গ্রাস
ইনডিয়া সরকার আইন করে স্টার জলসা, স্টার প্লাসসহ সে দেশের বেশকিছু টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার বন্ধ করে দিল।
ফলাফল।
ভারতে এর কোনো ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া হলো না। কিন্তু বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে ঐসব চ্যানেল পুনঃপ্রচারের দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন হলো।
আর,
আর ‘পাখি’র শোকে বাংলাদেশের অজপাড়াগাঁয়ের এক গৃহবধূ শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিল।
৯ আগস্ট ২০১৪
জেনেটিক প্রবলেম
ছেলেটা অবাধ্য। ছোটোবেলা থেকেই। মা-বাবার কথা শোনে না, আত্মীয়স্বজনের সাথে দুর্ব্যবহার করে। অনেক চেষ্টা করেও তাকে জীবনের শৃঙ্খলা শেখানো গেলো না।
সে চায় স্বাধীন ও মুক্ত জীবন। কেউ কেউ জন্মগতভাবেই একটু শৃঙ্খলাবিরোধী হয়ে থাকে। সুন্দর, সাজানো-গোছানো জীবনযাপন তাদের অপছন্দ। যখন যা মন চায়, তাদের তাই করা চাই-ই চাই।
ছেলের অবাধ্যতায় অপারগ ও অসহায় মা-বাবা হাল ছেড়ে দিয়ে বললেন, ঠিক আছে বাবা, তুমি যা চাও তাই করো।
ছেলে আনন্দে লাফিয়ে উঠে বললো, আমাকে কালই ৫ হাজার টাকা দিতে হবে।
বড় অংকের টাকার কথা শুনে মা-বাবা আঁতকে উঠলেও ছেলের হাতে টাকাটা তুলে দিলেন। তারা ভাবলেন, টাকা পেয়েই হয়তো সে শান্ত হয়ে যাবে। এত্তটুকুন ছেলে এত টাকা দিয়ে আর কীই বা করবে!
কোনোদিন একসাথে ৫০০ টাকার উপরে সে পকেট খরচ পায় নি। আজ ৫০০০ টাকা পাওয়ার পর সে কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে গেলো। সে ভেবে পেলো না এত টাকা দিয়ে সে কী করবে।
মা-বাবা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললেন। ছেলে এখন শান্ত। কোনোকিছু নিয়ে বাড়াবাড়ি করছে না। আর কোনো চাওয়াচাওয়িও নেই। দারুণ একটা ফল পাওয়া গেছে।
দু সপ্তাহের মাথায় ছেলে ৭ হাজার টাকা চেয়ে বসলো। মা-বাবা প্রতিবাদ করে উঠতেই ছেলে অগ্নিমূর্তি হয়ে উঠলো। টাকা না পেলে খুন করতেও সে দ্বিধা করবে না। অগত্যা তাকে ৭ হাজার টাকা দেয়া হলো।
মা-বাবা আজও ছেলেকে নিয়মিত মোটা অংকের টাকা দিয়ে যাচ্ছেন। ছেলের অবস্থা তেমন একটা খারাপ না- প্রথম দিকে সিগারেট খেতো, এখন সবই খায়।
পুনশ্চঃ কেউ কেউ জন্মগতভাবেই অবাধ্য হয়ে থাকে। কোনো কিছুতেই তাদের শিক্ষা হয় না, যেমন তসলিমা নাসরিন। এ ধরনের আচরণকে জিনেটিক প্রবলেম বলা হয়।
২০ আগস্ট ২০১৪
প্রেম ও ভয়
একবার এক মেয়ে কোনো এক কবির কবিতা পড়ে তাঁর প্রেমে পড়ে গেলো। একেবারে কঠিন সেই প্রেম। প্রেম একদিন বিয়েতে গড়ালো। তাঁরা সুখে ও আনন্দে প্রেম ও সংসার করতে থাকলেন।
তারপর?
তারপর যা ভাবছেন তাই হলো। কবিপত্নী কবিকে কবিতা লিখতেই বারণ করে দিলেন। এর কারণ কী, বলুন তো!
২৬ আগস্ট ২০১৪
লোভ
তাকে দেখলেই আমার লোভ হয়। সেই লোভ অদম্য, এবং ভয়াবহ।
একদিন গত্যন্তর না দেখে তার কাছে কথাটা পাড়লাম। সে ভীষণ ক্ষিপ্ত হলো, এবং আমাকে রূঢ় ভাষায় ভর্ৎসনা করলো।
আমি স্তিমিত হলাম। নীরবে প্রস্থান করার আগে বললাম- বাসায় বরই গাছ থাকলে পাড়ার লোক তাতে ঢিল ছুঁড়বেই। তোমার লাবণ্য ঢেকে রাখো, অথবা তুমি নিরুদ্দেশ হও।
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪
কৃতজ্ঞতাঃ ব্লগার স্বপ্নচারী গ্রানমা
জুতো
১
পার্টি শেষ হবার কিছু আগে হঠাৎ পায়ের দিকে চোখ পড়তেই লজ্জায় কাতর হয়ে পড়লাম। আমার পদমর্যাদা এবং পরনের পোশাকের সাথে জুতোজোড়া নিতান্তই বেমানান ছিল। অকারণে অন্যান্য অতিথিদের জুতোর দিকে বার বার আমার চোখ যেতে লাগলো। তাঁদের জুতো চকচক করছিল। আমার মনে হচ্ছিল সবাই আড়চোখে আমার জুতোর দিকে তাকাচ্ছে আর মনে মনে হাসছে, কিংবা তাচ্ছিল্য করছে।
২
পরের সপ্তাহে একটা বিবাহ-বার্ষিকীর পার্টিতে এ্যাটেন্ড করার জন্য বেশ দামি একজোড়া জুতো কিনতে হলো- পিয়ারি কার্ডিন। খুব ডাটের সাথে পিয়ারি কার্ডিন পায়ে দিয়ে পার্টিতে গেলাম।
কিন্তু একটা খোলামেলা লনে, আলো-আঁধারীতে পার্টিটা আয়োজন করা হয়েছিল, যেখানে স্নিগ্ধ ও মোলায়েম ঘাসের ভিতরে জুতোর চাকচিক্য বুঝবার কোনো উপায় ছিল না।
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৪
মেয়েটি কি বিপ্লবী?
না, তাঁর সমাজ বদলের ইশতেহার প্রকৃতপক্ষে মানসিক বৈকল্যের সাক্ষী। তিনি কোনোদিন অরগাজমের স্বাদ পান নি। তাঁর শরীর এখন আঙ্গার। তিনি এক সর্বভূক রাক্ষসীর মতো যা কিছু সামনে পেয়েছেন, সম্ভোগের জন্য টেনে নিয়েছেন। কিন্তু হায়, সকলেই বিকলাঙ্গ, কিংবা নপুংসক।
কিন্তু কেউ কেউ কিছুটা সুখ দিয়েছিল। তাই তিনি এখনও বেঁচে আছেন। হয়তো কোনো একদিন জনৈক সুপুরুষ ইতিহাস খুঁড়ে বেরিয়ে এসে তাঁকে স্বর্গীয় অরগাজম দিবেন- এ আশায় তিনি বেঁচে থাকেন। আর নিরন্তর বিলাপ করে তাঁর আকুতি জানান।
বৃষ্টি ও বাতাসে তিনি শুধু ক্যান্সারের বীজ বুনেছেন। অসংখ্য কিশোর-কিশোরী অজান্তে সে বিষ খায়, আর তারা অন্ধকারে ডুবে যেতে থাকে। তিনি এক মানুষখেকো।
তিনি বিপ্লবী হতে পারতেন, যদি দু-চারটে ফুল হাতে রেখে মানুষকে ভালোবাসতেন।
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৪
নারী ও পুরুষ
তার অতৃপ্ত শরীরের দিকে একধ্যানে তাকিয়ে থাকতে থাকতে দেখতে পেতো, সে একটা আগুনের পিণ্ড। দাও দাও করে জ্বলছে। সে শিখা নিভে না।
একদিন সে তাকে বিনীত কান্নায় ছেড়ে দিলে সে মুক্ত হাওয়ায় উড়াল দিল।
অনেক কাল পর যখন একপলকের জন্য দেখা হয়েছিল, পুরুষ লোকটা ওর চোখ পরখ করে বললো, আমি তোমার সুখই চেয়েছিলাম।
কাষ্ঠহাসি হেসে নারী বললো, সব পুরুষই তোমার মতো, আর নারীরাও আমার মতোই।
১৫ নভেম্বর ২০১৪