somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভ্রমনে জটিল প্রেম! (অ্যা ছি!নেমা রিভিউ!!!)

১০ ই মে, ২০১৪ রাত ৯:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


. .. ... নায়িকার বিবাহের জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে, কিন্তু নায়িকা বিয়ে করতে রাজী নয়। কিন্তু বাবা আর ভাই তাকে চেপে ধরে কেন সে বিয়ে করতে রাজী নয়। নায়িকা বিয়ের হাত থেকে বাঁচতে মিথ্যা বলে, সে কাউকে ভালোবাসে। আর যায় কোথায়, ভাই চেপে ধরে ছেলের নাম কি? নায়িকা কিছু ভেবে পায় না কি বলবে। ঠিক তখন ড্রয়িং রুমের সেন্টার টেবিলে দেখে “জীবন” মিনারেল ওয়াটারের বোতল। এই তো, নাম পাওয়া গেছে, ছেলের নাম জীবন। হাসতে হাসতে মাথা ব্যাথা... :P

এরপর নায়িকার ভাই ঢাকা শহরে যেখানে যত জীবন নামের ছেলে আছে সবাইকে ধরে ধরে পেটাতে আরম্ভ করে...
হ্যাঁ ভাই, ইহা একটি সিনেমার কাহিনী, যা এই হতভাগা একযুগেরও বেশী সময় পর সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছে। গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে শেরপুর-জামালপুর যাই আমরা ১৮ জনের দল, একটি মাইক্রবাস এবং একটি প্রাইভেট কার নিয়ে। রাস্তায় ভয়াবহ জ্যামের কবলে পরে আমরা সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে প্রায় সন্ধ্যা নাগাদ পৌঁছই শেরপুর। হোটেলে চেকইন করে সেদিনের মত আর কিছু করার ছিল না। হোটেলের পাশে এক রোড সাইড চায়ের দোকানে সবাই দল বেঁধে চা পান করতে করতে বলছিলাম কি করা যায়?

রাত তখন মাত্র সাতটা। স্থানীয় কিছু মানুষ জানালো জেলা স্টেডিয়ামে বাণিজ্য মেলা চলছে। সবাই চা খেয়ে রওনা দিলাম বাণিজ্যমেলা অভিমুখে। তো বাণিজ্যমেলা’র মাঠে বসে কয়েকজন গল্প করছিলাম, আর বাকীরা ইতস্তত ঘোরাফেরা করছিল, ঢুঁ মারছিল বিভিন্ন স্টলে। তো এক বড় ভাই প্রস্তাব করলেন, সবাই মিলে নাইট শো’তে সিনেমা দেখি। কারণ, আমরা যে হোটেলে উঠেছিলাম ঠিক তার বিপরীতে ছিল একটি সিনেমা হল। এই প্রস্তাব কয়েকজন ছাড়া সবাই লুফে নিলো।

কয়েকজন আলোচনা শুরু করে দিল শেষ কবে সিনেমা হলে গিয়ে সিনেমা দেখেছে। যাই হোক সবাই বেশ এক্সাইটেড মনে হল। আমাদের মধ্যে কনিষ্ঠ একজনকে দায়িত্ব দেয়া হল সিনেমা হলে গিয়ে ওখানকার পরিবেশ, সিনেমা ভালো না মন্দ, হল কেমন এসব খবর নিয়ে আসতে। আমরা গেলাম রাতের খাবার খাওয়ার জন্য আর সে গেল খোঁজ-খবর নিতে।

সে এসে জানালো সব ভালো। হল ম্যানেজার তাকে আশ্বস্ত করেছে এত ভালো সিনেমা কয়েক বছরে এই সিনেমা হলে আসেনি। আমরা নিশ্চিন্ত হলাম, কারণ সাথে বেশ কয়েকজনা মেয়েও ছিল। সবাই খুব এক্সাইটমেণ্ট নিয়ে হলে ঢুকলাম। ততক্ষণে প্রায় আধঘণ্টা পেরিয়েছে সিনেমা শুরু হয়েছে। সিনেমার নাম “জটিল প্রেম”। আমরা হলে ঢোকার মুখে একটু ধাক্কা খেলাম, কি নোংরা রে বাবা! যাই হোক একেবারে উপরে স্পেশাল বক্সে আমাদের টিকেট কাটা ছিল। সবাই সিটে যখন বসছি তখন স্ক্রিনে একটা আইটেম সঙ চলছিল, গানের লিরিক্স শুনে হাসতে হাসতে পেট ব্যাথা... “আমার কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকছে, মাথা আমার নষ্ট...” পুরাই লুল।

যাই হোক আশেপাশে খেয়াল করতে দেখি উপরে আমরা ছাড়া আর কোন দর্শক নেই! আমরা বুঝলাম এই জেলা শহরে নিশ্চয়ই আমাদের মত পাগল কেউ নাই যে নাইট শোতে সিনেমা দেখতে আসবে।

গান শেষে সিনেমা’র গল্প বুঝার চেষ্টা করলাম। সিনেমার নায়িকা হল এক বিরাট ব্যাবসায়ি নেতার মেয়ে, নায়িকার ভাই বিরাট টেরর। নায়িকার বিবাহের জন্য পাত্র দেখা হচ্ছে, কিন্তু নায়িকা বিয়ে করতে রাজী নয়। কিন্তু বাবা আর ভাই তাকে চেপে ধরে কেন সে বিয়ে করতে রাজী নয়। নায়িকা বিয়ের হাত থেকে বাঁচতে মিথ্যা বলে, সে কাউকে ভালোবাসে। আর যায় কোথায়, ভাই চেপে ধরে ছেলের নাম কি? নায়িকা কিছু ভেবে পায় না কি বলবে। ঠিক তখন ড্রয়িং রুমের সেন্টার টেবিলে দেখে “জীবন” মিনারেল ওয়াটারের বোতল। এই তো, নাম পাওয়া গেছে, ছেলের নাম জীবন। হাসতে হাসতে মাথা ব্যাথা... :P

এরপর নায়িকার ভাই ঢাকা শহরে যেখানে যত জীবন নামের ছেলে আছে সবাইকে ধরে ধরে পেটাতে আরম্ভ করে। এই করতে করতে একসময় সে আরেক বড় টেররের ছেলেকে পেটায়, আর এতে করে ক্ষেপে যায় ঐ টেরর। প্রতিশোধ নিতে নায়িকাকে কিডন্যাপ করতে ধাওয়া করে, নায়িকা বাঁচতে প্রাণপণ দৌড়... এই সময় নায়কের আবির্ভাব... কিন্তু কোথায়? হাসতে হাসতে চোখ ব্যাথা... :P

নায়ক হাতিরঝিলে... কোন এক চারাগাছের গোঁড়ায় জলত্যাগ করছে... এটা নায়কের প্রথম দৃশ্য পুরো ছবিতে... রুচিশীল স্ক্রিপ্ট রাইটার বটে... এটুকু হলেও চলতো, কিন্তু এরপরের দৃশ্যে নায়িকা দৌড়াতে দৌড়াতে নায়ক জলত্যাগরত অবস্থায়ই নায়কের উপর গিয়ে পরে। ফলাফল? জলত্যাগের জায়গাতেই নায়িকাকে নিয়ে নায়কের চিৎপটাং হওয়া... মাইরালা কেউ আমারে মাইরালা... :P

স্টকে থাকা সবটুকু ধৈর্য শেষ করে অনেক কষ্টে আধঘণ্টা’র মত সিনেমা দেখে হল থেকে বের হলাম। পরেরদিন সকালে খুব ভোরে বের হলাম গজনী, মধুটিলা ঘুরতে... কিন্তু গাড়ীতে সারাক্ষণ ছিল দুটি শব্দ “জটিল প্রেম” আর “আমার কম্পিউটারে ভাইরাস ঢুকছে, মাথা আমার নষ্ট...”। মনে মনে বললাম, মাফও চাই, দোয়াও চাই... আর দেখতাম না ছি!নেমা..

ও আরেকটা কথা হল থেকে বের হওয়ার সময় দেখি নীচেও কোন দর্শক নেই। তারমানে আমরা কয়েকটা বোকা ছাড়া আর কেউ নেই পুরো সিনেমা হলে... :O :O :O :’(
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে জুন, ২০১৪ দুপুর ১:৫০
১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দ্যা এডামেন্ট আনকম্প্রোমাইজিং লিডার : বেগম খালেদা জিয়া

লিখেছেন ডি এম শফিক তাসলিম, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:০৪

১৯৪৫ সালে জন্ম নেয়া এই ভদ্রমহিলা অন্য দশজন নারীর মতই সংসার নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, বিয়ে করেছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের অন্যতম সুশাসক শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কে! ১৯৭১সালে এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×