আমি বোকাটা জানতামই না, আমি ছিলাম মায়ের পেটে। তারপরে একদিন কি যে হল, হঠাৎ দেখি বিষম টানাহেচড়া। তারপরে সেই ছোট্ট ঘর থেকে কারা সব আমাকে বের করে নিয়ে এল। এত আলো বাইরে, আর ঠান্ডা আর অনেক শব্দ! সবাই মিলে কত কথাই না বলছে। একটু একটু শুনতে পাচ্ছি। 'মেয়ে হয়েছে! মেয়ে!' কত খুশি সবাই!
এই হাত অই হাত ঘুরে ঘুরে যাচ্ছি শুধু। আমার এত বিরক্ত লাগছিল! আমি চিৎকার করে কাঁদতে লাগলাম। আর তাতেই সবাই আরো খুশি হয়ে হাসতে লাগল। তারপরে একজন আমাকে অনেক সাবধানে, ভয়ে ভয়ে কোলে নিল। পিটপিট করে তাকালাম আমি। আচ্ছা এই তাহলে বাবা!
বাবা হাসতে হাসতে বলল, 'আমার আরেকটা পরীর মত মেয়ে হয়েছে। আকাশপরী আর মেঘপরী তো আছেই। তাহলে এই পরীটা হল ফুলপরী।'
আমার আপু আকাশপরীও আমাকে কোলে নেয়ার জন্য অস্থির হয়ে গেল।
আর আমাকে কোলে নিয়ে তার কত আদর।
তারপরে আমাকে নেয়া হল খুব খুব চেনা একজনের কাছে। কাছে যেতেই পরিচিত গায়ের গন্ধ আর ঊষ্ণতায় আমি কান্না ভুলে গেলাম। আমি জানি এই হল আমার আম্মু। মনে হল আম্মু আমাকে বুকের মাঝে হাতের মাঝে আগলে রাখুক, আমি আরাম করে ঘুমাই।
আমি সারাদিন আমার বাবা, বড় আপু আকাশপরী আর মেঘপরী আর আমার লক্ষ্মী আম্মুর সাথে কত দুষ্টু দুষ্টু খেলা যে করতাম। কত হাসি, গল্প আর গান!
আর তারপরে ক্লান্ত হয়ে গেলেই একেবারে ঘুমের রাজ্যে।
একটু বড় হতে হতেই বাবা তার ফুলপরীটার জন্য এত্ত রিবন, প্রজাপতি ক্লিপ, ফুল ফুল জুতো নিয়ে এল।
আর সেসব জুতো পরে আমি টুকটুক করে ঘুরে বেড়াতাম সারাঘর।
এইরকম একটা দিনে ফুলপরীটা উড়ে উড়ে এসেছিল পরীর দেশে। সবার আদর আর ভালবাসায় সে বড় হতে লাগল আর সুন্দর সব পরী পরী জামা পরে রঙ-বেরঙের ফুল ফোটাতে লাগল বাগানে আর সেই ফুলের সুরভিতে ভরিয়ে তুলল পুরো পৃথিবী।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



