somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কয়েকটা ছেলে

১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তিনি অল্প রাগী গলায় বললেন “কয়েকটা ছেলে সমস্ত উন্নয়ন বন্ধ করে দিলো।”

উনার কাছে নাকি ভিডিও আছে যে ইসলামী এক্সট্রেমিস্টরা স্নাইপার রাইফেল দিয়ে গুলি করেছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংসের ক্লোজ শট ভিডিওতে তাঁরা দেখতে পান কারা এগুলোর সাথে জড়িত। তাদের কাছে এসব ঘটনার পিছনে উসকে দেয়া রাষ্ট্রের ক্লাসিফাইড ডকুমেন্টও আছে।
এই ভিডিও ও ডকুমেন্টগুলো শুধু উনাদের whatsapp গ্রূপের ভিতরেই থাকে, সাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।
প্রায় সমস্ত আওয়ামী ঘরানার লোকজনের বিশ্বাস ও বয়ান একই।

প্রবাসে থাকার কারণে প্রায়ই সাপ্তাহিক দাওয়াতে দেখা হয় তেনাদের সাথে, তো তিনি দেশের শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপিঠ থেকে পাশ করে PhD করেছেন, ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতেন। বর্তমানে শহরের কমিউনিটিতে একজন বিত্তশালী। ওয়ান ইলেভেন সময়ে যখন দুই প্রধান নেত্রীকে জেলে অন্তরীণ করা হয়েছিল, তিনি দুঃখে ফোন করেছিলেন, আমি সান্ত্বনা দিয়ে বলেছিলাম - তাদেরকে আটকে রাখতে পারবে না।

ইনারা আমাদের বন্ধু, আত্মীয়, পড়শী, বাকিরাও কারো না কারো বন্ধু, আত্মীয়, পড়শী নিশ্চয়। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে গুম, খুন তাদের নীতির খাতায় জায়েজ হয়ে যায়, দলের ভোটচুরি, ভোটডাকাতি বিশ্বের একনায়কদের লজ্জা দেয়, তাদের সমর্থিত গুন্ডাবাহিনী কখন তাদের আদর্শের মুকুটে ছোবল মেরে মৃত্যু ঘটিয়েছে তা তাদের জানার অতীত থেকে যায়।

আমি ভাবি কেন তারা নীতিগতভাবে এই নিরপরাধ হত্যাকাণ্ডে দুঃখবোধ করেন না? আর এই যে হাজার হাজার ছাত্রজনতা গুরুতর আহত হলো, পঙ্গুত্ব বরণ করলো, তাঁদের অসহায়ত্ব তাঁদের মনুষ্যত্বে দোলা দেয় না?

হয়তো কেউ কেউ নিন্দা জানিয়েছেন, কিন্তু দেখা যাবে ইজরাইলের মত সন্ধ্যায় নিন্দা জানিয়ে গভীর রাতে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মা'র কোলে আশ্রয় নেয়া শিশুর উপর বোমা ফেলছেন, ফেসবুক আর অনলাইন মিডিয়া প্রকম্পিত করছেন।

এরা আবার বলবে মুগ্ধ মারা যায়নি, স্নিগ্ধ আর মুগ্ধ একই ছেলে। হয়ত কেউ নিহত বা আহতই হয়নি!!! ডাঙায় আছড়ে পড়া ডলফিনের মত আমিই আমার পাঁচ ইন্দ্রিয়কে খুন করেছি।

এদের কেউ কেউ অতীতে আওয়ামী/ছাত্রলীগ করেছেন, বাম ঘরানার অনুসারী হয়ে হারমোনিয়ামে “মোরা যাত্রী একই তরণীর” গানে সুর মিলিয়েছেন, নকশালী তত্ত্বে ডুগডুগি বাজিয়েছেন। কিন্তু গভীর মননে তাঁরা বাকশালী, উগ্র গোষ্ঠিবাদী, ফ্যাসিস্ট সিম্পটমধারী।

এসমস্ত আধমরাদের ঘা মেরে বাঁচাতে একটি যুদ্ধ হয়েছে, এটি যথেষ্ট নয় আরো একটি প্রত্যাসন্ন। কবি হেলাল হাফিজ পঞ্চাশ বছর আগেও যেমন প্রাসঙ্গিক ছিলেন আরো যুদ্ধের জন্য তিনি ভবিষ্যতেও প্রাসঙ্গিক হয়ে থাকবেন-
“এখন যৌবন যার মিছিলে যাবার তাঁর শ্রেষ্ঠ সময়
এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তাঁর শ্রেষ্ঠ সময়”

এদের কেউ কেউ জুলাই-অগাস্ট অভ্যুত্থানকে বেনফিসিয়ারী তত্ত্ব দিয়ে মার্কিনিদের পয়সা ছিটানোর খেলা বলবেন, অনেকটা আশির দশকে দেয়ালে চিকা লিখনের মত
“এক খবরের মধ্যে থাকে হাজার রকম মিথ্যা ফাঁক
সিআইএ মদদ যোগায় গুজব রটায় ইত্তেফাক”
অর্ধ শতাব্দীতে যুগ পাল্টেছে, ইত্তেফাকের প্রকাশনা তলানিতে, ভুরাজনীতির দাবার রাজা রানীও পাল্টে গেছে। মার্কিনিদের জায়গা অন্য আর একটা দেশ দখল করে নিয়েছে সে খবর তাঁরা মানতে চান না, অন্ধ বোধিরের মত দেখতে পান না - এক ইত্তেফাকের বদলে শত পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল আমাদের গ্রামের সীমানার ওপার থেকে যুগপৎ মিথ্যা রপ্তানি করছে। তাদের এ দেশীয় দোসররা সে রপ্তানিতে বাসি, পঁচা, সোনারপাথরবাটি রসদ যোগান দিচ্ছে।

আমি ভাবি তাঁদের মস্তিষ্কের নিউরন কি দিয়ে তৈরি? তাতে নিশ্চয় ভিন্ন ধাঁচের এনজাইম/হরমোন খেলা করে! তারা কি সমান্তরাল কোন জগতের বাসিন্দা যেখানে দেখতে পান না একাত্তরের হাতিয়ার অন্য ভাবে গর্জে উঠেছে জুলাই-আগস্টে, দেশ ছেড়ে পালিয়েছে ফ্যাসিস্ট সরকার, মৃত্যু ঘটেছে ফ্যাসিস্ট মনোভাব সম্পন্ন রাজনীতির!
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

নজরুল পরিবারের প্রশ্ন: উগ্রবাদী হাদির কবর নজরুলের পাশে কেন?

লিখেছেন মাথা পাগলা, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:০১



প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে কাজী নজরুল ইসলামের দেহ সমাধিস্থ করা হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদের পাশে। শনিবার বাংলাদেশের স্থানীয় সময় বিকেল ৪টে নাগাদ সেখানেই দাফন করা হল ভারতবিদ্বেষী বলে পরিচিত ইনকিলাব মঞ্চের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদির আসল হত্যাকারি জামাত শিবির কেন আলোচনার বাহিরে?

লিখেছেন এ আর ১৫, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:৫৪


গত মাসের শেষের দিকে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারওয়ারের ছেলে সালমান, উসমান হাদির সঙ্গে খু*নি ফয়সালের পরিচয় করিয়ে দেন। সেই সময় হাদিকে আশ্বস্ত করা হয়—নির্বাচন পরিচালনা ও ক্যাম্পেইনে তারা... ...বাকিটুকু পড়ুন

দিপুকে হত্যা ও পোড়ানো বনাম তৌহিদী জনতা!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৫


পাইওনিয়ার নিটওয়্যারস বিডি লিমিটেড (Pioneer Knitwears (BD) Ltd.) হলো বাদশা গ্রুপের (Badsha Group) একটি অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। বাদশা গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান কর্ণধার হলেন জনাব বাদশা মিয়া, যিনি একইসাথে এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×