somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

প্রেম বলে কিছু নেই (১ম পর্ব)

১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নাম ফুয়াদ। আমার একজন প্রেমিকা ছিল। ঝড়ের মত যার আগমন ঘটেছিল আমার জীবনে। কত প্রশ্ন রেখে গেছে সে আমার কাছে! জীবনটাই এখন একটা বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন! তার মিষ্টি হাসির দোলায় আমি আজও দুলছি। তার কণ্ঠের রোমান্টিক গানের ছন্দে আমি কাঁপছি। তার সেই প্রেম ভরা চাহনির কথা ভেবে আমি চমকিত হই, শিহরিত হই! আমার রক্তের প্রতিটি কণা তাকে নিয়ে প্রতিনিয়ত চিন্তা করে। সে ভাল থাক। তার সত্ত্বার প্রতিটি অংশ সুখে থাক। তার চিন্তার সেই ক্ষুদ্রতম অংশ- যার খোঁজ সে নিজেও জান না, তার প্রতি আমার শত সহস্র শুভকামনা রইল। তাকে আমি ভালবাসি। যদিও সে এখন বিবাহিতা, তবু্ও তার স্মৃতি আমাকে পোড়ায়। আমি পুড়ে পুড়ে অংগার হয়ে যাচ্ছি। তবুও পুড়ছি।

তার নাম পূজা। পূজা সনাতন ধর্মাবলম্বী আর আমি মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি। যদিও ধর্মকর্মের ধার আমি ধারি নি কখনো। কিন্তু পূজা ধর্মের দোহাই দিয়েই আমাকে ছেড়ে চলে গেছি। আমরা দীর্ঘ ৪ বছর লিভ টুগেদার করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে। কিন্তু মাস্টার্স কমপ্লিট না করে পূজা কোন এক পূজার ছুটিতে বাসায় গিয়ে আর ফিরে আসে নি। শুনেছি তার বিয়ে হয়েছে। প্রায় ১১ মাস হলো। একটা মেয়েও নাকি হয়েছে। আমারও পড়ালেখা শেষ। আমি এখন বিসিএস এর প্রিপারেশন নিচ্ছি। আমার জীবন যদিও এখন একটা শুন্য গ্লাস। তবুও আমি বেঁচে আছি, স্বপ্ন দেখছি। একা একা হাঁটছি বারান্দায়, রাস্তায় নির্বিকারভাবে-যেন কেউ আর পরিচিত নেই এই মহাবিশ্বে। কেন আমি আঙ্গুলে জড়াচ্ছি চুল? কিসের আশায়? জীবনের এই গল্পেরতো কোন উপসংহার নেই!

আমরা বোটানিতে পড়তাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। পূজাকে যখন প্রথম দেখি তখন রাত। একটা গিফট শপে ওকে দেখি আমি। অনেক দূর থেকে কে যেন ওর নাম ধরে ডাকছে। মোহগ্রস্থের মত তার কাছাকাছি যাই। কিন্তু কিছু বলতে পারি না। অথচ কত কথা যেন তরঙ্গায়িত হচ্ছিল বুকের ভেতর এবং সে কথা কন্ঠনালীতে এসেও পড়েছিল। ফ্রয়েডিয় বিষন্নতা পেয়ে বসেছিল সে রাতে। গভীর রাতে ঘুম ভেঙে দেখি আমার বন্ধুরা রুমে কেউ নেই। বুঝতে পারি ওরা হলের ছাদে গাঁজা খাচ্ছে। আমি কখনো সিগারেটে টান দেইনি। সুতরাং ছাদে যাওয়া আমার জন্য অতিরঞ্জিত ব্যাপার। তবুও গেলাম। গিয়ে রাহাতের কাছে গাঁজা চাইলাম। সিগারেটে ভরে ওরা মনের সুখে সুখ টান দিচ্ছে। এখন নিমাই চলছে। নিমাই মানে, অনেকে গোল হয়ে বসে একজন অন্যজনের কাছে গাঁজার স্টিক পাস করবে। কিন্তু শর্ত হলে পাশের জনের টান শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত ধোয়া বুকের ভেতর ধরে রাখতে হবে। রাহাত আমাকে নিমাই খেতে নিষেধ করে কিন্তু আমি খাই। এ নেশা পূজার নিটোল দেহের নেশার চেয়ে কড়াতো নয়, ভয় কি!

পরদিন ছিল আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম ক্লাস। মফস্মল থেকে উঠে আসা ছেলে আমি। আমার ব্যক্তিত্বের মধ্যে তত প্রোজেকশন নেই। তবে আমি কিছুটা স্বাপ্নিক। লক্ষণ দেখে মনে হবে যেন আমি কবি। কিন্তু আমি কবি নই। হয়তো চিন্তক। যথাসময়ে ক্লাস শুরু হলো। আমি মনোযোগ দিয়ে ক্লাস করছিলাম। শেষের বেঞ্চে। প্রায় আধা ঘণ্টা ধরে প্রফেসর মাশরুর আমাদের সামনে জীবন ও ক্যারিয়ারের মধ্যে সম্পর্ক ও পার্থক্য নিয়ে জ্ঞানগর্ভ আলোচনা করছেন।
"মে আই কাম ইন প্লিজ, স্যার?" পূজা বলল। "এত দেরী করে ক্লাসে আসার কি অর্থ? এসো।" স্যার বলেন। "সরি স্যার। আমি ভুলে গিয়েছিলাম ক্লাসের সময়টা।" পূজা জবাব দিল।
এ কি! পূজা দাঁড়িয়ে আছে ক্লাসের আউটডোরে। নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। খানিকটা চোখ কচলে দেখলাম, হ্যাঁ পূজাইতো! মেরুন রঙের স্যালোয়ার কামিজে ওকে পরীর মত লাগছিল। ভাগ্যক্রমে ও আমার পাশেই এসে বসল! আমার বুকের ভিতর ধুকপুকানির শব্দ কি ও শুনতে পারছে, শুধু এই চিন্তাই হচ্ছিল তখন আমার। বুঝলে সেটা কি বিদঘুটে ব্যাপার হবে। গাঁজার নেশাটা তখনো পুরোপুরি কাটে নি।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই অক্টোবর, ২০২৪ রাত ১১:৪০
১টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

হাদির হত্যাকান্ড ও সরকারের পরবর্তি করণীয়!

লিখেছেন আহলান, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৫১

হাদির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা। সে দেশকে ভালোবেসে, দেশের মানুষকে ইনসাফের জীবন এনে দিতে সংগ্রাম করেছে। তাকে বাঁচতে দিলো না খুনিরা। অনেক দিন ধরেই তাকে ফোনে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে এসেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব রাজ্যে উত্তেজনা: হাদির মৃত্যুতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ১৯ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৬:৪২

রোম যখন পুড়ছিল নিরো নাকি তখন বাঁশি বাজাচ্ছিল; গতরাতের ঘটনায় ইউনুস কে কি বাংলার নিরো বলা যায়?



বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদটি সবসময় ছিল চ্যালেঞ্জিং।‌ "আল্লাহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্টেরিম সরকারের শেষদিন : গঠিত হতে যাচ্ছে বিপ্লবী সরকার ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:২২


ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়াকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার আন্তঃদেশীয় প্রকল্পটা সফল হতে অনেক দিন লেগে গিয়েছিল। বাংলাদেশে সে তুলনায় সংশ্লিষ্ট শক্তিসমূহের সফলতা স্বল্প সময়ে অনেক ভালো। এটা বিস্ময়কর ব্যাপার, ‘রাষ্ট্র’... ...বাকিটুকু পড়ুন

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×