somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দোষে দোষী আমি || আমজাদ হোসেনের 'কসাই' ছবির একটা করুণ সুরের গান

১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তুমি তো প্রেম বোঝো নি
বুঝেছ শুধু প্রেম
কখনো খোঁজো নি মন
অযথা মনই খুঁজেছ

গাছ ও বৃক্ষ এবং
তৃণ ও গুল্মলতা
বুঝেছে মাটির প্রণয়,
মাটির কাব্যিকতা

একটি শুকনো নদী
দুখিনী সারণি যথা
তীরবর্তিনী তুমি
খোঁজো কার পদছাপ?

১৪ অক্টোবর ২০২৩

জীবনে দুটি ছায়াছবি দেখে হলভর্তি দর্শকদের সাথে আমিও কেঁদেছিলাম। একটি 'কসাই' (১৯৮০), অন্যটি 'শঙ্খনীল কারাগার' (১৯৯৪)। এরপর বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছবি বা নাটকের দৃশ্যে চোখের কোনা ভিজে গেছে, কিন্তু অমন করে কাঁদতে হয় নি বা কান্না আসে নি। যাই হোক, বলছি 'কসাই' ছবির কথা। তখন ক্লাস সেভেন, এইট, বড়োজোর নাইনে পড়ি। কেবল ছায়াছবি দেখা শুরু করেছি। ওয়াসিম ও অলিভিয়ার পোশাকি ছবি দেখতেই বেশি উত্তেজনা বোধ করি, তবে সবসময় তো আর তাদের ছবি হলে দেখানো হয় না, তাই গ্রামীণ বা সামাজিক ছবিও দেখতে হয়। 'সামাজিক ছবি' কথাটার অর্থ প্রথম দিকে বুঝতে পারতাম না, সবাই বলাবলি করতো, অমুক ছবিটা 'সামাজিক ছবি', খুব ভালো ছবি। কিন্তু ওগুলোর পোস্টারে গ্রামের ছবি দেখে মনে মনে ঠোঁট উলটে বলতাম 'সামাজিক ছবি' না, আমার লাবের ছবি!

হলে কী ছবি চলছে, তা না জেনেই আমি ছবি দেখতে চললাম আমার দুই অভিজ্ঞ ক্লাসমেট/বন্ধু আবুল আর নুরুর সাথে জয়পাড়া সিনেমা হলে। টিকেট কেটে হলে ঢুকতে ঢুকতে লেট হয়ে গেল, অলরেডি কয়েক 'সিন' পার হয়ে গেছে। তখন আংশিক রঙিন ছবির হিড়িক পড়েছে। 'কসাই' ছবি। আলমগীর ববিতাকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে, এখান থেকে শুরু করলাম দেখা। সামাজিক ছবিতে মন বসবে কিনা সন্দেহ ছিল। কিন্তু দেখতে দেখতে দেখতে পেলাম, আমার বেশ ভালোই লাগছে।

সেই ছবি দেখতে দেখতে মগ্ন হয়ে গেলাম। ছবিতে ভিলেন ছিলেন বিখ্যাত নায়ক 'জসীম', যিনি প্রথম জীবনে ভিলেন এবং পরের জীবনে নায়ক - উভয় ভূমিকায়ই সাফল্য লাভ করেন। তবে, ভিলেন যে কতখানি কসাই প্রকৃতির হতে পারে, ঐ ছবিতে দেখানো হয়েছিল ('কসাই' বোধহয় অন্য অর্থে নায়ককেও ইন্ডিকেট করা হয়েছিল)।

ববিতা শহরে যায় কোলের বাচ্চাকে নিয়ে। আলমগীর তাকে খুঁজতে যায়। কিন্তু অলিগলি খুঁজেও তাকে পায় না। যাকেই ববিতা বলে কাছে যায়, দেখে অন্য কেউ। এক গলিতে সত্যিই ববিতা হেঁটে যাচ্ছিল, আলমগীর তাকে দেখে, কিন্তু এবারও ভুল হতে পারে মনে করে তার কাছে যায় না। এই সময়টা ছিল ছবির ট্র্যাজেডির পিকটাইম এবং হলে তখনই কান্নার শব্দ শোনা যেতে থাকে। বুকফাটা কান্না। ছবির কাহিনি খুব একটা মনে নাই, স্মৃতি হাতড়ে লিখলাম।

এ ছবিতে দুটো বিখ্যাত গান আছে - বন্ধু তিন দিন তোর বাড়িতে গেলাম (রুনা লায়লা) এবং ভালোবাসি বলিব না আর (সাবিনা ইয়াসমিন)। আর আছে সৈয়দ আব্দুল হাদির 'আমার দোষে দোষী আমি, নিজের বিচার চাই'। এ গানটাও আমার অনেক অনেক প্রিয় একটা গান। মাইকে শুনে এটা আর 'ভালোবাসি বলিব না' মুখস্থ করে ফেলেছিলাম। তবে, এ গানটাই আমি বেশি গাইতাম।

কসাই ছবিটা দেখার পর বেশ কয়েকদিন পর্যন্ত আমি ঘোরের মধ্যে ছিলাম। কষ্ট লাগতো ববিতার জন্য। অনেক দিন অতিবাহিত হয়ে যাওয়ায় গল্পটা ভুলে গেছি প্রায়, কিন্তু ছবিটা দেখার খুব ইচ্ছে ছিল। 'সুন্দরী' ছবিটাও দেখার অনেক ইচ্ছে ছিল (২য় বার)। ইউটিউবে 'সুন্দরী' পেয়েছি, কিন্তু 'কসাই' পাই নি। পরে জানতে পারলাম, 'কসাই'-এর প্রিন্ট নাকি নষ্ট হয়ে গেছে বা পুড়ে গেছে, যে-কারণে ওটা আর কোনোদিনই দেখা সম্ভব হবে না।

অনেক পরে কসাই ছবির গানগুলোও ইউটিউবে পেলাম। 'আমার দোষে আমি দোষী' গানটার একটা ভিডিও পেলাম, যাতে একই দৃশ্য বারবার দেখানো হয়েছে, যেহেতু পুরো অংশ কোথাও পাওয়া যায় নি।

কৈশোরের গানটা গাইলাম।

আমার দোষে দোষী আমি
নিজের বিচার চাই
আমার ভুলের
কোনোই ক্ষমা নাই রে বন্ধু
আমার ভুলের কোনোই ক্ষমা নাই
বন্ধুরে---

বুকের পাঞ্জর দিয়া আমি
বাইন্ধাছিলাম খাঁচা
পরাণপাখি নিখোঁজ হইল
বান্ধন ছিল কাঁচা
আমার পাখির সনে না হোক দেখা
সারাজীবন থাকবো একা
কোথায় আছে কেমন আছে
সেইতো জানতে চাই

আগে যদি জানতাম আমি
ভালবাসতাম না
এই আগুনে তারে আমি
পুড়তে দিতাম না
হায়রে এই দুনিয়ার আদালতে
খুনি হইলাম সবার মতে
কেউ তো আমার জবানবন্দি
শুনতে চাইলো না
আমার দোষের বিচার হইল না রে বন্ধু
আমার দোষের বিচার হইল না

কথা, সুর ও ছায়াছবি পরিচালনা : আমজাদ হোসেন
মূল শিল্পী : সৈয়দ আব্দুল হাদি
মিউজিক ও কভার : খলিল মাহ্‌মুদ
মিউজিক কম্পোজিশন গাইড : বেবি লাবিব

গানের লিংক : আমার দোষে দোষী আমি - সিঙ্গেল ভোকাল




আমার দোষে দোষী আমি - কোরাস




আমার দোষে দোষী আমি - সৈয়দ আব্দুল হাদি। ফটোমিক্স-১





আমার দোষে দোষী আমি - সৈয়দ আব্দুল হাদি - ফটোমিক্স-২






প্রথম গানটা ছিল, যদ্দূর মনে পড়ে - ভালো থাকিস মা, সুখে থাকিস















এবার আসেন, কহি, শুরুতেই যে কবিতাখানি লিখিলাম, তার সাথে এ পোস্টের কন্টেন্টের সম্পর্ক কী - যারা এতক্ষণ তা ভাবছিলেন, তাদের জন্য এই পাদটীকা :) হাঃ হাঃ হাঃ। অট্টহাসি। কোনো সম্পর্ক নাই। পোস্ট লিখতে যাইয়াই দেখি কবিতার ভাব এসে গেছে, অমনি লিখে ফেললুম। পারলে কবিতাখানার সারমর্ম লিখুন, পূর্ণমান-১০ :)

শুভ ঘুমাহ্ন।


সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই অক্টোবর, ২০২৩ রাত ২:৫৪
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শোকের উচ্চারণ।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:১৬

নিত্যদিনের জেগে উঠা ঢাকা - সমস্তরাত ভারী যানবাহন টানা কিছুটা ক্লান্ত রাজপথ, ফজরের আজান, বসবাস অযোগ্য শহরের তকমা পাওয়া প্রতিদিনের ভোর। এই শ্রাবণেও ময়লা ভেপে উঠা দুর্গন্ধ নিয়ে জেগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যা হচ্ছে বা হলো তা কি উপকারে লাগলো?

লিখেছেন রানার ব্লগ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১:২৮

৫ হাজার মৃত্যু গুজব ছড়াচ্ছে কারা?

মানুষ মারা গিয়েছে বলা ভুল হবে হত্যা করা হয়েছে। করলো কারা? দেশে এখন দুই পক্ষ! একে অপর কে দোষ দিচ্ছে! কিন্তু... ...বাকিটুকু পড়ুন

আন্দোলনের নামে উগ্রতা কাম্য নয় | সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবাদকে না বলুন

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:২৭



প্রথমেই বলে নেয়া প্রয়োজন "বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার সমস্ত অপচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে" ধীরে ধীরে দেশে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে। ছাত্রদের কোটা আন্দোলনের উপর ভর করে বা ছাত্রদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কোন প্রশ্নের কি উত্তর? আপনাদের মতামত।

লিখেছেন নয়া পাঠক, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:১৬

এখানে মাত্র ৫টি প্রশ্ন রয়েছে আপনাদের নিকট। আপনারা মানে যত মুক্তিযোদ্ধা বা অতিজ্ঞানী, অতিবুদ্ধিমান ব্লগার রয়েছেন এই ব্লগে প্রশ্নটা তাদের নিকট-ই, যদি তারা এর উত্তর না দিতে পারেন, তবে সাধারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকুরী সৃষ্টির ব্যাপারে আমাদের সরকার-প্রধানরা শুরু থেকেই অজ্ঞ ছিলেন

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৬ শে জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:০৭



আমার বাবা চাষী ছিলেন; তখন(১৯৫৭-১৯৬৪ সাল ) চাষ করা খুবই কষ্টকর পেশা ছিলো; আমাদের এলাকাটি চট্টগ্রাম অন্চলের মাঝে মোটামুটি একটু নীচু এলাকা, বর্ষায় পানি জমে থাকতো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×