somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নিকট খোলা চিঠি ৫

২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আস সালামু আলাইকুম। এ অধমের গোস্তাকি মাফ করবেন। আমি জানি এ সময় আপনি খুবই ব্যস্ত ও উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন। কারণ, করোনায় সমস্ত পৃথিবী তছনছ করে ফেলছে। আমাদের দেশে করোনা ভাইরাস ক্রমেই ঘাড়ে,চেপে বসছে। আপনি নিশ্চয়ই জানেন করোনা আনুবীক্ষণিক অতি ক্ষুদ্র জীব। যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন তিনিই করোনা ভাইরাস সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ পাক মানুষের মরনের জন্য রোগ, বার্ধক্য, দূর্ঘটনা, ঝড়, তুফান, ভূমিকম্প ইত্যাদি নানা ধরনের প্রাকৃতিক উপলক্ষ্য গ্ৰহন করেন। কখনো কখনো এক মানুষ দিয়ে অন্য মানুষকে হত্যা করেন। এক দেশ দ্বারা অন্য দেশ আক্রমন করান এবং ক্ষতিগ্ৰস্থ করেন। পবিত্র কোরআনে উল্লেখ আছে হযরত মূসা (আঃ) কে অবিশ্বাস ও অমান্য করার কারণে ফেরাউনের দেশ মিশরে দশটি প্রাকৃতিক গজব যেমন অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, শীলাবৃষ্টি ,ঝড়-তুফান-,প্লাবন, মশা-মাছি, ভেক, পঙ্কপাল, অভাব-অনটন, দুর্ভিক্ষ, মড়ক-মহামারী ইত্যাদি দিয়ে সতর্ক করেছিলেন। যাই হোক, আমি পূর্বের আলোচনায় ফিরে যাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বিশ্বব্যাপী যে আযাব গজব চলছে তা এমনিতে আসে নাই। এটা আমাদের কৃতকর্মের ফল। ঈমানে মুফাচ্ছেরে আছে "ভালো ও মন্দ আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে।" কি কারণে সারা বিশ্ব গজবে নিপতিত হয়েছে তা খুঁজে দেখা দরকার ও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মানুষের এই বিপদেও যারা বস্তায় বস্তায় চাল চুরি করে তারা কি আদৌও মানুষ ? এরা আপনাকে বিতর্কে জড়িয়ে ফেলে মানুষের সমালোচনার পাত্র হিসেবে দাঁড় করাতে চায়। কাজেই এদের বিরুদ্ধে কঠোর হোন। করোনা মোকাবেলায় যে সমস্ত পদক্ষেপ আপনি নিয়েছেন তা সঠিক হয়েছে। আপনাকে করোনা পরবর্তী অবস্থার জন্য এখনি সঠিক পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ব্যাপারে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিন। এ অধম গোলামের বেয়াদবি মাফ করবেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ধর্ম মানুষের বানানো কোন বিধান নয় যে এটাকে এড়িয়ে চলা যাবে কিংবা তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা অথবা বাদ দেয়া যাবে। এটা হলো মহান আল্লাহ পাক প্রদত্ত বিশ্ববাসীর জীবন পরিচালনার সংবিধান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, শুধুমাত্র একটা সংবিধান দ্বারা যেমন একটা দেশ বা একটা জাতি অথবা একটা দল সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে চলতে পারে না একজন নেতার প্রয়োজন, তেমনিভাবে একটা সত্য ও সঠিক ধর্ম সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে একজন নেতা ছাড়া চলতে পারে না। পৃথিবীর সকল ধর্মই একজন মানুষের মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে। যে আদর্শ মানুষের মাধ্যমে ধর্মটা প্রচারিত সে-ই ঐ ধর্মের নেতা। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মানুষ মরণশীল । ধর্ম প্রচারক বা ধর্মীয় নেতা মারা যাওয়ার পর ধর্মগুরুরা যতদিন ঐক্যবদ্ধভাবে একমত পোষণ করে ধর্ম পালন করে ততদিন পর্যন্ত ধর্ম সঠিক থাকে। তখন মানুষ ধর্ম পালন করে আনন্দ পায় । আবার যখন ধর্মগুরুরা মতানৈক্যের কারণে ভিন্ন ভিন্ন দলে ও মতে বিভক্ত হয়ে যায় তখন মানুষের মনে ধর্ম সম্পর্কে সন্দেহ জাগে এবং ধর্ম ত্যাগ করে। ফলে আস্তে আস্তে ধর্মে সন্দেহ পোষণকারীদের দল শক্তিশালী হতে থাকে এবং ধর্মগুদের দলের শক্তি কমতে থাকে । এভাবে ধর্মগুরুরা দেশের মধ্যে মানে সম্মানে, ধনে জনে, প্রভাব প্রতিপত্তিতে, ক্ষমতা শক্তিতে সব চেয়ে নীচের দিকে থাকে। এক পর্যায়ে ধর্মগুরুরা ধর্মকে পেশা হিসেবে বেছে নিতে বাধ্য হয়। এতে ধর্মের মালিক তাদের ওপর অসন্তুষ্ট হন এবং তাদের পরমুখাপেখক্ষীতা ও দরিদ্রতার কষাঘাতে বেঁধে ফেলেন। এটা তাদের ওপর আল্লাহ পাকের অভিশাপ কিন্তু তারা বুঝে না। সারা বিশ্বের ধর্মগুরুদের দিকে একবার তাকিয়ে দেখলেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। বর্তমান পৃথিবীতে আজ এমন কোন দেশ আছে কি যেখানে ধর্মগুরুরা উচ্চতর কোন পদে বা ক্ষমতায় আসীন আছে? আমাদের শেষ নবী ও তার সাহাবীগণ দেশের সর্বোচ্চ আসনে ছিলেন কিনা? তারা দুনিয়াতেও মান সম্মান ও মর্যাদা ক্ষমতায় শীর্ষে ছিলেন এবং আখেরাতেও উচ্চতর মর্যদায় থাকবেন। এর কারণ এই যে, তাদের ওপর আল্লাহ পাক সন্তুষ্ট ও রাজী খুশী ছিলেন।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকল কাজকর্ম দেখেন। আল্লাহ পাকের ভয়ে ধর্মের সঠিক পথটি বেছে নেয়া ও আন্তরিকভাবে তা পালন করা আমাদের সার্বিক দ্বায়িত্ব। দেশের প্রধান হিসেবে প্রায় আঠারো কোটি মানুষের দায়িত্বও আপনার ওপর বর্তায়। মূসলমানগণ আজ শত শত দলে বিভক্ত। এতগুলো দলের মধ্যে কোনটি সঠিক তা কেউ জানে না। এর নামই ধর্ম জগতে অন্ধকার। কোন কোন মানুষ আছে যারা মনে করে আমরা কোন দলে নাই; আমরা নামাজ, রোজা, হজ্জ, যাকাত, ঈদ, কোরবানি ইত্যাদি ধর্মানুষ্ঠান পালন করি, ব্যাস আর আমাদের দরকার কি? এই ধরনের কথা বলার বহু লোক আছে। এরাও একটা দল। নিজের মতো করে কিংবা নিজের মনে যা বলে তা পালনের নাম ধর্ম নয়। আল্লাহ পাকের রাজি- খুশি মতো চলার নামই ধর্ম। বর্তমানে মুসলমানগণ শত শত ভাগে বিভক্ত। যদি আল্লাহ শত শত ভাগে বিভক্ত এবং পরষ্পর ঝগড়া বিবাদে, মারামারি, খুনাখুনি ইত্যাদিতে লিপ্ত মুসলমানদের সকল ভাগের ওপরই রাজিখুশি থাকেন তাহলে কি আল্লাহ পাক নিজেই ঝগড়া বিবাদ, মারামারি খুনাখুনি পছন্দ কারী হন না? তাহলে নাস্তিকরা তো বলতেই পারে- "যে আল্লাহ ঝগড়া বিবাদ মারামারি খুনাখুনি পছন্দ করে এমন আল্লাহকে বিশ্বাস করে আমরা ঝগড়া বিবাদ সৃষ্টিকারী হতে চাই না। আমরা যেমন আছি তেমনি থাকতে চাই।" কাজেই, যে কাজের দ্বারা স্বয়ং আল্লাহ দোষী সাব্যস্ত হন,
এমন কাজ ধর্মীয় কাজ হতে পারে না। সুতরাং এক ইসলামকে ভেঙ্গে যারা শত শত দলে বিভক্ত করেছে তারা সকলেই আল্লাহর কাছে দোষী। তাছাড়া আল্লাহ পাক ধর্মে অনৈক্য, ঝগড়া, দলাদলি ফেৎনা ফ্যাসাদ ইত্যাদি সাম্প্রদায়িকতা সৃষ্টি করা জোরালোভাবে নিষেধ করেছেন। যেমন আল্লাহ বলেছেন, " ধর্মে ফেৎনা ফ্যাসাদ সৃষ্টি করা হত্যা অপেক্ষা জঘন্যতম অপরাধ", "তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধর এবং পরষ্পর দলে দলে বিভক্ত হয়ো না",(৩:১০৩), "তোমরা দ্বীন প্রতিষ্ঠা কর এবং তাতে অনৈক্য সৃষ্টি করো না(৪২:১৩)", "নিশ্চয়ই যারা স্বীয় ধর্মকে খন্ড বিখন্ড করেছে এবং অনেক দল হয়ে গেছে তাদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক নেই (৬:১৫৯)" ইত্যাদি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, পবিত্র কোরআনের এ আয়াত গুলোর আলোকে বর্তমান আলেম ওলামা, পীর বুজুর্গ, মোফাচ্ছের ,মোহাদ্দেস, হাফেজ কারী, ওয়াজীনদের কার্যক্রম মিলিয়ে দেখলে তারা কি কোরআন মান্যকারী হন নাকি অমান্যকারী হন? অবশ্যই আল্লাহ পাকের এই আদেশ অমান্য করে এসব ধর্মগুরুরা ধর্মকে খন্ডে খন্ড বিভক্ত করেছে এবং আল্লাহ পাকের সুস্পষ্ট ও সহজ বোধগম্য আদেশ লংঘন করেছে। অন্য দিকে একই কোরআন হাদিস দিয়ে এক আলেম অপর আলেমকে, এক পীর অন্য পীরকে, এক ওয়াজিন অন্য ওয়াজিনকে, এক মোফাচ্ছের অন্য মোফাচ্ছেরকে, এক মোহাদ্দেস অপর মোহাদ্দেসকে, এক মুফতী অন্য মুফতীকে কাফের, বেদ্বীন, ভ্রান্ত বলছে। ছহি হাদিসে আছে "কেউ যদি কাউকে কাফের ফতোয়া দেয় তাহলে যাকে কাফের ফতোয়া দেয়া হলো সে কাফের না হলে ফতুয়া দানকারী অবশ্যই কাফের হবে ।" কাজেই আলেম ওলামাগণ কোন অবস্থায় চলে গেছে তা সহজেই বুঝা যায়। ধর্মের এই অন্ধকার অবস্থায় আল্লাহ পাকের হস্তক্ষেপ ছাড়া পথহারা মানুষ কিছুতেই পুনরায় সঠিক পেতে পারে না।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, দয়া করে এ অধমের ওপর রাগ করবেন না। এ লেখার মধ্যে যে কোন ভুল ত্রুটির জন্য এ অধম ক্ষমা প্রার্থী। আজ এ পর্যন্তই। আল্লাহ পাক আপনাকে ভালো রাখুন, সুস্থ রাখুন, আমিন

ইঞ্জিনিয়ার বেলায়েত হোসেন
সেক্রেটারি
বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি আহবায়ক সমিতি

খোলা চিঠি ১

খোলা চিঠি ২

খোলা চিঠি ৩

খোলা চিঠি ৪
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে এপ্রিল, ২০২০ বিকাল ৪:৫৬
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

চাঁদগাজীর মত শিম্পাঞ্জিদের পোস্টে আটকে থাকবেন নাকি মাথাটা খাটাবেন?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:৫৭



আমাদের ব্রেইন বা মস্তিষ্ক কিভাবে কাজ করে লেখাটি সে বিষয়ে। এখানে এক শিম্পাঞ্জির কথা উদাহরণ হিসেবে টেনেছি মাত্র।

ধরুন ব্লগে ঢুকে আপনি দেখলেন, আপনার পোস্টে মন্তব্যকারীর নামের মধ্যে "জেন একাত্তর" ওরফে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টি দিল্লী থেকে।

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:১৫


((গত ১১ ডিসেম্বর ধর্মীয় উগ্রবাদ ও জঙ্গী সৃষ্টির ইতিবৃত্ত ১ শিরোনামে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম। সেটা নাকি ব্লগ রুলসের ধারা ৩ঘ. violation হয়েছে। ধারা ৩ঘ. এ বলা আছে "যেকোন ধরণের... ...বাকিটুকু পড়ুন

=আকাশে তাকিয়ে ডাকি আল্লাহকে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০১


জীবনে দুঃখ... আসলে নেমে
শান্তি গেলে থেমে;
আমি বারান্দায় দাঁড়িয়ে হই উর্ধ্বমুখী,
আল্লাহকে বলি সব খুলে, কমে যায় কষ্টের ঝুঁকি।

আমি আল্লাহকে বলি আকাশে চেয়ে,
জীবন নাজেহাল প্রভু দুনিয়ায় কিঞ্চিত কষ্ট পেয়ে;
দূর করে দাও সব... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের হাদিকে গুলি করা, আর আওয়ামী শুয়োরদের উল্লাস। আমাদের ভুল কোথায়?

লিখেছেন তানভির জুমার, ১৪ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:৫৩



৩০ জনের একটা হিটলিস্ট দেখলাম। সেখানে আমার ও আমার স্নেহের-পরিচিত অনেকের নাম আছে। খুব বিশ্বাস করেছি তা না, আবার খুব অবিশ্বাস করারও সুযোগ নাই। এটাই আমার প্রথম... ...বাকিটুকু পড়ুন

এ যুগের বুদ্ধিজীবীরা !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ১৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১:৪০


ডিসেম্বর মাসের চৌদ্দ তারিখ বাংলাদেশে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। পাকিস্তান মিলিটারী ও তাদের সহযোগীরা মিলে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে হত্যা করেন লেখক, ডাক্তার, চিকিৎসক সহ নানান পেশার বাংলাদেশপন্থী বুদ্ধিজীবীদের!... ...বাকিটুকু পড়ুন

×