somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

‘মানুষ সামাজিক জীব’ - ভাবতেই ঘৃণা লাগে

২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



মানুষ সামাজিক জীব, মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বাস করতে পছন্দ করে, অনেকগুলো মানবিক উদ্দেশ্য সামনে নিয়ে মানুষ সমাজবদ্ধ হয়েছে........ ইত্যাদি লেখা আমরা ছোটবেলা থেকে পড়ে আসছি। বিশেষ করে সমাজ বিজ্ঞানে এসব নিয়ে বেশি পড়েছিলাম।
দার্শনিকরাও এসব মতবাদ কম জানেন না। টমাস হবস, জন লক, জ্যাঁ জ্যাক রুশো ছিলেন সামাজিক চুক্তি মতবাদের প্রবক্তা।.......... কিন্তু লাভটা কি হলো?


[The Greek Fighting Style]

কিন্তু এতো এতো পড়ার পরেও মানুষ সামাজিক হতে পারেনি। সামাজিক হতে গিয়ে নিজেরা নিজেদের মত করে আলাদা আলাদা সমাজ, গ্রুপ, ধর্ম, গোত্র, বংশে ভাগ হয়ে গিয়েছে। একটা ধর্মের ভিতরেও আরো কয়েকটা গ্রুপ তৈরি করা হয়েছে। এসব নিয়ে মারামারি, হানাহানি, কাটাকাটি সহ হাজাররকম ফেৎনা- ফাসাদে জড়িয়ে পড়েছে। তারপর যখন সাম্রাজ্যবাদী চিন্তা শুরু হলো, সে তো অন্যরকম ভয়ানক কাহিনী। তাকেও মানুষ ধর্মকেন্দ্রিক সাম্রাজ্যবাদী নীতিতে জড়িয়ে ফেলেছে। ‘আমার ধর্ম শ্রেষ্ঠ’, বলে অন্যধর্মের শান্তিপ্রিয় মানুষদের উপর বীরদর্পে আক্রমণ করেছে। হাজার হাজার গ্রাম, জনপদ, এমনকি অনেকগুলি রাষ্ট্র ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে ছেড়ে দিয়েছে। কোটি কোটি মানুষকে ধর্মের নামে ঘাড় থেকে মাথা নামিয়ে দেয়া হয়েছে, আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে, তাদের সন্তানদের পিতৃহারা করা হয়েছে, মাতৃহারা করা হয়েছে, বাস্তুহারা করা হয়েছে, পঙ্গুত্ব বরণে বাধ্য করা হয়েছে, যে বয়সে বাচ্চাদের স্কুলে যাওয়ার কথা ছিলো সে বয়সে তাদের ভিক্ষাবৃত্তিতে করতে বাধ্য করা হয়েছে। নারীদের যৌনদাসী হতে বাধ্য করা হয়েছে, পুরুষদের বাধ্য করা হয়েছে গোলামীতে।

পৃথিবীতে কোন ধর্ম কোন ধর্মের চেয়ে কম ছিলো না এসবে। ইহুদি, খৃষ্টান, মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধসহ সব ধর্মই নিজেদের ‘শ্রেষ্ঠ মতবাদ’ জোরপূর্বক চাপিয়ে দিয়েছে। কেউ না মানলে তার জন্য ‘শ্রেষ্ঠ অমানবিক শাস্তি’ তো ছিলই। একসময় রাজাকেন্দ্রিক শাসনব্যবস্থা ছিলো, যাকে একনায়ক বা স্বৈরশাসন বলে বর্তমানে জানতে পারি। সেসময়ের অবস্থাও একেবারেই নাজেহাল ছিলো। রাজা নিজের ধর্মকে অন্যের উপর চাপাতে অলসতা করতেন না। না মানলে প্রজাদের উপর খাজনার হার বেড়ে যেত।

এরকম হাজারো কাহিনী প্রাচীন যুগ থেকে ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত ছিলো এক রকম। আধুনিক যুগে এসে তা আরো আধুনিকভাবে প্রয়োগ হয়েছে। প্রাচীন যুগে ‘তীর, তলোয়ার, বর্শা, পাথর, আগুন’ এসব ছিলো প্রধান হাতিয়ার। কিন্তু আধুনিক যুগে এসে তা একেবারেই পরিবর্তন হয়ে পারমাণবিক অস্ত্রে রূপ লাভ করেছে। আগে এক তীর দিয়ে একজনের প্রাণ যেত, কিন্তু এখন একটা বোমা দিয়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে শেষ করে দেয়া যায়। মানুষ আধুনিক হয়েছে। গোত্র, রাজ্য, সাম্রাজ্য থেকে রাষ্ট্রে রূপ লাভ করেছে। পাশাপাশি ফেৎনা-ফাসাদও আধুনিক হয়েছে। ঘোড়ার পিঠ থেকে সৈনিকরা চলে গেছে বিমানে, তীরের বদলে বুলেট, পাথরের বদলে বোমা। বাহ, কেয়া বাত।

হাজার বছর পরেও শিশুরা পড়বে ‘মানুষ মানবিক উদ্দেশ্য সামনে রেখে সমাজবদ্ধ হয়েছে’। বাহ।
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩
৫টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গণতন্ত্র আর বাক-স্বাধীনতার আলাপসালাপ

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৪:২৩


একাত্তর সালে আওয়ামী লীগের লোকজন আর হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা ছিল পাকবাহিনীর প্রধান টার্গেট। যদিও সর্বস্তরের মানুষের ওপর নিপীড়ন অব্যাহত ছিল। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা আর তাদের পরিবারের... ...বাকিটুকু পড়ুন

কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:১৩

ফেসবুকে বাঙালিদের মধ্যে ইদানিং নতুন এক ফতোয়া চালু হয়েছে, এবং তা হচ্ছে "দাওয়াতের নিয়্যত ছাড়া কাফের কুফফারদের দেশে বাস করা হারাম।"
সমস্যা হচ্ছে বাঙালি ফতোয়া শুনেই লাফাতে শুরু করে, এবং কোন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×