somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজিবিজি লেখা যত....., হয়ে গেল পাঁচশত.....!!!

২৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ রাত ২:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মাঝরাতে লিখতে বসেছিলাম অন্য একটা বিষয় নিয়ে, নিজের ব্লগ বাড়ীর বামপাশে চোখ পড়তে দেখি পোষ্ট সংখ্যা ৪৯৯! সময়ের হিসেবে সামহোয়্যার ইন ব্লগে কাটিয়ে দিলাম ৫৩৫টি সপ্তাহ। গড়ে প্রায় প্রতি সপ্তাহে একটি করে পোস্ট। যদিও এর বেশীরভাগ পোস্টই ২০১৩-২০১৬ সালে করা। ভাবলাম ৫০০তম পোস্ট আলাদা কিছু লেখা দিয়ে সাজানো যাক। নিজের লেখাগুলোয় চোখ বুলিয়ে দেখি আমার বেশীরভাগ লেখাই ভ্রমণসংক্রান্ত; কিন্তু এর বাইরেও নানান সময়ে নানান বিষয়ে পোস্ট লিখেছি; যেগুলোর বিস্তারিত নিয়ে লিখেছিলামঃ ৯...৯...৯ !!! নয়ে !!! নয় !!! (বর্ষপূর্তি পোস্ট)। সহব্লগারদের স্মরণ করে কিছুদিন আগে লিখেছিলামঃ আজ হুট করে মনে পড়ে গেল তোমাদের...। তাই এই বিশেষ পোস্টে কি লিখবো ভেবে পাচ্ছি না। তাই ঠিক করলাম আজ নিজের লেখা নিজের পছন্দের পাঁচটি লেখা নিয়ে ৫০০ তম পোস্টটি সাজিয়ে রাখি।

১.
ভ্রমণ নিয়ে শ’দুয়েকের বেশী লেখা থেকে যদি একটি লেখা কাউকে পড়তে দিতে বলা হয়, আমি বলবো সেটা অতি অবশ্যই “সন্দ্বীপ-হাতিয়া-নিঝুম দ্বীপ-মনপুরা” নিয়ে লেখা সিরিজটি। কিভাবে যাব? কোথায় থাকবো, কি খাবো কিছুই জানা নেই… তিনজন ভ্রমণ বন্ধু ভোররাতের পরপর বাস থেকে নামলাম সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটের কাছে, শুরু হল থ্রিলিং আর “খোঁজ – দ্যা সার্চ” ভ্রমণের। সন্দ্বীপ থেকে হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ থেকে মনপুরা যাওয়ার ট্রলার এর খোঁজ, ট্রলার মিস করা, ট্যুরের শুরুতেই এক ভ্রমণ সাথীর পা মারাত্মক খারাপভাবে কেটে যাওয়া… আমার মত আটপৌরে সাধারণ একজন ভ্রমণকারীর জন্য সেটা ছিলো সত্যিকারের এক অন্যরকম ট্যুর।

আগ্রহী হলে পড়ে দেখতে পারেন পাঁচ পর্বের সেই ভ্রমণ সিরিজটিঃ
সন্দ্বীপ (প্রথমাংশ) - (জার্নি টু আওয়ার সুইট সেভেন ডটার অব সী - ফার্স্ট ফেইজ)
সন্দ্বীপ (শেষাংশ) - (জার্নি টু আওয়ার সুইট সেভেন ডটার অব সী - ফার্স্ট ফেইজ)
হাতিয়া - (জার্নি টু আওয়ার সুইট সেভেন ডটার অব সী - ফার্স্ট ফেইজ)
নিঝুম দ্বীপ - (জার্নি টু আওয়ার সুইট সেভেন ডটার অব সী - ফার্স্ট ফেইজ)
মনপুরা - যার রূপে হৃদয় পুড়ে হল একাকার (জার্নি টু আওয়ার সুইট সেভেন ডটার অব সী - ফার্স্ট ফেইজ)


২.
ব্লগে খুব বেশী গল্প লেখা হয় নাই, যে কয়টা লিখেছি তার মধ্যে সবচাইতে সেরা আমার মতে “ঝড়ের শেষে” গল্পটি। দশটি ভিন্ন ভিন্ন প্রেক্ষাপটে গোটা বিশেক চরিত্রর হাত ধরে একটি প্রেক্ষাপটের গল্প হতে আরেক প্রেক্ষাপটের সূচনা করে এগিয়ে যায় ছোট্ট এই গল্পটি। গল্পের শেষাংশের কথাগুলো পাঠকের জন্য তুলে দিলামঃ
এরপর আরও বেড়েছিল ঝড়ের বেগ, আরও চমকেছিল বিজলি’র দল, আরও ঝরেছিল বারিধারা... আর সেই বেড়ে যাওয়া ক্ষণে রফিম মিয়া’র চিটাগংগামী গাড়ী মাঝ পথে থেমে গিয়েছিল ঝড়ের কারণে, ইকবাল সে রাতে কোন কাজ পায় নাই... ট্রাকগুলো এসে পৌঁছয় নাই কারওয়ান বাজারে... তার বদলে বিদ্যুতের একটা তার ছিঁড়ে গিয়ে পড়েছিল তার উপর... বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সে মরে গিয়েছিল কি না তা জানা যায় নাই, ইজমত মোল্লা ছেলেকে হারিয়েছে কি হারায়নি তা জানা নেই, তবে জানি হারায় নাই তার গোয়ালের গরুটি। মিলি আর জুয়েল রাত জেগে কাটিয়ে দিয়েছিল তাদের ছোট্ট বাবুটি’র কান্না থামাতে... কিন্তু কান্না থেমেছিল কিনা জানিনা, জানা হবে না সেই বর্ষণমুখর রাতে তারা অপার্থিব ভালোবাসায় নিজেদের জড়াতে কোন সুদূর পাণে হারিয়ে গিয়েছিল কিনা? রতন হয়ত মেটাতে পারে নাই তার বিকৃত যৌন আকাঙ্ক্ষাটুকু এতটুকু একটু নিষিদ্ধ বিনোদনের অভাবে। রাহুলের নেশার ঘোর বিঘ্নিত করে ট্রান্সফরমার ব্লাস্টের শব্দের সাথে সাথে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উন্মাতাল করা ডিজে মিউজিক। মুন সারা শরীরে খিচুনি নিয়ে কাটিয়েছে সারা রাত একটা সিরিঞ্জের অভাবে... বজ্রের শব্দে না হোক, কেঁপেছে রক্তকণিকায় বিষের নীল প্রবাহ না দিতে পেরে। লামিয়া আত্মহত্যা করতে না পারলেও পেরেছিল নিউমোনিয়া বাঁধাতে, চুমকি সর্দি-জ্বরে ভুগে সপ্তাহখানেক খেপ নিতে পারে নাই কোথাও, রুপমের চ্যাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পিসি শাটডাউন হয়ে যাওয়াতে, বন্ধ হয়েছিল লুবনা'র আবাল মার্কা কথাবার্তার অত্যাচার... আরও অনেক কিছুই ঘটে যাওয়ার পর থেমেছিল ঝড়-বিজলি-বৃষ্টি’র খেলা... কিন্তু সেই ঝড়ের পর হয়ত অনেক...অনেক কিছুই আর আগের মত ছিল না... হয়ত ছিল... কেননা সব ঝড়ের শেষের চিত্রনাট্য কিন্তু এক রকম হয় না।

আগ্রহী পাঠকের পুরো গল্পটি পড়ে দেখতে পারেনঃ ঝড়ের শেষে (গল্প)


৩.
এটা একটা সিরিজ লেখার একটা পর্ব, সিরিজটার নাম গানগল্প। গানের লিরিক্সের কথায় ভিত্তি করে গল্প গড়ে তোলা। সেই পর্বের লেখা থেকে একটা অংশ পাঠকের জন্য তুলে দিলামঃ
সেদিন ভোরবেলা আমি ফিরছিলাম গ্রামের বাড়ী থেকে ঢাকার জনবহুল নির্জনতায়, যেই নির্জনতা আমি খুঁজে পেয়েছিলাম তোমার মাঝে, যেই নির্জনতা আমাকে গ্রাস করেছে তুমিহীনা জীবনে। কমলাপুর রেলষ্টেশন থেকে লোকাল বাসে আমার যাত্রা, উদ্দেশ্য সেই আগের কল্যাণপুরের সামাদ মিয়া’র মেসের ছয় ফিট বাই আট ফিটের ঝুপড়ি ঘরখানা। কিন্তু পথে বাস থেমে গেল, সামনে আর যাবে না, রাস্তা বন্ধ। কি করার, ভোর বেলার আকাশ অনেকদিন দেখি না। কারণ রাতগুলো বড্ড ব্যস্ত থাকতে হয় তুমি আর তোমার স্মৃতি’র সাথে অসম লড়াই করে। অসম! কারণ, প্রতিবার পরাজিত একজনই হয়, আর সে কে? নিশ্চয়ই তুমিই ভাল বুঝতে পারবে। সেদিন পহেলা বৈশাখের প্রথম প্রভাতে হেঁটে হেঁটে রমনার সম্মুখটা পার হচ্ছিলাম, কি মনে করে ডানে তাকালাম উৎসবের লোকজনে ঠাসা রমনা বটমূলের চত্বরটার দিকে। সেই ছিল আমার ভুল, যে আমি গত কয়েকবছর দেখি না কোন আলোর মিছিল, কোন সুরের বাতাস গায়ে মাখি না, কেন আমি সেদিকে তাকালাম কে জানে? হয়ত ছিল ভাগ্যের লিখন। সেই হাজারো মানুষের ভিড়ে জন্মান্তরের জন্য হৃদয়ে গেঁথে যাওয়া তোমার মুখখানি দেখে থমকে গেলাম। কেন? দেখা হওয়ার তো কোন কথাই ছিল না, তাও এমন সময়ে, এমন জায়গায়।


বাংলা ব্যান্ডের দুই সেরা ব্যান্ড “এলআরবি” এবং “ফিলিংস” এর মিক্সড এলবাম “ক্যাপসুল ৫০০এমজি”র গান, আইয়ুব বাচ্চুর কণ্ঠে “আহা জীবন” গানটি অবলম্বনে গল্পটা লেখা।

আগ্রহী পাঠক পুরো লেখাটি পড়তে পারেনঃ আহা জীবন (অনুগল্প) (গান-গল্প ০১)


৪.
কবিতা খুব কমই লিখেছি ব্লগে, তার মধ্যে থেকে “খুব বেশী সাদামাটা” কবিতাটি আমার খুবই পছন্দের।

.....আমি আটপৌরে মুদিখানার দোমড়ানো ঐ ঠোঙ্গার মত
সাময়িক প্রয়োজন শেষে যাকে আস্তাকুড়ে ফেলে দিতে হয়
আমি ফেরিওয়ালার একঘেয়ে ঐ সুরের মত
যা ভুলেও কেউ গুণগুণ করে কণ্ঠে তোলে না
আমি রাজপথের দেয়ালে সাটা অজস্র পোস্টার…


আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেনঃ খুব বেশি সাদামাটা

৫.
সবশেষে আমার অতি প্রিয় হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন সিরিজ, যার মাত্র তিনটি পর্বই লিখেছি, এর মধ্যে থেকে প্রথমটি আমার হৃদয়ে গেঁথে আছে।

সময় বদলে যায়, নাকি মানুষ সময়কে বদলে দেয়? অথবা হয়তো সময়ের সাথে সাথে সবকিছু বদলে যায়, শুধু হঠাৎ একদিন ধরা পড়ে অনেক কিছু বদলে গেছে; কখনো কখনো হয়তো সব কিছু। শুধু বদলাতে পারে না মানুষ হৃদয়ের গোপন কুঠিতে নিশ্চল হয়ে ঘুম পাড়ানো মায়ার শেকলটাকে। যে শেকল সময়ে, অসময়ে টান দেয় চেতনার সবকয়টা চোরাপথ ধরে....

আগ্রহী পাঠক পড়ে দেখতে পারেনঃ হৃদয়ের অর্থহীন কথোপকথন


দীর্ঘ এই পথচলায় উৎসাহ দিয়ে পাশে থাকার জন্য সকল সহ ব্লগার, মডারেটর টিম এবং সামহোয়্যার ইন ব্লগ কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ধন্যবাদ এবং কৃতজ্ঞতা।

ভালো থাকুন সবসময়, প্রতিদিন প্রতিক্ষণ।

হ্যাপী ব্লগিং।

সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:৩৮
১৩টি মন্তব্য ১৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=বেনারসী রঙে সাজিয়ে দিলাম চায়ের আসর=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫২



©কাজী ফাতেমা ছবি
মনে কি পড়ে সেই স্মৃতিময় সময়, সেই লাজুক লাজুক দিন,
যেদিন তুমি আমি ভেবেছিলাম এ আমাদের সুদিন,
আহা খয়েরী চা রঙা টিপ কপালে, বউ সাজানো ক্ষণ,
এমন রঙবাহারী আসর,সাজিয়েছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজ্ঞানময় গ্রন্থ!

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪২

একটু আগে জনৈক ব্লগারের একটি পোস্টে কমেন্ট করেছিলাম, কমেন্ট করার পর দেখি বেশ বড় একটি কমেন্ট হয়ে গেছে, তাই ভাবলাম জনস্বার্থে কমেন্ট'টি পোস্ট আকারে শেয়ার করি :-P । তাছাড়া বেশ... ...বাকিটুকু পড়ুন

অস্ট্রেলিয়ার গল্প ২০২৪-৪

লিখেছেন শায়মা, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:৪৫


চলে যাবার দিন ঘনিয়ে আসছিলো। ফুরিয়ে আসছিলো ছুটি। ছোট থেকেই দুদিনের জন্য কোথাও গেলেও ফিরে আসার সময় মানে বিদায় বেলা আমার কাছে বড়ই বেদনাদায়ক। সেদিন চ্যাটসউডের স্ট্রিট ফুড... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি কি বেদ, উপনিষদ, পুরাণ, ঋগ্বেদ এর তত্ত্ব বিশ্বাস করেন?

লিখেছেন শেরজা তপন, ২২ শে এপ্রিল, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫২


ব্লগে কেন বারবার কোরআন ও ইসলামকে টেনে আনা হয়? আর এই ধর্ম বিশ্বাসকে নিয়েই তর্ক বিতর্কে জড়িয়ে পড়ে সবাই? অন্য ধর্ম কেন ব্লগে তেমন আলোচনা হয় না? আমাদের ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসের নায়িকাকে একদিন দেখতে গেলাম

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১:২৫

যে মেয়েকে নিয়ে ‘অন্তরবাসিনী’ উপন্যাসটি লিখেছিলাম, তার নাম ভুলে গেছি। এ গল্প শেষ করার আগে তার নাম মনে পড়বে কিনা জানি না। গল্পের খাতিরে ওর নাম ‘অ’ ধরে নিচ্ছি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

×