somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হুটহাট ফিরতি যাত্রা (কুয়াকাটা ভ্রমণ - শেষাংশ))

৩০ শে মার্চ, ২০২৩ রাত ১:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আগের পর্বঃ
অবশেষে কুয়াকাটা (কুয়াকাটা ভ্রমণ - প্রথমাংশ)
লেম্বুর চর টু লাল কাঁকড়ার আস্তানা (কুয়াকাটা ভ্রমণ - মধ্যাংশ)

পূর্বপরিকল্পনাঃ
কুয়াকাটা ট্যুরটা হঠাৎ করেই হয়ে গিয়েছিলো; বাল্যবন্ধু মনা, তার রেফারী কলিগ আর আমি, তিনজনে দুইদিনের ছোট্ট একটা ট্যুরে ঢাকার সদরঘাট হতে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা গিয়েছিলাম। আগের দুই পর্বে সেই পুরানো গল্প বলা হয়েছে। তো আগেরদিন আমাদের পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী মনা আর তার কলিগ পরদিন ফজরের পরপর প্রথম বাসে করে কুয়াকাটা হতে রওনা হয়ে যাবে বরিশাল হয়ে পিরোজপুর এর দিকে। আমার পরিকল্পনা, আরামে ঘুমিয়ে বেলা করে উঠবো, নাস্তা করে আশেপাশে বিক্ষিপ্ত ঘোরাঘুরি করে বেলা সাড়ে এগারোটার বিআরটিসি বাসে করে কুয়াকাটা হতে বরিশাল, এরপর সেখান হতে মাইক্রোবাস সার্ভিস এ কেওড়াকান্দা হয়ে স্পীড বোট এ নদী পারাপার হয়ে মাওয়া থেকে সোজা গুলিস্তান হয়ে নিজের বাসায়। এই প্ল্যান রেখেই ঘুমাতে গেলাম, কিন্তু পরদিন আমার প্ল্যান গেল পুরো পাল্টে...





ভোরের আলো ফোটার আগেই মূল সৈকতে এলাকা থেকে পূর্বদিকে দেখলে মোটর সাইকেলে করে ছুটে যাওয়া পর্যটকের দলকে দেখা যাচ্ছে। এদিকে রাত শেষে সাগর থেকে মাছ ধরে ফিরছে নৌকা।





আমাদের ভ্রমণের সময়টায় বঙ্গোপসাগর এ ছিল নিম্নচাপ আর তার প্রভাবে আগের দিন বিকেল থেকেই কুয়াকাটার আকাশ মেঘলা হতে শুরু করে। প্রথমে আমার প্ল্যান ছিলো দ্বিতীয় দিন আমি একা একা সারাদিন কুয়াকাটায় কাটিয়ে রাতের বাসে ঢাকা রওনা হবো। তখনো পদ্মা সেতু উদ্বোধন হয় নাই, মাওয়া-কেওড়াকান্দা এসে নদী পার হতে হবে। কিন্তু প্রকৃতির বৈরী রূপ দেখে গতকালই আমি সিদ্ধান্ত নেই, আজ বেলা ১১:০০ টার গাড়ীতে কুয়াকাটা হয়ে বরিশাল ফিরব। খুব ভোরবেলা মনা আর তার কলিগ ঘুম থেকে উঠে গেলে আমারও ঘুম ভেঙ্গে গেল আকাশ অন্ধকার থাকতেই।



সূয্যিমামা উঠলো বলে





গঙ্গামতির চরে ভ্রমণঃ
আকাশ কিছুটা পরিস্কার হলে ভোরের আলো ফোটার আগে আগে আমি তাদের থেকে বিদায় নিয়ে হোটেল থেকে বের হতেই পড়লাম অটোরিক্সা আর মোটর সাইকেল চালকদের খপ্পরে। তাদের যতই বলি আমি হেঁটে হেঁটে সূর্যোদয় দেখবো, তাঁরা আমাকে বুঝাতে লাগলো সূর্যোদয় এখান থেকে দেখা যাবে না, সাত কিলোমিটার দূরে গঙ্গামতির চর থেকে সূর্যোদয় দেখতে হবে। আমিও নাছোড় বান্দা, তাদের হতাশ করে হোটেলের গেট থেকে পায়ে হাঁটা দূরত্বের মূল সৈকতে নেমে এলাম। আগত পর্যটকেরা বেশীরভাগ মোটর সাইকেলে, আর কিছু ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা যোগে ছুটে চলছে গঙ্গামতির চরের দিকে। ভ্রমণ বাংলাদেশ এর সাথে টেকনাফ-কক্সবাজার হাঁটা ইভেন্টে গিয়ে আমার খুব একটা হাঁটা হয় না, ভাবলাম এবার এরকম সুন্দর আবহাওয়ায় সৈকতে ধরে হাঁটাই যাক না সাত কিলোমিটার। আমার মত কিছু অবুঝ পর্যটক দল বেঁধে হেঁটে যাচ্ছে পূর্বদিকে, আমিও কানে হেডফোন গুঁজে দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম, গঙ্গামতির চরের দিকে।



সাগর ও সৈকত



প্রায় আধঘন্টা হেঁটেও খুব একটা আগাতে পারলাম না, এর মাঝে আকাশ তার নীল রং ফিরে পেয়েছে রাতের আঁধার কাটিয়ে। পূর্ব দিগন্তে লালিমা নেই, চারিদিকে বিক্ষিপ্ত মেঘেদের দৌড়ঝাঁপ। এর মাঝে আমি কখন একা হয়ে নিজ মনে হাঁটছি খেয়াল করি নাই। হঠাৎ একটা মোটরসাইকেল আমার পাশে এসে ব্রেক কষলো। আমাকে বললো, "আপনি এভাবে হেঁটে হেঁটে সেখানে যেতে যেতে সূর্যোদয় হয়ে যাবে। আমি একটা প্যাসেঞ্জারদের দিয়ে এসেছি, তাদের আনতে যাচ্ছি। আপনি পঞ্চাশ টাকা দিলে আপনাকে নিয়ে যেতাম।" আমি তো আকাশ থেকে পড়লাম, পাঁচশত'র নীচে কেউ যেখানে রাজী হচ্ছিলো না, সে আমাকে পঞ্চাশ টাকায় নিয়ে যাবে, ভালোই অফার। কিন্তু ফিরবো কিভাবে। সে বললো ঠিক আছে, আরো একশত টাকা দিয়েন, আমি আমার গেস্টদের ফেরত নিয়ে এসে আবার ফিরে এসে আপনাকে নিয়ে যাবো। মন্দ না অফারটা। খুশী মনে চড়ে বসলাম তার মোটর সাইকেলে। সৈকতের খানাখন্দে ভরপুর বালিপথ দিয়ে একেবেঁকে মিনিট বিশেকের মধ্যে আমাকে নিয়ে চলে এলো গঙ্গামতির চরের পাড়ে। সরু একটা ক্যানেল নৌকায় পারাপার হলেই শুরু গঙ্গামতির চর।



আমার মত হাঁটতে থাকা মানুষেরা



আকাশে মেঘ জমলে আঁধার চারিধার

দেখা হলো না মনের মতনঃ
কিন্তু আকাশের অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপের দিকেই যাচ্ছে। হঠাৎ পূবাকাশ কিছুটা আলোর ঝিলিক দিয়ে আরও বেশী ঘন কালো মেঘে ঢেকে গেল। আজকে আর সূর্যাস্ত দেখা হলো না হাজারখানেক পর্যটকের। আমি এর মাঝে আমার ক্যামেরা দিয়ে নিজের মত করে ছবি তুলতে লাগলাম। চারপাশটা ঘুরে দেখলাম। একপাশে তিন'চারটা সকালের নাস্তা খাবারের দোকান, এখানকার সকালের খিচুড়ি আর ডিম ভাঁজা নাকি খুবই সুস্বাদু। কিন্তু মাথায় কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির পানি পড়তেই খোঁজ শুরু করলাম মাথা গুঁজার। কারণ সাথে থাকা ক্যামেরা ঢাকার মত কিছু নেই সাথে। সেই খাবারের দোকানগুলোর কাছে মানুষের জটলা।



গঙ্গামতির চরে পারাপারের খেয়া নৌকা



তবে এরই মধ্যে বেশীরভাগ পর্যটক ফিরতি যাত্রা শুরু করে দিয়েছে। দূরে মোটর সাইকেলের পেছনের লাল বাতি জানান দিচ্ছে তাদের বিদায়ের। আমার মোটর সাইকেল চালক ভাইটিও তার যাত্রী নিয়ে চলে গেছে, আধঘন্টার মধ্যে ফিরে আসবে বলে। জোরে বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে আগে উনি চলে আসলেন, আমি উঠে বসার পর মোটর সাইকেল সবে চলতে শুরু করেছে, উনার টায়ার পাঙ্কচার হয়ে গেল, কিভাবে কিছুই বুঝা গেল না। উনি আমাকে চিন্তা করতে না করে ফোন করে একটা মোটর সাইকেল আনালেন, তারপর আমি সেই নতুন সাইকেল চালক ভাইয়ের সাথে ফিরে এলাম মূল সৈকত এলাকায়।



পর্যটকেরা ছবি তোলে, স্থানীয়রা চেয়ে দেখে



ডেরায় ফেরার তাড়া
কুয়াকাটায় ভোরবেলা গঙ্গামতির চরে সূর্যাস্ত দেখে পর্যটকেররা লাল কাঁকড়ার চর, কাউয়ার চর, কুয়াকাটার কুয়া, রাখাইন পল্লী, বৌদ্ধ বিহার, বৌদ্ধ মন্দির আর শতবর্ষী নৌকা দেখে সকালের ভ্রমণের পাট চুকায়। এর পুরোটা দেখার জন্য মোটর সাইকেলে হাজার বারোশত টাকা খরচ পড়বে, হালকা পাতলা হলে একই মোটর সাইকেলে দুইজন ভ্রমণ করা যাবে। তবেঁ শুধু গঙ্গামতির চরে সূর্যোদয় পাঁচশত টাকায় দেখা যাবে, একটি মোটর সাইকেলে। আমি আগের দিনই শতবর্ষী নৌকা আর বৌদ্ধ মন্দির দেখেছিলাম; ইচ্ছে ছিলো আজ সূর্যোদয়ের পর সারাদিনে বাকীগুলো ঘুরে দেখার। এখান থেকে নাকি নতুন জেগে ওঠা বঙ্গবন্ধু দ্বীপও ভ্রমণ করা যায়, স্পীড বোটে করে।



পর্যটকদের ফটোসেশন এবং চারিপাশের প্রকৃতি



কিন্তু আকাশের যা অবস্থা! আমি যখন মূল সৈকত জেটি এলাকায় পৌঁছলাম, তখন গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি পড়া শুরু করে দিয়েছে। ঘড়িতে দেখি সকাল সাতটা। মনারা এতক্ষণে বুঝি অর্ধেক রাস্তা পার হয়ে গেল। ফোন দিয়ে জানা গেল, সকালের প্রথম বাস সুপার লোকাল গতিতে চলছে। সময়মত পৌঁছাতে পারবে কি না এটাই এখন চিন্তা। বেলা বারোটার মধ্যে তাদের "বঙ্গবন্ধু জাতীয় চ্যাম্পিয়নশীপ ২০২১" এর খেলা রয়েছে পিরোজপুর জেলা স্টেডিয়াম এ থাকতে হবে, রেফারী দুজনই। তাদের জন্য মনে মনে দোয়া করে ভাবলাম নাস্তা করে নেই। কিন্তু কি মনে করে ভাবলাম নাস্তা করার আগে বাস কাউন্টারে ঢুঁ মেরে নেই।





পর্যটকদের ফটোসেশন এবং চারিপাশের প্রকৃতি




টিকেট কাটা এবং ফিরতি যাত্রাঃ
প্ল্যান ছিলো প্ল্যান ১১:০০ টার বাসে বরিশাল রওনা হবো। কিন্তু এখন মাত্র বাজে সাতটা, তাই ভাবলাম ০৯:৩০ এর টিকেট কেটে ফিরতি যাত্রা শুরু করাই ভালো, আকাশের অবস্থা ভালো না। কাউন্টারে গিয়ে ০৯:৩০ এর টিকেট কেনার আগে হঠাৎ চোখ গেল বাসের সময়সূচীর চার্টে। সেখানে খেয়াল করে দেখি ০৮:২০ এ কুয়াকাটা টু মাওয়া এসি বাস সার্ভিস আছে। দ্রুত সেটার টিকেট কেটে নিলাম, ঘড়িতে সাড়ে সাতটা। দ্রুত হাঁটা দিলাম হোটেলের দিকে, পথে একটা রেস্টুরেনেট খিচুড়ি ডিম ভাঁজা দিয়ে সকালের নাস্তা সেরে হোটেলে গিয়ে ব্যাগ গুছিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে যখন বাসের কাছে পৌঁছলাম ঘড়িতে আটটা উনিশ, ঠিকই আটটা বিশে বাস ছেড়ে দিলো।



একাকী দাঁড়িয়ে সবুজের প্রতিনিধি



কিছু দূর যাওয়ার পর এক যাত্রীর কল, উনি মোটর সাইকেল নিয়ে রওনা হয়েছেন, কোন একটা পেট্রোল পাম্প এর কথা বললো ড্রাইভার, সেখানে গাড়ী দু'মিনিটের জন্য থামাবে। এর মধ্যে উনি যদি আসতে পারেন তাহলে ঠিক আছে, অন্যথায় কিচ্ছু করার নাই। বেচারা ঠিকই পেট্রোল পাম্প আসার আগেই মোটর সাইকেল বাসের সামনে নিয়ে এসে বাস থামিয়ে গাড়ীতে উঠে বসলেন। এরপর আরও বেশ কিছু জায়গা হতে যাত্রী উঠলো, একটা যাত্রী উঠলো স্থানীয় রাজনৈতিক পাতি নেতা গোছের, তার সিট পড়েছে বাসের একেবারে পেছনে। সামনের দুটি আসনের যাত্রী সামনে থেকে উঠবে। উনাকে বারবার বলার পরেও উনি সামনের সিটে বসে রইলেন, বললেন, "ওরা আসলে দেখা যাবে..."। মজার ব্যাপার ওরা আসলে উনি কিছুই দেখেন নাই, কারণ ওরা আরও এককাঠি সরস।



মূল সৈকতে সাতসকালে বেঞ্চি পেতে পর্যটকদের সমুদ্র বিলাস



কানে হেডফোন গুঁজে গান শুনতে শুনতে সময় পার করে দিলাম, সাথে বরিশালের পিচঢালা নতুন রাস্তা। আর দেখতে লাগলাম ড্রাইভার এর রাজকীয় ভাবভঙ্গী। পঞ্চাশের উপর বয়স হবে, দাড়িতে মেহেদি দেয়ায় লালকালো চাপ দাড়ি, পান খাওয়া মুখ, তেল দেয়া মাথার পরিপাটি করে আঁচড়ানো চুল... ভাবই আলাদা। "এই পানি দে", "এই পান বানা", "এই সাইড মিরর ঠিক কর", "এই গ্লাস মুছ" রাজকীয় ভঙ্গীতে হুকুম দিচ্ছিলেন বাসের হেল্পারকে আর সুপারভাইজার বাম্পার এর উপর কি সুন্দর করে গভীর ঘুমে ঢলে পড়লো। এতো বাঁক, ব্রেক কোন কিছুতেই তার কোন সমস্যা হলো না।



স্বপ্নের পদ্মাসেতু



তিন ঘণ্টার মাথায় চলে এলাম বরিশাল বিআরটিসি ডিপোতে, এখানে আধঘন্টার ব্রেক। এখানে এসে বাস ক্লিন হলো, আমি একটা চায়ের দোকান ফাঁকা দেখে সেখানে পেলাম মেশিন চা আর মেশিন কফি। মেশিন কফি তাও মুখে দেয়া যায়, কিন্তু মেশিনের চা... ইয়াক, আমি হলাম ঘন দুধের কড়া চা খাওয়া চা'খোর মানুষ। এই ফাঁকে মোবাইলটাও চার্জে দিয়ে দিলাম, আর বাসের হেল্পারকে দেখতে পেয়ে বললাম, "ভাই আমি ঐ দোকানের ভেতরে আছি, যাওয়ার আগে ডাক দিয়েন"। সে উত্তর দিলো, "বাস ঐ দোকানের সামনে দিয়েই যাবে, আপনে খেয়াল রাইখেন।" =p~



স্বপ্নের পদ্মাসেতু এবং পদ্মা পারাপের বিখ্যাত লঞ্চ



বরিশাল থেকে কাঁঠালবাড়ি জার্নিতে বাস দ্রুতই চললো। কুয়াকাটা থেকে বরিশাল যেখানে লেগেছিলো তিনঘণ্টা, সেখানে বরিশাল থেকে কাঁঠালবাড়ি ফেরীঘাট চলে এলাম পৌনে তিন ঘন্টারও কিছু কম সময়ে। অর্থাৎ কুয়াকাটা থেকে ছয়ঘন্টার কমে মাওয়া ঘাট। স্পীড বোটে নদী পার হয়ে ছেড়ে যাওয়া বাস ধরতে পারলে আর দেড়ঘন্টায় বাবুবাজার ব্রীজ, দুই ঘন্টায় বাসা। অর্থাৎ আটঘন্টার আমার বাসা থেকে কুয়াকাটা! অথচ এই কুয়াকাটা আসা হয় নাই এতো দিন এর লম্বা জার্নি পথের জন্য। তখন মনে হলো পদ্মাসেতু চালু হলে কুয়াকাটা আর সুন্দরবন এর পর্যটন আলাদা গতি পাবে।





ফিরতি সময়ের হিসেব কষাঃ
যাই হোক, আমার ঢাকা ফেরার সময়ের বিবরণ এরকম:
কুয়াকাটা টু বরিশাল: সকাল ০৮:২০-১১:৩০
আধঘণ্টা বরিশাল বিআরটিসি ডিপোতে বিরতি
বরিশাল টু কাঁঠালবাড়ি ফেরীঘাট: দুপুর ১২:০০-০২:৩০
ঘাটে এসে দেখি একটা ফেরী পারাপার লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে বলে, দৌড়ে সেটাতে উঠতেই ছেড়ে দেয়, ১৫ মিনিট সর্বমোট সময় লেগেছে বাস থেকে নেমে লঞ্চে উঠতে, ভাগ্য ভালোই ছিলো। সপ্তাহ দুয়েক আগেই ইকো ট্রাভেলার্স এর সাথে সুন্দরবন থেকে খুলনা হয়ে ফেরার সময় স্পীড বোটে ফেরছিলাম, এবার তাই নদী পারাপার লঞ্চে ফেরা। সুন্দরবনের সেই ভ্রমণের গল্প সামনে লিখবো ইনশাআল্লাহ।
কাঁঠালবাড়ি টু মাওয়া ঘাট: ০২:৪৫-০৩:৩০
ঘাটে নেমে লাঞ্চ করতে ঢুকলাম মাওয়ার কুখ্যাত খাবার হোটেলে। ঠান্ডা ভাত আর দুপদের মাছ দিয়ে লাঞ্চ করে মনে হলো এর চাইতে আর ঘন্টা দুয়েক পরে বাসায় গিয়ে খেলেই ভালো হতো। যাই হোক লাঞ্চ শেষ করে ইলিশা পরিবহন এর নন এসি বাসে বাবুবাজার ব্রীজ রওনা হলাম, বাস যাবে গুলিস্তান পর্যন্ত।
মাওয়া ঘাট টু বাবুবাজার ব্রীজ ৫০ মিনিটে! এসি সব বাস সায়েদাবাদ পর্যন্ত, বিআরটিসি ছাড়া। খুলনা থেকে ফেরার সময় আমাকে সায়েদাবাদ থেকে বাসায় ফিরতে ঘন্টা দেড়েক সময় লেগেছিলো। আর এদিনে কেরানীগঞ্জ সাইডে কোন জ্যামে বাস আটকা পড়ে নাই।
মাওয়া ঘাট টু বাবুবাজার: ০৪:১০-০৫:০০
বাবুবাজার টু বাসা: ০৫:১০-০৫:৪০

মোট ০৯ ঘন্টা ২০ মিনিট।

তখন হিসেব করে দেখলাম, পদ্মাসেতু চালু হলে ঢাকা থেকে সরাসরি বাসে ০৫-০৬ ঘন্টায় খুব সহজেই কুয়াকাটা যাওয়া যাবে, ব্যক্তিগত গাড়ীতে হয়তো ০৪-০৫ ঘন্টায়! একই সুবিধা হবে সুন্দরবন ভ্রমণে, ঢাকা থেকে ০৪-০৫ ঘন্টায় খুলনা পৌঁছে জাহাজে উঠে পড়া যাবে একইভাবে জাহাজ থেকে নেমে ০৪-০৫ ঘন্টায় ঢাকা। বাস্তবেই এখন তা হচ্ছে। দেখি সময় সুযোগ করে আবার একটা ঝটিকা ট্যুর দিতে হবে কুয়াকাটায়।



ভ্রমণকালঃ ডিসেম্বর, ২০২১
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৪:২২
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×