somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মুভি রিভিউ Touching The Void (2003) (Adventure & Travel Movie Review - পর্ব ০২)

২৩ শে মে, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


জয়ের অদম্য নেশায় আপনারা দুইবন্ধু পাড়ি দিয়েছেন একুশ হাজার ফুট উঁচু এক পর্বতমালা। জয়ের সাফল্যমালা করায়ত্ত করে সেখান থেকে নেমে আসার সময় এক তুষার ঝড়ের রাতে আপনার সঙ্গীর পা ভেঙ্গে গেল এমন এক সময় যখন আপনারা দুজনে ঝুলে আছেন পর্বতাহরণের দড়িতে। আপনি উপরে, সঙ্গী নীচে, তাকে ধরে রাখতে গিয়ে আপনি নিজেই প্রাণ হারাতে বসেছেন। তখন আপনি কি করবেন? আপনি যাই করুন না কেন, Simon Yates কিন্তু দড়ি কেটে দিয়েছিলেন বন্ধুর প্রতি ভালবাসা পাথর চাপা দিয়ে। না এটা কোন গল্প বা সিনেমার কাহিনী নয়, একেবারে নির্জলা সত্য।

১৯৮৫ সালে দুই ব্রিটিশ পর্বতারোহী Joe Simpson এবং Simon Yates প্রথমবারের মত পেরুর সিউলা গার্ডেন নামক পর্বত জয়ের নেশায় বেড়িয়ে পড়েন, যার চূড়া তখনো ছিল অজেয়। সেই অজেয় চূড়া জয়ের নেশায় দুই তরুন হাজির হন পেরুতে। সেই পর্বতশৃঙ্গ বিখ্যাত ছিল তার অনুনেমেয় আবহাওয়ার জন্য। ক্ষণে ক্ষণে তীব্র তুষার ঝড় ছিল সেখানকার স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য। কিন্তু এই তরুন দুই বন্ধু, ঠিকই জয় করলেন সেই পর্বত শীর্ষ। কিন্তু বিপত্তি বাঁধল সেখান থেকে ফিরে আসার সময়। কিছুটা নেমে আসার পর এক তুষার ঝড়ের সময়ে সিম্পসন এক তুষার ধসে ভারসম্য হারিয়ে ফেলেন, ফলে তিনি প্রাণে বেঁচে গিয়ে মাউণ্টেন রোপে ঝুলে থাকেন, কিন্তু পা ভেঙ্গে ফেলেন এক পা। এই অবস্থায় সিমন অনেক কসরত করার পর যখন বুঝতে পারেন বন্ধুকে বাঁচাতে গেলে তার নিজের প্রাণ রাখা দায়, তখন সকল ভালবাসা আর বন্ধুত্ব বিসর্জন দিয়ে তিনি সেই দড়ি কেটে দিয়ে বন্ধুকে চিরনিদ্রার জগতে ছুঁড়ে দেন।

কিন্তু কথায় আছে না, রাখে আল্লাহ্‌ মারে কে? সিম্পসন গিয়ে পড়েন এক গিরি ফাটলের ভেতর যেখানে শুধু রয়েছে জমাট বরফের সব চাই। সেখান থেকে ভাঙ্গা পা নিয়ে কীভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন তিনি এই নিয়ে উপজীব্য করে গড়ে উঠেছে এই সিনেমাটি। পুরো সিনেমা দেখে শেষের দিকে এসে আপনার চোখ হতে জল গড়াবে কি না জানিনা, আমার কিন্তু গড়িয়েছে।

পুরো সিনেমা (বা বলতে পারেন ডকুমেন্টারি) জুড়ে সিম্পসন এবং সিমন পৃথক পৃথক ভাবে সেই অভিযানের বর্ণনা দিয়েছেন। এই অভিযানে সিম্পসন তার শরীরের ওজনের এক তৃতীয়াংশ হারিয়ে ফেলেন। দুই বছরে ছয়বার অপারেশন থিয়েটারের নীচে যেতে হয়েছিল তাকে স্বাভাবিক হয়ে উঠতে। কিন্তু তাতে কিন্তু দমে যাননি উনি, পরে আবার বেড়িয়ে পড়েছেন পর্বতাহরণে এবং আরও অনেকবার চরেছেন পর্বত শীর্ষে। কিন্তু সেই ঐতিহাসিক অভিযান সম্পর্কে বলতে গিয়ে, ক্ষণে ক্ষণে তারা আবেগাপ্লুত হয়েছেন, আপনিও দেখতে দেখতে সেরকমই হবেন বলে বিশ্বাস করি। চমৎকার বিনির্মাণ আপনাকে পদে পদে রোমাঞ্চিত করবে সেই লোমহর্ষক অভিযানের কথা মনে করিয়ে দিয়ে।

দেশে ফিরে কিন্তু সিমন’কে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হতে হয়েছিল। যাই হোক, সেই অভিযান ছিল একমেবিদ্বিতীয়ম, তার সমতুল্য অভিযানের কথা আজও শোনা যায় কম। পর্বতাহরণ ভুবনে সর্বকালের আলোচিত পর্বতাহরণ হিসেবে বিবেচিত এই অভিযান কাহিনী নিয়ে প্রথমে রচিত হয় একটি বই, নামঃ Touching The Void, Joe Simpson। ব্যাপক সাফল্য পাওয়া এই বইয়ের চিত্রায়িত রূপই হচ্ছে এই ডকুমেন্টারি টাইপ মুভিটি।

মুভি সম্পর্কিত কিছু তথ্যঃ
• Initial release: January 23, 2004 (USA)
• Director: Kevin Macdonald
• Produced by: John Smithson
• Running time: 1h 46m
• Adapted from: Touching the Void
• Awards: BAFTA Award for Best British Film
• IMDb: Rating: 8.1/10

মুভি রিভিউ The Perfect Wave (2014) (Adventure & Travel Movie Review - পর্ব ০১)

তো বন্ধুরা? কবে দেখছেন এই মুভিটি?

১১টি মন্তব্য ১১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

×