somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার যা কিছু ‘প্রথম’

১৯ শে আগস্ট, ২০১৩ বিকাল ৪:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

জীবনে সর্বপ্রথম যে গানটা শুনেছিলাম

আপনাদের কি মনে পড়ে জীবনে সর্বপ্রথম কোন্ গানটি শুনেছিলেন?

এর আগে আমি অন্য কোনো গান হয়ত শুনে থাকব, কিন্তু তার কিচ্ছুটুকুন আমার মনে নেই। বা গান বলে যে একটা বস্তু বা বিষয় আছে তাও হয়ত এর আগে বুঝি নি।
তবে এ গানটি গান হিসেবেই কবে কোথায় কীভাবে শুনেছিলাম তা আমার স্পষ্ট মনে আছে।

১৯৭১।
বর্ষার প্রথম পানিতে গাঁয়ের খাল ভরে গেছে। আমি বাবার সাথে চকে গেছি ধানক্ষেত দেখতে। সূর্য তখন পশ্চিমে হেলে পড়েছে। কিছু আগে সামান্য বৃষ্টি হয়েছিল, আকাশে ঝলমলে রোদ্দুর আর ক্ষেতের উপর বাতাসের ঢেউসমেত গরমের হলকা।
বাবার সাথে গুটি গুটি পায়ে খালের পার ধরে বাড়ি ফিরছি। পারাপারের জায়গাটাতে এসে আমরা কিছুক্ষণ দাঁড়াই। এখানে ডাকের খেয়া নেই, পানিতে নেবে বা সাঁকোতে খাল পার হতে হয়। ওখানে সাঁকো ছিল না।
মামা সম্পর্কের একজন ভাটি থেকে উজান টেনে নৌকা বেয়ে আসছিলেন। তাঁকে দেখেই বাবা ডাকলেন, ও ইয়ার আলী, পার কইরা দেও।
ইয়ার আলী মামা নৌকা ভিড়ালেন। বাবা আমাকে সাবধানে উঠিয়ে মাঝখানে বসালেন। ছোটোখাটো দু-একটা কথা। তারপরই নৌকা বাইতে বাইতে ইয়ার আলী মামা গেয়ে উঠলেন :

আমার সোনার বাংলা...

আমার কাছে খুব ভালো লাগল। এমন গান আগে শুনি নি। যা শুনেছি তা হলো বৃষ্টি নামানোর ছড়া, যা মেয়েরা বুনো ফুল আর চালুনি মাথায় নিয়ে বাড়ি বাড়ি ঘুরে ঘটীর পানিতে ভিজতো আর বৃষ্টির জন্য গাইতো।
কিন্তু... আমার সোনার বাংলা... এ তো এক আশ্চর্য গান! আমি মনে মনে চেষ্টা করি, অল্প অল্প পারিও।
বাড়ি গিয়ে মাকে বলি, ইয়ার আলী মামু গান গাইবার পারে... এ কথা দ্বারা কী বোঝাতে চেয়েছিলাম তা মনে নেই, কিন্তু আমি ঠিক এরকম একটা কথাই মাকে বলেছিলাম... ইয়ার আলী মামু সোনার বাংলা গান গাইছে।
এরপর সপ্তাহখানেকের মধ্যে আমি আরো একজনকে এ গানটা গাইতে শুনেছিলাম। তারপর আমি অনেকের মুখেই এ গানটা শুনতে পেয়েছিলাম। যে-ই এ গানটা গাইত, আমি দৌড়ে তার কাছে গিয়ে, পিছে পিছে হাঁটতে হাঁটতে এ গানটা শুনতাম।

ভয়াল ২৫ মার্চের উত্তাপ তো এর কত আগেই সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল। আমি কি অতসব তখন বুঝি?
‘আমার সোনার বাংলা’ আমাদের জাতীয় সঙ্গীত, এটা জেনেছি অনেক পরে যখন বোঝার জ্ঞান হয়েছে। কিন্তু এ গানটার মধ্য দিয়েই আমার গান শোনার প্রথম অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তা ভাবতে গেলে খুব পুলকিত, বিস্মিত ও কেবল গর্বিত হতে থাকি আর আনমনে গেয়ে উঠি :

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি
চিরদিন তোমার আকাশ তোমার বাতাস আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি...


যেদিন প্রথম পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলাম

ব্যাপারটা ভেবে আপনিও বিস্মিত হবেন- কখনো কি জাতীয় পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন? অনেকের এরূপ অভিজ্ঞতা থাকলেও আমাদের কিন্তু খুব কমই সুযোগ আসে জাতীয় পতাকা হাতে তুলে নেবার।
কোনো জাতীয় অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অনেক অনেক আগে আমি একটা পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলাম। সেই মামুলি কাহিনিটা বলি।
সেদিন দুপুরে এক মিছিল এল। ছেলেবুড়ো, যুবক সবাই সেই মিছিলে। তাদের কণ্ঠে উদাত্ত শ্লোগান। তাদের কারো কারো হাতে পতাকা। দৌড়ে যাচ্ছে মিছিল- দৌড়ে যাচ্ছে।
মিছিল গিয়ে জমায়েত হলো স্কুলের ময়দানে। চারদিক থেকে ছুটে আসতে লাগল মানুষের ঢল। বিরাট মাঠ মানুষে ভরে গেল। মাইকে অনবরত বেজে চলছে আমার সোনার বাংলা গানটি।
১৯৭১-এ আমার বয়স কত ছিল জানি না। আর যেদিনটার কথা বললাম তখন বুঝি নি, শুধু জ্ঞান হবার পরই সুনিশ্চিত ধারনায় বুঝেছিলাম ওটা ছিল ১৬ই ডিসেম্বর। যখন গাঁয়ের রাস্তা জনস্রোত আর গগনবিদারী শ্লোগানে টলোমল করছিল, হাতে ছিল পতাকা- কী মহোল্লাসে আমারও চিত্ত চঞ্চল হয়ে উঠেছিল- কী অভূতপূর্ব উত্তেজনা, এক দুর্দমনীয় নেশা হাতে একটা পতাকা ধরার জন্য। কিন্তু ন্যাংটো শ্রীযূতকে কে দেবে পতাকা?
আমার মত আরো অনেকের হাতেও এমন পতাকা ছিল- তাই আর মুহূর্ত দেরি নয়, হাতের নাগালেই ছিল খড় নাড়ার কাড়াল, আর ছিল আমার প্রিয় মলিন গামছাটি। আমি কাড়ালের মাথায় গামছা বেঁধে এক পলকে বানিয়ে ফেললাম বাংলাদেশের পতাকা- আর দৌড়ে মিশে গেলাম রাস্তার মিছিলে।
বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা এভাবেই আমার হাতে প্রথম এসেছিল।


আমার স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিন

আমার সব ‘প্রথমে’র রেফারেন্স পয়েন্ট হলো ১৯৭১। তখন বয়স কত ছিল জানার উপায় নেই, কারণ কৃষকের ছেলের জন্মতারিখ লিখিত থাকে না, ধাইমার হাতে সে ভূমিষ্ঠ হয়; মা-চাচি-দাদি-নানিরা ঘোর বৃষ্টির দিনে, তুমুল তুফানের রাতে বাংলা মাসের ‘অমুক তারিখে’ বা ‘অততম’ চাঁদের দিন জন্ম হয়েছিল- এভাবে দিনতারিখ মনে রাখেন। তারপর নবম শ্রেণীতে রেজিস্ট্রেশনের সময় গড়পড়তা একটা জন্মতারিখ, যা চাকরিক্ষেত্রে সুবিধা দিতে পারবে অনুমান করে লেখা হয়ে থাকে, যাতে প্রায়শ প্রকৃত জন্মতারিখ থেকে বিস্তর ব্যবধান থাকে।
আমি বড্ড নিরীহ প্রাণী সেই ছোটোকাল থেকে- কেবল ঘরের বাইরে; এজন্য কত পিটুনি খেয়েছি পরের হাতে তার ইয়ত্তা নেই। কিন্তু ঘরের ভেতর আমার দুরন্তপনায় সবাই সবসময় ভীষণ অতিষ্ঠ থাকত; বাইরে পরের হাতে মার, ঘরের ভেতর মায়ের পিটুনি খেতে খেতে আমার দফারফা অবস্থা।
সে পর্যন্ত দুবার খেজুর গাছ থেকে পড়ে মরতে মরতে বেঁচে উঠেছি। গাবগাছ থেকেও পড়েছি বেশ কয়েকবার। আর বাড়ির পাশে খালের ধারে একটা দইল্লা গাছ ছিল, উন্নার দিনে ওটাতে রসি দিয়ে পিঁড়ির দোলনা বানাতাম; আর বর্ষাকালে এ গাছটা ছিল আমাদের সবচেয়ে মজার জায়গা- করতাম কী, দল বেঁধে গাছের ডগায় উঠতাম, আর ঝাঁকে ঝাঁকে গাছের ডগা থেকে লাফিয়ে পানিতে পড়তাম। ডুব দিয়ে যে যত বেশি দূরে গিয়ে উঠতে পারতাম, সে তত সেয়ানা। আমি এ কাজটায় বড্ড সেয়ানা হয়ে গিয়েছিলাম। মা মানা করতেন, কিন্তু আমি কি আর মায়ের হাতের পুতুল?

একদিন আমার এমনি এক বিটকেলির শাস্তি স্বরূপ আমাকে বাম হাতে ধরে ডান হাতে পিঠের উপর দমাদম কিল ঝাড়তে ঝাড়তে মা মুখ দিয়ে আগুন বের করতে লাগলেন- তোর মতো পুলা আমি দুনিয়াতে রাহুম না- আমার কইলজ্যা খাইয়া হালাইলি তুই- পুলার পুলা, ক, গাছে গনে আরো লাফ দিবি? আরো লাফ দিবি? আর আমার ছিল কইমাছের প্রাণ বা গণ্ডারের শরীর- মায়ের কিলে আমার কোনো ব্যথা হত না, যদিও পিটুনি খাওয়ার সময় গলা ফাটিয়ে বাবা-বাবা বলে চিল্লানি দিতাম।
একটু বিরতি দিয়ে মা বললেন, তুই জানস তোর মত পুলারা আইজকাল ইস্কুলে যায়? তোর সুরুজ মামু পরশু দিন গনে ইস্কুলে যাইবার নাগছে। কত বদ্র অইয়া গেছে সুরুজ!
সুরুজ মোল্লা আমার একমাত্র মামা, আমার থেকে তিন-চার মাসের বড়। মামা আমাদের বাড়ি আসে, তার সাথে কিছুক্ষণ ত্যাঁদরামি করি, সে ত্যক্ত হয়ে কান্নাকাটি করে বাড়ি চলে যায়। মামাও বেশ গোবেচারা বটে, আমার সামনে। সেই মামা স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে শুনে আমার কোনো ভাবান্তর হলো না; কেননা ‘বদ্র’ই বা কী জিনিস, আর স্কুলে যাওয়ার মাহাত্ম্যই বা কী, গাছে গাছে বাস করার চেয়ে তাতে অধিক আনন্দ আছে কিনা সে বিষয়ে কোনো জ্ঞান তো ছিলই না, জানারও কোনো আগ্রহ ছিল না।
মায়ের পিটুনিতে ব্যথা না পেলেও মা-ই ছিলেন সাক্ষাৎ ‘রাক্ষসী’, আর বাবা ছিলেন সকল বিপদের নিরাপদতম আশ্রয়স্থল; যতক্ষণ বাবা বাড়িতে, মা আমার টিকিটিও ছুঁতে পারতেন না, আর আমার থাকতো তখন সাত খুন মাফ।
মা একদিন সন্ধ্যায় বাবাকে মৃদু ক্ষোভের সাথে বলছেন, তোমার বান্দর পুলারে হয় তুমার সাতে ক্ষ্যাতে নিয়া যাইবা, নাইলে ইস্কুলে দিয়া দেও। ওর জ্বালায় আমার জানডা ত্যাজপাতা অইয়া গেল।
বাবা হাসতে হাসতে বলছেন, কও কী, ইস্কুলের বয়স বড় অইছে নি? বয়স অইলে আল্লায় নিলে ইস্কুলেই বর্তি কইরা দিমু। আমার মতন লাঙ্গল টানবো নি বড় আমার পুলা!
বয়স অইছে না! মা ঝামটা দিয়ে বলেন, সুরুজ ইস্কুলে যাইবার নাগছে কবে গনে। সুরুজ কত বদ্র অইয়া গেছে দ্যাকছাও না!
বাবা আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসেন।
এরপরের কিছুদিনের কথা ও ঘটনা আর মনে নেই। মনে পড়ে শুধু কথাগুলো- বাড়িতে প্রস্তুতি চলছে আমাকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য। আজ না কাল, কাল না পরশু- এভাবে। বাবা বাড়িতে থাকলেই স্কুলে নিয়ে যাবেন একদিন, কিন্তু বাবার সেই সময় আর হয়ে ওঠে না।
বাবার সময় হল একদিন সকালে। আমার জন্য একটা বই কেনা হয়েছে- সবুজ সাথী। একটা শ্লেট আর মাটির পেন্সিলও। সেগুলো গত কয়দিন ধরে নাড়াচাড়া করেছি, আর কেবলই বিষণ্ণ হয়েছি- হায়, এ আপদগুলোর জন্যই আমাকে স্কুলে যেতে হবে! আমার পুরোনো হাফপ্যান্ট আর শার্টটা ৫৭০ সাবান দিয়ে ধুয়ে নতুনের মত করা হয়েছে। কিন্তু সকালবেলা থেকেই আমার খুব মন খারাপ- খুব কান্না পাচ্ছে। মায়ের ‘বদ্র’ কথাটার অর্থ আমি না বুঝলেও এটুকু বুঝেছিলাম যে স্কুলে গেলে আমিও সুরুজ মামার মত ‘বদ্র’' হয়ে যাবো- হায়রে, আমার দিনভর গাছগাছালি খেলা- এসব তো আর কিছুই করতে পারব না- আমি তবে কীসের লোভে স্কুলে যাবো?

স্কুলে যাবার সময়টাতে পাড়াপড়শিরা ও বাড়ির সবাই জড়ো হল আমাদের ঘরের সামনেটায়, আর ঠিক তখনই ডুকরে কাঁদতে শুরু করলাম। যতই সময় ঘনিয়ে আসতে লাগল বাড়ি হতে বের হবার, আমার কান্নার বেগ ততই বাড়তে থাকলো, একসময় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগলাম- আমি ইস্কুলে যামু না। ইস্কুলে যামু না। আর আমার কান্না তখন এতই করুণ হয়ে উঠেছিল যে বাবা আমার চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি নিজেও কেঁদে দিয়ে মাকে বললেন, তাইলে আইজক্যা বাদ দেই? কিন্তু মা শাসিয়ে উঠতেই বাবা আমার হাত ধরে বললেন, চলো বাজান- কাইন্দো না- ইস্কুল অনেক বালো জাগা।
আহারে কী কান্নাই না করেছিলাম সেদিন- আমি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি থেকে নেমে যাচ্ছি আর আমাকে বাড়িভর্তি মানুষজন দেখছে- আমি আমার সোনার দিনগুলো ফেলে চলে যাচ্ছি অন্যদিনের দিকে...

স্কুলে আমি ভাল করছিলাম। কয়েক বছরের মধ্যে পাড়াপড়শি ছাড়িয়ে পুরো গ্রামে আমার মেধার কথা ছড়িয়ে পড়ল। লোকে বলতে লাগল- গোবরে পদ্মফুল।
আমার অজপাড়াগাঁয়ের স্কুলটাতে আমিই প্রথম প্রাইমারি বৃত্তি পরীক্ষায় পাশ করেছিলাম- এই বৃত্তির খবর নিয়ে স্কুলের প্রধান শিক্ষকসহ তিনজন শিক্ষক ও কয়েকজন গণ্যমান্য ব্যক্তি যখন আমাদের বাড়িতে এসেছিলেন- আমার মা হাউমাউ করে কেঁদে দিয়েছিলেন।
আমার মা মারা গেছেন আমি যখন ৭ম শ্রেণীতে পড়ি। প্রাইমারি স্কুল থেকে হাইস্কুলে যেয়েও আমি স্কুলে খুব ভাল করতে থাকি- আমার মা এ খবরে অতি আপ্লুত হয়ে বলতেন- তর মনে আছে, ইস্কুলে যাইবার দিন তুই কত কানছিলি?
ফেলে আসা দিনের অবিস্মৃত অনেক কিছুর মধ্যে স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিনটির কথা এভাবেই আমার ভেতর সতত ঝলমল করে আলো দেয়...


আমার দেখা প্রথম ছায়াছবি

দশ-এগার বছর বয়সের কালে মায়ের চোখে ধূলি দিয়ে দুই মহাধূরন্ধর বন্ধুর সাথে পদব্রজে বাড়ি থেকে তিন মাইল দূরবর্তী জয়পাড়া সিনেমা হলে গিয়ে জীবনের প্রথম ছায়াছবিটি দেখে রাত দশটার দিকে বাড়ি ফিরে এসে মায়ের হাতের সালুন নাড়ার লাঠিতে বেধড়ক ধোলাই খেয়ে আমাকে একটুও কাঁদতে হয় নি। সিনেমা দেখার উত্তেজনা ও আনন্দ এবং বিস্ময়ে আমি এতখানি ঘোরের ভেতর ডুবে গিয়েছিলাম যে এসব জাগতিক বিষয়আশয় তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়ের চেয়েও গৌণতর জ্ঞান হচ্ছিল। এরপর অবশ্য প্রায় মাস দেড়েকের মত আমাকে ঘরের ভেতর অন্তরীণ করে রাখা হয়েছিল; আমি নাকি সেয়ানা হয়ে গেছি, রাতবিরাতে ঘরের বাইরে থাকি, এই সেয়ানাগিরি ছোটানোর জন্য মায়ের এই কার্ফিউ ব্যবস্থা ছিল।

ছবির নাম বুলবুল-এ-বাগদাদ।
ছবি দেখার খায়েস অনেক আগে থেকেই ছিল। আর ছায়াছবি নামে যে অত্যাশ্চর্য একটা বস্তু আছে তা অবশ্য জানতে পেরেছিলাম এর বছর দেড়েক আগে, যখন জয়পাড়া বাজারে প্রথম বারের মতো প্রেক্ষগৃহ তৈরি হলো। পুরো দোহার, শ্রীনগর ও নবাবগঞ্জ উপজেলা মিলিয়ে দ্বিতীয় আর কোনো সিনেমা হল তখন ছিল কিনা সে সময়ের জ্ঞান নিয়ে তা জানা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। শুধু এটুকু ভাবা খুব সহজ ছিল, ইশ, আমাদের বাসা যদি ঢাকা শহরে থাকতো তাহলে সবগুলো সিনেমা হলে ঘুরে ঘুরে এক সপ্তাহে অনেকগুলি ছবি দেখতে পারতাম।

সিনেমা হলে ঢুকেই দেখি একেবারে প্রথম সাড়িতে আরেক মহাধূরন্ধর ক্লাসমেট। আমি পাশের দুজনকে বলি, সামনে তো কত সিট খালি, চল্, সামনে যাইয়া বসি।
ওরা দুজন সেয়ানারও সেয়ানা। আমাকে ধমক দিয়ে বলে, চোপ ভোদাই, ঐডা অইল থার্ড ক্লাস, আমরা বইছি সেকেন্ড ক্লাসে।
আমার কাছে খুব আশ্চর্য লাগলো। সামনের সারিটা থার্ড ক্লাস হয় কীভাবে? আমি নিজেকে মনে মনে একটু বেশি বুদ্ধিমান ভাববার চেষ্টা করি, আর বলি, তোমরা ভোদাই কিচ্ছু জানো না।
এর পরের দুবার আমি সামনের সারির টিকিট কিনেছিলাম; আর সামনের সারিটা কেন যে ফার্স্ট ক্লাস না হয়ে থার্ড ক্লাস হল, তা বুঝতে আমার আরও বছর খানেকের মতো সময় লেগেছিল।
পতাকা উত্তোলনের সাথে সাথে সবাই দাঁড়িয়ে গেল। আমিও দাঁড়ালাম। শরীরে এক প্রচণ্ড অনুভূতি, যা বোঝানোর কোনো ভাষা নেই। সামনে এতক্ষণ একটা ধবধবে সাদা পর্দা ছিল। ছবি শুরুর আগে সঙ্গী দুজনকে একের পর এক প্রশ্নে ঝাঁঝরা করে ফেলেছি- এতটুকু জায়গায় জীবন্ত একটা শহর বা গ্রামের মানুষেরা কীভাবে চলাফেরা করে? ছবির মানুষগুলো কি সত্যিই নড়াচড়া করে, নাকি বায়স্কোপের মত একের পর এক ছবি ভেসে ওঠে পর্দায়? সঙ্গী দুজনের মুখে ছবির গল্প শুনতে শুনতে আমার মনে এসব প্রশ্ন দেখা দিত।
জাতীয় পতাকা নামতেই তীব্র খটাখট খটাখট শব্দে কয়েক সারি ঘোড়া চোখের সামনে দিয়ে মরুভূমির এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তের দিকে ছুটে গেল। এরপর আরো কয়েক সারি ঘোড়ার দুরন্ত ছোটাছুটি। আমি যুগপৎ বিস্মিত, চমৎকৃত ও উল্লসিত, আমার চোখ ছানাবড়া হয়ে যাচ্ছে, চোখের সামনে যা দেখছি তা আমার কল্পনার জগৎ ছাড়িয়ে অনেক অনেক দূরের এক মহাবিস্ময়।
একটা ঘোড়া থামলো। ঘোড়ার পৃষ্ঠ থেকে নেমে খট খট কদম ফেলে যে অতিশয় সুদর্শন রাজকুমার রাজদরবারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে- সঙ্গীরা জনালো তাঁর নাম ওয়াসীম। আমি সত্যিই বিমোহিত হয়ে গেলাম ওয়াসীমের সৌন্দর্য দর্শনে।

এরপর কিছু জাদুদৃশ্যও বোধহয় ছিল। বিকট চেহারার এক দৈত্য ও তার অট্টহাসি দেখে ভয় পাচ্ছিলাম। সঙ্গীরা জানালো- তার নাম জাম্বু।
মাঝে মাঝেই তরবারি-যুদ্ধ হয়। এই যুদ্ধ আর ঘোড়দৌড় আমার কাছে সর্বাপেক্ষা আকর্ষণীয় মনে হচ্ছিল।
আমার ঘোরলাগা বিস্ময় আকাশ ছুঁলো রাজকুমারীর দৃশ্যে। রাজকুমারী তার শয়নকক্ষে শায়িতাবস্থায় ছিল; সেখানে রাজকুমার ওয়াসীমের প্রবেশ। চমকে শোয়া থেকে উঠে বসে রাজকুমারী, আর এ দৃশ্যটা তিনবার করে দেখানো হচ্ছিল। ও-বয়সেই রাজকুমারীর রূপলাবণ্য দেখে আমি দিশেহারা হয়ে গেলাম। আমার কী যে ঘোর লেগে গেল!
রাজকুমারীর নাম অলিভিয়া।
তারপর বিশ্বাস করুন, জীবনে কত নায়িকাদেরই তো দেখলাম, অলিভিয়া জীবন ভর আমার কাছে স্বপ্নের রাজকন্যা হয়েই থাকল, তার মত অপরূপা সুন্দরী নায়িকা আর কাউকেই পেলাম না।

বিপুল উচ্ছ্বাস আর উত্তেজনার ঘোরে ছবি দেখা শেষ করে রাত সোয়া নয়টার দিকে জয়পাড়া সিনেমা হল থেকে আমরা ত্রিরত্ন মায়ের কোলে ফিরে আসতে হাঁটা ধরলাম।


রবীন্দ্রনাথের যে বইটি আমি প্রথম পড়েছিলাম

অনেকে মিটিমিটি হাসছেন- আমাকে হয়তো ‘প্রথম’ মুদ্রাদোষে পেয়ে বসেছে। একদম ঠিক। মাথায় কিছু আসছে না- না কবিতা, না গল্প, না অন্যকিছু। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন চলে যাওয়ার পর হঠাৎ হঠাৎ একেকটা জিনিসের কথা মনে পড়ে আর নিজেই নিজের কাছে প্রশ্ন করি- কবে যেন প্রথম এটা করেছিলাম!
এইতো সংক্ষিপ্ত পটভূমিকা।
মোটামুটি ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত আমি বইয়ের পোকা ছিলাম- সামনে যা পেতাম গোগ্রাসে কাটতাম আর চিবুতাম। তবে আপনাদের মত অত না আবার!
কিন্তু এত বই কোথায় পাব? সপ্তম শ্রেণীতে থাকা অবস্থায়ই নবম-দশম শ্রেণীর বাংলা বই পড়ে ফেলেছি- বিশেষ করে গল্পগুলো। সেকালে আমাদের অজগ্রামে কেন, হাইস্কুলেও কোনো খবেরের কাগজ যেত না। স্কুলে যে একটা লাইব্রেরি আছে তাও জানতে পেরেছিলাম অনেক পরে।
তো, এত বই কোথায় পাব? কিনে বই পড়ার মত সামর্থ আমার ছিল না। তবে এখানে-সেখানে ‘চটি’ জাতীয় কিছু বই মাঝে মাঝেই ক্লাসমেটরা একত্র হয়ে রসিয়ে রসিয়ে পড়ি- এক হাত থেকে আরেক হাতে যেতে যেতে একসময় ভুলে যাই এর মালিক কে ছিল- ভুলে যাই বর্তমানে বইটা কোথায় কার কাছে আছে।
খুব পড়ুয়া পরিবারের দু-তিনজন ক্লাসমেট ছিল। বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন, যেমন নজরুল-রবীন্দ্র-জসীম উদ্‌দীন জন্মজয়ন্তীতে তাঁদের কবিতার বই ওরা নিয়ে আসত। ওদের কাছ থেকে নিয়ে পড়তাম। বাসায় নিয়ে যেতাম। আমার এই পড়ার নেশা সম্বন্ধে ওরা যখন বুঝতে পারল, নিজেরাই বলল- আমাদের বাসায় কাঁড়ি কাঁড়ি বই, পড়ার কেউ নাই। তুই পড়বি নি? পড়বার পারোস।
ওর নাম জাহিদ। বললাম, কাল আমার জন্য একটা বই নিয়া আসিস।
জাহিদ পরের দিন আমার হাতে যে বইটা এনে তুলে দিল ওটার মলাট ছিল না। মলাটের পরের সাদা পাতাটা ময়লা আর ছেঁড়াছেঁড়া মত হয়ে গেছে। তাতে কী- বইটা হাতে নিয়ে পৃষ্ঠা উলটাতে থাকি।

শেষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমি তখন সপ্তম অথবা অষ্টম শ্রেণীতে পড়ি, সঠিক মনে নেই। পাঠ্যপুস্তকে কবি-পরিচিতি আর শিক্ষকদের কাছ থেকে শোনা জ্ঞান থেকে অল্প অল্প চিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর- কাজী নজরুল ইসলাম- আর জসীম উদ্‌দীন। স্কুলে খুব আড়ম্বরের সাথে এঁদের জন্ম বা মৃত্যুদিবস পালিত হয়, অন্য কবিদের না- পাঠ্য বইয়ের কবিতা বা আর কারো কাছে পাওয়া বই থেকে মাঝে মাঝে অনুষ্ঠানে তাঁদের কবিতা পড়ি। তাঁদের সম্বন্ধে আর কতটুকুই বা জানি!
আমি শেষের কবিতা পড়তে শুরু করি। ক্লাসের পড়া, বাড়ির কাজ আর খেলাধূলার সময় সহ বইটা পড়ে শেষ করতে আমার চার-পাঁচ দিনের মত লাগে।
বইটা পড়ার সময় বিশেষ কয়েকটা অংশে আমি খুব আপ্লুত হয়ে পড়ি।
ভীরু যতীন্দ্র লাল চুপিসারে লাবণ্যর ড্রয়ারে চিরকুট লুকিয়ে রাখত, যাতে লেখা থাকত লাবণ্যর প্রতি তার নিবেদন, কিন্তু মুখ ফুটে বলার দুঃসাহস তার কোনোদিন হয় নি।
আরেকবার লাবণ্য অমিতকে নিয়ে চলে যায় সেই পাহাড়ের ধারে কোনো এক গোধূলিবেলায়, যেখানে দাঁড়িয়ে এমনি আরেকদিন লাবণ্যকে সে একটি আংটি পরিয়ে দিয়েছিল- লাবণ্য সেদিন এটা ফিরিয়ে দেয়।
বইটার এক জায়গায় গিয়ে আমার খুব খারাপ লেগেছিল, কান্না চলে এসেছিল। অমিত যোগমায়াদের বাড়ি গেছে। কিন্তু যোগমায়ারা আর আগের বাড়িতে নেই। ‘ঘর বন্ধ, সবাই চলে গেছে, কোথায় গেছে তার কোনো ঠিকানা রেখে যায় নি।’ অমিত লাবণ্যের বসবার ঘরে গেল। ‘সেই ঘরটার মধ্যে বোবা একটা শূন্যতা। তাকে প্রশ্ন করলে কোন কথাই বলতে পারে না। সে একটা মূর্ছা, যে মূর্ছা কোনোদিনই আর ভাঙবে না।’ তারপর অমিত নিজের কুটিরে গেল। যোগমায়া যা যেমন রেখে গিয়েছিলেন তেমনি সব আছে। এমনকি, যোগমায়া অমিতকে দেয়া তাঁর কেদারাটিও ফিরিয়ে নিয়ে যান নি। যেন স্নেহ করেই এই কেদারাটি তিনি অমিতকে দিয়ে গেছেন। অমিত যেন শুনতে পেলো শান্ত মধুর স্বরে তাঁর সেই আহ্বান- ‘বাছা!’
আর সবচেয়ে খারাপ লেগেছে লাবণ্যর লেখা কবিতাটা, যা সে অমিতকে লক্ষ করে লিখেছিল :

কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও
তারই রথ নিত্যই উধাও

বুকের ভেতর মোচড় দিয়েছিল এ কথাটা- ‘হে বন্ধু, বিদায়।’ আমার সেই কচি মনে কেবলই মনে হত- এরপরও আরেকটু থাকতে পারত, এ কবিতার উত্তরে অমিতের কিছু একটা, তাহলে হয়ত মনটা প্রশমিত হত। এমন ভেবেছি আরো অনেক অনেক বার।

এরপর আরো বহুবার শেষের কবিতা পড়েছি। শেষের কবিতা সম্বন্ধে অনেকেই বলে থাকেন- এ উপন্যাস পাঠের জন্য কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই, এটা সর্বকালের সব বয়সের পাঠকের জন্য উৎকৃষ্ট ও যথোপযুক্ত রচনা- আপনি যে বয়সেই পড়বেন, মনে হবে আপনার বয়সের জন্যই এটা লেখা হয়েছে- আপনি যতবার পড়বেন, ততবারই এটা আপনার কাছে আনকোরা নতুন মনে হবে- মনে হবে এই কথাটা, এই লাইনটা তো আগের বার পড়ি নি।
নবম শ্রেণীর মাঝামাঝি সময় থেকে রবীন্দ্র সঙ্গীত আমাকে এমনভাবে পেয়ে বসল যে বলতে গেলে অন্য কোনো গানই আমার ভাল লাগত না। এই ভাল লাগার মূলে ছিল শেষের কবিতা, আর রবীন্দ্র সঙ্গীত রক্তের ভেতর ঢুকে যাওয়ার পর একদিন অনুভব করি- আমার রক্তকণিকায় শুধু গান আর সুরের তরঙ্গই বয়ে যাচ্ছে- অবিরাম অবিরল কলকল ছন্দে।

১-৮ মে ২০০৯

সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে আগস্ট, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪৩
৩৪টি মন্তব্য ৩৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৪৪



বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ছায়াযুদ্ধ: R থেকে MIT—কুয়াশার ভেতর নতুন ক্ষমতার সমীকরণ

কেন বিএনপি–জামায়াত–তুরস্ক প্রসঙ্গ এখন এত তপ্ত?
বাংলাদেশের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন ধরে একটি পরিচিত ভয়–সংস্কৃতি কাজ করেছে—
“র”—ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা নিয়ে রাজনীতিতে গুজব,... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিশ্চিত থাকেন জামায়েত ইসলাম এবার সরকার গঠন করবে

লিখেছেন সূচরিতা সেন, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৪২


আমাদের বুঝ হওয়ার পর থেকেই শুনে এসেছি জামায়েত ইসলাম,রাজাকার আলবদর ছিল,এবং সেই সূত্র ধরে বিগত সরকারদের আমলে
জামায়েত ইসলামের উপরে নানান ধরনের বিচার কার্য এমন কি জামায়েতের অনেক নেতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×