
ইচ্ছার পূর্ণতা প্রাপ্তি।
scenario টা এমন যেখানে দেয়াল জুড়ে বিশাল জানালা। interior চমৎকার। সিটগুলো মুখোমুখি। খুব ক্ষীন ভাবে ট্রেনের ঝিকঝিক শুনা যায়। দেশের মত প্রকট না। কারণ সাউন্ড প্রুফ করা হয়তো বা কামরাগুলো। প্রতিবার যখনই এই এক জেলা শহর থেকে অন্য জেলা শহরে ভ্রমণ ট্রেনে ভ্রমণ করি মনে মনে ভাবি সামনে তুমি বসে আছো।
কিন্তু এই ভাবনা যে বাস্তবে পূর্ণতা প্রাপ্তি পাবে তা কি জানতাম?
সেদিন আসছি রাত ৯টার আন্ডারগ্রাউন্ড ট্রেনে। টরোন্টো শহরের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তার পাশ ঘেঁষে বয়ে চলেছে অন্টারিও লেক। সেখানে আমার বাড়ি।ট্রেনে পৌঁছাতে লাগবে ১ ঘন্টা। এইসব ট্রেনের কামরা সাউন্ড প্রুফ না। জানালাগুলোও তেমন বড় না। চাকার সাথে রেল ট্র্যাকের সংঘর্ষে প্রচণ্ড শব্দ তৈরী হয় যা, কানের ভেতর ভোঁ ভোঁ করে উঠছে প্রায়ই। এ শব্দ সুস্থ মানুষকে বধির করে দেবার জন্য যথেষ্ট।
শীতের রাত না হলেও শীত আসন্ন । টরোন্টো শহর যেখানে রাত ৮টায় ঘুমিয়ে পড়ে সেখানে রাত ৯টায় আমার ট্রেন জার্নিটা বেশ রাতে হচ্ছে বলা চলে। এখন সেপ্টেম্বর মাস। শরতের বাতাসের ঝাপটা আর ঝলমলে দিন এবং ঝকঝকে রাতের পরিষ্কার আকাশ মনকে সবসময় ফুরফুরে রাখে।
ট্রেনের কামরায় প্রবেশ করেই দেখলাম চেয়ারগুলো L – shaped. একদিকে বসলে অন্যজনকে L এর কোণাকুনি বরাবর দেখা যায়। সিটে বসেই সামনে তাকিয়ে দেখি আমার সেই বন্ধুটি। জুয়েল। যাকে আমি কল্পনা করি আমার সাথে সবসময়, যখনি ট্রেন জার্নি করি। শুধুমাত্র ট্রেন যাত্রায়। অন্য সময় এত মিস করি না ওকে। কিন্ত এখন যে জুয়েল আমার সামনে বসা!
কিভাবে সম্ভব?
এখানে তো সে থাকে না।
আজ সেপ্টেম্বরের ১৮ তারিখ। ২০২৫
তার আসবার কথা না টরোন্টোতে। আসলে আমি তো জানতাম।
তাহলে ও যদি নাই –ই হয়, তাহলে এ কে?
একদম সেই চেহারা। ফার্স্ট ইয়ারে যেমন দেখেছিলাম। বর্তমানে যে তার খুব একটা পরিবর্তন হয়েছে তা নয়। কিন্তু সেই ১৯৯১ সাকলেরই তো চেহারায় ১৮/১৯ এর ছাপ ছিল। এই ছেলেটিরও তাই।
বেশ কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলাম।
দেখলাম।
সে তার গান শোনায় নিমগ্ন। ইচ্ছে করলো, যে বলি, ‘আপনার একটি ছবি তুলতে পারি? আপনাকে আমার একজন বন্ধুর সাথে খুব মিল পাচ্ছি।’
তারপর মনে হলো, না থাক।
এক ঘন্টার পথ। দীর্ঘ পথ পরিভ্রমণ যেন একসাথে আজ জুয়েলের সাথে।
কিভাবে সম্ভব?
এ যে জুয়েলের সেই ছোটবেলা যে আমার সামনে বসা ।
পাক্কা একটি ঘন্টা ধরে ট্রেনে বসে আমি তার সাথে। আমাকে চেনে না সে। চিনলে তো তাকাতো। কিন্তু আমি যে চিনি। আজ আমার সামনেই সেই বন্ধুটি আমার। যাকে মনে মনে চাইতাম আমার সাথে ট্রেন যাত্রার সঙ্গী হোক। দূর পথের ভ্রমন হলেই কেন জানি তাকে মনে পড়ে।
আজ আমার চাওয়ার, আমার ইচ্ছার Manifestation হলো। প্রকৃতি যেন আমার প্রাণের বন্ধুটিকে এনে হাজির করেছে আমার সামনে। আমার মনের ইচ্ছা আজ পূর্ণতায় প্রাপ্ত হলো।
২০.০৯.২০২৫
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:২০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



