somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-৫

১৭ ই ডিসেম্বর, ২০০৮ রাত ১০:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আগের পর্বগুলার লিংক পোস্টের শেষে ।
---------------------------------------------------
আফনে কে ? দেখলাম না তো এতদিন । দেখার ইচ্ছা থাকলেই না দেখতেন । তরুণীর কন্ঠে হালকা রহস্যের সুর । আমার জীবনের মেয়েরা এমন রহস্য করা সপ্রতিভ নয় । হয় অতি মায়ায় নিশ্চুপ অথবা খালেদার মত পুরা খানকি । ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে চুপ করে আছি । মেয়ে বলে বন্ধুর ভাইবোন কয়জন সেইটাও জানেন না কেমন বন্ধু হৈলেন । মাহবুবের এমন নিঃস্বার্থ টানের বিপরীতে ওরে নিয়া আমি তেমন আগ্রহ দেখাইনাই তাই একটু খারাপই লাগলো । যা বলার সে আগ বাড়িয়ে বলেছে , যা শুনার সে নিজে জিজ্ঞসাসা করেই শুনেছে । ও আচ্ছা আপনি তাইলে মাহবুবের বোন । বলে আমি হাত ধোয়ার জন্য বাইর হৈতাছি এমন সময় মেয়ে সাবান এগিয়ে দেল । চোখে চোখ পড়ায় আমি আঁৎকে উঠলাম । ধারণা ছিল এমন চোখ পৃথিবীতে এক জোড়াই আছে । গভীর রাতে মাঝে মাঝে রেললাইনে বইসা হাত মারতাম । চাঁদহীন রাইতের সেই কুচকুচে কালো অন্ধকারের চাইতেও কালো মায়াময় একজোড়া চোখ । বেশিক্ষণ তাকাইয়া থাকতে নাই ঐগুলার দিকে । হারায়া যাবার ভয় শতভাগ ।

এই একমাসে হয়ত জানা যাইত মাহবুবের কাছ থাইকা । ওর পরিবারের টুকটাক । কিন্তু বেচারা দাওয়াতে দাওয়াতে কাহিল হৈয়া ছিল । আর আমিও সবকিছু ভুইলা থাকার জন্য চারধারে ইউক্যালিপ্টাস গাছ লাগানো বড় বাইরের পুকুরের পাড়ে গিয়া বৈসা থাকতাম অলস সময়ের বেশিরভাগ । খাওয়া দাওয়া সব মাহবুবের ছুড বৈন দুইটাই নিয়া আসত বৈঠকখানায় । পিচ্চি দুইডা মারাত্নক শিক্ষকভক্ত । ভাত খাইতে দিয়া দাড়ায়া থাকত কখন কি লাগে সেগুলা সাপ্লাই করার জইন্য । চতুর্থ কারো সাহায্য এই বাড়ীতে কখনোই লাগে নাই এই একমাসে ।

এর মইধ্যে বাড়িতে চিঠি দিয়া আমার মোটামুটি সব অবস্থা জানাইছি । কারোরে জানানোর তেমন গরজ ছিল না । তয় মা বুড়ি আর কুলসুমার জন্য জানাইতে হৈল । কুলসুমারে আলাদা কৈরা জানানোর দরকার ছিল না । বাড়িতে খবর পাঠাইলে ও যে আমার ভাইগুলার আগে সেই খবর পাইব সেইটা নিশ্চিত ।

মাহবুব চইলা যাবার পর বাড়িটা কেমন যেন ঝিম মাইরা থাকে সারাদিন রাইত । আয়েশা এখন আর আগের মত ছায়ার মত নাই । পাইন্জম জামাতের উর্দু বই নিয়া মাঝে মইধ্যে সন্ধ্যাবেলা আসে । এইটার অর্থ কি ঐটার ব্যাখ্যা কি । বুঝাইয়া দিতে আমার অসুবিধা নাই । তয় পেরায়ই মনে হয় হাচাই কি বুঝে না নাকি খালি জিগানির লাইগা আসে । এমনিতে দেখি অনেক কিছু পারে । মাথা ভালা মেয়ের ।

এইরকম চলতেছিল ভালাই । হঠাৎ একদিন অনেক কিছু উল্টাপাল্টা লাইগা যায় । পিচ্চি দুইডা সন্ধ্যা না হৈতেই শুরু করে ঝিমানি । তাও কুনোরকমে ধইরা বাইন্ধা আধাঘন্টা চল্লিশ মিনিটের মত কোনরকমে রাখি । এইরকম শেষসময়ে দুইটা বই নিয়া হাজির হয় আয়েশা । পিচ্চি দুইডা এরই মইধ্যে টৈলা পড়ে প্রায় । আয়েশা আইসা বলে যা বিছনাত গিয়া ঘুমা । দুইডার কুনোদিকে খেয়াল না থাকলেই এই কথাডা যেমনেই হোক শুনে এবং টলতে টলতে চলে যায় । একটা আয়াতের অর্থ লেইখা দিতে বলে আয়েশা । আমি কই ঠিকাছে আমি কৈতাছি তুমি লেখ । না হুজুর, আফনে লিখা দেন । কলম বের করতাছি কয় এইটা দিয়া লেখেন এইটার কালি সুন্দর । কলম দিতে গিয়া আমার হাত ধইরা ফেলে । আমি টাশকি খায়া বোবা হৈয়া যাই । গরীবের মেয়ে কুলসুমার চোখে হাজার দীঘির মায়া থাকলেও হাত রুক্ষ পাত্থরভাঙা শ্রমিকের মত । খালেদার হাত ধরা হয় নাই কখনো । দুধই ধরা হৈছে খালি । এইরকম কোমল হাত জীবনে এই পরথম । পুরা শরীরে কারেন্ট খেইলা যায় আমার । ছাড় বৈলা ছিটকাইয়া বাইরে বাইর হৈয়া যাই আমি ।

বাইরে পুকুর পাড়ে জুনিপোকাদের ঝোপের পাশে বইসা আমি বারবার নিজের মনের ভিতরে জন্মানো কুকল্পনাগুলারে ধমকাই । জীবনে অনেক দুস বন্ধু ছিল । দরকারে কাউরে পাওয়া যায় নাই । মোন্তাজির ছিল । ফিলিস্তিনে মরতে চইলা গেল । এই মাহবুব যারে একসময় বিরক্তির মত মনে হৈত । সেই আমার সবচে প্রয়োজনের সময়ে প্রত্যাশার চাইতেও অনেক বড় আশ্রয় হৈছে । মাহবুবের মা । নিজের পুলার চাইতে কুনোরকমে কমতি করেন নাই । মাহবুব যখন চৈলা যাইব তখনো দুইজনের পাতে সমান জিনিস তুইলা দিছেন । পিচ্চিগুলারে সেইভাবে বইলা দিছেন । আমি নিজে শুইনা ফালাইছি কয়েকদিন ।এই পরিবারের উপর এত বড় নিমকহারামি আমি করতে পারমু না ।

সপ্তাহখানেক পরে আবার একই সময়ে আসে আয়েশা । পিচ্চিগুলারে চইলা যাবার পর যেই আমার সামনে বই খুলতাছে আমি সোফা থাইকা উইঠা বাইর হৈতে গেলাম । আমার হাত টাইনা ধৈরা ফেলল । আবার সেই কোমল হাতের ছোঁয়ার কথা ভাবতে সেকেন্ডখানেক থামলাম । তাতেই শরীর আমার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করল । দুইহাতে আমাকে জড়িয়ে ধরে আয়শা বাড়িতে লোকজনের আনাগোনা নাই বল্লেই চলে । মাহবুবের মা এখনো স্বাভাবিক হৈতে পারেন নাই । রাইত হৈকেই কানতে বসেন ঘটা কৈরা । কানতে কানতে প্রায়দিন ঘুমাইয়া পড়েন । সব দেইখাই আসছে মেয়ে । আর তাছাড়া প্রেমে পড়লে মেয়েরা আত্নঘাতী হৈতেও বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেনা শুইনা আসতাছি অনেক আগে থাইকাই । কুলসুমারেও তো দেখলাম ।

আইজ আয়েশার চোখে সেদিনের মত রহস্য নাই । বরং কি এক গভীর দুঃখ । আমাকে জড়াইয়া ধইয়া ঝরঝর কৈরা কাইন্দা দিল মেয়ে । আওয়াজ নাই । সাবধানী কিন্তু গভীর দুঃখি বিড়ালিনীর মত অঝোরে কেঁদে চলছে মেয়ে । কান্নার বেগ বাড়ে আর আমারে জড়াইয়া ধরা বাঁধন শক্ত হয় । বেকুবের মত দাঁড়িয়ে আছি । হাত দুইটা দুইপাশে ঝুলানো । নাকে অচিন দ্বীপের গন্ধ । মেয়ের সুগন্ধি চুল । অপরাধবোধ , হতভম্ভবোধ এতসবের মাঝখানেও ধোন শক্ত । আরেকটু জোরে ধরার পরই গেল পইড়া । ছিঃ আয়েশা । ইন্নালিল্লাহ বলে আমি ঝটকা মেরে মেয়ের দুর্বার বাঁধন ছিড়ে বেরিয়ে যাই ।

পালাতে হবে ।
--------------------------------------------------
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-৪ Click This Link
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-৩ Click This Link
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-২ Click This Link
কওমি হুজুরের এক হাত ঘুরা আত্নকাহিনী-১ Click This Link
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০১০ রাত ১০:৩৮
৬টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×