somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার খোঁজ করি (১)

২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

অনেকদিন হয়ে গেছে কিছুই লিখবার মত মনে হয় না ; আমি যেন হারিয়ে ফেলেছিলাম নিজেকে আমার চিন্তার ভেতর । মস্তিস্কে অবাধ বিচরণের জন্য অন্য কিছুর আশ্রয়ে জীবনের অনেকগুলো বছর নষ্ট করে ফেলেছি । আমি যখন বুঝতে শিখেছি প্রশ্ন করা সহজ , এবং তার জবাব দেয়াটাও খুব একটা কঠিন বিষয় নয় । তখন আরও কিছু সহজ প্রশ্ন আমাকে ভাবিয়েছে । কারণ , জবাব গুলো আমার মন মত কখনই ছিল না । খুব বেশি জ্ঞানগর্ভ বই আমি পড়িনি । তারপরেও , স্বাভাবিক নিয়মে জ্ঞানের সহজলভ্যতাকে কাজে লাগিয়ে একি প্রশ্নের হরেক রকম দিক আমি দেখেছি । সেগুলো একটার সাথে আরেকটা মিলিয়ে দেখার চেষ্টা করে গেছি । আমার কাছে জীবন একটা নিয়মের বেড়াজালে আটকে থাকা বিষয় ছাড়া কিছু নয় । সেই নিয়ম গুলো আমার আয়ত্ত করে নিতে হয়েছে । জন্ম থেকে আমি আমার চারপাশের সব কিছু অন্যের দেখানো নিয়মে বিশ্বাস করে এসেছি । একটা ভাষায় আমার চিন্তার বিকাশ ঘটেছে । আমি কৌতুহলি হয়ে বড় হচ্ছিলাম , আর প্রশ্নের পর প্রশ্ন আমার মাথায় জমা হয়েছে ।
তারপর সব চাইতে কঠিন প্রশ্নটা নিজেকে করেছি , যখন খুব কাছে থেকে নিজের মায়ের মৃত্যুটাকে দেখেছি । একটা জীবন , যে জীবন থেকে আমার এই অস্তিত্বের শুরু । সেটা যখন নিমিষেই শেষ হয়ে গেল । তখন পৃথিবীর তামাম প্রশ্ন নিছক মিথ্যা হয়ে গেল । কৌতুহল থেমে গেল । মৃত্যুর কাছে নিজের পরাজয় নিশ্চিত বুঝে গেলাম ।
মানুষ যদি অমরত্বও লাভ করে ফেলে , তারপরে যে তার ধ্বংস অনিবার্য , সেটাও মানুষ জানে । এই মহাবিশ্বে কোথাও পালিয়ে যাওয়ার জায়গাটুকু নেই ।
তারপর থেকে সব কিছু ভেঙে দেখা শুরু করলাম । জানলাম , আমি যাই ভাবছি , ভেবে রাখা হয়েছে । প্রশ্ন গুলো সবার একই রকম । সবাই নিজের থেকে শুরু করে , আবার নিজের কাছেই ফিরে আসে । এ যেন এক গোলকধাঁধা ।
তারপর আমি দেখতে শুরু করলাম , চুপচাপ সব কিছুর মধ্যে নিয়মের দ্বারা একটা পার্থক্য করা শুরু করলাম । দেখলাম পৃথিবীর সকল প্রান একি নিয়মে বন্দি । সকল প্রানের মধ্যে স্বাধীন স্বত্বার বাস । হোক তা আমি না বুঝলাম খুব বিশদ আকারে । তবু এইটুকু সত্য উপলব্ধি আমাকে শান্তি দিতে পেরেছিল ।
তারপর আবার প্রশ্ন করতে শুরু করলাম , আসলে এই সময়ে খুব একটা চিন্তা করতে হয় না আর জবাবের জন্য । সব কিছু পরিস্বকার ভাবেই গোছানো রয়েছে । আমি দেখলাম , আমার অর্জিত সকল শিক্ষা , সকল জ্ঞান কি অদ্ভুতভাবে বন্দি করে রেখেছে । দেখলাম আমি শুধু একা নই । চারপাশে অগণিত মানুষ চুপ করে আছে । কেউ কাউকে কিছু বলছে না । এ যেন এক মারাত্মক অপরাধ । ঠিক কি কারণে আমরা এমন হয়েছি , সেটাও বুঝতে চেষ্টা করলাম ।
সবচেয়ে সহজ ও সত্য জবাবটা হচ্ছে , মৃত্যু অবধারিত জেনেও আমাদের বেচে থাকার স্পৃহাকে জাগিয়ে রাখা । কারণ , প্রত্যেকটা মানুষ চাইলেই তার মৃত্যু ঘটাতে পারে । আর যারা এই এই সকল প্রশ্ন করে ফেলে জীবনে , অনেকেই গোলকধাঁধা থেকে আর নিস্তার পায়না । তারা ক্লান্ত হয়ে যায় , তারা এই ক্লান্তি থেকে মুক্তি পেতে চায় । তাই কিছু জ্ঞানপাপী নিস্তারের রাস্তা খুজে বের করে আনে । যেন আর এই গোলকধাঁধার খপ্পরে কেউ না পরে ।
এই রাস্তাটাকে ভুল বলা যায়না , আবার গোলকধাঁধাটাও অস্বিকার করার উপায় নেই । তাহলে এই মানব সভ্যতা কোথায় যাবে ?

এই যে আমাদের বিশ্বাস , সেটা কি প্রানের স্বঞ্চারের শুরু থেকে ছিল ? নাকি যখন মৃত ছিলাম , কিংবা শুণ্যতায়ও ছিল ?

গোলকধাঁধার পথে নিজের থেকে নিজের কাছেই যেহেতু ফিরে আসতে হয় , তাহলে বাস্তবিক অর্থে সেই পথে আমার বিচরণ খুব একটা যুতসই হবার নয় ।
তাহলে জ্ঞানপাপীরা আসলে কোন যুক্তির বলে সবাইকে বুঝাতে সক্ষম হল ? এটাতো সাময়িক কোন ব্যাপার নয়, যে খুব বেশিদিন হয়নি আছে , বা ভবিষ্যতে থাকবে না ।

আমি তাদের পথে হাটতে চেষ্টা করলাম , তাদের এই যুক্তিকে আমার মত করে বুঝতে চেষ্টা করলাম । আমার বিশ্বাসকে আমি ভেঙে দিলাম যুক্তি দিয়ে । ঠিক তাদের মতই । হয়ত সেটা সেকেলে ছিল , কিন্তু সত্য সর্বদাই সহজ ।
আমি ধরে নিলাম কোন এক পরম করুণাময় কিংবা পরম শক্তি বিরাজমান আছে , ছিল , থাকবে । কিন্তু তার ঠিক কিসের প্রয়োজন ছিল এই মশকরা করার ? নাকি এই মহাশক্তিও তার নিজের গোলকধাঁধা থেকে নিস্তার পেতে চেয়েছিল ? একাকিত্ব যে কোন উপভোগ্য বিষয় নয় , সেটাই বারবার নিজের কাছে স্বীকার করার জন্যেই তার এই নিষ্ঠুরতা কিংবা পরমত্যাগ ।
তাই হয়ত আমরা দুইভাগে বিরাজমান , একভাগ নিজের ভেতরে রেখে আরেকভাগ প্রকাশিত করি ।

হয়ত আরও ভাববো , লিখবো বিস্তরভাবে ।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে এপ্রিল, ২০২২ রাত ১১:০৭
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তারেক ৩০০০ কোটী টাকার লোভেই দেশে ফিরেছে

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:১০



তারেক এসেছে, বলেছে, I have a plan; তারেকের প্ল্যানটা কি? এই মহুর্তে তার প্ল্যান হতে পারে, নমিনেশন বাণিজ্য করে কমপক্ষে ৩০০০ কোটি টাকা আয়। ৩০০ সীটে গড়ে ১০... ...বাকিটুকু পড়ুন

বই : টক অব দ্য টাউন

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৮ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:০৮

বই : টক অব দ্য টাউন



একটি বই হঠাৎ করে এতটা আলোচনায় আসবে আমরা কি ভাবতে পেরেছি ?
বাংলাদেশের মানুষ অতি আবেগপ্রবন , বর্তমান রাজনৈতিক অস্হিরতার মধ্যে ও
বাঙালীর স্বভাবসুলভ অনুসন্ধানী... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাদ্রাসা শিক্ষা, বৈশ্বিক রাজনীতি, সহিংসতা ও জঙ্গিবাদ

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ ভোর ৪:৪৫


লেখাটির শুরুতে একটি ভূমিকা দেওয়া যাক। সর্বশেষ দেশে গিয়ে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে ছিলাম। উত্তরবঙ্গে, নিতান্ত অনুন্নত আমাদের সেই গ্রামে এতগুলো কওমি মাদ্রাসা হয়েছে দেখে অবাক হয়েছিলাম। আগে গ্রামে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকার মানুষের জীবন

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪


ঢাকাতে মানুষ বড় বিচিত্র ভাবে বেঁচে থাকে। নিয়মিত ঢাকার রাস্তার ঘুরে বেড়ানোর কারণে এই রকম অনেক কিছু আমার চোখে পড়ে। সেগুলো দেখে মনে হয় মানুষ কত ভাবেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশ কখনো এমন করে বলতে পেরেছে কি?

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


ভারতে গরু ও গোমাংস নিয়ে হত্যা বা সহিংসতার নির্দিষ্ট সংখ্যা বলা কঠিন কারণ এটি রাজ্য, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি এবং 'গরু রক্ষা' বাহিনী ইত্যাদীর কারণে একেক যায়গাতে একেক রকম। ভারত গোমাংস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×