অনেক দিন ধরেই গানের পোস্ট দেয়া হচ্ছিল না, তাই এবার এলাম গান নিয়ে। তবে, পৃথিবী এখন কোভিট-১৯ করোনা ভাইরাসের প্রকোপে দিশেহারা। তাই করোনা নিয়ে কয়েকটি কথা আগে বলে নিয়ে গানের লিস্টি নীচে দিচ্ছি।
বহুদিন পর্যন্ত আমাদের বাংলাদেশ এ ভাইরাস থেকে মুক্ত ছিল। একদিন শোনা গেল, বাংলাদেশও অনেকগুলো ঝুঁকিপূর্ণ দেশের মধ্যে একটি। এ খবর শোনার পর বুক কেঁপে উঠলো। তবে, অনেকে আবওহাওয়া ও ভৌগলিকগত বেশকিছু তথ্যউপাত্ত দিয়ে বোঝাতে চাইলেন যে, আমরা মোটেও ঝুঁকিপূর্ণ নই। তাদের এ কথায় আশ্বস্ত হয়ে যখন সুখেশান্তিতে দিন গুজরান করছিলাম, তখনই ৮ মার্চ ২০২০ তারিখে শোনা গেল, দেশে ৩ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থার ১৯৪টি সদস্য দেশের মধ্যে ১০২তম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ করোনা আক্রান্ত দেশে পরিণত হলো। আজ ২১ মার্চ ২০২০ তারিখ পর্যন্ত দেশে মোট ২৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ১৮ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রথম ও ২১ মার্চ ২০২০ তারিখে ২য়, মোট দুই ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন।
*******
করোনা ভাইরাসে কারা সবচাইতে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ? এ অংশটি নেট থেকে সংগৃহীত। আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ মনে হওয়ায় নীচে তুলে দিলাম। যারা এ সব রোগে আক্রান্ত, বা ধূমপায়ী, তারা সাধারণের চাইতে অধিক সতর্ক থাকবেন, এই প্রত্যাশা করি।
ধূমপান: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অন্যদের তুলনায় ধূমপায়ীরা করোনাভাইরাসে আক্রান্তের ঝুঁকি ১৪ গুণ বেশি। সে কারণে এই দুঃসময়ে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
ডায়াবেটিস: যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে, অন্যদের তুলনায় তাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। যুক্তরাজ্যের ডায়াবেটিস চিকিৎসক ডন হওয়ার্থ বলেন, করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ ডায়াবেটিসে ভুগতে থাকা ব্যক্তিদের জন্য বিপজ্জনক। তিনি আরো বলেন, যদি কারো ডায়াবেটিস থাকে এবং কাশি হয়, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যায়, শ্বাসকষ্ট হয়; তাহলে ব্লাড সুগার মাঝেমাঝেই পরীক্ষা করে দেখা দরকার।
হার্টের সমস্যা: করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছে হার্টের রোগীরা। কারণ, হার্টের সমস্যায় ভুগতে থাকা রোগীদের ইমিউন সিস্টেম এমনিতেই দুর্বল হয়ে থাকে। ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের শরীর শক্তিশালীভাবে তা প্রতিরোধ করতে পারে না।
অ্যাজমা: ফুসফুসের বাইরে ও ভেতরে বাতাস যাতায়াতে সাহায্য করে আস্ট্রা। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেহেতু অ্যাজমা রোগীরা এমনিতেই এ সমস্যার মধ্য দিয়ে যায়, করোনা ভাইরাস তাদের ঝামেলা আরো বাড়িয়ে দেয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে অ্যাজমা রোগীদের ইনহেলার ব্যবহার করা উচিত। সচেতন না হলে প্রাণহানি ঘটতে পারে।
ফুসফুসে সমস্যা কিংবা যক্ষ্মা হলে: ফুসফুসে সমস্যা থাকলে কিংবা যক্ষ্মা হলে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করা অনেক বেশি কঠিন হয়ে যায়।
ক্যান্সার: ক্যান্সারের রোগীরা করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে। আর আক্রান্ত হলে সেরে ওঠা অনেক বেশি কঠিন। তাদের দুর্বল ইমিউন সিস্টেমকে সহজে কাবু করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইবে না করোনাভাইরাস।
পাকস্থলীর সমস্যা: যাদের হজমে সমস্যা আছে এবং পাকস্থলী নিয়ে চরম বিপাকে রয়েছেন, করোনাভাইরাস তাদের কাছে যমদূতের মতো। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা এ ধরনের সমস্যায় ভুগছেন, এ সময় তাদের বাড়তি সচেতন থাকা দরকার। করোনাভাইরাসের সঙ্গে লড়াই করার মতো ইমিউন সিস্টেম এ ধরনের সমস্যায় ভুগতে থাকা ব্যক্তিদের নেই।
দুর্বল ইমিউন সিস্টেম: বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলার মতো কোনো ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। একে প্রতিরোধ করার একমাত্র উপায় ইমিউন সিস্টেম। এজন্য প্যারাসিটামল না খাওয়ার পরামর্শও দিয়েছেন তারা। তবে যাদের ইমিউন সিস্টেম দুর্বল, তারা ঝুঁকিতে রয়েছেন।
****
করোনা প্রতিরোধে সরকার যেসব নির্দেশনা জারি করছে, তা মেনে চলা বাঞ্ছনীয়। সেই সাথে, আমার নিজেরও কিছু মতামত আছে, যেগুলো মেনে চলা আবশ্যক, অন্তত আমি মেনে চলছি।
করোনা প্রতিরোধে আপাতত নীচের নিষেধাজ্ঞা মেনে চলা এবং কিছু অভ্যাস পরিত্যাগ/স্থগিত করা জরুরি :
১। আমাদের নিজ নিজ বিবিগণ যেন শপিং মল, ফিশিং মল, পারলার, বাজার, আগোরা, আড়ং, বসুন্ধরা, যমুনা ফিউচার পার্ক, রমনা পার্ক, শাড়ির দোকান, গহনার দোকান, ইত্যাদি জায়গায় অতি প্রয়োজন না হলে গমনাগমন না করেন। বাসায় বসে থাকাই উত্তম, যদি না কাজের প্রয়োজনে বাইরে বেরোবার দরকার পড়ে।
২। আমরা আপাতত সোশালাইজেশন, আই মিন, একে অপরের বাসায় ভিজিট করা স্থগিত রাখি। এই প্রসঙ্গে এটাও বলে রাখি- পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত আমার বাসায় আসা যে-কোনো আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, সহকর্মী, শালা-শালী, ভাইগ্না-ভাইগ্নি, ভাতিজা-ভাতিজি, ছেলেমেয়েদের বন্ধুবান্ধব, ভাই-বোনের জন্য কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
৩। বিদেশ ফেরত কোনো আত্মীয় যেন নিজ বাসায় না আসেন, আমরাও যেন তাদের বাসায় না যাই।
৪। হাসপাতালে বা বাসায় কোনো রোগী দেখতে না যাওয়াটাই শ্রেয় হবে।
৫। অতি প্রয়োজন না হলে বাইরে বা ঘনবসতিপূর্ণ, নোংরা এলাকায় যাতায়াত না করাই উত্তম।
৬। প্যানিক বায়িং থেকে বিরত থাকুন। এটা অত্যন্ত গর্হিত কাজ। দেশে যথেষ্ট পরিমাণ খাদ্যের মজুদ আছে। প্যানিক বায়িং করে পরে পস্তাবেন, কারণ, প্যানিক বায়িং-এর ফলে হঠাৎ দাম বেড়ে যাবে, আপনি সেই চড়া দামে জিনিস কিনবেন, অথচ কিছুদিন পর দেখবেন জিনিসের দাম একেবারেই কমে গেছে। নিজের টাকা এভাবে হারালেন বলে থাপড়াইয়া পাছা ফাটাইয় রক্ত ঝরানো ছাড়া আপনার আর কিছু করার থাকবে না।
***
আমি যদি করোনায় আক্রান্ত হই বা মারা যাই
একদিন সন্ধ্যায় আমার ছোটো ছেলেকে আমি করোনায় আক্রান্ত হলে কী করতে হবে সেই সম্পর্কে নির্দেশনা দিচ্ছিলাম। বলছিলাম, আমার করোনা হলে আমি কালবিলম্ব না করে হাসপাতালে চলে যাব। হাসপাতাল আমাকে না রাখলে বা জায়গা দিতে না পারলে বাসায় ফিরে এসে একা বদ্ধ ঘরে বন্দি থাকবো। অন্তত ১৪ দিন এভাবেই থাকবো। যদি বেঁচে ফিরে আসি, তাহলে তো আসলামই, আর যদি আরো বেশি অসুস্থ হইয়া পড়ি, খবরদার, আমার জন্য কোনো দরদ দেখাইতে আমার কাছে আইসো না, তাইলে বাসার সবাইকেই আক্রান্ত হয়ে মরতে হবে। মোটামুটি এই হলো প্লান। ভালো মন্দ যাহাই আসুক, সত্যকে মেনে নিতে হবে সহজে। আল্লাহর রহমতে অনেক সতর্ক আছি, ইনশা'আল্লাহ করোনায় আক্রান্ত হবো না। তারপরও যদি আক্রান্ত হইয়া যাই, মৃত্যু যদি আসেই, আফসোস নাই, সত্যকে মেনে নিতে হবে। আল্লাহর কাছে হাসিমুখেই যাতে যেতে পারি, সেই মনোবল রাখতে হবে।
এ কয়দিনে যা বুঝলাম, করোনার কোনো চিকিৎসা নাই। কোয়ারেন্টাইন করার পর তসবিদানা হাতে নিয়া সময় গুনতে হবে আর আল্লাহর কাছে পানা চাইতে হবে। এটাও একটা সুখের কথা বা আনন্দের খবর যে, আমার সময় চলে আসছে ওপারে আমার মা আর বাবার কোলে ফিরে যাবার, অতি শীঘ্রই তাদের দেখা পাব। ... তসবিদানা গুনতে গুনতে নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে, পানি ও খাবার খেতে হবে, একেবারে ঘরের দরজা জানালা সিলগালা করে আটকাইয়া দিতে হবে, যাতে বাইরের বাতাস ভেতরে না ঢুকতে পারে, ভেতরের বাতাসও বাইরে না যেতে পারে। ঘরের ভেতরেই যাবতীয় খাবার দাবারের ব্যবস্থা করে ফেলতে হবে। এর মধ্যেই আল্লাহ যদি বলে বসেন, না, তোমাকে আরো থাকতে হবে পৃথিবীতে, তখন সেটাও খুশি মনে মেনে নিতে হবে।
আমার করোনায় মৃত্যু হলে প্রচলিত ইসলামি বিধান না মেনে তায়াম্মুম গোসল করিয়ে কবর দিতে হবে বিশেষ সতর্কতার সাথে। আমাকে আমার জন্মগ্রামে নিয়ে কবর দেয়া নিষিদ্ধ করলাম। আমার বাসার নিকটতম বনানী কবরস্থানে কোনোভাবে মাটির নীচে রেখে দিলেই হবে। এটা হবে আমার পরিবারসহ সবার জন্য মঙ্গলজনক। খবরদার, আমার মৃতদেহ দেখার জন্য দূরের বা কাছের কেউ আমার কাছে যেন না আসে। এমনকি আমার স্ত্রী ও পরিবারের কেউ যেন আমাকে স্পর্শ করতে না আসে।
আমার ডেডবডি কবর দিবে কে? এ ব্যাপারে সরকারের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ই ব্যবস্থা করবে বলে আশা করি। আমার ডেডবডি একটা এক্সপ্লোসিভের মতো হবে, এটা যত তাড়াতাড়ি ডিসপোস অফ করা যাবে, দেশের জন্য ততই স্বস্তিকর হবে।
ছেলের জন্য মোটামুটি এই ছিল নির্দেশনা।
***
এবার আপনারা যারা ঘরে বসে আছেন, কিছু করার নাই, তারা গান শোনেন আর ব্লগিং করেন। এই এপিসোডের প্রধান আকর্ষণ রাবা খানের ম্যাশ-আপ সংস। রাবা খান হলেন মাল্টি-ট্যালেন্টেড একজন রাইটার; ২০১৯ একুশে বইমেলায় তার 'বান্ধobi' বইটি অন্যতম বেস্ট সেলার বই ছিল। রাবা খানের নাম উহ্য রেখে ২০১৯-এ একটা পোস্ট দেয়া হয়েছিল। পড়তে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
গানের তালিকা
১।
শুরুতেই আমার মেয়ের একটা কভার সং। সে গান গায় না, গান শোনে। অনেক আগে তার বড়ো ভাইয়ের সাথে একটা রেকর্ড করেছিল, আর এবার তার ছোটোভাইয়ের সাথে রেকর্ড করলো এটা। আপনাদের মনের মতো হয় নি, তবে আমার আশার চাইতেও মেয়ে অনেক ভালো গেয়েছে।
নীলা - মাইলস। ঐশী (আমার হবু ডাক্তার মেয়ে)
২
হাবিবের ৬টি গানের ম্যাশ-আপ - রাবা খান
৩
তোমাকে চাই এবং তেরা ঘাটা - রাবা খান
৪
চোখে আমার প্রেমের কাজল - উমা খান ও রুলিয়া রহমান
৫
একটি দুষ্টু ছেলে আর একটি মিষ্টি মেয়ে - লাকী আখন্দ ও রোকেয়া সিদ্দিকা
৬
খোলা জানালায় চেয়ে দেখি তুমি আসছো - শাহনাজ রহমতউল্লাহ
৭
তুমি যদি বলে দিতে - ফেরদৌসী রহমান
৮
যেমন নদীর জলে নাও ভাইসা চলে - শিমুল ইউসুফ ও লীনু বিল্লাহ
৯
মন শুধু মন ছুঁয়েছে - তপন চৌধুরী
১০
সব তোমারি জন্য - মান্না দে
১১
সুখ তুমি কী - রুনা লায়লা
১২
পরাণে দোলা দিল - ফেরদৌসী রহমান
১৩
আমার ঘরখানায় কে বিরাজ করে - টিনা ঘোষাল
১৪
হায়রে আমার মন মাতানো দেশ - রুমানা ইসলাম
১৫
বাড়ির কাছে আরশিনগর - ফরিদা পারভীন
১৬
ওরে আমার নিঠুর বন্ধুরে - শ্রীরাধা ব্যানার্জী
১৭
ওরে আমার নিঠুর বন্ধুরে - শাহনাজ রহমতউল্লাহ
১৮
যার ছায়া পড়েছে - ফেরদৌসী রহমান
১৯
কথা বলো না বলো ওগো বন্ধু - ফেরদৌসী রহমান
২০
এই পৃথিবীর পান্থশালায় - সৈয়দ আব্দুল হাদী
২১
ও মেয়ের নাম দেব কী ভাবি শুধু তাই আমি - মাহমুদুন্নবী
২২
মানুষ ভজলে সোনার মানুষ পাবি - সাহানা বাজপেয়ী
২৩
বৈঠা - ভবনদীর কূল পাইলাম না - সিঁথি সাহা
২৪
সারাদিন ভেবে তোমার কথা - শুভমিতা ব্যানার্জি
২৫
কার হাতে যে খুন হইলাম - সাবিনা ইয়াসমিন
আতঙ্ক নয়, সচেতনতা ও সতর্কতাই পারে করোনা থেকে আমাদের নিরাপদ রাখতে। সচেতন হোন! সতর্ক থাকুন।
শুভ কামনা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৫:০৮