১
গত কিছুদিন,
ঠিক রাত সাড়ে তিনটায়-
আমার ঘুম ভেঙে যায়,
দরজায় ঠক ঠক কড়া নাড়ে আগন্তুক
আমি বিবশ বিস্ময়ে
দরজা খুলে সামনে দাঁড়াই,
তার চোখের পাপড়িতে প্রান্তরের সঙ্কেত
আমি বাতি জ্বালি না,
তবু পরিস্কার বোঝা যায়
কপালখানা ক্লান্ত,
ডুবে যাওয়া শতাব্দীর মত
সরোবরের তৃপ্ত চোখ,
ঝর্ণার মত নেমে এসেছে স্বাধীন শ্মশ্রু
আমি ভূত দেখার মত চমকে উঠি!
আমি আমাকে দেখে চমকে উঠি-
যে হেঁটেছিল পথ পৃথিবীর পথে পথে!
২
ইচ্ছে করে নিজেই নিজের গল্পের কোনো চরিত্র হয়ে যাই, ধুপ করে শেষ করে দেই এইসব ফানুস দিনলিপি, কাগজের ফুল আর বেসুরো শব্দ, সে যাই হোক একমাত্র অধিকার, ছারপোকা সহবাসে তৃপ্তি পাক বোকা কেরানির দল, হিসেবের ভাঁজে ভাঁজে খুঁজে নিক বাদুড়ের প্রেম, আমি তবু ভর দুপুরেই বাজিয়ে দেব সাঁঝের ঘন্টা, অন্ধকারে আমার ভীষন ভয়, ভয় পেতে আমার ভীষন ভয়, তবু হে ছন্নছাড়া বেকুব বালক, জীবনের কাছে যে কয়টা রঙ পেন্সিল আর ঘর পালানো মেঘ পাওনা থাকে থাকুক, খুব দেরি নয়, বাজিয়ে দেব ঘন্টা, চালিয়ে দেব ছুরি, জীবনের কন্ঠনালি বেয়ে গলগল মুক্তি পাবে রক্তল উল্লাস, ভীতু সিংহের থাবাতেও যদি হরিণীর শীৎকার, দেখ তবে আমিও বাজিয়ে দেব ইস্রাফিলের শিঙা, আমার হাসিতে ঝর্ণা নামেনি কখনো, তবু আমার অশ্রু কাঁচের নয় সুনিশ্চিত!
৩
কিছু কবিতা হয় আনকোরা অদ্ভুত,
সকালের সেই আলোর মত,
যে ঠিক খুজে নেয় আধঘুম চোখ!
‘আমি আর কখনো জেগে উঠতে চাই না’
কোমল শয্যায় এই কথা যে অর্থহীন দুঃখবিলাস-
সেই কথা মনে করিয়ে দেবার মত কিছু আলো, কিছু কবিতা!
আরো একটা দিন তাহলে বেঁচে থাকা যায় অশ্রু বেচে- কী বল?!
আমাদের শিরায় এখনো রক্তল নদীরা মরে নি,
আকাশগঙ্গার সব নক্ষত্র বশ্যতা মানেনি কৃষ্ণ গহবরের
সুতোকাটা ঘুড়ির পেছনে উড়ে যায় নতুনের দল,- এখনও এই পৃথিবীতে-
কষ্ট পেলে মেঘ হতে ইচ্ছে করে কিশোরীর
ভালোবাসাটুকু ঢোক গিলে মমি হতে জানে বেকার যুবক, .
প্রেমিকার বিয়েতে বিষফুল লাগে সুন্দর।
আর আমার, দুলাইন কবিতা হতে ইচ্ছে করে সন্ধ্যা হলেই
আর আমার, এখনো বেঁচে থাকতে ইচ্ছে করে-
সেই দুটি চোখের জন্য!
সেই তার জন্য- যাকে দুঃখ দিয়ে,
জেনেছি- মৃত্যু হবে মুক্তি একদিন!
বেঁচে থাকাটা ছিল মৃত্য সেইদিন!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে নভেম্বর, ২০১৪ দুপুর ২:৫৭