
ঢাবি’র ফজলুল হক মুসলিম হলের কমন রুমের ফ্লোরে শুয়ে তোফাজ্জল হোসেন,
দুহাত বুকের উপরে তুলে
পাখির মত উড়াল দেবার বৃথা চেষ্টা করছে!
রুমের ছাদটাকে তার কাছে এখন সাদা মেঘ মনে হচ্ছে,
আকাশটা যেনো এই সাদা মেঘে ঢেকে আছে,
আকাশের শেষ সীমায় উড়ে যেতে মনে চাইছে কিছুক্ষণ ধরে
এই মেঘ গুলোর জন্য কিছুতেই সম্ভব হচ্ছে না।
তোফাজ্জলের বুকটা তখনও কোন মতে চলছে,
তার আশেপাশে কিছু মহামান্য ফেরেস্তা মেধাবী ছাত্রদের মুখোঁশ পরে দাঁড়িয়ে বা বসে আছেন।
উনারা মোবাইল ফোন নিয়ে মহাব্যাস্ত
কেউ গার্লফ্রেন্ডের সাথে চ্যাট করছেন,
কেউ বিপ্লবী অথবা সমন্বয়ক বানী ফেইসবুকে লিখছেন,
কেউ নতুন স্বাধীনতার স্বাদ বিষয়ক ভাবনা লিখতে গিয়ে লিখছেন,
‘ প্রতিশোধ নিলাম,
পনের বছর কোথায় ছিলেন?”
কি ভাবে মানুষ মারতে হয়
সেই ট্রেনিই হাতে কলমে নেওয়ার জন্য কেউ কেউ উদগ্রীব হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।
তোফাজ্জল শুধু ভাবছে মেধাবীরা কতোও ভালো,
আসলেই উনারা মহামান্য ফেরেস্তার মতো
তাকে পেট ভরে ভাত ডাল খাওয়ালো,
তারপর মারলো!
এই মাইরে কি হবে
ভাততো খাওয়ালো।
মেধাবীদের মাইর বলে কথা,
যদিও দম ফেলতে প্রচুর কষ্ট হচ্ছে এখন,
পানি পিপাসাও পেয়েছে প্রচুর।
সে পানি পানি বলছে সর্বশক্তি দিয়ে
অথচ কেউই বুঝছে না তার কথা
বা শুনছে না,
সবাই মোবাইল ফোন নিয়ে মহা ব্যাস্ত
তাই বোধহয় তার কথা বুঝছেনা।
এখনতো তার চোখও খুলতেও কষ্ট হচ্ছে।
সে চোখ বন্ধ অবস্থায়ই বুঝতে পারলো
এখানে একজনও মানুষ নাই!
আছে শুধু মেধাবীগণ
যাদের ভাবসাব মহামান্য ফেরেস্তাগণের মতো,
তাই হয়তো তার কথা কেউই বুঝলো না।
শেষ দমটা ছাড়ার আগে তোফাজ্জল আল্লাহর কাছে দোয়া করলো এই মেধাবীদের জন্য,
“ হে আল্লাহ্
আপনি এই মেধাবীগণদের একশ বছর হায়াত দিন,
তারা যতদিন বেঁচে থাকবেন
প্রতিবার ভাত খাবার সময় যেনো আমার কথা একবার হলেও মনে পড়ে,
সে কি ভালোবাসা আর আদর কইরা আমারে শেষ খাবারটা খাওয়াইছে তারা ।”
__________
রশিদ হারুন
২০/০৯/২০২৪

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।


