আমাদের গ্রামে ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি পাঠাগার আছে। আমার গ্রামের পাঠাগারটির নাম ‘লোকগবেষক হামিদুর রহমান পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র’। বর্তমানে সংগৃহীত বইয়ের সংখ্যা দুই হাজারের মতো। পাঠাগারটির রক্ষণাবেক্ষন করেন আমার গ্রামেরএগারো সদস্য বিশিষ্ট একটি নির্বাচিত কার্যকরী কমিটি। এই পাঠাগারটি এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দিতে চাই। যদিও আমাদের গ্রামের সদস্যদের বাইরেও অনেক মানুষ সেখান থেকে বই নিয়ে পড়ে। সেখানে রয়েছে স্কুল পড়ুয়া ছোট ছোট ছেলেমেয়েরাও।
অজপাড়া গা একটি গ্রাম।
যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে স্বাধীনতার ৪৫ বছর পর। গায়ের পথ ধরে হাটলে অনেক সবুজের সমারোহ চোখে পড়বে। গ্রামের আঁকাবাঁকা সড়ক পেড়িয়ে এই আলোর রাজ্য। নেত্রকোণা জেলা থেকে ২০ কিলোমিটার পূবে আটপাড়া থানাধীন ‘শুনই’ গ্রাম। আটপাড়া থানা থেকে আড়াই কিলো পাকা রাস্তা পেরিয়ে তারপর আমাদের গ্রাম। আমাদের গ্রামে যেখানে সৃজনশীল ও মননশীল বিনোদনের অন্যকোন মাধ্যম নেই সেখানে আমাদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে করা পাঠাগারটি এখন পাঠকদের কাছে একটি ভালোবাসার জায়গায় পরিণত হয়েছে।
অনেক মানুষের আনাগোণা বাড়ে আমাদের বাড়িতে। যখন আমার দাদা বেঁচে ছিলেন, উঠোনে পাটাতন বিছিয়ে পুঁথির আসর বসত। দাদু এখন বেঁচে নেই। এখন বই পড়ার জন্য অনেক দূর থেকে মানুষ আসে। আড়াইশো বছর আগের প্রাচীন অনকে পুঁথিসহ অনেক দুষ্প্রাপ্য সংগ্রহ রয়েছে এই পাঠাগারে। এখন আর বইয়ের সংখ্যা আর প্রতিবছর বাড়ছে না, কারন যে পরিমান পৃষ্ঠপোষকতা দরকার সেটি নেই।
এবছর থেকে এই পাঠাগারটি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য অবমুক্ত করে দিয়ে পুস্তকের সংখ্যা বাড়াতে চাই।
পাঠাগারটিকে কিভাবে আরো সমৃদ্ধ করা যায়, সে ব্যাপারে সবার কাছ থেকে মন্তব্য প্রত্যাশা করছি।
এ বছর ২০২১ সালে আমরা পাঠাগারটির সংস্কার কাজ করতে চাই। ইতিমধ্যে অনেকেই পাঠাগারে বই দিয়ে পাঠাগারকে সমৃদ্ধ করছেন। ১৯৮৫ সালের পর পাঠাগারটির মূল কার্যালয় সংস্কার করা হয়নি। বর্তমানে গ্রামের প্রধান সড়কের কাছে পাঠাগাররে কার্যালয় করার জন্য জমি নিয়ে মাটি ভরাটের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। নতুন কার্যালয়ে আমরা চারটি বিষয় করার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি-
১। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক বই, জার্ণাল ও ম্যাগাজিন দিয়ে সমৃদ্ধ একটি মুক্তিযুদ্ধ কর্ণার স্হাপন
২। বঙ্গবন্ধু বিষয়ক বই, জার্ণাল ও ম্যাগাজিন দিয়ে সমৃদ্ধ একটি বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্হাপন
৩। শিশুতোষ বই, ম্যাগাজিন দিয়ে সমৃদ্ধ একটি শিশু কর্ণার স্হাপন
৪। বিজ্ঞান বিষয়ক বই, জার্ণাল ও ম্যাগাজিন দিয়ে সমৃদ্ধ একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কর্ণার স্হাপন
উপরে উল্লেখিত এই চারটি কর্ণারের জন্য প্রকাশক, দাতা, লেখক সবার কাছে থেকে বই প্রত্যাশা করছি। আপনার ডোনটকৃত একটি বই গ্রামের পাঠকরা পড়ার সুযোগ পাবে।
এ ছাড়া পাঠাগারের সার্বক্ষণিক বিদ্যুত যাতে থাকে সেজন্য আমরা সৌরবিদ্যুতের প্যানেল বসেয়েছি। ইন্টারনেট সুবিধাসহ একটি কম্পিউটার দেয়ার জন্য ইতিমধ্যে তা সংগ্রহ হয়েছে।
নতুন কার্যালয় স্হাপনের জন্যও আমরা শিল্প-সাহিত্য, সংস্কৃতি অনুরাগী মানুষদের কাছ থেকে আমরা আপনার/ আপনাদের কাছ থেকে কন্ট্রিবিউশন প্রত্যাশা করছি। আপনাদের সহযোগিতায় গ্রামে একটি আধুনিক পাঠাগার আলোর মুখ দেখবে সাধারণ মানুষের পড়ার সুযোগ তৈরি হবে। আপনার মতামত ও পরামর্শ জানাতে ফোন করতে পারেন অথবা ই-মেইলে লিখে জানাতে পারেন।
হাসান ইকবাল
প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক
লোকগবেষক হামিদুর রহমান পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র
গ্রাম-শুনই (দশভাগিয়া), পো: শুনই (বড়বাড়ি),
উপজেলা: আটপাড়া, জেলা: নেত্রকোণা-২৪৭০
মোবাইল: +8801712-194457
ই-মেইল: [email protected]
ওয়েব সাইট: https://grampathagar.wordpress.com
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:০২