আমি হাঁটছি।
হঠাৎ পেছন দিক থেকে আমার নাম ধরে একটি মেয়ে কণ্ঠ ডেকে উঠলো, না.....হি.....দ, এই নাহি....দ.....
আমি কত ভেবেছি, আহা, রাস্তায় চলতে চলতে যদি কখনো একটি মেয়ের সাথে একটুখানি কথা বলতে পারতাম, যদি আমার জন্যে ছুঁড়ে দেয়া তার মুখের এক ঝলক মুচকি হাসি দেখতে পারতাম! আহা, এমন দিন কি আসবে না কোনদিন?

আমার জীবনে সত্যি এমন দিন কোনদিন আসেনি। কোনদিন এমন ঘটনা ঘটেনি।
কোন একটি মেয়ের কণ্ঠে আমার নাম শুনতে পেয়ে আমি পুলকে থমকে দাঁড়িয়ে পেছনে তাকালাম। দেখি, আমার এক ক্লাস সিনিয়র, দশম শ্রেণীর নাসরীন আপা। আপা আমাকে হাত দিয়ে ইশারা করে থামতে বললেন। কাছাকাছি হওয়ার পর বললেন, তুমি আজকাল কবিতা লিখে থাকো, না?
নাসরীন আপা একা নন। সঙ্গে আরো চার-পাঁচ জন সহপাঠিনী। তাঁদের ছোট দলটির পেছনে অবশ্য আট-দশ জন মেয়ের আরো একটা দল আসছিল, যাদের মধ্যে কেউ কেউ আমার ক্লাসমেট, কেউ কেউ জুনিয়র।
কবিতা লেখার বিষয়ে নাসরীন আপার প্রশ্ন শুনে আমি বিষম লজ্জা পেলাম। এমনিতেই মেয়েদের সামনে আমি লজ্জায় গলে যাই, তার ওপরে কবিতা লেখার ব্যাপারে একটা প্রশ্ন - কেমন করে উত্তর দিই? নির্বোধের মত আমি মুখ হাঁ করে কিংবা মুখ বন্ধ করে তাকিয়েছিলাম।
নাসরীন আপা আবার বললেন, ম্যাগাজিনে তোমার কবিতাটি আমি পড়েছি। খুব ভালো হয়েছে।
আমি সলজ্জ হেসে ডান হাতে কানের লতি চুলকালাম (আমার বাম হাতে বই-খাতা ছিল যে)।
আপা মুখে অবিশ্বাসী মুচকি হাসির রং ছড়িয়ে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমার নিজের কবিতা তো, নাকি নজরুলের কবিতা নিজের নামে ছাপিয়ে দিয়েছ?
নাসরীন আপার কথায় তাঁর বান্ধবীরা সবাই এক যোগে হো হো করে হেসে উঠলেন। হাসি থামলে অপর এক আপা, শিউলী আপা যার নাম, তিনি বললেন, অন্য কেউ লিখে টিখে দেয়নি তো?
এবারও সবাই হেসে উঠলেন, শুধু একজন বাদে। যিনি হাসলেন না, মুখ কালো করে সবার ওপর চটে গেলেন তিনি পারুল আপা।
পারুল আপা সবাইকে ভর্ৎসনা করে বললেন, কি যা-তা বকছিস? শুধু শুধুই ছেলেটাকে অপমান করছিস! কবিতা লেখার কোন যোগ্যতা কি ওর নেই? মেরিটরিয়াস বলেই ছেলেটা ক্লাসের ফার্স্ট বয়। কবিতা লেখার মত প্রতিভা নিশ্চয়ই ওর মধ্যে আছে। এ নিয়ে এত হাসি-ঠাট্টা করার কি আছে?
নাসরীন আপা চাপা হাসি হেসে বললেন, মনে হচ্ছে তোর মায়ের পেটের ভাই! আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, কি, তোমার বড় বোন নাকি যে দরদ উথলে পড়ছে? বলেই দুলে দুলে খিলখিল করে হাসতে লাগলেন।
আমি খুবই বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে পড়ে গেলাম। দ্রুত পায়ে হেঁটে সামনে যেতে পারছি না, আবার চলার গতি মন্থর করে পেছনে কেটে পড়তেও পারছি না। কাজেই তাঁদের গতির সাথে তাল মিলিয়ে মাথা নিচু করে হাঁটতে থাকলাম।
শিউলী আপা বললেন, প্রেম ছাড়া তো কবি হওয়া যায় না। বলো তো প্রেম ট্রেম না করেই কি করে কবি হলে?
নাসরীন আপা ফোড়ন কাটলেন, কি জানি ভাই, প্রেম করে আবার ভিতরে ভিতরে পেকে গেছে কিনা তাই বা কে জানে? কি, ছ্যাকা ট্যাকা তো আবার খেয়ে বসোনি?
পারুল আপা ভিতরে ভিতরে ফুলে উঠছিলেন, তা আমি বুঝতে পারছিলাম। অবশেষে তাঁর বিস্ফোরণ ঘটলো, প্রচণ্ড রেগে গিয়ে বললেন, ছিঃ, এত্তো নোংরা কথা বলতে পারিস তোরা? তারপর আমার উদ্দেশ্যে বললেন, তোমার কি গণ্ডারের চামড়া, কি সব শোনার জন্যে এখনো এখানে পড়ে আছো? যাও, কেটে পড়ো।
পারুল আপাকে লক্ষ্য করে সবাই টিটকিরির হাসি হাসতে লাগলেন। ছুটে পালাবার নির্দেশ পেয়ে আমি দ্রুত কেটে পড়লাম।

কবিতা লেখার জন্যে সত্যি প্রেমের দরকার। কিন্তু ঐ বয়সে লেখা আমার কবিতাগুলো মোটেও 'প্রেমেজ' ছিল না। কেননা, আমার জীবনে কখনো কোন প্রেম আসেনি। জাহিদ আর বায়েজীদ মিলে একবার বৈশাখী খেতাব ছেড়েছিল, অবশ্যই ছদ্ম নামে। পঞ্চাশ জনের তালিকাভুক্ত উনপঞ্চাশ জনের নামেই ওরা প্রকৃত সত্য অথচ দারুণ নোংরা কথাটি লিখেছিল। আর আমার বেলায় ---

নাম তার নাহিদ, জনাব,
কবি কবি ভাব, শুধু প্রেমের অভাব।

আমার কবিতা লেখা নিয়ে আরেকটা অপমানের কথা বলা যায়।
স্কুলের বিশাল মাঠ, তার পশ্চিম পারে 'ছায়া সুনিবিড়' 'আম্রকানন'। পটভূমি সেখানে।
এস.এস.সি. পরীক্ষার্থীদের জন্য বিদায়ী অনুষ্ঠান। ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকদের বক্তব্য পরিবেশনার পর বিদায়ী ছাত্রদের উদ্দেশ্যে আমি একটি 'করুণ' কবিতা পাঠ করলাম, স্বরচিত কবিতা। কবিতার রচনাশৈলী ও অন্তর্নিহিত মূল বক্তব্যের গাম্ভীর্য্য সম্বন্ধে আমার উচ্চ ধারণা পোষণ করবার কোন কারণ ছিল না। তবে আমি যে চমৎকার আবৃত্তি করেছিলাম, উপস্থিত সকলের বিশেষ মনোযোগ ও প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করে তা অনুমান করতে পেরেছিলাম বইকি। আমি একজন উদীয়মান কবি, আমার এ পরিচয়টাই অবশ্য সেদিন সর্বাধিক প্রচার পেয়েছিল।
পরদিন।

স্কুলের বারান্দা দিয়ে হেঁটে হেঁটে ক্লাসের দিকে যাচ্ছি।
সামনে থামতে হলো। নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাস টাইম বদলের আবেদন জানিয়ে দরখাস্ত লিখেছে। এ স্কুলের ঐতিহ্য এবং অলিখিত রীতি অনুযায়ী নবম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীরাই সকল ছাত্র-কর্তৃত্ত্বের অধিকারী - পরীক্ষার্থীরা বিদায় নিয়ে চলে যায়, দশম শ্রেণীরও বিদায় বিদায় ভাব ও পড়াশোনায় দারুণ ব্যস্ততা, অষ্টম ও তার নিচের শ্রেণীগুলো বড়দের কথা মত কাজ করে - ফলে নিরঙ্কুশ কর্তৃত্ত্ব নবম শ্রেণীর জন্যই নির্ধারিত।
আমার ভিতরে কিছুটা মুরুব্বিয়ানার ভাব এসে গেছে, আমি দশম শ্রেণীর ক্লাস ক্যাপ্টেন। আজকাল জুনিয়রদের লিখিত দরখাস্তগুলোতে নিছক আনুষ্ঠানিক একটা স্বাক্ষর দিয়ে থাকি আর নবম শ্রেণীর দিনগুলোর কর্তৃত্ত্বের কথা মনে করে কিছুটা রোমাঞ্চিত বোধ করি।

ওরা আমার সামনে দরখাস্ত তুলে ধরলো স্বাক্ষরের জন্য। স্বাক্ষর দেয়ার আগে পুরো দরখাস্তটা একবার পড়ে দেখছি। এমন সময় লক্ষ্য করলাম, অল্প দূরে ক্লাসের দরজায় দাঁড়ানো নবম শ্রেণীর কয়েকটা মেয়ে কৌতুক-হাস্যে কুটি কুটি হচ্ছে, মাঝে মধ্যে একেবারে গলে পড়ে যাচ্ছে। একটু মনোযোগ দিয়েই বুঝতে পারলাম স্বয়ং আমিই ওদের টার্গেট। ওরা বলাবলি করছে, দেশে আজকাল কবির অভাব নেই। আরেকজন বললো, আজকাল কবির সংখ্যা কাকের সংখ্যার চেয়েও বেশি। অন্যজন বললো, আমার তো মনে হয় কবির সংখ্যা পিঁপড়ার সংখ্যাকেও ছাড়িয়ে গেছে। বলেই ওরা আবার কুটি কুটি হলো।

মেয়েগুলোর হাসির ফোয়ারা ছেলেগুলোর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়লো। একটা ছেলে বললো, দেখছেন নাহিদ ভাইয়া, ওরা আপনার কবিতার কত ভক্ত! ঐ, তোরা অটোগ্রাফ নিয়ে নে, ভবিষ্যতে কিন্তু নাহিদ ভাইয়ার ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারবি না। মেয়েগুলো দারুণ মজা পেয়ে এক যোগে খিলখিল করে হেসে উঠলো।

মেয়েদের সামনে তো আমি কথাই বলতে পারি না, মুখ আড়ষ্ট হয়ে যায়। ঐ ছেলেটা যেমন অবলীলায় কি দারুণ একটা রসিকতা করে ফেললো, আমি তা পারি না। এজন্য আমার খুব কষ্ট পাওয়ার কথা, আমার মনে দুঃবোধের সঞ্চার হওয়ারই কথা। আশ্চর্য, আমার কোন দুঃখও নেই, কষ্টও নেই। আমি এমন কেন? আমি কি মানুষ, না পাথর? আশ্চর্য! আশ্চর্য!

যদিও কিশোর কিংবা বালক, কিংবা সন্ধিক্ষণে, কিন্তু আমি তো পুরুষ, আমারও যৌবন আছে, মেয়েদের প্রতি সহজাত কৌতূহল আছে, এবং ছিল। ওদের সঙ্গে দু-দণ্ড কথা বলার ব্যাগ্র বাসনা আমার মনে কত শত বার উঁকি দেয়, উঁকি দিয়েছিল।


তখন আমি হাইস্কুলেই পড়ি। একবার কি কারণে ঢাকা বেড়াতে গিয়েছিলাম। এটি সেই সময়ের গল্প।
লঞ্চে বাড়ি ফিরছিলাম। সদর ঘাট থেকে বুড়িগঙ্গা ও ইছামতি নদী হয়ে ফতুল্লা, সৈয়দপুর, মরিচা, কোমরগঞ্জ, তারপর বক্সনগর স্টেশন; সেখান থেকে নৌকাযোগে আড়িয়াল বিলের ওপর দিয়ে আমার নিজগ্রাম দোহারের ডাইয়ারকুম।
লঞ্চ ছাড়লো সকাল আটটায়। লঞ্চের ডেকে উঠে সামনে রেলিং ধরে দাঁড়ালাম। শীতল দক্ষিণ হাওয়া, বেশ রোমাঞ্চকর। নদীতে ছোট ছোট ঢেউ। আকাশ খানিকটা মেঘলা। মাঝে মাঝে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। শো শো শব্দে নদী কেটে লঞ্চ ছুটে চলেছে। ইঞ্জিনের শব্দ আর পানির শব্দ মিলে অপরূপ ছন্দময়তা। বড়ই রোমান্টিক পরিবেশ। কিন্তু আমি সঙ্গীহীন। একান্ত একা। লঞ্চ ভ্রমণে একা সময় কাটে না।
বিলাস শ্রেণীতে কয়েকজন পুরুষ। দুজন মহিলাও, সুন্দরী। খোশগল্পে মশগুল এঁরা সবাই। আমার কেবলই মনে হতে লাগলো, আহা, জ্ঞএমন দিনে তারে বলা যায়ঞ্চ! হ্যাঁ, শুধু তাকেই বলা যায়। কিন্তু কাকে বলবো? কোথায় সে? কেউতো নেই। মনটা শুধুই আনচান করতে লাগলো, কেউ যদি হতো!

লঞ্চ ফতুল্লা ধরলো। প্রসিদ্ধ স্টেশন। চোখ কেবলই চারদিকে কাকে যেন খুঁজে বেড়াতে লাগলো, পূর্ব জন্মে যাকে হারিয়েছি। আমার কি পূর্ব জন্মে কেউ ছিল? আমি কি তাকে হারিয়ে এসেছি? তা না হলে আজ তার জন্য মন এত উতলা হলো কেন?
ফতুল্লার পর আরো একটি স্টেশন। তারপর আরো একটিতে লঞ্চ ভিড়লো। খুঁজে পাওয়ার মত কেউ উঠলো না লঞ্চে। মনটা বিরক্তিতে এবং বিষাদে ভরে উঠতে লাগলো।
সৈয়দপুর এসে লঞ্চ থামলো। মধ্য দূরত্বের স্টেশন এটি। পৃথিবীর সমস্ত ক্ষোভে মনটা ছেয়ে গেছে। বিষণ্ন মনে মাথা নিচু করে রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে। হঠাৎ ঘাড় ঘুরাতেই কি যেন জ্ঞঅকারণ পুলকেঞ্চ চিত্ত নেচে উঠলো। 'আহা, আজি এ বসন্তে কত ফুল ফোটে!' (মাঝে মাঝে এ রকম শরতেও মনে বসন্তের ভাব জাগে বুঝি)। একটি নয়-দশ বছরের ছেলে। সকুল বয়। পিঠে ব্যাগ। সিঁড়ি বেয়ে দুলে দুলে লঞ্চে উঠছে। পেছনে একটি মেয়ে। তারও বাম কাঁধে সকুল ব্যাগ। ছেলেটির মাথায় ডান হাত রেখে সে সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে আসছে। ভাইবোন। বড় আদরের ছোট ভাই। স্নেহশীলা বড় বোন। আহা, কী ভাব ওদের মধ্যে!

ওরা দু-ভাইবোন পাশাপাশি, আমার থেকে কিছু দূরে রেলিং ধরে দাঁড়ালো। কী মোহন ভঙ্গী মেয়েটির!
বারবার অকারণে ওদিকে চোখ যায়। বড় দুষ্টু চোখ। অশান্ত চঞ্চল চোখ। তৃষ্ণার্ত চোখ আমার। মাঝে মাঝে মেয়েটির সঙ্গে চোখাচোখি হয়েছে বলে মনে হয়। আমার দিকে তাকাচ্ছে, এমন মনে হতেই আমি চোখ ফিরিয়ে নিই। ভীরু বুক। মনে প্রেম জাগে। চোখে লজ্জাও বটে। প্রচণ্ড সাধ হতে লাগলো, একবার যদি কথা হতো! আহা, যদি একবার মুখ ফুটে জিঞ্চাসা করতো, কতদূর যাওয়া হবে আপনার? ধ্যাত, তাই কি হয়? মেয়েরা কি কখনো আগে যেচে কথা বলে? ইচ্ছে থাকলেও নয়। ওদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না। আচ্ছা, আমিই না হয় বলি, এক্সকিউজ মি, আপনারা কি সামনেই নামবেন? বোকার মত প্রশ্ন নয় কি? তারপর যদি উত্তর হয়, হ্যাঁ, সামনের স্টেশনেই, তখন আমি কি বলবো? কি বলা হবে? কি বলা যাবে? কিছুই না। আমি বেশি কথা বলতে পারি না। মেয়েদের সামনে দাঁড়ালে মনে ভাব জাগে বটে, তবে আমারও সচরাচর বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না। আপনার তো এসব জানেনই।

মেয়েটি কি সত্যিই কখনো আমার দিকে তাকিয়েছে? আমার উপসিহতি কি তার মনেও এতটুকু ভাবের সঞ্চার করেনি? আমার কিন্তু সব সময়ই মনে হতে লাগলো, যখন আমি অন্য দিকে তাকিয়ে থাকি তখন মেয়েটি আমার দিকে তাকায়। ওর মনেও আজ বড় রোমান্টিকতা! নিশ্চয়ই!

ঝাল মুড়ি ---- ঝাল মুড়ি -----

সামনে মুড়িওয়ালা হাঁক দিল। ভাবতে ভাবতে খিদে পেয়েছিল। বললাম, এখানে একটা মুড়ি দাও। আড়চোখে ওদের দিকে তাকালাম। ছেলেটা মেয়েটির দিকে একটুখানি মুখ ফেরালো, তারপর মুড়িওয়ালার দিকে তাকিয়ে বললো, এখানে একটা দিন। ছেলেটা হাতে মুড়ি তুলে নিল। খাচ্ছে। মেয়েটি লাজুক, সে খাচ্ছে না। পথে ঘাটে কিছু খেতে মেয়েদের এমন লজ্জা থাকাই ভালো। আচ্ছা, ছেলেটাকে না হয় একটু আদরই করি? বড় সাহেবদের নেক নজর পেতে হলে তাঁদের বাচ্চাদের আদর করতে হয়। মানসীর মন পাওয়ার জন্য আমি তার ছোট ভাইকে আদর করবো। কিন্তু কিভাবে? দশ বছরের ছেলেকে কি কোলে তুলে নেয়া যায়? মাথায় হাত বুলাবো? আদর ভরা কথা বলবো? ই-শ্‌, তাতেই কি হবে? খালি মুখে কখনো চিড়া ভিজে না।

এই ভাই বাদামওয়ালা, দু-টাকার বাদাম দাও, দু-প্যাকেটে। আমি বললাম।
বাদামওয়ালা ছোট দু-প্যাকেটে বাদাম দিল।
বাদাম খাবে ছোট ভাই? এই নাও।
এগিয়ে একটা প্যাকেট ছেলেটার দিকে বাড়িয়ে দিলাম। ছেলেটা আগের মতই ওর বোনের দিকে তাকালো। বোনটিও ওর দিকে তাকালো। নীরবে। বুঝলাম বোনের সম্মতি পেয়েছে। আমার হাত থেকে প্যাকেট তুলে নিল ছেলেটা। আমি বাদাম খাচ্ছি, ছেলেটাও খাচ্ছে। খাচ্ছে না শুধু একজন, মেয়েটি। কেমন ছোট ভাই এটা, বোনকে একটি বারও সাধছে না? বোনকে অন্তত একটা বাদামের দানাও ওর সাধা উচিত নয় কি? সাধবেই বা কেন? ছোট ভাইয়ের হাতের জিনিস কি এমনিই খাওয়া যায় না? আহা, খেলে ধন্য হয়ে যেতাম।

ছেলেটার বাদাম শেষ।
আরো খাবে? আমি আমার প্যাকেট থেকে বের করে ওর হাতে কিছু বাদাম তুলে দিলাম। ছেলেটা এবার আমার কাছে এসে দাঁড়ালো। আমারও মনের জড়তা কেটে গেছে। অনেক কেটে গেছে। এখন হয়তো ইচ্ছে করলেই মেয়েটির নাম জিঞ্চাসা করতে পারবো। তারপর পরিচয়, আরো কত কথা। অতঃপর -----
নাহ, কি দিয়ে যে কথা শুরু করি! কি কথা বলবো আমি?
মরিচায় এসে ঘাটে লঞ্চ ভিড়লো।
মিষ্টিওয়ালা লঞ্চে উঠতেই ছেলেটাকে জিঞ্চাসা করলাম, চমচম খাবে? মিষ্টি? সে মাথা নেড়ে জানালো খাবে।

আমরা মিষ্টি খাচ্ছি। মেয়েটা এবার সত্যি সত্যি আমার দিকে তাকাচ্ছে। মোনালিসার মত হাসছে। কখনো আরো প্রস্ফুটিত হয়, মোহনীয় হয় সেই হাসি। মেয়েটির হৃদয় নড়ে উঠেছে এবার! আমার প্রতি তার অনুকূল মনোভাব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। হবেই তো। তার ভাইকে এত আদর করছি, প্রতিদান বলেও তো একটা কথা আছে। পরক্ষণেই ভাবি, ধ্যাত, এখানে আবার প্রতিদানের কথা আসছে কেন?
লঞ্চের হোটেল বেয়ারা কোল্ড ড্রিংক্‌স বলে হাঁক দিল। এখন কোল্ড ড্রিংকস হলে মন্দ হয় না।
বেয়ারাকে ডাকতেই সে ছুটে এসে বললো, কয়ডা দিমু স্যার?
তাইতো, কয়টি দেবে? এখনো কি আমরা দুজন আছি? মেয়েটির হাতে এবার অবশ্যই একটা মেরিন্ডা তুলে দিতে হবে। মেয়েরা মেরিন্ডাই পছন্দ করে। পেপসি, সেভেন-আপ ছেলেদের জন্য। মেয়েদের এত ঝাঁঝ সয় না।

কোমরগঞ্জে এসে লঞ্চ ভিড়লো। আমি এর পরের স্টেশনে নামবো। আরো ঘন্টা খানেকের পথ। যাক, ভালোই হবে। কোল্ড ড্রিংক্‌স পান করতে করতে দু-চারটে কথা বিনিময় হবেই। ঠিকানাটাও সেই ফাঁকে নিয়ে নেয়া যাবে।
বেয়ারাকে দুটো সেভেন-আপ আর একটা মেরিন্ডা দিতে বললাম।
বোতলের কর্ক খুলে বেয়ারা সেভেন-আপের একটা আমার হাতে তুলে দেয়। আমি ছেলেটার হাতে তুলে দিই ওটা। আরকেটা নিই আমি। মেরিন্ডার মুখে নল ঢোকাতে ঢোকাতে বেয়ারা বলে, এইডা কারে দিমু স্যার?
ঐ- ঐ মেয়েটিকে -----
আরে আরে, মেয়েটি কোথায়?
হ্যাঁ --- ঐ তো সিঁড়ির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে মেয়েটি। ঐ তো সিঁড়িতে পা রাখলো সে। ধীরে ধীরে নেমে যাচ্ছে। নেমে যাচ্ছে, তারপর ঐ তীরে পা ফেলছে এবং তারপর তরতর করে হেঁটে চলছে ----
ছেলেটাকে জিঞ্চাসা করি, তোমার আপু যে নেমে গেল?
কই, আপু তো আজ স্কুলেই আসেনি।
ঐ যে তোমার পাশে এতক্ষণ দাঁড়ানো ছিল?
তাকে আমি চিনিই না।

মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লাম। পথের দিকে তাকিয়ে রইলাম, সুন্দরী চতুর্দশী যে পথে চলে গেছে। ভীরু। কাপুরুষ আমি। আমার দ্বারা কিছুই হলো না। এত কাছের মেয়েটিকে একটি কথা বলার সাহস আমার হলো না। শুধু শুধু কিছু টাকা গচ্চা গেল। ছেলেটার প্রতি প্রচণ্ড রাগ হলো। কেন সে এতক্ষণ মেয়েটির সাথে ভাইবোনের অভিনয় করলো? ইচ্ছে হতে লাগলো, যে কয় টাকার ঝালমুড়ি, চিনেবাদাম, মিষ্টি আর কোল্ড ড্রিংকস খাইয়েছি, ছেলেটার কান মলে তা শোধ করে নিই।

অন্তরবাসিনী, উপন্যাস, প্রকাশকাল একুশে বইমেলা ২০০৪

পর্ব-১
পর্ব-২
পর্ব-৩
পর্ব-৪
পর্ব-৫
পর্ব-৬
পর্ব-৭
পর্ব-৮
পর্ব-৯
পর্ব-১০
পর্ব-১১
পর্ব-১২


সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৫:৪০
২১টি মন্তব্য ২১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×