নাম পর্ব
পর্ব দুই
বঙ্গালী জাতি নাকি বাঁশ খেতে এবং বাশ দিতে খুবই ভালোবাসে।আমাদের প্রধান অফ টাইম হবি বলতে পারেন এইটাই। বাঁশ দেওয়া এবং যেচে বাঁশ খাওয়াকে আমরা একধরনের শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছি।
এই যেমন ধরুন ইদানিং এর মধ্যে সরকার ড. মো. ইউনুস সাহেবকে হালকার উপর কায়দা করে একের পর এক বাঁশ দিয়েই চলেছে। এতে করে একাধারে আমাদের দেশের ইমেজের যে বাঁশটা মারা যাচ্ছে তার খবর কে রাখে? তা এত খবর রাখার বা কি দরকার? বাঁশ মারা চলছে এইটাই বড় কথা।
সেটা ড.ইউনুসের ইমেজের হোক কিংবা বেশ্যার এনাজের হোক। বাঁশমারার আনন্দে বাঁশ মারতে হবে। সবচেয়ে বড কথা যাকে বাঁশ দেয়া হবে, তাকেও হাসিমুখে সেটা গ্রহন করতে হবে। ব্যাথা পেলেও উহ্-আহ্ করা যাবে না।
এই মনে করেন, কুইকরেন্টাল নামের বাঁশদিয়ে বিদ্যুৎবিভাগের পুচ্ছছেদন করা হচ্ছে। কেউ কিছু বললেই, খামোশ। যারা দেশের ভালোমন্দ বোঝেনা তারাই নাকি কুইকরেন্টাল নিয়ে বাজে কথা ছড়ায়। থাক ভাই, আমরা দেশপ্রেমিক খেতাব না পাইতে পারি, দেশের মন্দ হোক সেটা অন্তত চাইনা। তাই যার যত খুশি বাঁশ মারুন, আমরা কিস্যুটি বলব না।
এতো গেল জাতীয় বাঁশ। প্রান্তিক পর্যায়তেও ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষায় বাঁশের ব্যাবহার জনপ্রিয়।
মাছের ঘেরে বিষ, রাস্তার ধারের শিস; জমি নিয়ে মামলা, অল্প টাকায় কামলা; যে যাকে যেভাবে পারছ বাঁশ দিচ্ছে।
অবস্য বাঁশের প্রাপ্যতা কমে যাওয়ায় এবং বাঙালী বৈচিত্র প্রিয় জাতি হওয়ায় বাঁশের পাশাপাশি অন্যান্য গাছের ব্যাবহার বাড়ছে। সেগুন, মেহগণী, কড়ই, চাম্বল ইত্যাদি। পেত্তিনি ০০০০ লিমিটেড নামক প্রতিষ্ঠানাটি তো ধনুক ভাঙ্গা পন করে মাঠে নেমেছে যে বাংলার প্রতিটি মানুষকে তারা গাছ মারবে। আর আমরাও মারা খেতে প্রস্তুত। দলে দলে গিয়ে পেত্তিনির সামনে পুচ্ছ জড়ো করছে। নিজেরা তো খাচ্ছেই আবার অন্যকেও খেতে উৎসাহিত করছে। ব্যপারটা অনেকটা এরকম,, উত্তর কোরিয়ায় জন্মহার কম, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ও কম। কারন বিয়ের সংথ্যা এবং বিয়ে করতে ইচ্ছুক মানুষের সংখ্যা খুবই কম। এই হার বাড়াতে সরকার প্রচারাভিজান চালালো। সেই প্রচারাভিযানের স্লোগান ছিল- নিজে বিয়ে করুন এবং অন্যকে বিয়েতে উৎসাহিত করুন।
কোরিয়ান জনগনের উৎসাহ বেড়েছিল কিনা জানিনা, কিন্তু আমাদের কিন্তু উৎসাহের অন্ত নেই। জ্বীন ল্যন্সার, ভুত ড্যান্সার, কিক্ বিডি (kick bd) আরো শতেক কতেক নাম নিয়ে কত নিত্য নতুন প্রতিষ্ঠান নিত্য নতুন উপায়ে এবং অভিনব সব পধ্যতিতে আমাদের মেরেই চলেছে আর আমরা তাদের সামনে দলবেধে দাড়াচ্ছি। আবার অনেকেতো সঙ্গে তেল ও রাখে (কালি জিরার তেলের মনেহয় লুব্রিকেসি বেশি)।
নিজেদের পুচ্ছছেদন করার এত আগ্রহ আর কোথাও পরিলক্ষিত হয় বলে আমার জানা নাই।
এবার প্রথমে এই গাছ দেওয়া নিয়ে একটা রঙ্গ বলি,
আক্কাস নৌকা ঘাটে নৌকা থেকে নামছিলেন। ফরিদ একই নৌকায় উঠতে উঠতে গিয়ে মুখামুখি সংঘর্ষ। ফরিদ একটু রেগে গিয়ে জিঞ্জেস করল--
---" তোর নাম কি?"
---" আক্কাস, ক্যান, নাম দিয়া কি করবি? "
ফরিদ সিনেমেটিক কায়দায় চিৎকার করে বলল---
--- " আক্কাাাাাাাস, তোর গুহ্যদ্বারে গাবগাছ।"
এ হেন হেয় আচরনে আশেপাশের সবাই মজা পেয়ে হাসতে লাগল। আক্কাসের ইগো, ক্যায়া গো বলে জাগ্রত হল। ও ও ফরিদকে একই প্রশ্ন করল--
--- " তোর নাম কি?"
ফরিদ অনেক আস্থার সাথে বলল --
--- " ফরিদ।"
--- " তোর গুহ্যদ্বারে তাল গাছ।"
ফরিদ হেসে ফেলে বলল , --
--- "মিললনা তো"
--- "মিললে মিলুক নামিনলে নাই, দু:খ পাইলেই চলে"
বাঁশ দিয়ে শুরু করেছিলাম বাঁশেই শেষ করতে চাই।
এক ভদ্রলোক বাংলাদেশ থেকে ইংল্যান্ডে গেছে কাজের সন্ধানে। একদিন রাতে তার বাসায় চোর প্রবেশ করল। ভদ্রলোক থানায় ফোন করে পুলিশ কে বললঃ- কাটিং দ্যা বাঁশের বেড়া, ঢুকিং দ্যা চোর; টুকিং দ্যা মালপাত্র, গোইং দ্যা ডোর।
পুলিশ সবকিছু হালকা হালকা বুঝতে পারলেও বাঁশের বেড়া কি তা বুঝতে না পারায় প্রশ্ন করলঃ- হোয়াট ইজ দ্যা বাঁশের বেড়া?
লোকটিঃ- সাম আর পাইতল করা, আদার কিছু খারাই খারা, মাযখানে পেরেক মারা দিস ইস কল বাঁশের বেড়া।
অবশেষে বলতে চাই::::: হে বাঁশ, তুমি মোরে করেছ মহান। জয় বাঁশ বাবার জয়।
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে আগস্ট, ২০১২ দুপুর ১:২৮