মনে হল আমি যেন এক বিরান জনশূন্য সমাধি ভূমে দাঁড়িয়ে আছি। যেখানে জনমানবের কোন সাড়া শব্দ নেই। বরং কঠিন আঁধার তার চারপাশ ঢেকে দিয়েছে।
ভাবলাম পথ ভুল করেছি। যাকে খুঁজছি এ বাড়ী তার নয়। ফিরে যাব কিনা ভাবছি এমন সময় একটি শিশুর করুণ আর্তনাদ ও ক্রন্দন ধ্বনি আমাকে চমকে দিল। এগিয়ে গিয়ে দরজার কড়া নাড়লাম। ভেতরে টিম টিম করে নিস্তেজ আলো জ্বলছে।
একটি কিশোর মন্থর গতিতে বেরিয়ে এসে দরজা খুলে দিল। মনোযোগ সহকারে পরখ করে দেখলাম তাকে ঠিক বন্ধুর পুত্রের মতই মনে হচ্ছে। তার পিতার কথা জিজ্ঞেস করতেই সে বলল ভেতরে আসুন, হয়ত কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি ফিরে আসবেন।
আমি একটা হল ঘরের মত জায়গায় গিয়ে পৌঁছলাম। কিন্তু সেখানে আগেকার কোন সৌন্দর্য কিংবা জৌলুসের নাম গন্ধ পর্যন্তও ছিল না। আমাকে একটি শীর্ণ পুরানো সোফায় বসতে দিয়ে কিশোর ছেলেটি ভেতরে চলে গেল।
খানিক পর ফিরে এসে বলল, আম্মা আপনাকে আব্বা সম্পর্কে কিছু কথা বলতে চান।
পাশ ফিরে দেখলাম ময়লাযুক্ত কালো চাদর গায়ে জড়িয়ে একজন মহিলা এক পাশে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে আছেন। দেখে বুঝলাম ইনি আমার বন্ধু পত্মী।
তিনি সালাম জানালেন।
উত্তর দিয়ে কুশল বিনিময় করলাম।
মহিলা বললেন, আপনি কি আপনার বন্ধুর অবস্থা সম্পর্কে কিছু জানেন?
বললাম, নাতো, দীর্ঘ সাত বছর পর আজই আমি কায়রো এলাম।
মহিলা বেদনা বিদীর্ণ কণ্ঠে বললেন, আপনি যদি তাকে ছেড়ে না যেতেন কি যে ভালো হত। আপনার যাওয়ার পর তাকে একটা শয়তান চক্র ঘিরে নিয়েছে। তিনি কত ভদ্র ও সৎ ছিলেন তাতো আপনি ভালো করেই জানেন। কিন্তু এমন সাদাসিদে সরল লোকটিকে দুষ্ট লোকেরা পথভ্রষ্ট করে দিয়েছে, তার সামনে অন্যায় অপরাধকে সুসজ্জিত করে দিয়েছে এবং তাকে পাপের পিচ্ছিল পথে ঠেলে দিয়েছে। তার অবশ্যম্ভাবী পরিণাম স্বরূপ আমরা আজ দুর্ভাগ্যের চরম পর্যায়ে এসে উপনীত হয়েছি।
আমি বললাম, আপনার কথা কিছুই বুঝতে পারছি না। কারা তাকে দুর্ভাগ্যের মুখে ঠেলে দিয়েছে? তার কি হয়েছে?

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



