somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার ছেলেমেয়েদের গানের কথা :(

০৩ রা নভেম্বর, ২০১৮ সকাল ১১:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর আগে আমার ছেলেমেয়েদের সাহিত্যের প্রতি অনুরাগ ও গানের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে একটা সুদীর্ঘ কাহিনি লিখেছিলেম
ভুলে যাওয়া গান : বহু দিনের পিরিত গো বন্ধু; পথিক নবী ও তাঁর গান; আমার ছেলেমেয়েদের ছড়া শিরোনামে। তো, এক্ষণে তাহাদের গান নিয়ে হাজির হলেম।

বাচ্চারা যেরকম হয়- ছোটোকালে খাবে না, স্কুলের বয়সে পড়বে না- ওরাও তাই হলো। সারাক্ষণ গেইমস, কার্টুন, আরো কত কী- কাজের শেষ নাই। একবার মেয়েকে বকা দিল তার মা- তুমি তো কিছুই করো না। মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বললো- আমি সারাদিন কত কাজ করি- আমাকে গোসল করতে হয়, খেতে হয়, পড়তে হয়, স্কুলে যেতে হয়, টিভি দেখি, ঘুমাতে হয়- আমি খেলার সময় পাই না :(

সেভেন-এইটে থাকা অবস্থায় বড়ো ছেলে গিটারের প্রতি আসক্ত হলো। আমি রাগ করলাম। কারণ, সে বই ছুঁয়েও দেখে না। প্রাইভেট টিউটরকে ফোন করে ছুটি দিয়ে দেয়। টিউটর বাসায় এলে নিজে থেকেই বিদায় দিয়ে দেয়। পড়াতে বসলে গল্প জুড়ে দেয়। টিউটর পড়তে বললে সে নিজেই উঠে চলে যায়। টিউটর বিরক্ত হয়ে ছাত্র ছেড়ে দিল। এ যখন অবস্থা তখন গিটার হাতে তুলে দেয়ার মতো মনের অবস্থা আমার ছিল না।

এভাবেই তোয়াইয়া বোয়াইয়া এসএসসি পাশ করাইলাম। কলেজে ভর্তির সময় তার দেয়া শর্ত মেনে সাইন্স ল্যাব থেকে গিটার কিনে দিলুম। এভাবে গান ও গিটারের ফাঁকে ফাঁকে সে পড়ালেখাও চালাইয়া যাইতে থাকলো। এবং আলহামদুলিল্লাহ এইচএসসিও পাশ করলো।

ভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর সে মুক্ত স্বাধীন ভাবে গান ও গিটারের প্রতি ঝুঁকে পড়লো। একদিন আমাকে বললো- আব্বু, ভার্সিটিতে আমি অনেক পপুলার। সবাই আমাকে চেনে। সে নিজের প্রতিভায় নিজেই মুগ্ধ দেখে আমি কিছুটা লজ্জিত ও বিব্রত হয়ে বললাম- নিজের ড্রাম নিজে পিটাইও না। অন্যরা বলুক এই কথা। এবং আমি খোঁজ নিয়ে দেখলাম, সে সত্যিই রীতিমতো সেলিব্রেটি। ফেইসবুকে তার ভূয়সী প্রশংসা গিটারিস্ট হিসাবে। তার গিটারের সুর আমাকে তেমন টানে না। তার গলার সুরও আমার কাছে তেমন কিছু মনে হয় না। বড়ো সমস্যা হলো, তার গানের লাইন আমার গানের লাইন থেকে সম্পূর্ণ বিপরীত।

কিন্তু তার সিজিপিএ প্রত্যাশার চেয়ে অনেক নীচে হওয়ায় মাঝে মাঝেই আমি ক্ষোভ প্রকাশ করি। গান বাজনা ছেড়ে দিয়ে পড়ায় মনোযোগী হতে উপদেশ দিই।

কিন্তু আমার উপদেশ কোনো কাজে দেয় না।

অবশেষে ব্যাপারটা আমার কাছে ক্লিয়ার হয়। আমার বাবার কণ্ঠ অত্যন্ত সুমধুর। ছোটোবেলায় ক্ষেতে বাবার পাশে থেকে কাজ করার সময় শুনতাম বাবা কত দরদ ভরা গলায় গান গাইছে। বাসায় কোনো কোনো নিরালা দুপুরে আপন মনে বাবা গান গাইত। আমার অনেক অনেক ভালো লাগতো। ছোটোবেলায় রেডিওর বাইরে যাত্রাপালার গান- আমার বাড়ির দক্ষিণ ধারে বিয়ার বাদ্য বাজে দাইমা গো, আমি স্বপ্নে দেখলাম মধুবালার মুখও রে, ইত্যাদি ছিল আমাদের প্রাণ। ছোটোবেলা থেকে আমিও গানের খুব পাগল। আমার ছোটো ৩ ভাইকে দেখি গান লেখে, সুর করে ও দল বেঁধে গায়- ওদের একজন তো সিডি মিডি বাইর কইরা সর্বনাশই কইরা ফালাইছে। কেবল আমার দুইবোনকে গানের প্রতি অত্যন্ত উদাসীন মনে হয়। আমার স্ত্রীও ছোটোবেলায় রেডিও ছাড়া থাকতে পারতো না। এ থেকে পরিষ্কার যে, আমার রক্তে আছে গান, যা আমার বাবার ধমনি থেকে প্রবাহিত। আমার স্ত্রীও গানের ভক্ত এবং তার প্রিয় শিল্পী আমি নিজেই :) গানের চারণভূমি এ বঙ্গের মাটিতে গান ভালোবাসে না, এমন কে আছে?

একদিন আমার পিসিতে দেখি ছোটোছেলের নামে এক ফোল্ডার। সেটা ওপেন করে তো তাজ্জব। একটার পর একটা গান রেকর্ড করা। বন্ধু বান্ধবদের নিয়ে। এসব দেখে মুগ্ধও হই। কিন্তু আমাকে সে এসব গান শুনতে দেবে না, সে লজ্জা পায়। জোর করে শুনলাম। সে যখন যেখানে সুযোগ পায়, গান গায়। ইন্টারনেটে থেকে কারাওকে ডাউনলোড করে, বড়ো ভাইয়ের দেখাদেখি একই কাজ করতে থাকে।

মেয়ে ছোটোবেলায় নাচ ও গান শিখতো। ফাইভ পাশ করার পর ওগুলো ছেড়ে দেয়। সে আবার পড়ালেখায় খুবই সিনসিয়ার। ক্লাস এইট থেকেই ডিটারমাইন্ড সে ডাক্তার হবেই। আল্লাহর রহমতে সে এখন ডাক্তারি পড়ছে। সে সময় নষ্ট করে নি গান গাইতে যেয়ে :) সে গান গায় না, কিন্তু গান শোনে প্রচুর।

এত উপক্রমণিকার পর তাদের কিছু গান শেয়ার না করলে কেমন দেখায়? যদিও আগেও বিক্ষিপ্তভাবে ওদের গান শেয়ার করেছি, আজ সেগুলো থেকে কিছু গান একসাথে দিলাম। ওদের বন্ধুদের গাওয়া গানও থাকলো।


Ciggaretes After Sex - affection (acoustic cover) || Covered by Pilot (CoPilot)





La Vie En Rose| Can't Help Falling in Love| With or Without You| Cover by Highway Melancholies
এখানে পাইলট হলো গিটারিস্ট (চিকন ও লম্বা ছেলেটির নাম পাইলট)
গায়িকা হলো ওদের ক্লাসমেট- ফাইরুজ ফুর্তি।




Annie's Song cover by Furti & Pilot
পাইলট এখানে গিটারিস্ট




এটা পাইলটের প্রথম দিকের গান





Indalo- Obosheshe (Acoustic Cover)
পাইলটের এখানে গিটার বাজাচ্ছে। ওর এই গিটার বাজনায় আমি খুব মুগ্ধ। কণ্ঠ ওর বন্ধুর, নাম নাহিন।





Train - Hey Soul Sister || Covered by Labib





Counting Stars by Labib 23 May 2016





Runaway by Aurora || Covered by Labib || Instrumental by SyncopatedProgress





এটা ছিল লাবিবের একটা ম্যাভেরিক আইডিয়া :) কোথায় দাঁড়াইয়া যে সে এই গানটা গাইছিল, তা আমি খুঁজে বের করতে পারি নি, সেও ভুলে গেছে।

Labib's Open Air Concert :)




১০
Baby come on by Pluss 44 || Cover by Labib




বোনাস

Bassbaba Sumon Featuring Furti - Oniyomer Golpo

সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৮ রাত ১২:৪৭
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হালহকিকত

লিখেছেন স্প্যানকড, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:১২

ছবি নেট ।

মগজে বাস করে অস্পষ্ট কিছু শব্দ
কুয়াসায় ঢাকা ভোর
মাফলারে চায়ের সদ্য লেগে থাকা লালচে দাগ
দু:খ একদম কাছের
অনেকটা রক্তের সম্পর্কের আত্মীয় ।

প্রেম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×