somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পোস্টটি যিনি লিখেছেন

জুল ভার্ন
এপিটাফ এক নিঃশব্দ প্রচ্ছদে ঢাকা আছে আমার জীবনের উপন্যাস...খুঁজে নিও আমার অবর্তমানে...কোনো এক বর্তমানের মায়াবী রূপকথায়।আমার অদক্ষ কলমে...যদি পারো ভালোবেসো তাকে...ভালোবেসো সেই অদক্ষ প্রচেষ্টা কে,যে অকারণে লিখেছিল মানবশ্রাবণের ধারা....অঝোর

আদিবাসী বনাম উপজাতি বিতর্কঃ

২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১০ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আদিবাসী বনাম উপজাতি বিতর্কঃ

আমাদের দেশের একটি মহল দীর্ঘ দিন ধরে "উপজাতি"/ "আদিবাসী", পাহাড়ী-বাংগালী জাতিগোষ্ঠী নিয়ে এক মরন খেলায় মেতেছে। এই ব্লগে "উপজাতি"/ "আদিবাসী", পাহাড়ী-বাংগালী নিয়ে অনেক লেখা পড়েছি। তা দেখে আমি "উপজাতি"/ "আদিবাসী" নিয়ে বিভিন্ন বই পুস্তক ঘাটাঘাটি করেছিলাম এবং বিভিন্ন সময় এই বিষয়ে লেখা বিভিন্ন পত্রিকার কাটিং সংরক্ষণ করে আসছিলাম। পার্বত্য চট্টগ্রামের বর্তমান অবস্থায় "উপজাতি"/ "আদিবাসী" নিয়ে আবার পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়েছে। তাই আমার জানামতে "উপজাতি"/ "আদিবাসী" বিষয়ে কিছু তথ্য পাঠকদের জন্য তুলে ধরলাম।

১৭৯৮ সালে ইংরেজরা উপজাতি না বলে নেশন লিখতো। ১৮০০ শতকে ইউরোপীয় সমাজবিজ্ঞানীরা উপজাতি শব্দটি ব্যবহার করতে শুরু করেন। উপজাতি শব্দটি বাংলা ভাষায় এসেছে ইংরেজি "ট্রাইবাল" শব্দকে ভিত্তি করে। পশ্চিমের সমাজ-নৃবিজ্ঞানীদের জাতি গবেষণা ও এথনোগ্রাফ রচনার ভেতর দিয়ে "ট্রাইবাল" শব্দটি এই জনপদে হাজির হয়। সাঁওতাল হুলের সময় ব্রিটিশরা বিদ্রোহী সাঁওতালদের "অপরাধী ট্রাইব" হিসেবে আখ্যায়িত করতো। হাজংদের টংক আন্দোলনের সময় "বিধর্মী কমিউনিস্ট" বলে গালি দেয়া হতো। হাতিখেদা আন্দোলনের সময় হাজংদের বলা হতো "রাজা অবাধ্য"। লোধা/শবর আদিবাসীদের সবসময় ব্রিটিশরা বলতো "ক্রিমিনাল ট্রাইব"। ঔপনিবেশিক-বৈষম্যমূলক-কর্তৃত্ববাদী এই অপর করে রাখার "ট্রাইব্যুনাল" শব্দটিই বাংলায় পরবর্তী সময়ে "উপজাতি" হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। আর এই উপজাতি ধারণা বহাল থাকে আমাদের রাষ্ট্রের আইন-নীতিমালা-পাঠ্যপুস্তক রাষ্ট্রীয় প্রচার ও উদ্যোগ উন্নয়নের সব মনস্তত্ত্বে।

ব্রিটিশ আমলে চাকমাদের আমন্ত্রণে বাঙালিরা ১৮১৮ সাল থেকে ১৮২০ সালের মধ্যে জুম চাষের জন্য প্রথম রাঙ্গামাটি আসে। এ সময় পার্বত্য চট্টগ্রাম শাসনবিধি ১৯০০ অনুযায়ী শাসিত হয়। ১৭৯৮ সালে একটি সরকারি কাজে পার্বত্য চট্টগ্রামে আগত ফ্রান্সিস বুকানন সর্বপ্রথম পার্বত্য চট্টগ্রামের ১০ ভাষাভাষী জুম্ম জনগোষ্ঠীর ভাষাগুলোর নমুনা শব্দ সংগ্রহ করেন। তারপর ফেইরি (১৮৪১), হান্টার (১৮৬৮) এবং লেউইন (১৮৬৯) পার্বত্য চট্টগ্রাম ও আরাকানের কয়েকটি জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন শব্দ সংগ্রহ করলেও ড. জর্জ আব্রাহাম গ্রিয়ারসন প্রথম পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ভাষাগুলোর তথ্যাদি সংগ্রহ করে প্রকাশ করেন। লিঙ্গুয়েস্টিক সার্ভে অব ইন্ডিয়ায় তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসী ভাষাগুলোর মধ্যে চাকমা ও তঞ্চঙ্গ্যা ভাষাকে ইন্দো-এরিয়ান এবং অন্য ভাষাগুলোকে তিব্বতি-চীন পরিবারভুক্ত করে শ্রেণীকরণ করেন। তিব্বতি-চীন পরিবারভুক্ত ভাষাগুলোর মধ্যে মারমা ভাষাকে টিবেটো-বর্মি দল; ত্রিপুরা ভাষাকে বোডো দল, লুসাই, পাংখোয়া, বুম খিয়াং, খুমী, ম্রো ও চাক ভাষাসমূহকে কুকি-চীন দলভুক্ত করেন।

ড. গিয়ার্সন চাকমা ভাষাকে ইন্দো-এরিয়ান ভাষাভুক্ত করলেও কারো কারো মতে, এই ভাষা সিনো-টিবেটান অথবা তিব্বতি-বর্মি পরিবারভুক্ত। আবার কারো কারো মতে, এটি প্রাকৃত অহমিয়া, তিব্বতি-বর্মি এবং বাংলা ও অন্যান্য ইন্দো-এরিয়ান ভাষার সংমিশ্রিত একটি ভাষা। বর্তমান চাকমা ভাষার অনেক শব্দের সঙ্গে সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত প্রভৃতি প্রাচীন ইন্দো-এরিয়ান ভাষা এবং বাংলা, অহমিয়া, হিন্দি প্রভৃতি আধুনিক ইন্দো-এরিয়ান ভাষার মিল রয়েছে। আবার অনেক শব্দের সঙ্গে তিব্বতি-বর্মি ও সিনো টিবেটান ভাষার বিশেষ করে টিবেটান, আরাকানি বা বার্মিজ অহমিয়া, থাই, ককবরকে ভাষার মিল দেখা যায়। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, ইন্দো-এরিয়ান ভাষার প্রভাবের মূল চাকমা ভাষার আমূল পরিবর্তন ঘটেছে। ১৯৮৪ সালের জুন মাসে আয়কর অধ্যাদেশের ষষ্ঠ তফসিলের ২৭ নম্বর অনুচ্ছেদে ৩ পার্বত্য জেলার পাহাড়িদের "আদিবাসী" বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।কিন্তু আগস্ট মাসেই সেই অনুচ্ছেদের "আদিবাসী" শব্দ পরিবর্তন করে "উপজাতি" করে সংযোজন করা হয়। কিন্তু এ অনুচ্ছেদ পুণঃসংযোজন করা হয় ১৯৯৫ সালে।প্রথম পর্যায়ে "আদিবাসী" শব্দটি পার্বত্য চট্টগ্রাম হিলট্রাক্টস রেগুলেশন ১৯৯০ সালের ৪ নম্বর বিধিতে উল্লেখ ছিলনা-কিন্তু পরবর্তীতে কোনো এক সময় "উপজাতি"র স্থানে "আদিবাসী" শব্দ সংযোজন করা হয়। যা কখনোই গেজেট আকারে রাস্ট্রীয় ভাবে প্রকাশ করা হয়নি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ২০০২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পরিপত্রে একটি প্রকল্প কর্মসূচি সংক্রান্ত নীতিমালায় "আদিবাসী" শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের ১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ সালের বিধি ১ শাখা ১৪৩ নম্বর স্মারক অনুসারে পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিবাসীদের আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ আইন ১৯৯৮ অনুসারে প্রান্তিক জাতি অধ্যুষিত এ অঞ্চলে উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি পায়। রাষ্ট্রের সব পাঠ্যপুস্তকে "উপজাতি" শব্দের সঙ্গে কোথাও কোথাও আদিবাসীও যুক্ত করা হয়েছে। এশিয়াটিক সোসাইটি প্রকাশিত বাংলাপিডিয়াও ঔপনিবেশিক "উপজাতি" শব্দটি রেখেছে। সেখানে সুস্পস্ট ভাবে উল্যেখ করা হয়েছে-"আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী কোনো জাতি সমুহকে যেসমস্ত কারনে "আদিবাসী" অবিহিত করার হয়-সেইসব শর্তসমুহের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাহাড়ী অঞ্চলে বসবাসকারী অধিবাসীরা "আদিবাসী" পর্যায়ে অন্তর্ভুক্ত নয়-বিধায় তাহাদেরকে "উপজাতি" অভিহিত করা যাইতে পারে"। এক্ষেত্রে লক্ষনীয় রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজশাহী-রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ি-নেত্রকোনাতে আদিবাসীদের জন্য যেসব সাংস্কৃতিক একাডেমী করা হয়েছে সেখানেও উল্লেখ করা হয়েছে, উপজাতীয় সাংস্কৃতিক/কালচারাল একাডেমি।

সরকারি বিভিন্ন সার্কুলারে এবং আইনগতভাবে বাংলাদেশে "আদিবাসী" শব্দটি স্বীকৃত নয়। এতে রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি নেই। তথাকথিত সুশীল সমাজ এবং গুটিকতক মিডিয়া ভিন্ন উদ্দেশ্যে "আদিবাসী" শব্দটি ব্যবহার করে আসছে।২০০৭ সালে তথাকথিত তত্বাবধায়ক সকারের আমলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করেছিল- "চীন, ভারত উপজাতি জনগোষ্ঠীকে 'আদিবাসী' বলে না। তাহলে আমরা কেন বলব?" আমি মনে করি একটি মীমাংশিত বিষয় নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখানে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিতেচেছে। এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। চীন, ভারত উপজাতি জনগোষ্ঠীকে কখনো "ইনডিজিনাস" হিসেবে আখ্যায়িত করে না -সেটা ওদের ব্যপার। আমরা জানি-আমাদের দেশে কোনো আদিবাসী নেই-এটাই সত্য। ভারতের সংবিধানের পঞ্চম ও ষষ্ঠ তফসিলে বর্ণিত উপজাতিদের রক্ষামূলক বেশকিছু বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে। সেগুলো গ্রহণ করেই আমরা উপজাতীয়দের স্বার্থ রক্ষা করতে পারি। কেবল নামটি বর্জন/ গ্রহণের এত কৌতুহল কেন? চীনেও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জন্য বিশেষ কিছু ব্যবস্থা রয়েছে। আমাদের দেশ সেটাও অনুসরণ করতে পারে। ফিলিপাইনে "ইনডিজিনাস পিপল" শব্দটি ব্যবহার হয়ে থাকে। ইন্দোনেশিয়ায়ও আংশিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নেপালেও "জনজাতি" শব্দটি ব্যবহৃত হচ্ছে।

পাহাড়ী-বাংগালী বিতর্কে না গিয়ে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-তাত্ত্বিক গোষ্ঠী তাদের কৃষ্টি, সংস্কৃতি, সামাজিক রীতিনীতি বজায় রেখে প্রকৃত অধিকার কতোটুকু ভোগ করতে পারছে সেটাই বড় কথা। কোনো দ্বিধা দ্বন্দে নাজড়িয়ে এই মুহুর্তে বাংলাদেশের সংবিধানের আলোকে উওভয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় সকলের কাজ করা উচিত। পশ্চাৎপদ জাতিকে কিভাবে টিকিয়ে রাখা যায় তার সুদূরপ্রসারী চিন্তা ভাবনা করার সময় এসেছে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে অক্টোবর, ২০২৪ সকাল ১০:০০
৩৪টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×